খেলায় মুসলিম দেশকে সার্পোট করা!!
প্রশ্নঃ ১৯৪৩৬. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, প্রশ্নটা খেলাধুলা বিষয়ক। আমাদের সমাজে এগুলো মহামারী আকার ধারণ করে। বিশেষ করে ফুটবল কে কেন্দ্র করে। প্রশ্নটা এরকম যে এইসব বিধর্মী দল, বেশিরভাগ ইহুদি খ্রিস্টান, খেলাধুলা ভালোবাসার জন্য তাদের সাপোর্ট করার বিষয়ে কুরআন সুন্নাহর নির্দেশনা কি? বিষয়টা শুধু খেলার সাথেই সম্পৃক্ত নয়, যখন কোন খেলোয়াড় আঘাত পায় তখন ভক্তদের তো সেই করুন অবস্থা হয়ে যায়, খেলোয়াড় কান্নাকাটি করলে তারাও এরূপ করে। যেটা নিছক আবেগ নয় এটার সাথে ভালোবাসা জড়িয়ে আছে। তো ইহুদি খ্রিস্টান দের প্রতি এই ভালোবাসা কি বৈধ?? তাদের নিয়ে তো অনেক মারামারি, বিচ্ছেদ, পারিবারিক সম্পর্ক নষ্ট হয়।অনেকেই তাদের ভালো কর্ম গুলোর কথা বলে, ঈমান বিহীন সৎকর্মের কোন মূল্য আছে?? এইসব বিষয়ে যুবক ভাইদের প্রতি নসিহত কি হবে?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
প্রথমত বিষয় হলো- এই সমস্ত খেলাধুলা সম্পূর্ণ রূপে জুয়ার অন্তর্ভুক্ত। জুয়া নাজায়েজ ও হারাম হওয়া সম্পর্কে কুরআনুল কারীমে সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত রয়েছে। আর জুয়ার মত এমন নাজায়েজ ও হারাম কাজকে যারা সাপোর্ট করবে, যারা এই জুয়ায় অংশগ্রহণ করেছে তাদেরকে মোহাব্বত করবে, তাদের পরাজয়ে দুঃখিত হবে, তাদের জয়ে উল্লসিত হবে, এটা কেমন জানি জুয়ার মত হারাম কাজকেই বাস্তবায়ন করে খুশি হওয়ারই নামান্তর। আর আল্লাহর হুকুম কে অমান্য করে নাজায়েজ ও হারাম কাজকে বাস্তবায়ন করে উল্লাসিত হওয়া ঈমান ভঙ্গের কারণ। এমনিভাবে এই সমস্ত অমুসলিমদের জন্য হৃদয়ে ভালোবাসা পোষণ করা, তাদের জন্য টাকা-পয়সা খরচ করে তাদের প্রতিকৃতির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা, তাদের পোশাকে নিজেকে সজ্জিত করা, তাদের মত করে চুল কাটা ইত্যাদি ইত্যাদি যেগুলো আমাদের সমাজে করা হয়ে থাকে এগুলোও ঈমান ভঙ্গের কারণ ।আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন-
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَتَّخِذُوا الۡیَہُوۡدَ وَالنَّصٰرٰۤی اَوۡلِیَآءَ ۘؔ بَعۡضُہُمۡ اَوۡلِیَآءُ بَعۡضٍ ؕ وَمَنۡ یَّتَوَلَّہُمۡ مِّنۡکُمۡ فَاِنَّہٗ مِنۡہُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ لَا یَہۡدِی الۡقَوۡمَ الظّٰلِمِیۡنَ
হে মু’মিনগণ! তোমরা ইয়াহুদী ও খ্রিস্টানদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ কর না, তারা পরস্পর পরস্পরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে কেউ তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করলে সে তাদেরই একজন হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ জালিম সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালিত করেন না। —আল মায়িদাহ - ৫১
এমনিভাবে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম ইরশাদ করেন-
من تشبه بقوم فهو منهم
যে ব্যক্তি যে জাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করল সে তাহাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে।
সুতরাং খেলার নামে আন্তর্জাতিক এই জুয়াকে যারা সমর্থন করবে, এটাকে নিয়ে যারা সন্তুষ্ট থাকবে, যারা এই জুয়ার সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তি ও খেলোয়াড়দের সমর্থন করবে, তাদের সকলের জন্য এগুলো ঈমান ভঙ্গের কারণ হিসেবে গণ্য হতে পারে ।এছাড়াও আরও ভয়াবহ বিষয় হলো আন্তর্জাতিক জুয়ার মত এমন হারাম, নাজায়েজ ও গর্হিত কাজকে জনসাধারণ বর্তমানে কোন গুনাহের কাজ মনে করছে না, আর গুনাহকে গুনাহ মনে না করাও ঈমান ভঙ্গের আরেকটি কারণ। সুতরাং কোন মুসলমানের জন্য খেলার নামে এইসব জুয়ায় অংশগ্রহণকারী খেলোয়াড়ের সমর্থন করা বা তাদের সমর্থক হওয়া জায়েজ নয়। তারা যত ভালো কাজই করুক না কেন আল্লাহ তাআলার উপরে তাদের ঈমান না আনার কারণে তাদের সকল আমল বেকার হয়ে যাবে। সুতরাং কোন ব্যক্তি যদি আল্লাহতালা সাথে সম্পর্ক রাখতে চায় তাহলে তার জন্য এমন কোনো ব্যক্তির সাথে সম্পর্ক রাখার কোন সুযোগ নেই, যে ব্যক্তি আল্লাহ তা'আলার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। তাই এইসব খেলোয়াড়রা যত ভালো কাজই করুক না কেনো তাদেরকে সমর্থন করা বা খেলার নামে তাদের এসব জুয়াবাজি সমর্থন করা কোনো মুসলমানের জন্য কোনোভাবেই জায়েজ হবে না। বরং এগুলো কেউ যদি করে তাহলে তা তার ঈমান ভঙ্গের জন্য কারন হবে। আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে ঈমান বিধ্বংসী এমন গর্হিত কাজ হতে, এর সমর্থন করা হতে এবং এর সম্পৃক্ততা হতে হেফাজত করুন। সারা বিশ্বের সমস্ত মুসলিম উম্মাহকে, বিশেষত সকল মুসলিম যুবকদেরকে আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন শয়তান ও তার দোসরদের ঈমান বিধ্বংসী এই চক্রান্ত হতে হেফাজত করুন। আমীন
والله اعلم بالصواب
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন