আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ১৪১৮১. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, . আমার জিজ্ঞাসা1• আমার এক বন্ধুর বন্ধু একটি মেয়ের সাথে সম্পর্ক ছিল, কিন্তু হঠাৎ মেয়ের টি পিতা অন্য জায়গায় তার বিবাহ দিলো, তার পর মিয়েটি একটি সন্তান হলো, কিছুদিন যাওয়ার পর সেই পুরনো ছেলেটি যার সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল তার সাথে হঠাৎ দেখা হল এমত অবস্থায় তারা একদিন ঠিক করে দুজন পালিয়ে গেল!এবং ছেলেটি বাইরে কাজে যাই মেটির একটি ভাড়া ঘরে রেখে দিয়ে, এখন তার প্রেমিক দুজন বিবাহ করার কথা বলছে , এদের বিবাহ জায়েজ হবে কী? দুজনে খুব সংশয়ে আছে কী হবে কারও কাছে বলতেও পারছে না লজ্জায়, দুজনার অবস্থা কী হবে?নামাজ পড়ছে কান্না কটিও করছে মেয়ে টা।সেই ছেলেটি প্রথম যার সঙ্গে বিবাহ হয়েছিল সে কিন্তু মেয়েটার ছাড়তে রাজী নয় মেয়েটাও তারকাছে যেতে রাজিনা । ছেলেটা তার ডিভোর্স দিচ্ছেনা যাতে মেয়েটা তার প্রেমিককে বিবাহ করতে না পারে, এখন কী হবে?দয়া করে জানালে সাইখ উপকৃত হবো।

২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
ওয়েস্ট বেঙ্গল ৭১১৩১৫

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم





এক পুরুষের বিবাহে থাকা স্ত্রী অপর পুরুষের জন্য নিষিদ্ধ।

বিবাহিতা নারীরা নিশ্চিত ও কার্যকরী পন্থায় তালাকপ্রাপ্তা/বিধবা হয়ে ইদ্দত পালনের আগে দ্বিতীয় কোন পুরুষের ঘরণী হতে পারবেনা। এটাই আল্লাহ তায়ালার ফয়সালা।

কোরআনে কারীমে ইরশাদ হয়েছে, এবং সব সধবা নারীরাও বিবাহের ক্ষেত্রে তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ। (সূরা নিসা, আয়াত-২৪)

কোন বিবাহিতা নারী যদি তার স্বামীর পক্ষ থেকে তালাকপ্রাপ্তা হন এবং তিন মাস (তিনটি পিরিয়ড) ইদ্দত পালন শেষ করেন শুধুমাত্র তাহলেই তিনি নতুন করে বিবাহের বৈধতা পাবেন।

এ ব্যাপারে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সুস্পষ্ট নির্দেশ, আর তালাকপ্রাপ্তা নারীরা নিজেদেরকে অপেক্ষায় রাখবে তিন হায়েজ পর্যন্ত। (সূরা বাকারা, আয়াত-২২৪)

বিবাহ যেহেতু আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক নির্দেশিত একটি ধর্মীয় রিচুয়াল। তাই তার নির্দেশের বিরুদ্ধে গিয়ে কিছু করলে সেই বিবাহ শুদ্ধ হিসেবে গন্য হবেনা।

যেমন, কোরআন হাদিসের বাইরে মনগড়া কোন পদ্ধতিতে নামাজ পড়লে নামাজ হবেনা। তেমনি বিবাহের ক্ষেত্রেও মুসলমানদের জন্য আল্লাহ কর্তৃক প্রদত্ত এই নির্দেশগুলো মানা জরুরী।

কেউ এর বিপরীত করলে তার বিবাহ অশুদ্ধ ও বাতিল বলেই গন্য হবে। ইসলামের সূচনালগ্ন থেকে বিগত প্রায় দেড় হাজার বছরে এ ব্যাপারে মুসলমানদের মধ্যে কোনো দ্বিমত নেই।

তালাক প্রদানের অধিকার আল্লাহ তায়ালা শুধুমাত্র পুরুষকেই দিয়েছেন। তবে কোন স্বামী যদি তার স্ত্রীকে কোন প্রেক্ষাপটে সচেতনভাবে তালাক গ্রহণের অধিকার প্রদান করেন তাহলে স্ত্রী নিজের ওপরে তালাক নিতে পারবেন।

কোরআনে কারীমে পুরুষদেরকে উদ্দেশ্য করে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন, তালাক (প্রথমত সর্বোচ্চ) দুইবার। (অর্থাৎ রজয়ী বা বায়েন তালাক দুয়ের বেশি হতে পারেনা। দুই তালাকের বেশি দিলে আর স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়ার সুযোগ বাকি থাকেনা)

এরপর ন্যায়সঙ্গতভাবে রাখো অথবা অনুগ্রহ সহকারেই বিদায় দাও। (অর্থাৎ ইচ্ছে হলে এরপরে পূর্ণ বিচ্ছেদকে গ্রহন করো।) সূরা বাকারা, আয়াত-২২৯।

এখন কারো যদি পূর্বের স্বামীর সঙ্গে শরীয়তসম্মতভাবে ছাড়াছাড়ি না হয়ে থাকে, তাহলে কোনভাবেই এ বিয়ে বৈধ নয়। তবে এর জন্য দুটি বিষয় নিশ্চিত করতে হবে।

প্রথম বিষয় হলো, প্রথম স্বামীর ছাড়াছাড়িটা ইসলামী শরীয়ত সম্মতভাবে হয়েছে কি-না। আর তালাকনামা পাঠানো এবং সেটি ইসলামী শরীয়ত সম্মতভাবে বিয়ে বিচ্ছেদ হওয়া পর্যন্ত পৌঁছেছে কি-না, এই বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে।

আররেকটি হলো, যদি শরীয়তসম্মতভাবে ছাড়াছাড়ি বা বিচ্ছেদ হয়ে থাকে, তবুও তিন মাস অথবা তিন পিরিয়ডের সময় পর্যন্ত ইদ্দত পালন করতে হবে। সেটি হয়েছে কি-না নিশ্চিত করতে হবে।

এই দুটি বিষয়ের কোন একটি বিষয় যদি অনুপস্থিত থাকে, তাহলে বিয়ে শুদ্ধ হবে না। বরং এটি একটি অবৈধ বিয়ে।

সূত্র: গ্রন্থ রদ্দুল মুহতার- ৪/৪৫৬, কানযুদ দাকায়েক-৯/১৮৭, কিতাবুন নাওয়াযিল-৯/১৫২, ফাতওয়ায়ে মাহমুদিয়া-১০/৪০৮-৪৪৩, বাহরুর রায়েক-৯/৩৯৭।

والله اعلم بالصواب

মুসলিম বাংলা ফাতওয়া বিভাগ

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন