আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

ঘরের জামাত কি মসজিদের জামাতের সমান?

প্রশ্নঃ ১৮৯৯০. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমাদের মসজিদ একটু দূরে হ‌ওয়ার কারনে আমার আব্বা আর আমি যদি বাড়িতেই জামাত আদায় করি,তাহলে কি আমরা পরিপূর্ণ জামাতের স‌ওয়াব পাবো। আর আমরা এভাবেই নামাজ পড়ার অভ্যস্ত হয়েছি। একটু বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।,

২১ জানুয়ারী, ২০২৫

মধুপুর

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


সম্মানিত প্রশ্নকারী!
ঘরে জামাত করলে যদিও জামাতের সাওয়াব পাওয়া যাবে কিন্তু মসজিদে নামাজ আদায়ের যেই ফজিলত সেই ফজিলত থেকে মাহরুম হতে হবে। সাথে সাথে মসজিদে যাতায়াতের প্রতি কদমে যেই সাওয়াবের কথা বর্ণিত আছে সেটা থেকেও মাহরুম হতে হবে। কাজেই একান্তু উজর এবং অসস্থতা ছাড়া মসজিদের জামাত পরিহার করা উচিত নয়। কেননা হাদিশ শরিফে হজরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেন,
: «صَلَاةُ الرَّجُلِ فِي بَيْتِهِ بِصَلَاةٍ وَصَلَاتُهُ فِي مَسْجِدِ الْقَبَائِلِ بِخَمْسٍ وَعِشْرِينَ صَلَاةً وَصَلَاتُهُ فِي الْمَسْجِدِ الَّذِي يجمع فِيهِ بخسمائة صَلَاةٍ وَصَلَاتُهُ فِي الْمَسْجِدِ الْأَقْصَى بِخَمْسِينَ أَلْفِ صَلَاةٍ وَصَلَاتُهُ فِي مَسْجِدِي بِخَمْسِينَ أَلْفِ صَلَاةٍ وَصلَاته فِي الْمَسْجِد الْحَرَام بِمِائَة ألف صَلَاة» . رَوَاهُ ابْن مَاجَه

কারো এক নামায নিজের ঘরে এক নামাযের সমান। আর পাঞ্জেগানা মসজিদে তার এক নামায পঁচিশ নামাযের সমান। আর তার এক নামায জুম'আর মসজিদে যা পড়া হয় পাঁচশত নামাযের সমান। আর তার এক নামায বাইতুল মুকাদ্দাস বা মসজিদে আকছায় পঞ্চাশ হাজার নামাযের সমান। আর তার এক নামায আমার এই মসজিদে পঞ্চাশ হাজার নামাযের সমান। আর তার এক নামায মসজিদে হারামে একলক্ষ নামাযের সমান।—ইবনে মাজাহ, মিশকাতুল মাসাবীহ হাদীস নং: ৭৫২
কাজেই ঘরে নামাজ না পড়ে বরং মসজিদের গিয়ে পড়ার চেষ্টা করা উচিত।

فتاوی عالمگیری :
"وإن صلى ‌بجماعة ‌في ‌البيت اختلف فيه المشايخ والصحيح أن للجماعة في البيت فضيلة وللجماعة في المسجد فضيلة أخرى فإذا صلى في البيت بجماعة فقد حاز فضيلة أدائها بالجماعة وترك الفضيلة الأخرى، هكذا قاله القاضي الإمام أبو علي النسفي، والصحيح أن أداءها بالجماعة
في المسجد أفضل وكذلك في المكتوبات." (كتاب الصلاة،الباب التاسع في النوافل،فصل في التراويح:1/ 116، ط:رشيدية)


হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻟﻘﺪ ﻫﻤﻤﺖ ﺃﻥ ﺁﻣﺮ ﺑﺎﻟﺼﻼﺓ ﻓﺘﻘﺎﻡ ﺛﻢ ﺁﻣﺮ ﺭﺟﻼ ﻓﻴﺼﻠﻲ ﺑﺎﻟﻨﺎﺱ ﺛﻢ ﺃﻧﻄﻠﻖ ﻣﻌﻲ ﺑﺮﺟﺎﻝ ﻣﻌﻬﻢ ﺣﺰﻡ ﻣﻦ ﺣﻄﺐ ﺇﻟﻰ ﻗﻮﻡ ﻻ ﻳﺸﻬﺪﻭﻥ ﺍﻟﺼﻼﺓ ﻓﺄﺣﺮﻕ ﻋﻠﻴﻬﻢ ﺑﻴﻮﺗﻬﻢ ﺑﺎﻟﻨﺎﺭ
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,আমার ইচ্ছা হয় যে, আমি কাউকে মসজিদের ইমাম নির্ধারন করে দেই যাতেকরে মসজিদে জামাত অনুষ্টিত হয়।অতঃপর অামি কিছু লোককে সাথে নিয়ে-যাদের সাথে লাকড়ি থাকবে- ঐ সমস্ত লোকদের বাড়িতে যাই, যারা জামাতে শরীক হয়নি।অতঃপর আগুন লাগিয়ে তাদের বাড়ীঘর-কে জ্বালিয়ে দেই। (সুনানু আবি-দাউদ-৫৪৮)

এরা ঐ সমস্ত লোক,যারা নিজ ঘরে নামায আদায় করে নিতো। অথচ রাসূলুল্লাহ সাঃ চাইতেন, তারা যেন মুসলমানদের সাথে মসজিদে এসে নামায পড়ে।

এ জন্য ইবনে মাসউদ রাযি বলতেন, ﻣﻦ ﺳﺮﻩ ﺃﻥ ﻳﻠﻘﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻏﺪﺍً ﻣﺴﻠﻤﺎً ﻓﻠﻴﺤﺎﻓﻆ ﻋﻠﻰ ﻫﺆﻻﺀ ﺍﻟﺼﻠﻮﺍﺕ ﺣﻴﺚ ﻳﻨﺎﺩﻯ ﺑﻬﻦ যে ব্যক্তি চাইবে যে, সে আগামিকাল আল্লাহর সাথে মুসলমান হিসেবে সাক্ষাত করুক, সে যেন ওই নামাযসমূহ যত্নসহকারে আদায় করে, যেগুলোর দিকে মুসলমানদের ডাকা হয়। অর্থাৎ যেখানে আযান হয় সে যেন ওই স্থানেই নামায পড়ে নেয়। অর্থাৎ মসজিদ।

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
সুতরাং কারো জন্য কাছে মসজিদ থাকাবস্থায় ঘরে নামায পড়া ঠিক হবে না। জামাতে পড়লেও মসজিদের জামাত এবং ঘরের জামাতের সাাওয়াব এক পর্যায়ের হবে না। তবে যদি মসজিদ বেশ দূরে হয় বা বিশেষ কোনো সমস্যা থাকে তাহলে ঘরে নামায পড়ার অবকাশ আছে।

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী মুহাম্মাদ রাশেদুল ইসলাম
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, মদিনা মুনাওয়ারা ৷

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

৩৩৭২৭

জামাতে নামাজের গুরুত্ব


২৪ মে, ২০২৩

Dhaka, Dhaka, Bangladesh

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি জাওয়াদ তাহের

৩২৬০৩

স্বামী ও স্ত্রী জামাতে নামায আদায় করতে পারবে কি?


৮ এপ্রিল, ২০২৩

RM৪৭+WC৫

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

১৪১৩৮

বিনা ওজরে মসজিদের জামাত ত্যাগ করা


১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

৭৮৭J+VHQ

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ ইসহাক মাহমুদ

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy