জিবরাইল (আ.) এর সিজদার ভিত্তিহীন বর্ণনার তাহকীক।
প্রশ্নঃ ৩৭০৯০. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, নিছে লিখিত প্রশ্নটি কতটুকু গ্রহনযোগ্য বিস্তারিত জানতে চাই। এবং এটা কি হাদিস ? আর যদি হাদীস হয় সেটাও বলবেন ইনশা-আল্লাহ সিজদাহের মূল্য কতটুকু জানেন? পরতে শুরু করুন. জিবরাইল (আ.) কে আল্লাহ তৈরি করলেন। জিবরাইল (আ.) আল্লাহ তায়ালাকে জিজ্ঞেস করলেন, আল্লাহ আপনি কিসে খুশি হন? আল্লাহ তায়ালা জানিয়ে দিলেন, আমি সবচেয়ে বেশি খুশি হই আমার বান্দা যখন আমাকে সিজদা করে। অতঃপর জিবরাইল (আ.) আল্লাহকে সিজদা করলেন ৩০ হাজার বছর ধরে...! জিবরাইল (আ.) মনে মনে খেয়াল করলেন আমার থেকে এত বড় দামি, এত বড় লম্বা সিজদা আর কেউ করতে পারবে না। আল্লাহ তায়ালা নিশ্চয়ই আমার প্রতি খুশি হবেন । জিবরাইল (আ.) আল্লাহর দিকে মুতাহজ্জিত হয়ে রইলেন কিন্তু আল্লাহ তায়ালার পক্ষ হতে কোন খুশি বাণী জানানো হলো না, জিবরাইল (আ.) আল্লাহকে জিজ্ঞেস করলেন, আল্লাহ আমি যে এত লম্বা সিজদা করলাম, আপনি কি আমার সিজদার প্রতি কোন খুশি হন নাই। আল্লাহ তায়ালা জানিয়ে দিলেন, জিবরাইল তোমার জবাব আমি দিব তার আগে তুমি একটু আরশে আজিমের দিকে তাকাও, জিবরাইল (আ.) তাকিয়ে দেখলেন, আল্লাহ রব্বুল আলামিন, আরশে আল্লাহর কুদরতি নূর দ্বারা লিখা রয়েছে, "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ " জিবরাইল আ জিজ্ঞেস করলেন হে আল্লাহ আমার সিজদার সঙ্গে এই কালিমার কি মিল?? আল্লাহ তায়ালা বললেন, ও জিবরাইল শোন আমি আল্লাহ এক দুনিয়া তৈরি করবো, ওই দুনিয়ার মানব জাতি জীন জাতির হেদায়তের জন্য লক্ষাধিক নবি - রাসুল পাঠাব। সর্বশেষ, সর্বশ্রেষ্ঠ নবি মুহাম্মাদ কে পাঠাব। এই নবীর উম্মতের উপরে আমি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করবো আর প্রতি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে সতেরটা করে রাকাত আমার জন্য ফরজ করবো প্রতেকটা রাকাতের মধ্যে দুটি করে সিজদা হবে আর প্রতেকটা সিজদার মধ্যে ওই নবীর উম্মত তিনবার করে "সুবহানা রব্বিয়াল আলা " পাঠ করবে। জিবরাইল তুমি জেনে রেখো আমার ওই মাহবুব নবীর উম্মত যখন সিজদাহে গিয়ে, "সুবহানা রব্বিয়াল আলা "বলে আমাকে ডাক দিবে, জিবরাইল তুমি ৩০ হাজার বছর সিজদাহ্ করে যে নেকি পেয়েছ, আমি আল্লাহ আমার বান্দার আমল নামায় এর থেকেও 40 হাজার গুণ বেশি নেকি লিখে দিব। ( সুবহানাল্লাহ) এই জন্য মূসা (আ) কেদেছেন, আল্লাহ...! আমাকে ওই নবীর উম্মত বানাইয়া দাও, যে নবীর উম্মত এক সিজদায় জিবরাইল (আ) এর সারা জীবনের ৩০ হাজার বছরের সিজদাহের নেকি নিয়ে গেল....? (আল্লাহু আকবার) আমরা সেই নবীর উম্মত, আমাদের কি করা উচিত আর আমরা কি করছি,....? আল্লাহ আমাদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পরার তৌফিক দিন, আমিন...!
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
জ্বী,না, মুহতারাম। এই নতিদীর্ঘ বর্ণনাটি কোন হাদীস নয়। হাদীসের নির্ভরযোগ্য কিতাবাদিতে এরকম কোন বর্ণনার উল্লেখ পাওয়া যায়না। আর সুত্রহীন অপ্রমাণিত এসব উক্তি-বর্ণনার উল্লেখ ও প্রচার করা জায়েয হবেনা।
উল্লেখ্য, সিজদা আল্লাহর নৈকট্য লাভের অন্যতম সেরা মাধ্যম। অসংখ্য সহীহ হাদীসে এর উল্লেখ এসেছে।
باب مَا يُقَالُ فِي الرُّكُوعِ وَالسُّجُودِ
وَحَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ مَعْرُوفٍ، وَعَمْرُو بْنُ سَوَّادٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ الْحَارِثِ، عَنْ عُمَارَةَ بْنِ غَزِيَّةَ، عَنْ سُمَىٍّ، مَوْلَى أَبِي بَكْرٍ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا صَالِحٍ، ذَكْوَانَ يُحَدِّثُ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَقْرَبُ مَا يَكُونُ الْعَبْدُ مِنْ رَبِّهِ وَهُوَ سَاجِدٌ فَأَكْثِرُوا الدُّعَاءَ " .
৯৬৭। হারুন ইবনে মারূফ ও আমর ইবনে সাওওয়াদ (রাহঃ) ......... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, সিজদার অবস্থায়ই বান্দা তার রবের অধিক নিকটবর্তী হয়ে থাকে। অতএব, তোমরা (সিজদায়) অধিক পরিমাণ দুআ পড়বে।
আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ (সহীহ মুসলিম)
হাদীস নং: ৯৬৭ আন্তর্জাতিক নং: ৪৮২
তাহকীকঃ তাহকীক নিষ্প্রয়োজন
বর্ণনাকারীঃ আবু হুরায়রা (রাঃ)(মৃত্যুঃ ৫৭/৫৮/৫৯ হিজরী)
والله اعلم بالصواب
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন