আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ২৩৩৫৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, নারীদের জন্য ইসলাম অনুমোদিত পেশা কী কী? (অবশ্যই পরিপূর্ণ পর্দার সহিত)

১০ অক্টোবর, ২০২২
ঝালকাঠি

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم




প্রয়োজন, অপরাগতা কিংবা ঠেকায় পড়ার পরিস্থিতি ছাড়া সাধারণ অবস্থায় ইসলামের দৃষ্টিতে ঘরেই হলো নারীদের কর্মক্ষেত্র। তাই তো নারীদেরকে ঘরে অবস্থান করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শরীয়ত তাদের ওপর এমন কোনো দায়িত্ব অর্পণ করেনি, যার ফলে তাদের ঘরের বাইরে গিয়ে উপার্জন করতে হবে।পর্দার বিষয় তো পরের কথা! । আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى
‘আর তোমরা স্বগৃহে অবস্থান করবে এবং জাহিলিয়াতযুগের মত নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না।’(সূরা আহযাব ৩৩)

নারীর ঘরে থাকার বাধ্যকতা সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ ﷺ ইরশাদ করেন,
الْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ ، وَإِنَّهَا إِذَا خَرَجَتِ اسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ ، وَإِنَّهَا لا تَكُونُ أَقْرَبَ إِلَى اللَّهِ مِنْهَا فِي قَعْرِ بَيْتِهَا
নারী সুরক্ষিত সম্পদ। যখন সে ঘর থেকে বের হয় শয়তান তার দিকে উঁকিঝুঁকি দিতে থাকে। আর সে আল্লাহ তাআলার সবচে’ নিকটতম তখন হয় যখন সে নিজের ঘরের অন্দর মহলে অবস্থান করে।।’ (তাবরানী ২৯৭৪)

এজন্যই তো শরিয়ত নারীকে মসজিদে যাওয়ার নির্দেশ করেনি। বরং রাসূলুল্লাহ ﷺ তাদের সালাতের বিষয়ে ইরশাদ করে বলেন, وَبُيُوتُهُنَّ خَيْرٌ لَهُنَّ ‘তাদের জন্য তাদের ঘর উত্তম।’ (আবু দাউদ ৫৬৭)

তবে একান্ত বাধ্য হয়ে যদি কোনো নারী উপার্জনের খাতিরে বাইতে যেতে হয় তবে শরীয়ত তারও অবকাশ রেখেছে। তবে তার জন্য কিছু নিয়ম ও শর্ত রয়েছে। নিয়ম ও শর্তগুলো মেনে চলেই কেবল নারীর জন্য ঘর থেকে বের হওয়া জায়েয হবে; অন্যথায় নয়। সেগুলো হলো,

১. যদি সত্যিকারার্থেই তার উপার্জনের প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ তার জীবিকা নির্বাহের অন্যকোনো মাহরাম পুরুষ না থাকে।
২. চাকরিটা তার দৈহিক, মানসিক স্বভাব ও রুচির সঙ্গে সামন্জস্যশীল হতে হবে। যেমন, ডাক্তারি, নার্সিং, শিক্ষা, সেলাই কিংবা এ জাতীয় পেশা হতে হবে।
৩. কর্মক্ষেত্রে পর্দার পরিপূর্ণ পরিবেশ থাকতে হবে। অন্যথায় জায়েয হবে না।
৪. চাকরির কারণে যাতে (মাহরাম ছাড়া) পরপুরুষের সঙ্গে সফর করতে না হয়।
৫. কর্মক্ষেত্রে আসা-যাওয়ার পথে যাতে কোন হারাম কাজ করতে না হয়। যেমন, ড্রাইভারের সঙ্গে একাকী যাওয়া, পারফিউম ব্যবহার করা ইত্যাদি।
৬. নারীর প্রধান কাজ ও দায়িত্ব হচ্ছে স্বামীর খেদমত করা, তার সন্তুষ্টি অন্বেষণ করা ও মাতৃত্বের দায়িত্ব পালন করা। যদি চাকরি করতে গিয়ে এসব দায়িত্ব পালনে ব্যাপক অসুবিধা হয় তাহলে তার জন্য চাকরি করা জায়েয হবে না।
৭. অভিভাবকের অনুমতি।
(ফাতাওয়াল মারআতিল মুসলিমাহ ২/৯৮১ ফিকহুন নাওয়াযিল ৩/৩৫৯)

স্বামী যদি স্ত্রীকে চাকরির অনুমতি না দেন, তাহলে ওই স্ত্রী চাকরি করতে পারবেন না। এ ক্ষেত্রে চাকরির অনুমতি না দেওয়া স্বামীর জন্য জায়েজ রয়েছে। স্বামীর অনুমতি ছাড়া স্ত্রী চাকরি করতে পারবেন না, এটি তার জন্য জায়েজ নেই। এই কাজটি স্ত্রী করলে তিনি গুনাহগার হবেন।

والله اعلم بالصواب

মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি শিক্ষক, জামিয়া ইসলামিয়া ইবরাহিমিয়া দারুল উলুম মেরাজনগর, কদমতলী, ঢাকা।

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন