و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

আপনার চারজন ছাত্রের মধ্যে প্রথমত  যার পিতা প্রবাসে থাকে দেখতে হবে তিনি প্রবাসে কি কাজ করেন, উনার উপার্জন হালাল কিনা। যদি হালাল হয় তাহলে তার থেকে বেতন নেওয়া জায়েজ হবে । দ্বিতীয়ত যে দুইজনের বাবা বীমা কোম্পানিতে চাকরি করে এবং তৃতীয়ত যার  বাবা ইসলামী ব্যাংকে চাকরি করে তাদের থেকে বেতন নেওয়া জায়েজ নেই কারণ স্পষ্টভাবেই দেখা যাচ্ছে তাদের উপার্জন হারাম।
সকল বীমা কোম্পানিগুলোতেই ব্যাংকের মতো সুদের লেনদেন হয়। যেই পরিমাণ টাকা জমা রাখা হয় তার থেকে অতিরিক্ত ফেরত দেওয়া হয় । অতিরিক্ত ফেরত দেওয়া সুদ। এবং বীমার মধ্যে জুয়ার লেনদেনও পাওয়া যায়। কারণ অনেক সময় বীমাকারী কোন সমস্যার সম্মুখীন হয় না সে ক্ষেত্রে  কোম্পানিগুলো  টাকার মালিক হয়ে যায়।
এবং বীমার মধ্যে অজ্ঞতা ও ধোঁকা ও পাওয়া যায়, অজ্ঞতা ও ধোকার লেনদেনকে শরীয়ত ফাসাদ লেনদেন বলেছে।
আমাদের দেশে যে সকল ইসলামী ব্যাংক রয়েছে সেগুলো মূলত ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক পরিচালিত নয়। সাধারণ ব্যাংকগুলোর মত তারাও সুদের লেনদেনে জড়িত, তাই এ সকল ব্যাংকে চাকরি করা জায়েজ নেই।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

اَلَّذِیۡنَ یَاۡکُلُوۡنَ الرِّبٰوا لَا یَقُوۡمُوۡنَ اِلَّا کَمَا یَقُوۡمُ الَّذِیۡ یَتَخَبَّطُہُ الشَّیۡطٰنُ مِنَ الۡمَسِّ ؕ ذٰلِکَ بِاَنَّہُمۡ قَالُوۡۤا اِنَّمَا الۡبَیۡعُ مِثۡلُ الرِّبٰوا ۘ وَاَحَلَّ اللّٰہُ الۡبَیۡعَ وَحَرَّمَ الرِّبٰوا ؕ فَمَنۡ جَآءَہٗ مَوۡعِظَۃٌ مِّنۡ رَّبِّہٖ فَانۡتَہٰی فَلَہٗ مَا سَلَفَ ؕ وَاَمۡرُہٗۤ اِلَی اللّٰہِ ؕ وَمَنۡ عَادَ فَاُولٰٓئِکَ اَصۡحٰبُ النَّارِ ۚ ہُمۡ فِیۡہَا خٰلِدُوۡنَ

অর্থঃ যারা সুদ খায়, তারা কিয়ামতে দন্ডায়মান হবে, যেভাবে দন্ডায়মান হয় ঐ ব্যক্তি, যাকে শয়তান স্পর্শ করে পাগল করে দেয়। তাদের এ অবস্থার কারণ এই যে, তারা বলেছেঃ ক্রয়-বিক্রয় ও তো সুদের মতই! অথচ আল্লা’হ তা’আলা ক্রয়-বিক্রয় বৈধ করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। অতঃপর যার কাছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে, পূর্বে যা হয়ে গেছে, তা তার। তার ব্যাপার আল্লাহর উপর নির্ভরশীল। আর যারা পুনরায় সুদ নেয়, তারাই দোযখে যাবে। তারা সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে।
সূরা বাকারা (البقرة), আয়াত: ২৭৫

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِنَّمَا الۡخَمۡرُ وَالۡمَیۡسِرُ وَالۡاَنۡصَابُ وَالۡاَزۡلَامُ رِجۡسٌ مِّنۡ عَمَلِ الشَّیۡطٰنِ فَاجۡتَنِبُوۡہُ لَعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ

অর্থঃ হে মুমিনগণ, নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য-নির্ধারক তীর  এসব শয়তানের অপবিত্র কাজ। অতএব, এগুলো থেকে বেঁচে থাক-যাতে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হও।

সূরা আল মায়িদাহ (المآئدة), আয়াত: ৯০

হাদীস  শরীফে বর্ণিত,

عن جابر قال لعن رسول الله ﷺ آكل الربا وموكله وكاتبه وشاهديه وقال هم سواء
হযরত জাবের (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুদখোর, সুদদাতা, সুদের লেখক এবং তার উপর সাক্ষীদ্বয়কে অভিশাপ করেছেন, আর বলেছেন, ওরা সকলেই সমান।
(মুসলিম শরীফ: ৪১৭৭)

মোসান্নাফে ইবনে আবী শাইবাতে বর্ণিত,
"عن ابن سیرین قال: کل شيء فیه قمار فهو من المیسر৪৮৩/৪، کتاب البیوع  والأقضیة،
ط: مکتبة رشد، ریاض)

ফতোয়ায়ে শামী তে রয়েছে,

"وَسُمِّيَ الْقِمَارُ قِمَارًا؛ لِأَنَّ كُلَّ وَاحِدٍ مِنْ الْمُقَامِرَيْنِ مِمَّنْ يَجُوزُ أَنْ يَذْهَبَ مَالُهُ إلَى صَاحِبِهِ، وَيَجُوزُ أَنْ يَسْتَفِيدَ مَالَ صَاحِبِهِ وَهُوَ حَرَامٌ بِالنَّصّ
৬/৪০৩، کتاب الحظر والاباحۃ، ط: سعید)

ফতোয়ায়ে শামী তে আরো রয়েছে ,

والحاصل أنه إن علم أرباب الأموال وجب رده عليهم ، وإلا فإن علم عين الحرام لا يحل له ويتصدق به بنية صاحبه ، وإن كان مالا مختلطا مجتمعا من الحرام ولا يعلم أربابه ولا شيئا منه بعينه حل له حكما ، والأحسن ديانة التنزه عنه.

ويراجع أيضا
  رد المحتار : ৭/৬৫8زكريا)

                  فتاوي عثماني 3/394و فتاوي حقانيه:6/658 و فتاوي رحيميه:9/236

والله اعلم بالصواب