তিন তালাকের বিধান
প্রশ্নঃ ২৭১০৬. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, কেউ যদি তার স্ত্রীকে তিন তালাক দেয় তার হুকুম কি?
২৮ ডিসেম্বর, ২০২২
Dammam
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
প্রিয় দীনী ভাই, ইসলামী শরীয়তে তালাক অত্যন্ত অপছন্দনীয় একটি বিষয়। তা ছাড়া ইসলামে স্ত্রীকে সর্তক ও সংশোধন করার বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। পর্যায়ক্রমে সেসব প্রয়োগ না করে প্রথমেই তালাক দেয়া উচিত নয়। উপরন্তু বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য এক তালাকই যথেষ্ট। তাই শরীয়ত কোনো ক্ষেত্রেই তিন তালাক দেয়া জরুরী সাব্যস্ত করে নি। বলাবাহুল্য,এর কারণে সামাজিক ও পারিবারিক অনেক জটিলতার সৃষ্টি হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে যা থেকে উত্তরণের কোনো পথ থাকে না।
যাই হোক, তথাপি কোনো ব্যক্তি যদি তার স্ত্রীকে তিন তালাক দেয় তাহলে--
১. স্বামী-স্ত্রী একে অপরের জন্য হারাম হয়ে যায়। তথা তালাকের পর থেকে তাদের পরস্পরের জন্য দেখা-সাক্ষাৎ, মেলা-মেশা তথা স্বামী-স্ত্রী সুলভ সকল যাবতীয় আচরণ নাজায়েয ও হারাম হয়ে যায়।
২. তখন স্ত্রীর ইদ্দত তথা তালাক পরবর্তী তিন মাসিক শেষ হওয়া পর্যন্ত, আর গর্ভবতী হলে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া পর্যন্ত তাকে খোর-পোষ দেয়া এবং মোহর আদায় না করে থাকলে মোহর আদায় করা স্বামীর ওপর ওয়াজিব।
৩. যেহেতু তিন তালাক প্রদানকারী এখন আর এই স্ত্রীর স্বামী নন সেহেতু স্ত্রীর জন্য করণীয় হল, দ্রুত এই স্বামীর সংসার থেকে চলে যাওয়া৷ এরপর যদি অন্য কোথাও স্ত্রীর বিয়ে হয়, ঘর-সংসার হয়৷ সেই স্বামী কোনো কারণে স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দেয় কিংবা মারা যায় তখন দ্বিতীয় স্বামীর তালাক বা মৃত্যুজনিত ইদ্দত পালনের পর নতুনভাবে মোহর নির্ধারণ করে শরীয়ত সম্মত পন্থায় প্রথম স্বামীর কাছে পুনরায় বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে৷ এ ছাড়া আর কোনো পথ নেই৷
আল্লাহ তাআলা বলেন,
فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا تَحِلُّ لَهُ مِن بَعْدُ حَتَّىٰ تَنكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ ۗ فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا أَن يَتَرَاجَعَا إِن ظَنَّا أَن يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ ۗ وَتِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ يُبَيِّنُهَا لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ
তারপর যদি সে স্ত্রীকে (তৃতীয়বার) তালাক দেয়া হয়, তবে সে স্ত্রী যে পর্যন্ত তাকে ছাড়া অপর কোন স্বামীর সাথে বিয়ে করে না নেবে, তার জন্য হালাল নয়। অতঃপর যদি দ্বিতীয় স্বামী তালাক দিয়ে দেয়, তাহলে তাদের উভয়ের জন্যই পরস্পরকে পুনরায় বিয়ে করাতে কোন পাপ নেই। যদি আল্লাহর হুকুম বজায় রাখার ইচ্ছা থাকে। আর এই হলো আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সীমা; যারা উপলব্ধি করে তাদের জন্য এসব বর্ণনা করা হয়। (সূরা বাকারা-২৩০)
والله اعلم بالصواب
শাইখ উমায়ের কোব্বাদী
সিনিয়র মুহাদ্দিস, মাদরাসা দারুর রাশাদ, মিরপুর
খতীব, বাইতুল ফালাহ জামে মসজিদ, মিরপুর
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
আল কুরআনুল কারীম
৪
হাদীস ও সুন্নাহ
৬
তাসাউফ-আত্মশুদ্ধি । ইসলাহী পরামর্শ
৩
শরীআত সম্পর্কিত
১৪
ফিতনাসমুহ; বিবরণ - করণীয়
২
আখিরাত - মৃত্যুর পরে
৩
ঈমান বিধ্বংসী কথা ও কাজ
৬
ফিরাকে বাতিলা - ভ্রান্ত দল ও মত
২
পবিত্রতা অর্জন
৮
নামাযের অধ্যায়
১৯
যাকাত - সদাকাহ
৫
রোযার অধ্যায়
৬
হজ্ব - ওমরাহ
২
কাফন দাফন - জানাযা
৫
কসম - মান্নত
১
কুরবানী - যবেহ - আকীকা
৪
বিবাহ শাদী
৮
মীরাছ-উত্তরাধিকার
২
লেনদেন - ব্যবসা - চাকুরী
৯
আধুনিক মাসায়েল
৬
দন্ড বিধি
২
দাওয়াত ও জিহাদ
৩
ইতিহাস ও ঐতিহ্য
৬
সীরাতুন নবী সাঃ । নবীজীর জীবনচরিত
৩
সাহাবা ও তাবেঈন
৩
ফাযায়েল ও মানাকেব
৩
কিতাব - পত্রিকা ও লেখক
৩
পরিবার - সামাজিকতা
৭
মহিলা অঙ্গন
২
আখলাক-চরিত্র
২
আদব- শিষ্টাচার
১২
রোগ-ব্যধি। চিকিৎসা
২
দোয়া - জিকির
২
নাম। শব্দ জ্ঞান
৩
নির্বাচিত
২
সাম্প্রতিক
১
বিবিধ মাসআলা
১