আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ১৮৭৩৭. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ফরয ওয়াজিব হারাম কাকে বলে? আর এগুলো চিনবো কি ভাবে,

২৪ মে, ২০২২

VX৬F+VRQ

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم




এগুলোর ব্যাপারে বিস্তারিত জানার জন্য ‘আহকামে জিন্দেগী’ পড়তে পারেন। আমাদের এপে দ্বীনের মৌলিক বিষয় নিয়ে লিখিত একাধিক কিতাব পাবেন। সবচে উত্তম হবে নিকটস্থ কোনো বিজ্ঞা আলেমের সাথে পরামর্শ করে দ্বীনের মৌলিক জ্ঞান অর্জন করার জন্য পড়াশুনা শুরু করতে পারেন।
নিম্নে কিছু পরিভাষার সংজ্ঞা তুলে ধরা হলো :
প্রথমে একটি কথা বুঝে নিতে হবে। সেটি হল, এসব পরিভাষা আল্লাহ ও রাসূল সাঃ নির্ধারিত করে যাননি। বরং এসব পরিভাষা কুরআন ও সুন্নাহ, ইজমা ও কিয়াস সম্পর্কে বিজ্ঞ মুজতাহিদগণ নির্ধারিত করেছেন।

ফুক্বাহায়ে কেরামের ইজমা ও কিয়াস ইসলামী শরীয়তে দলীল। যা এসব পরিভাষা সমস্ত উম্মত মেনে নেয়াই প্রমাণ করে।

যদি মুজতাহিদ ইমামগণ তথা মাযহাবের ইমামগণের ইজমা এবং কিয়াস দলীল না হয়, তাহলে পৃথিবীর কোন মুসলমান ইসলামী শরীয়তের কোন বিধানকে ফরজ সুন্নত, ওয়াজিব, মুস্তাহাব শব্দে ব্যক্ত করতে পারবে না। কারণ এসব পরিভাষা আল্লাহ তাআলাও বলেননি। বলেননি রাসূল সাঃ ও। এসবই ফুক্বাহায়ে কেরামের পরিভাষা। যা সমস্ত উম্মত এক বাক্যে মেনে নিয়েছে। যা প্রমাণ করে ফুক্বাহাদের কথা গ্রহণযোগ্য। পালনীয়। আল্লাহ তাআলাও পবিত্র কুরআনে আল্লাহ ও রাসুল সাঃ এর কথার পর ফুক্বাহায়ে কেরামের কথা মানার পরিস্কার নির্দেশ প্রদান করেছেন। ইরশাদ হচ্ছে-

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنكُمْ ۖ [٤:٥٩]

হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রসূলের এবং তোমাদের মধ্যকার বিজ্ঞ ব্যক্তি [মুজতাহিদ, ফক্বীহ] গণের। {সূরা নিসা-৫৯}

ফরজ কাকে বলে?

যে বিধানটি ক্বতয়ী তথা অকাট্য দলীল দ্বারা প্রমাণিত। তাকে ফরজ বলা হয়। অর্থাৎ যা আল্লাহর নির্দেশিত পালনীয় আমল হবার বিষয়ে বিন্দু পরিমাণ কোন সন্দেহ না থাকে। সেটি ফরজ।

যেমন নামায, রোযা, হজ্ব, যাকাত ইত্যাদি।

ফরজ অস্বিকারকারী কাফের।

فالفرض أعم منهما (من الشرط والركن) وهو ما قطع بلزومه، (الدر المختار، كتاب الصلاة، اركان الوضوء-1/94)

وهو بمعنى قولهم: ما لزم فعله بدليل قطعى، (البحر الرائق، كتاب الطهارة-1/24)

وكذا فى منحة الخالق على البحر الرائق-1/24)

فرضية: وهى ما لا يحتمل زيادة ولا نقصانا، ثبت بدليل لا شبهة فيه: (نور الأنوار-166)

ওয়াজিব কাকে বলে?

যা করার আদেশটি জন্নী দলীল তথা ফরজের তুলনায় দুর্বল দলীল দ্বারা প্রমাণিত।

واجب: وهو ما ثبت بدليل فيه شبهة، (قمر الأقمار حاشية نور الأنوار-166)

وأما الحنفية فيقولون……. والواجب، فهو ما ثبت بدليل ظنى فيه شبهة، (أصول الفقه الإسلامى-1/47)

ওয়াজিব অস্বিকারকারী গোমরা এবং ফাসিক হয়। কাফের হয় না।

সুন্নত কাকে বলে?

সুন্নতে মুআক্কাদা বলা হয়, যে আমলকে রাসূল সাঃ ইবাদত হিসেবে পাবন্দীর সাথে করেছেন। কখনো ওজর ছাড়া ছেড়ে দিয়েছেন বা নিজেতো ছাড়েননি কিন্তু যে ছেড়ে দিয়েছে তাকে ভর্ৎসনা করেননি। এরকম আমলকে সুন্নতে মুআক্কাদা বলা হয়। {আততাআরিফাতুল ফিক্বহিয়্যাহ-৩২৮, আলমুজিজ ফি উসুলিল ফিক্বহ-৪৩৯-৪০}

সুন্নতে মুআক্কাদা ওয়াজিবের মতই। অর্থাৎ ওয়াজিবের ব্যাপারে যেমন জবাবদিহী করতে হবে, তেমনি সুন্নতে মুআক্কাদার ক্ষেত্রে জবাবদিহী করতে হবে। তবে ওয়াজিব তরককারীর জন্য সুনিশ্চিত শাস্তি পেতে হবে, আর সুন্নতে মুআক্কাদা ছেড়ে দিলে কখনো মাফ পেয়েও যেতে পারে। তবে শাস্তিও পেতে পারে।

وحكمها كالواجب—- إلا أن تارك الواجب يعاقب وتاركها لا يعاقب- (التعريفات للجرجانى-138

ফরজ নামাযের আগে পরের সুন্নতে মুআক্কাদার অত্যধিক গুরুত্ব দেয়া উচিত। এ কারণেই ফুক্বাহায়ে কেরাম লিখেন যে, যদি কেউ সুন্নতকে হক মনে না করে এটাকে ছেড়ে দেয়, তাহলে এ কর্ম তাকে কুফরী পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারে।

رجل ترك سنن الصلاة ان لم ير السنن حقا فقد كفر، لأنه تركها استخفافا (رد المحتار-2/492، بدائع الصنائع- 1/644

তবে কেউ যদি সুন্নতকে সহীহতো মনে করে, কিন্তু অলসতা করে ছেড়ে দেয়। তাহলে সে গোনাহগার হবে।

وان رآها حقا فالصحيح أنه يأثم، لأنه جاء الوعيد بالترك، كذا فى محيط السرخسى، (الفتاوى الهندية-

আর সুন্নতে গায়রে মুআক্কাদা বলা হয় যা রাসূল সাঃ সর্বদা করতেন না। মাঝে মাঝে ছেড়ে দিতেন ওজর ছাড়াই।

وَاَلَّذِي ظَهَرَ لِلْعَبْدِ الضَّعِيفِ أَنَّ السُّنَّةَ مَا وَاظَبَ عَلَيْهِ النَّبِيُّ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -، لَكِنْ إنْ كَانَتْ لَا مَعَ التَّرْكِ فَهِيَ دَلِيلُ السُّنَّةِ الْمُؤَكَّدَةِ، وَإِنْ كَانَتْ مَعَ التَّرْكِ أَحْيَانًا فَهِيَ دَلِيلُ غَيْرِ الْمُؤَكَّدَةِ، (رد المحتار، كتاب الطهارة، اركان الوضوء-1/105)

وقال سنة الهدى هى التى واظب عليها النبى صلى الله عليه وسلم تعبدا أو ابتغاء مرضات الله تعالى مع الترك مرة أو مرتين بلا عذر، أو لم يترك أصلا ولكنه لم ينكر التارك، (قمر الأقمار حاشية نور الأنوار-167، وكذا فتح القدير، كتاب الطهارة-1/21، وكذا فى البحر الرائق، كتاب الطهارة، اركان الوضوء-1/132، 2/33، وفى اصول الفقه الإسلامى-1/86)

সুন্নত অস্বিকারকারী ফাসিক এবং গোনাহগার হয়। কিন্তু তাচ্ছিল্য করে অস্বিকার করলে কাফির হয়ে যায়।
হারামা : আর হারাম বলা হয় যার নিষিদ্ধতা অকাট্যভাবে প্রমাণিত। কোনোভাবেই তা করা যাবে না।

والله اعلم بالصواب
#আহলে হক মিডিয়া

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী মুহাম্মাদ রাশেদুল ইসলাম
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, মদিনা মুনাওয়ারা ৷

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

৪৪৯৬৭

কমিশনের ভিত্তিতে কালেকশন করার বিধান


১৬ নভেম্বর, ২০২৩

সিলেট

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

৩৫৪৮৪

প্রতিবেশীর আয় হারাম হলে


১০ জুলাই, ২০২৩

ঢাকা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি মোহাম্মদ আমীর হোসাইন

২৪০২৬

মোবাইলে কুরআন নিয়ে টয়লেটে যাওয়া


২৯ অক্টোবর, ২০২২

ঢাকা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

৩৪৮৭৭

ভ্রু প্লাক করার বিধান


১৬ জুন, ২০২৩

টঙ্গী

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি জাওয়াদ তাহের

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy