و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

মুহতারাম মুহাম্মাদ মাহিম হাওলাদার ভাই,

ইশরাক, চাশত, সলাতুল আওয়াবীন, সলাতুদ্দুহা একই নামাজের চারটি নাম।
ইশরাক ও চাশতের নামাজের জন্য মুসলিম বাংলায় প্রদর্শিত ওয়াক্ত ঠিক আছে। এতে ভুল নেই আলহামদুলিল্লাহ।
পুরো বিষয়টি ভালোভাবে অনুধাবন করার জন্য নিচের লেখাগুলো পড়তে পারেন।

আল্লাহ তাআলা পাঁচ ওয়াক্ত ফরয নামাজ ও তৎসংশ্লিষ্ট নফল নামাজের ওয়াক্ত সূর্যের ঘুর্ণয়নের সাথে মিলিয়ে দিয়েছেন।
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনুল কারিমের ইরশাদ করেন-

اَقِمِ الصَّلٰوۃَ لِدُلُوۡکِ الشَّمۡسِ اِلٰی غَسَقِ الَّیۡلِ وَقُرۡاٰنَ الۡفَجۡرِ ؕ اِنَّ قُرۡاٰنَ الۡفَجۡرِ کَانَ مَشۡہُوۡدًا

(হে নবী!) সূর্য হেলার সময় থেকে রাতের অন্ধকার পর্যন্ত নামায কায়েম কর এবং ফজরের সময় কুরআন পাঠে যত্নবান থাক। স্মরণ রেখ, ফজরের তিলাওয়াতে ঘটে থাকে সমাবেশ।
—বনী-ইসরাঈল - ৭৮

সুবহে সাদিকের পর থেকে সূর্য উদিত হওয়ার আগ পর্যন্ত ফজর নামায, দ্বিপ্রহরের সময় সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে যাওয়া থেকে নিয়ে প্রতিটি বস্তুর ছায়া দ্বিগুণ হওয়া পর্যন্ত আসর নামায, এরপর থেকে সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত মাগরিব নমায, সূর্যাস্তের পর থেকে পশ্চিম দিগন্তে সাদা আভা বিলুপ্ত হওয়া পর্যন্ত ইশা নামাযের ওয়াক্ত।

ফজরের আগে তাহাজ্জুদের ওয়াক্ত। সূর্য উদিত হয়ে এক অথবা দুই বর্শা পরিমাণ উঁচু হওয়া পর্যন্ত হারাম ওয়াক্ত। (ঘড়ির কাঁটা হিসাবে যার পরিমাণ ১০ থেকে ১২ মিনিট। সর্তকতার জন্য ১৫ মিনিট হিসাব করা হয়)

সূর্যোদয়ের ১৫ মিনিট পর থেকে ইশরাকের ওয়াক্ত আরম্ভ হয়। দ্বিপ্রহরের তিন মিনিট পূর্ব পর্যন্ত এই ওয়াক্ত বলবৎ থাকে।

ইশরাক নামাজের অপর নাম সালাতুদ্দোহা তথা চাশতের নামাজ। আরবিতে সালাতুদ্দুহা বলা হয়। ফার্সিতে সেই নামাজকে চাশতের নামাজ বলে। হাদীসের পরিভাষায় যাকে সলাতুল আওয়াবীন বলা হয়েছে।
ইশরাকের নামাজ আর চাশতের নামাজ ভিন্ন কিছু নয়। একই নামাজের ভিন্ন ভিন্ন নাম। তবে ওলামাদের সকলের ঐক্যমত যে, এই ওয়াক্তের শেষ অর্ধেকে সালাতুদ্দুহা তথা চাশতের নামাজ পড়া উত্তম। যখন সূর্যের প্রখরতা বৃদ্ধি পেয়ে মরুভূমির বালি উত্তপ্ত হয়ে যায়, আর উটের বাচ্চা গরম বালির উষ্ণতা অনুভব করে।

أَنَّ زَيْدَ بْنَ أَرْقَمَ، رَأَى قَوْمًا يُصَلُّونَ مِنَ الضُّحَى فَقَالَ أَمَا لَقَدْ عَلِمُوا أَنَّ الصَّلاَةَ فِي غَيْرِ هَذِهِ السَّاعَةِ أَفْضَلُ . إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " صَلاَةُ الأَوَّابِينَ حِينَ تَرْمَضُ الْفِصَالُ " .

যায়দ ইবনে আরকাম (রাযিঃ) একদল লোককে ‘দুহা’ নামায আদায় করতে দেখে বললেন, ওহে! এরা তো জানে না যে, এ সময় ছাড়া অন্য সময় নামায আদায় করাই বেশী ফযীলতের। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন। আল্লাহর দিকে ধাবিতদের নামাযের ওয়াক্ত উট শাবকের পায়ে গরম সেকা লাগার সময় হয়ে থাকে।
—সহীহ মুসলিম ১৬১৯ (ইফা) আন্ত: ৭৪৮-১

আমাদের এই অঞ্চলের মুসলিম জনসাধারণের মাঝে ব্যাপকভাবে প্রচলন হলো; সূর্যোদয়ের ১৫ মিনিট পর থেকে আনুমানিক দুই ঘন্টার মধ্যে নফল নামাজ পড়লে তাকে ইশরাকের নামাজ বলে। শেষ এরপর থেকে নফল নামাজকে সালাতুদ্দোহা বলে।
ইশরাক ও চাশতের সময়ের মাঝে মেরু রেখা নির্ধারণের এই সময়টিকে ঘড়ির কাঁটা দিয়ে হিসাব করে মাপকাঠি বানানো সমীচীন হবে না। কেননা শীত ও গরমের মৌসুমে সূর্যোদয়ের সময় প্রায় দেড় ঘন্টা পার্থক্য হয়ে যায়। জুন মাসে ৫ টা ১০ মিনিটে সূর্যোদয় হয়। আর জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে গিয়ে ৬ টা ৪৩ এ সূর্যোদয় হয়।
তাহলে আপনি কিভাবে বলবেন; ৯ টার পরে চাশতের ওয়াক্ত হয়! সব মৌসুমে ঘড়ির কাঁটা দিয়ে ৯ টা হিসাব করা কিকরে সম্ভব?

الفرق بين صلاة الإشراق وصلاة الضحى
صلاة الإشراق هي صلاة الضحى في أول وقتها، وليست صلاتين مختلفتين، وسميت كذلك لكونها تفعل عقب شروق الشمس وارتفاعها.

قال الشيخ ابن باز:

"صلاة الإشراق هي صلاة الضحى في أول وقتها." (مجموع فتاوى الشيخ ابن باز 11 / 401)

متى يبدأ وقت صلاة الضحى؟
وقت صلاة الضحى من طلوع الشمس وارتفاعها إلى قبيل وقت صلاة الظهر.

وقدّره الشيخ ابن عثيمين بأنه بعد شروق الشمس بربع ساعة إلى قبيل صلاة الظهر بعشر دقائق. (الشرح الممتع 4 / 122)

فكل هذا الوقت وقت لصلاة الضحى.

أفضل وقت لصلاة الضحى
والأفضل صلاتها بعد اشتداد حر الشمس لقول النبي صلى الله عليه وسلم: (صلاة الأوابين حين ترمض الفصال) رواه مسلم (748)

والفصال هي أولاد الإبل، ومعنى ترمض تشتد عليها الرمضاء وهي حرارة الشمس.

فتاوى الشيخ ابن باز (11/ 395)

وقدّر العلماء هذا بمضي ربع النهار أي نصف الوقت بين طلوع الشمس وصلاة الظهر.

انظر المجموع للنووي (4 / 36)، والموسوعة الفقهية الكويتية (27 / 224)

والله اعلم بالصواب