আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

ব্যভিচার থেকে তাওবা

প্রশ্নঃ ২৯২২৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমি যিনা গুনাহ করে ফেলেছি এখন কি আমি তওবা করলে আমার গুনাহ মাফ হবে? আর আমি ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়তাম নেক আমল করতাম। সব সময় এখন আমি যিনা গুনাহ করার পর মনের দিক দিয়ে অনেক হতাশ হয়ে পড়েছি। আমার পিছনের সব নেক আমল কি যিনার গুনাহ কারনে নষ্ট হয়ে যাবে?

১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
সিলেট

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


আলেমগণ বলেছেন, প্রত্যেক গুনাহ থেকে তাওবা করা ওয়াজিব। যদি গুনাহটি বান্দার মাঝে ও আল্লাহ্‌র মাঝে হয়ে থাকে; কোন মানুষের হক্বের সাথে সম্পৃক্ত না হয় তাহলে সে তাওবার জন্য শর্ত তিনটি: ১। গুনাহ ত্যাগ করা। ২। কৃত কর্মের জন্য অনুতপ্ত হওয়া। ৩। সে গুনাহতে পুনরায় লিপ্ত না হওয়ার দৃঢ় সিদ্ধান্ত নেওয়া। যদি এ তিনটি শর্তের কোন একটি না পাওয়া যায় তাহলে সে তাওবা শুদ্ধ হবে না।
আর যদি গুনাহটি মানুষের সাথে সম্পৃক্ত হয় তাহলে সে তাওবার জন্য শর্ত চারটি: উল্লেখিত তিনটি এবং হক্বদারের হক্ব থেকে নিজেকে মুক্ত করা।
প্রিয় প্রশ্নকারী দীনী ভাই, আল্লাহ তাআলার অশেষ রহমত যে, তিনি তাওবার দরজা খোলা রেখেছেন। সুতরাং যদি আপনার ক্ষেত্রে এ শর্তগুলো পূর্ণ হয় তাহলে আল্লাহ্‌র ইচ্ছায় আপনার তাওবা কবুল হওয়ার উপযোগী। এরপরে তাওবা কবুল হয় নি কিংবা অতীতের সকল আমল নষ্ট হয়ে গেছে কিনা; এমন ওয়াসওয়াসা বা খুতখুত রাখা উচিত হবে না। কেননা এটি শয়তানের পক্ষ থেকে এবং আল্লাহ্‌ ও তাঁর রাসূল যেভাবে উল্লেখ করেছেন যে, একনিষ্ঠ ও বিশ্বস্ত তওবাকারীর তাওবা কবুল হয়— এ ধরণের খুতখুত এর বিপরীত। আল্লাহ বলেন,
إِنَّمَا التَّوْبَةُ عَلَى اللَّهِ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السُّوءَ بِجَهَالَةٍ ثُمَّ يَتُوبُونَ مِنْ قَرِيبٍ فَأُولَئِكَ يَتُوبُ اللَّهُ عَلَيْهِمْ وَكَانَ اللَّهُ عَلِيماً حَكِيماً
নিশ্চয় তাওবা কবূল করা আল্লাহর জিম্মায় তাদের জন্য, যারা অজ্ঞতাবশত মন্দ কাজ করে। তারপর শীঘ্রই তাওবা করে। অতঃপর আল্লাহ এদের তাওবা কবুল করবেন আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়। (সূরা নিসা ১৭)
হাদিস শরিফে এসেছে, মা’ইয ইবনু মালিক রাযি. রাসুলুল্লাহ ﷺ-এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে পবিত্র করুন। তখন রাসুলুল্লাহ ﷺ বললেন,
وَيْحَكَ، ارْجِعْ فَاسْتَغْفِرِ اللَّهَ وَتُبْ إلَيْهِ
দুর্ভাগা! ফিরে চলে যাও এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর ও তাওবা কর। (সহিহ মুসলিম ১৬৯৫)
উক্ত হাদিসের ব্যাখ্যায় ইমাম নববী রহ. বলেন,
وَفِي هَذَا الْحَدِيث دَلِيل عَلَى سُقُوط إِثْم الْمَعَاصِي الْكَبَائِر بِالتَّوْبَةِ , وَهُوَ بِإِجْمَاعِ الْمُسْلِمِينَ
তাওবার মাধ্যমে কবিরা গুনাহয় লিপ্ত ব্যক্তির গুনাহ অকৃতকার্য হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে মুসলিম উম্মাহর ঐক্যমত রয়েছে। (শরহু মুসলিম ১১/১৯৯)

والله اعلم بالصواب

শাইখ উমায়ের কোব্বাদী সিনিয়র মুহাদ্দিস, মাদরাসা দারুর রাশাদ, মিরপুর খতীব, বাইতুল ফালাহ জামে মসজিদ, মিরপুর
প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন