প্রশ্নঃ ২৩৫০০. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, মুহতারাম রিযিক ব্যপারটা নিয়ে একটু বিভ্রান্তির মধ্যে আছি। দয়া করে আমাকে একটু বুঝিয়ে দিন।আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আমাকে এখন অনেক ভালো রেখেছেন। কোনো কিছুর কমতি রাখেননি তিনি।এখন কিছু মানুষ বলছেন যে এই আরাম বেশিদিন থাকবে না। সামনে কঠিন দুর্ভিক্ষের দিন আসতেছে তাই এখন থেকে সঞ্চয় করো বেশি বেশি আর কৃষি কাজ, হাস মুরগী পালা শিখো যেনো দুর্ভিক্ষের সময় নিজের টা নিজে করে খেতে পারো।শহরে থেকে এগুলো করা কঠিন আবার নিজস্ব কোনো জমি জমাও আমার নেই। এগুলো চিন্তা করে মানসিক পেরেশানিতে আছি।এখন জানতে চাচ্ছি যে,আল্লাহ আমাকে এখন এতো ভালো রেখেছেন। দুর্ভিক্ষের সময় ও তিনি আমাকে না খাইয়ে রাখবেন না এ চিন্তা করে নিশ্চিন্ত থাকবো নাকি জমি জমা চাষ বাসের কাজ খুজবো? ভবিষ্যতে আমার রিযিক কমে যাবে এই ভয় টি কি শয়তানের তরফ থেকে আসতেছে না? আমার করণীয় কি?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হওয়া আল্লাহ তায়ালা খুবই অপছন্দ করেন।
মুসলমান সর্বদা সচেতন জীবন যাপন করবে। উদাসীনতা মুসলমানের বৈশিষ্ট্য নয়।
আশা ও ভয়ের মাঝে আল্লাহর বন্দেগী হতে হয়।
সব মানুষের রিযিক একই পন্থায় কখনোই হয়নি। হবেও না। আল্লাহ তায়ালার নিজাম হলো, কিছু মানুষ চাষাবাদ করবে, কিছু মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্য করবে, কিছু মানুষ কায়িক পরিশ্রম করবে। আর সকলকেই আল্লাহ তায়ালা যার যার তকদির অনুযায়ী রিজিক পৌঁছাবেন।
মক্কার পাথরমায় জমিনে চাষাবাদ হয় না। অথচ সারা দুনিয়ার সকল রিযিক সেখানে আল্লাহ তায়ালা পর্যাপ্ত পরিমাণে পৌঁছে দিচ্ছেন। এটাই আল্লাহ তায়ালার কুদরতের খেলা।
সুতরাং আপনার সুযোগ থাকলে চাষাবাদের জমিন সংগ্রহ করা ও লোক লাগিয়ে চাষাবাদে মনোযোগী হওয়া নিষেধ নয়। তবে আপনি আপনার হালাল উপায়ে রিজিক অন্বেষণ ছেড়ে দিয়ে ভিন্ন পথ গ্রহণ করার কোন অর্থ হয় না। হালাল কামাই করতে থাকুন। সাধ্য অনুযায়ী সদাকাহ করতে থাকুন। ভবিষ্যৎ ছেলে মেয়েদের জন্য বসবাসের স্থায়ী ঠিকানা ও জীবন যাপনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ، أَخْبَرَنِي أَبِي، عَنِ الزُّبَيْرِ بْنِ عُبَيْدٍ، عَنْ نَافِعٍ، قَالَ كُنْتُ أُجَهِّزُ إِلَى الشَّامِ وَإِلَى مِصْرَ فَجَهَّزْتُ إِلَى الْعِرَاقِ فَأَتَيْتُ عَائِشَةَ أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ فَقُلْتُ لَهَا يَا أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ كُنْتُ أُجَهِّزُ إِلَى الشَّامِ فَجَهَّزْتُ إِلَى الْعِرَاقِ . فَقَالَتْ لاَ تَفْعَلْ مَالَكَ وَلِمَتْجَرِكَ فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَقُولُ " إِذَا سَبَّبَ اللَّهُ لأَحَدِكُمْ رِزْقًا مِنْ وَجْهٍ فَلاَ يَدَعْهُ حَتَّى يَتَغَيَّرَ لَهُ أَوْ يَتَنَكَّرَ لَهُ " .
২১৪৮। মুহাম্মদ ইবন ইয়াহইয়া (র)....নাফি' (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি সিরিয়া ও মিসরে ব্যবসা পরিচালনা করতাম। একবার আমি ইরাকে মাল পাঠালাম। এরপর আমি উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রা)-এর কাছে এসে বললামঃ হে উম্মুল মু'মিনীন! আমি আগে সিরিয়ায় ব্যবসা করতাম। কিন্তু এবার ইরাকে মাল পাঠিয়েছি। তিনি বললেনঃ এমন করোনা। তোমার ব্যবসা কেন্দ্রের কি হল? আমি রাসূলুল্লাহ (সা) কে বলতে শুনেছিঃ আল্লাহ যখন তোমাদের কারো জন্য কোন স্থান থেকে রিযক এর ব্যবস্থা করে দেন, তখন সে যেন ঐ স্থান পরিত্যাগ না করে, যতক্ষণ না তা তার জন্য প্রতিকূল হয় অথবা তা তার জন্য অপছন্দনীয় হয়।
—সুনানে ইবনে মাজা', ইফা নং ২১৪৮
والله اعلم بالصواب
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন