আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

জীবন বীমার পেনশন বীমা পলিসি কি হালাল?

প্রশ্নঃ ৩৫৬৬৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, সরকারি জীবন বীমার পেনশন বীমা সম্পর্কে জানতে চাই। এটা কি বৈধ হবে? অনেকেই বলে এটা সুদ হবে না। অন্যান্য সরকারি পেনশনের মত এটা। বিস্তারিত জানাবেন।

১৯ জুলাই, ২০২৩
ঢাকা

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


বর্তমান জীবন বীমা কর্পোরেশন সুদভিত্তিক প্রতিষ্ঠান। এটি শরীয়ত মেনে চলে না। কাজেই এর পেনশন পলিসিতে টাকা রাখা এবং পাওয়া হালাল হবে না। আল্লাহ বলেন,
وَأَحَلَّ اللَّهُ الْبَيْعَ وَحَرَّمَ الرِّبَا
অথচ আল্লাহ তাআলা ক্রয়-বিক্রয় বৈধ করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। (সূরা বাকারাহ ২৭৫)
রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
دِرْهَمٌ رِبًا يَأْكُلُهُ الرَّجُلُ وَهُوَ يَعْلَمُ أَشَدُّ مِنْ سِتَّةٍ وَثَلَاثِينَ زَنْيَةً
জেনে-শুনে এক দিরহাম পরিমাণ সুদ খাওয়া আল্লাহর নিকট ৩৬ জন নারীর সাথে ব্যভিচারের চাইতে অধিক গুনাহের কাজ। (মুসনাদে আহমাদ ২১৪৫০)
তাছাড়া জীবন বীমা কর্পোরেশনের ব্যক্তিগত পেনশন বীমা পলিসি জীবনের ঝুঁকি গ্রহণের সঙ্গে অবসর জীবনের জন্যে আজীবন পেনশনের নিশ্চয়তা দেয়। অথচ মানুষের প্রাণ বা অঙ্গ শরীয়তের দৃষ্টিতে মূল্যমান সমৃদ্ধ কোনো পণ্য নয়। কাজেই তার মূল্য নির্ধারণ শরিয়ত সম্মত নয়।
অনুরুপভাবে এর মধ্যে এক প্রকার জুয়া বিদ্যমান। কেননা, ব্যক্তি কখন মৃত্যুবরণ করবে আর কত টাকা পাবে, তা অনিশ্চিত। এ ক্ষেত্রে تعليق الملك مع الخطر তথা সম্পদের মালিকানাকে অনিশ্চিত সম্ভাবনাময় বিষয়ের সাথে যুক্ত করা হয়, যা জুয়া বলে গণ্য। আল্লাহ তাআলা বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالْأَنْصَابُ وَالْأَزْلَامُ رِجْسٌ مِنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ. إِنَّمَا يُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَنْ يُوقِعَ بَيْنَكُمُ الْعَدَاوَةَ وَالْبَغْضَاءَ فِي الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ وَيَصُدَّكُمْ عَنْ ذِكْرِ اللَّهِ وَعَنِ الصَّلَاةِ ۖ فَهَلْ أَنْتُمْ مُنْتَهُونَ
হে মুমিনগণ, এই যে মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য-নির্ধারক শরসমূহ -এসব শয়তানের অপবিত্র কার্য বৈ তো নয়। অতএব, এগুলো থেকে বেঁচে থাক -যাতে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হও। শয়তান তো চায়, মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের পরস্পরের মাঝে শুত্রুতা ও বিদ্বেষ সঞ্চারিত করে দিতে এবং আল্লাহর স্মরণ ও নামায থেকে তোমাদেরকে বিরত রাখতে। অতএব, এখনও কি তোমরা নিবৃত্ত হবে? (সূরা মায়েদা ৯০-৯‌১)

والله اعلم بالصواب

শাইখ উমায়ের কোব্বাদী সিনিয়র মুহাদ্দিস, মাদরাসা দারুর রাশাদ, মিরপুর খতীব, বাইতুল ফালাহ জামে মসজিদ, মিরপুর

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

#১২০৯৬
আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ,
আমি স্কুলের টিচার।বাবা মারা যাওয়া এবং কোভিড পরিস্থিতির কারনে আর্থিক সংকট চলছে। আমার খালা- চাচারা আল্লাহ রহম সামর্থবান কিন্তু আমাদের সাহায্য করার মতো কারোর মন বা সময় কিছুই নেই।আমি বিভিন্ন পরিক্ষা দিয়েছিলাম।ইসলামি ব্যাংক থেকে ডাক আসছে। আমি কোনদিন ও ব্যাংক এ চাকরির পক্ষে ছিলাম না।কারণ আমি সুদ কি এবং এর শাস্তি সম্পর্কে অবগত।আমার পরিবারে আমি, আমার মা,আর ছোট ভাই আছে।এখন আমার অবস্থা এমনি যে আমরা মারা গেলেও আমাদের আত্মীয়দের কষ্ট লাগবে না।স্কুলের টাকা,টিউশন দিয়ে আমি খরচ চালাতে পারছিনা এবং কোন সাহায্যও কেও করছেনা।
এখন আমি ব্যাংকে চাকরি করলে আল্লাহর শাস্তির সম্মুখিন হবো, আবার না করলেও টিকে থাকাটা অনেক কঠিন আমার জন্য।আমি অবিবাহিত মেয়ে।এখন আমার করণীয় কি? জানালে উপকৃত হতাম হুজুর।
question and answer iconউত্তর দিয়েছেন: মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
৩১ ডিসেম্বর, ২০২১
ঢাকা