প্রশ্নঃ ১৪৪১৪. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমার আশেপাশের অনেক মানুষকে আল্লাহ অনেক ভাল ভাল নিয়ামত দান করেছেন।কিন্তু তাদের তুলনায় ধরতে গেলে আমাকে তিনি পর্যাপ্ত কিছুই দান করেন নি।না দিয়েছেন আমাকে সৌন্দর্য না দিয়েছেন কোনো গুণ। আমি অনেক পরিশ্রম করেও যা করতে পারি না, তারা তা আমার চেয়ে কম পরিশ্রম করেও আমার চেয়ে ভাল ফলাফল করে।সকলের চোখে আল্লাহ আমাকে গুনহীন ও করুণার পাত্রী করে রেখেছে। আমি তো তাদের চেয়ে বেশী আল্লাহর ইবাদত করি তারপরও আমার এমন দশা দেখে আমি প্রায়ই হতাশার সাগরে ডুবে যাই,তখন আমার মনে হয় তারা তো নামাজ রোজা না করেই আমার চেয়ে বেশী সাফল্য অর্জন করছে।তাইলে আমিও ছেড়ে দেই,এখন যেই খারাপ অবস্থায় রেখেছে এর চেয়ে আর খারাপ অবস্থা আর কি বা হতে পারে।এক্ষেত্রে আমার কী করা উচিত আপনিই বলুন?,
২ মার্চ, ২০২২
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সড়ক
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
প্রথমত আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন তার ইবাদত করার জন্য। যেক্ষেত্রে তিনি আমাদেরকে পরীক্ষা করবেন বা করেন।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে দুনিয়াতে যাকিছু দান করেন বা করবেন তার সবকিছুর ব্যাপারে আমাদেরকে জিজ্ঞাসা করবেন। যা দিবেন না তা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবেন না।
একজনকে অঢেল সম্পদ দেওয়া হয়েছে তাকে সম্পদ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। আরেকজনকে সামান্য সম্পদ দান করা হয়েছে, তাকে সেই অল্প সম্পদের ব্যাপারেই জিজ্ঞাসা করা হবে।
এ ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেন,
{وَلَوْ شَاءَ اللَّهُ لَجَعَلَكُمْ أُمَّةً وَاحِدَةً وَلَكِنْ لِيَبْلُوَكُمْ فِي مَا آتَاكُمْ} [المائدة: 48]
অর্থাৎ, আল্লাহ তাআলা চাইলে তোমাদেরকে এক উম্মত বানিয়ে দিতে পারতেন, কিন্তু তিনি তোমাদেরকে যা দিয়েছেন সেক্ষেত্রে তোমাদেরকে পরীক্ষা করবেন।
#কিন্তু এখানের পরীক্ষার প্রশ্ন একই রকম হবে না। তিনি কাউকে পরীক্ষা করবেন অঢেল দিয়ে আবার কাউকে পরীক্ষা করবেন বিপদে ফেলে, আর্থিক অসচ্ছলতা দিয়ে, শারীরীক অসৌন্দর্যতা দিয়ে।
এক্ষেত্রে মানুষের করণীয় কী হবে? দুই ধরণের পরীক্ষায় মানুষ কিভাবে পাশ করবে।
সেটাও আল্লাহ তাআলা বলে দিয়েছেন। তিনি দান করলে বান্দার কাজ হবে শুকরিয়া আদায় করা আর তিনি ছিনিয়ে নিলে বা কম দিলে বান্দার কাজ হবে ধৈর্য ধারণ করা।
কিন্তু মানুষ এর বিপরীতটা করে, তারা পেলে মনে করে তার যোগ্যতা বলে পেয়েছে আর হারালে মনে করে আল্লাহ তাআলা তার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে, তিনি তাকে লাঞ্চিত করেছেন।
আল্লাহ তাআলা এ বিষয়টিও কুরআনে তুলে ধরেছেন
{فَأَمَّا الْإِنْسَانُ إِذَا مَا ابْتَلَاهُ رَبُّهُ فَأَكْرَمَهُ وَنَعَّمَهُ فَيَقُولُ رَبِّي أَكْرَمَنِ (15) وَأَمَّا إِذَا مَا ابْتَلَاهُ فَقَدَرَ عَلَيْهِ رِزْقَهُ فَيَقُولُ رَبِّي أَهَانَنِ} [الفجر: 15، 16]
অর্থাৎ, আর আল্লাহ তাআলা যখন মানুষকে পরীক্ষা করেন, তাকে সম্মানিত করেন এবং অনেক নিয়ামত দান করেন; তখন সে বলে, আমার রব আমাকে সম্মানিত করেছেন। আর যখন তিনি তাকে পরীক্ষা করে রিজিক কমিয়ে দেন; তখন সে বলে আমার রব আমাকে লাঞ্চিত করেছেন।
#সুতরাং আমি যে অবস্থাতেই থাকি না কেন আল্লাহ তাআলা আমাকে পরীক্ষা করছেন। যদি নিয়ামতের মধ্যে থাকি তাহলে আমাকে শুকরিয়া আদায় করতে হবে। আর যদি বিপদাপদ বা সমস্যায় থাকি তাহলে ধৈর্য ধারণ করতে হবে। মানুষের জীবন এ দুই অবস্থার বাইরে নয়। সুতরাং মুমিন মুমিনা কখনো হতাশ হতে পারে না।
আপনি ভাবুন, আল্লাহ আপনাকে কী কী দিয়েছেন, প্রতিটা মূহূর্ত আপনি অক্সিজেন গ্রহণ করছেন, আপনার চারপাছে আপনার চাইতেও কঠিন অবস্থায় হাজারও মানুষকে পাবেন। বিভিন্ন অসুস্থতায় ভুগছে, জটিলতায় ভুগছে। তখন খুব সহজেই উপলব্ধী করতে পারবেন, আল্লাহ আপনাকে কতটুকু দান করেছেন। এজন্য হাদিসে এসেছে দুনিয়াবি দিক দিয়ে তোমরা নিজেদের নিম্নস্তরের মানুষের দিকে তাকাও। তাহলে মানুষের অন্তরে হতাশা করজ করবে না।
তাছাড়া সৌন্দর্য, মেধা এধরণের যে বিষয়গুলো আল্লাহপ্রদত্ত, সেগুলো নিয়ে হতাশ হওয়ার কোনো অর্থই নেই। এগুলো কি আমি আপনি নিজে নিয়ে এসেছি, তাহলে অপরেরটা দেখে কেন আমি হীনমন্যতায় ভুগি। প্রথমটা কথাটা আবার স্মরণ করুন, আল্লাহ তাআলা যাকে যতটুকু দান করেছেন তাকে ততটুকু সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবেন। আমাকে মেধা কম দিয়েছেন আমাকে কমই জিজ্ঞাসা করবেন। আরেকজনকে প্রখর মেধা দান করেছেন তাকে ঠিকই জিজ্ঞাসা করবেন, তার সেই প্রখর মেধা কোন কাজে লাগিয়েছে? সুতরাং হতাশ হবেন না। আল্লাহকে স্মরণ করুন, তাদের প্রতিটা নিয়ামতকে হৃদয় থেকে উপলব্ধি করার চেষ্টা করুন। দেখবেন, নিজেকে মনে হবে তার অনুগ্রহের সাগরে ভাসছেন।
আল্লাহ তাআলা তাওফিক দান করুন।
والله اعلم بالصواب
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, মদিনা মুনাওয়ারা ৷
মন্তব্য (০)
কোনো মন্তব্য নেই।
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
৩৮৪৮৯
মালাকুল মাউত কি একাই জান কবয করেন ?
২০ আগস্ট, ২০২৩
ওয়েস্ট বেঙ্গল ৭৩১২৪৫

উত্তর দিয়েছেনঃ মুসলিম বাংলা ইফতা বিভাগ
সাম্প্রতিক প্রশ্নোত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে