আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

নফল নামাজ কি নিয়মিত পড়া উচিত?

প্রশ্নঃ ৩৫৭৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ১. যোহর এবং মাগরিব নামাজের পর ২/৪ রাকাআত নফল নামাজ নিয়মিত পড়া সুন্নাহ নাকি মাঝে মাঝে পড়া সুন্নাহ নাকি অন্য কোন মাসআলা আছে ,হাদিস মোতাবেক জানাবেন ইনশাআল্লাহ ।২. ফজর নামাজের ২ রাকাআত সুন্নত, ফরজ নামাজের আগে আদায় করতে না পারলে , সূর্য উঠার পর কি কাযার নিয়তে আদায় করব ???৩. জামায়াত সম্পুর্ন ছুটে গেলে একা একা ফরজ নামাজ বাড়িতে বা মাসজিদে আদায় করলে, ইকামাত দিতে হবে ???৪. অমুসলিমদের জন্য কি রকম দোয়া করা সুন্নাহ সম্মত ???৫. কি রকম টুপি পড়া সুন্নাহ সম্মত ???

৩০ মে, ২০২৪
ঢাকা

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


১. যোহর এবং মাগরিব নামাজের পর দু চার রাকাত নফল নামাজ পড়লে নিয়মিত পড়া উচিত। যেহেতু আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমল অল্প হলেও তার ধারাবাহিকতাকে পছন্দ করতেন।

مُحَمَّدُ بْنُ عَرْعَرَةَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّهَا قَالَتْ سُئِلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَيُّ الأَعْمَالِ أَحَبُّ إِلَى اللهِ قَالَ أَدْوَمُهَا وَإِنْ قَلَّ وَقَالَ اكْلَفُوا مِنْ الأَعْمَالِ مَا تُطِيقُونَ.

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, আল্লাহ্‌র কাছে সর্বাধিক প্রিয় ‘আমাল কি? তিনি বললেনঃ যে ‘আমাল সদাসর্বদা নিয়মিত করা হয়। যদিও তা অল্প হয়। তিনি আরও বললেন, তোমরা সাধ্যের অতীত কাজ নিজের উপর চাপিয়ে নিও না।
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৬৪৬৫

২. ফজরের নামাজের পূর্বে দুই রাকাত সুন্নত সময়মতো আদায় করতে না পারলে সূর্য উঠার পর আদায় করবে।
উল্লেখ্য: সময়মত নামাজ কাজার নিয়তে পড়লে যেমন আদায় হয়ে যাবে, এমনিভাবে কাজা নামাজ ওয়াক্তী নামাজের নিয়তে পড়লেও আদায় হয়ে যাবে।

حَدَّثَنَا عُقْبَةُ بْنُ مُكْرَمٍ الْعَمِّيُّ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَاصِمٍ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ النَّضْرِ بْنِ أَنَسٍ، عَنْ بَشِيرِ بْنِ نَهِيكٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ مَنْ لَمْ يُصَلِّ رَكْعَتَىِ الْفَجْرِ فَلْيُصَلِّهِمَا بَعْدَ مَا تَطْلُعُ الشَّمْسُ ‏"‏ ‏.‏‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি ফজরের দুই রাক’আত সুন্নাত (ফরযের পুর্বে) আদায় করতে পারেনি সে সূর্য উঠার পর তা আদায় করবে।
জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৪২৩

৩. জামাত ছুটে গেলে একা একা ফরজ নামাজ বাড়িতে বা মসজিদে আদায় করলে ইকামত দেয়া মুস্তাহাব। আবশ্যক নয়।

وَاتَّفَقَ الْفُقَهَاءُ عَلَى اسْتِحْبَابِ الإِْقَامَةِ لِلْمُنْفَرِدِ، سَوَاءٌ صَلَّى فِي بَيْتِهِ أَوْ فِي مَكَانٍ آخَرَ غَيْرِ الْمَسْجِدِ، لِخَبَرِ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ، قَال: سَمِعْتُ رَسُول اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُول: يَعْجَبُ رَبُّكَ مِنْ رَاعِي غَنَمٍ فِي رَأْسِ الشَّظِيَّةِ لِلْجَبَل يُؤَذِّنُ وَيُقِيمُ لِلصَّلاَةِ وَيُصَلِّي، فَيَقُول اللَّهُ عَزَّ وَجَل: انْظُرُوا إِلَى عَبْدِي هَذَا يُؤَذِّنُ وَيُقِيمُ الصَّلاَةَ يَخَافُ مِنِّي، قَدْ غَفَرْتُ لِعَبْدِي وَأَدْخَلْتُهُ الْجَنَّةَ (2)
وَلَكِنَّهُ إِذَا اقْتَصَرَ عَلَى أَذَانِ الْحَيِّ وَإِقَامَتِهِ أَجْزَأَهُ، لِمَا رُوِيَ أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ مَسْعُودٍ " صَلَّى بِعَلْقَمَةَ وَالأَْسْوَدِ بِغَيْرِ أَذَانٍ وَلاَ إِقَامَةٍ وَقَال: يَكْفِينَا أَذَانُ الْحَيِّ وَإِقَامَتُهُمْ (3) .
الموسوعة الفقهية


৪. অমুসলিমদের জন্য হেদায়েত প্রাপ্তির দোয়া করা যেতে পারে।

حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ حَدَّثَنَا أَبُو الزِّنَادِ أَنَّ عَبْدَ الرَّحْمَنِ قَالَ قَالَ أَبُوْ هُرَيْرَةَ قَدِمَ طُفَيْلُ بْنُ عَمْرٍو الدَّوْسِيُّ وَأَصْحَابُهُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّ دَوْسًا عَصَتْ وَأَبَتْ فَادْعُ اللهَ عَلَيْهَا فَقِيْلَ هَلَكَتْ دَوْسٌ قَالَ اللَّهُمَّ اهْدِ دَوْسًا وَأْتِ بِهِمْ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, তুফাইল ইব্‌নু ‘আম্‌র দাওসী ও তাঁর সঙ্গীরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বলল, ‘হে আল্লাহ্‌র রসূল! দাওস গোত্রের লোকেরা (ইসলাম গ্রহণে) অবাধ্যতা করেছে ও অস্বীকার করেছে। আপনি তাদের বিরুদ্ধে দু‘আ করুন।’ অতঃপর বলা হলো, দাওস গোত্র ধ্বংস হোক। তখন আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘হে আল্লাহ্‌! আপনি দাওস গোত্রকে হিদায়াত করুন এবং তাদেরকে ইসলামে নিয়ে আসুন।’
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ২৯৩৭

৫. টুপি গোল হওয়া, মাথার সাথে লেগে থাকা, মাথা ঢেকে নিতে পারে এমন হওয়া উচিত।

عن ابن عمر قال: كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يلبس قلنسوة بيضاء.
মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৮৫০৫

والله اعلم بالصواب

ইসহাক মাহমুদ, মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন