আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

ফেতনার আশংকা থাকলে আত্মীয়ের সঙ্গে কথা না বললে গুনাহ হবে কি?

প্রশ্নঃ ২৯৫৪৮. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ইসলামে আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন না করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আমার এক ভাই আছে। ছোটবেলা থেকেই খুনসুটি, মারামারি, ঝগড়া করতাম। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই আবার মিল হয়ে যেতাম। আস্তে আস্তে যখন বড় হলাম, তখন ও আমাকে খারাপ স্পর্শ করতে শুরু করল। তাও ভাই ভেবে তেমন কিছু একটা মনে করতাম না। কিন্তু একদিন অনেক বাড়াবাড়িই হয়ে গেল। আমার তখন মাসিক চলছিল। ব্যাগে করে প্যাড নিয়ে যাচ্ছিলাম। সে আমাকে জিজ্ঞাসা করল, ব্যাগে কী? আমি উত্তর উপেক্ষা করে ঘরে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ সে ব্যাগ নিয়ে টানাটানি শুরু করল। এমনকি এক পর্যায়ে সে আমার মাথায় ও গায়ে অনেক মারলো। এই ঘটনার পর থেকে আমি তার সাথে আর কোনো কথা বলি না, সেও বলে না।অতি প্রয়োজন হলেই বলি। প্রশ্নঃ এমতাবস্থায় তার সাথে কথা না বলার জন্যে আমার কি কোনো গুনাহ হবে? আর শুধু কথা না বললে কি আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করা হয়?,

১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

Dhaka

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


প্রিয় বোন, প্রশ্নের ধরণ থেকে অনুমিত হচ্ছে যে, উক্ত 'ভাই' আপনার আপন ভাই নয়। বরং সে গাইরে মাহরাম আত্মীয় যেমন চাচাত, খালাত, ফুফাত, মামাত বা এজাতীয় ভাই। আর এজাতীয় গাইরে মাহরাম আত্নীয় অন্য দশজন বেগানা পুরুষের মতোই। অর্থাৎ, এদের সাথে সব ধরণের দেখা সাক্ষাত ও কথাবার্তা নাজায়েয। পর্দা বজায় রেখে ও ফেতনা না থাকার শর্তে সাধারণ সামাজিক সম্পর্ক রাখা মুস্তাহাব। সুতরাং ফেতনার আশংকা থাকলে কোন নারী এমন আত্মীয়ের সঙ্গে কথা না বললে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী হিসাবে গণ্য হবে না।
পক্ষান্তরে যদি উক্ত 'ভাই' আপনার আপন ভাইও হয় তাহলেও এ সম্পর্কে শরীয়তের মুলনীতি হল, যদি তার সঙ্গে সম্পর্ক রাখলে আপনার দীনের ক্ষতি হয়,, আপনি গুনাহয় জড়িয়ে পড়তে পারেন তাহলে এমতাবস্থায় দীনের ক্ষতি থেকে আত্মরক্ষার উদ্দেশ্যে উক্ত আত্মীয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার অনুমতি আছে। যেমন ইবনু আব্দিল বার রহ. বলেন,
وأجمع العلماء على أنه لا يجوز للمسلم أن يهجر أخاه فوق ثلاث إلا أن يكون يخاف من مكالمته وصلته ما يفسد عليه دينه ، أو يولد به على نفسه مضرة في دينه أو دنياه ، فإن كان ذلك فقد رخص له في مجانبته وبعده ، ورب صرم [أي : مقاطعة وهجر] جميل خير من مخالطة مؤذية
আলেমগণ একমত হয়েছেন যে, কোনো মুসলিম ভাইয়ের সঙ্গে তিন দিনের বেশি কথা বন্ধ রাখা জায়েয নেই। তবে যদি কথা বলা কিংবা সম্পর্ক রক্ষার কারণে নিজের দীনদারি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার ভয় থাকে কিংবা দুনিয়া ও আখেরাতের ক্ষতির ভয় থাকে তাহলে সম্পর্ক ছিন্ন করার অনুমতি আছে। কেননা, অনেক সময় সম্পর্ক রক্ষার চাইতে দূরে থাকাটাই অধিক নিরাপদ হয়। (আততামহীদ ৬/১২৭)

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী
সিনিয়র মুহাদ্দিস, মাদরাসা দারুর রাশাদ, মিরপুর
খতীব, বাইতুল ফালাহ জামে মসজিদ, মিরপুর

প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

২৮৯০৭

স্ত্রীর নামের সঙ্গে স্বামীর নাম-পদবি যোগ করা যাবে কি?


৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

আশুগঞ্জ

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

৩৪১৮৯

গুরুজনদের কথায় আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার অনুমতি আছে কি?


২২ জুন, ২০২৩

দাউদকান্দি

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

২৮০৭৩

চাচা-চাচিকে আব্বু-আম্মু বলে ডাকা যাবে কি?


১৭ জানুয়ারী, ২০২৩

Assam 781316

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

৩৪৮৫১

মা-বাবা যদি সুন্নত-নফল রোজা পালনে বাধা দেয়...


১৪ জুন, ২০২৩

Bogura, Bangladesh

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy