আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

স্বামী-স্ত্রীর কোন একজন পরকীয়ায় লিপ্ত হলে অপর জনের করণীয় কি?

প্রশ্নঃ ২৩৫৬৭. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, কোন ইমাম সাহেবের স্ত্রী পরকিয়া প্রেম করে ধরা পরলে,তার বিধান কি হবে?এবং ঐ ইমাম সাহেবের পিছনে ইকতেদা করার বিধান কি হবে?দলিল ভিত্তিক আলোচনা এবং তারাতাড়ি হলে খুব ভালো হয়।,

১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

ঠাকুরগাঁও

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


পরকীয়া যেই করুন নি:সন্দেহে দাম্পত্য জীবন, সন্তান-সন্ততির ভবিষ্যৎ এবং সামাজিক সুস্থতা ও স্থিতিশীলতার বিরাট হুমকি। এটি নিজের হালাল স্বামী /স্ত্রীর সাথে আমানতের খেয়ানত, প্রতারণা ও বিশ্বাসঘাতকতার শামিল এবং আল্লাহ তাআলা ক্রোধের কারণ।

কোন স্বামী কিংবা স্ত্রী এই ফিতনায় জড়িয়ে গেলে অপরের করণীয় হল:
১. কুরআন-হাদিসের আলোকে তাকে পরকীয়া, অবৈধ প্রেমপ্রীতি ও যিনাব্যাভিচারের ভয়াবহতা, ইসলামী আইন অনুযায়ী দুনিয়াতে এর কঠিন শাস্তি, আখিরাতের আযাব, আল্লাহর অসন্তুষ্টি ইত্যাদি বিষয়গুলো বুঝানো। এ বিষয়ে কুরআন-হাদীসে পর্যাপ্ত ব্ক্তব্য রয়েছে। তাই এ সংক্রান্ত যে কোন ভালো ইসলামী বই বা ইসলামী আলোচনার ভিডিও কাজে লাগানো যেতে পারে।
২. পরকীয় লিপ্ত ব্যক্তির হেদায়েতের জন্য দয়াময় আল্লাহর নিকট দুআ করা।
৩. স্বামী-স্ত্রীর মাঝে অপছন্দীয় কোন আচার-আচরণ থাকলে তা পরিবর্তন করা এবং যথাসাধ্য তাকে নিজের দিকে আকৃষ্ট করার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করা। দাম্পত্য জীবনে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু অনেক স্বামী-স্ত্রী এ বিষয়ে অজ্ঞতা বা অবহেলার কারণে সময়ের ব্যবধানে তারা দাম্পত্য জীবনের উষ্ণতা ও আবেদন হারায়। ফলে দুজনের মাঝে দূরত্ব সৃষ্টি হয় এবং অবশেষে ঈমানী দূর্বলতা, কুপ্রবৃত্তির তাড়না এবং শয়তানের কুমন্ত্রণায় তারা ভিন্ন পথ খুঁজা শুরু করে।
৪. স্বামী পরকীয়ায় লিপ্ত হলে প্রয়োজনে স্ত্রীর পক্ষ থেকে স্বামীকে ‌আরেকটি বিয়ে করার সম্মতি দেয়া।
উল্লেখ্য যে, আল্লাহর দেয়া এ বিধানটির ব্যাপারে অনেক স্ত্রীর কঠোর ও ভয়াবহ আক্রমণাত্মক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে অনেক দুর্বল ইমানদার স্বামী অবৈধ পথের দিকে পা বাড়ায়। এ ক্ষেত্রে স্ত্রীও এই অন্যায়ের জন্য দায়ী হিসেবে বিবেচিত হবে।
৫. সম্ভব হলে সাক্ষ্য-প্রমাণ সাপেক্ষে পারিবারিক বা সামাজিক সালিশ অথবা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
৬. এগুলোর মাধ্যমে কোন উপকার না হলে হয় স্ত্রীক ধৈর্য ধারণ করে পরকীয়ায় লিপ্ত পক্ষকে এ পথ থেকে ফিরানোর যাবতীয় প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে হবে। অন্যথায় সবশেষে তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ করে পৃথক হয়ে যেতে হবে।
এই সবগুলো কাজই তারা নিজেরা কিংবা পারিবারিকভাবে সমাধান করবে। অন্যদের এখানে অযাচিত হস্তক্ষেপ করার প্রয়োজন নেই । তবে হ্যাঁ! তারা বিভিন্ন উত্তম এবং কল্যাণকর পরামর্শ দিতে পারেন।

আর স্বামী-স্ত্রী একে অণ্যের হকের ব্যাপারে সতর্ক ও সচেতন থকার পরও যদি অপরজন পরকীয়ায় লিপ্ত হয় তাহলে তার দায়ভার তার নিজেরই। অন্যের ওপর দার দায় চাপানো যাবে না। কাজেই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যদি ওই ইমাম সাহেবের কোনো অণ্যায় না থাকে তাহলে তার স্ত্রীর অপরাধের কারণে তিনি দোষী সাব্যস্ত হবে না। এবং এর কারণে তার ইমামতিতে নামাজ আদায়েও কোনো সমস্যা হবে না। বরং অন্যদের উচিত হবে এই সঙ্কটাপন্ন সময়ে ইমাম সাহেবের পাশে দাঁড়িয়ে তাকে এই বিপদ থেকে উত্তরণের পথ বাতলে দেওয়া। আল্লাহ তায়ালা আমাদের তাওফিক দান করুন।

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
শিক্ষক, জামিয়া ইসলামিয়া ইবরাহিমিয়া দারুল উলুম মেরাজনগর, কদমতলী, ঢাকা।

প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

২৪৩৯৭

হস্তমৈথুন থেকে কিভাবে বাঁচবো?


১৫ নভেম্বর, ২০২২

মুজিবনগর

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

২৫২০৭

যে মেয়ে তার প্রেমিককে স্বামী হিসেবে পাওয়ার আমল জানতে চেয়েছে; তার প্রতি পরামর্শ


১৬ নভেম্বর, ২০২২

ঢাকা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

২৫৫৭৯

যে মেয়ে গুনাহয় আসক্ত; তার প্রতি নসিহত


২১ নভেম্বর, ২০২২

দিনাজপুর ৫২০০

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy