ডিজিটাল ক্যামেরার ছবি
প্রশ্নঃ ৩৯৪৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, মোবাইলে ছবি তোলও প্রতিকৃতির শামিল বলে এক ভাই যুক্তি দিয়েছেন। এটা কি ঠিক? নিচে দেয়া হলঃছবি রিফ্লেকশন থেকে তৈরী হলেও আখেরে এটা প্রতিকৃতি। এটা যদি নিছক রিফ্লেকশন বা প্রতিবিম্ব হতো তাহলে সাব্জেক্ট সামনে থেকে সরে গেলে ছবিও ভ্যানিশ হয়ে যেত। যেমনটা আয়নার ক্ষেত্রে হয়। তাছাড়া পৃথিবীর কোন সচেতন মানুষ ছবি(পিকচার,ফোটো)কে নিছক রিফ্লেকশন বলেননা। বরং এটা হচ্ছে রিফ্লেকশনকে পুঁজি করে তৈরী হওয়া প্রতিকৃতি। পোর্ট্রেইট। তাই এর বিধানও ভিন্ন। দেখুন, আয়নায় বা ক্যামেরার লেন্সের মাধ্যমে আপনি যখন কাউকে দেখেন তখন কোন রঙের প্রয়োজন হয়না। প্রাকৃতিক প্রতিবিম্বিত রুপটাই আপনার চোখে প্রতিভাত হয়। কিন্তু যখন ছবি তোলা হয়, প্রতিবিম্বটাকে যখন ডিভাইসের মাধ্যমে স্থির চিত্রে রুপ দেয়া হয় তখন সেখানে রঙের প্রয়োজন হয়, ব্যবহার হয়। হাঁতে আকলে আঁকিয়ে যে কাজটা তুলির আঁচড়ে করতো ওই কাজটাই ডিভাইস ডিজিটাল পদ্ধতিতে খুব ক্ষুদ্র জায়গার মধ্যে করছে। কাজের মান এক না হলেও মূল কিন্তু এক। তাই হাতে আকা প্রতিকৃতি বা মূর্তির মতো ক্যামেরায় তোলা স্থির চিত্রও নিষিদ্ধ প্রতিকৃতির অন্তর্ভুক্ত। একে প্রতিবিম্বের সাথে তুলনা করে সরলীকরণের চেষ্টা কখনোই যৌক্তিক হতে পারে না।রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, প্রতিকৃতি তৈরীকারীরা জাহান্নামী। আল্লাহ তায়ালা সবাইকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করুন।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
মোবাইল ও ডিজিটাল ক্যামেরার ছবি নিয়ে বিশ্বের বাঘা বাঘা আলেমদের মধ্যে অনেকেই না জায়েজ ফতোয়া দিয়েছেন। তাদের যুক্তি ওটাই যা আপনি উল্লেখ করেছেন। এজন্য তারা মোবাইল ও ডিজিটাল ক্যামেরায় ছবি তোলার পক্ষপাতী নন। দারুল উলুম দেওবন্দ এখন পর্যন্ত এই ফতোয়ার উপরেই আছে।
কিছু কিছু আলেমদের মতে মোবাইল ও ডিজিটাল ক্যামেরার ছবি প্রিন্ট করার পূর্ব পর্যন্ত জায়েজ বলেছেন। যেহেতু ডিভাইস ছাড়া সেটাকে দেখার সুযোগ নেই। যেমনটি বিন্দু বিন্দু, ছোট ছোট ছবি সম্পর্কে প্রথম যুগের ফুক্বাহায়ে কেরাম ফতোয়া দিয়েছেন।তারা বলেছেন, এমন ক্ষুদ্র ছবি, যেগুলো সাজদার জায়গায় রেখে দিয়ে নামাজে দাঁড়ালে দৃষ্টিতে আসে না, তার উপর নামাজ পড়া সহীহ। তদ্রূপ ডিজিটাল ক্যামেরা ও মোবাইলের ছবিগুলো ডিভাইস ছাড়া দৃষ্টিতে আসে না বিধায় এই ছবি ঐ ক্ষুদ্র ছবির মত।
সর্বোপরি এই বিতরকের অধ্যায়ে সতর্কতা ওটাই, যা দারুল উলুম দেওবন্দ ফতোয়া দিয়েছে।
والله اعلم بالصواب
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন