আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ১৩৪৫০. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসসালামুয়ালাইকুম,হুজুর আমার প্রশ্ন হচ্ছে,, কেহ যদি আত্যহত্যা করার জন্য গলায় ফাস দেয় কোন কারন বসত তখন কেহ দেখে ফেলে তার পর তার গলার দড়ি কাটে দেয় কাটে দেওয়ার জন্য সে বেচে যায় সে যদি এখন আল্লাহর কাছে তওবা করে যে জীবনে যতো দিন বেচে থাকবো আর কোন দিন আত্যহত্যার কথা আর মুখেও আর আনবো না তাহলে কি আল্লাহ তায়ালা তাকে মাফ করে দিবেন।।

৩০ জানুয়ারী, ২০২২
৪২PJ+PP৪

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم





আত্মহত্যা করা যেমন মহা পাপ তেমন আত্মহত্যার ইচ্ছা করাও অনেক বড় অপরাধ, তবে এরচেয়ে বড় বিষয় হলো মহান আল্লাহ তায়ালা ক্ষমাশীল---

আল্লাহ তাআলা বান্দাকে ক্ষমা করবেন- এটা মহান আল্লাহর ঘোষণা। তবে ক্ষমা লাভে অবশ্যই বান্দাকে তাঁর কাছে খাঁটি তাওবা করতে হবে। আল্লাহ তাআলা বান্দার প্রতি অনেক দয়াবান। কারণ আল্লাহ তাআলা বান্দার দুনিয়ার সব অপরাধকে গোপন রাখেন।

মানুষ দুনিয়াতে যে সব অপরাধ করে তা যদি প্রকাশ পেত; তাহলে জনসম্মুখে মানুষের চলাচল অসম্ভব হয়ে যেত। যদিও দুনিয়াতে মানুষের গোপন পাপসমূহ আল্লাহ প্রকাশ করেন না কিন্তু পরকালে বান্দার গোপন ও প্রকাশ্য সব অপরাধই প্রকাশ পাবে। তা হোক বেশি বা অনু পরিমাণ। এটাও আল্লাহর ঘোষণা।

সুরা যিলযালে এ বিষয়টি উল্লেখ করে আল্লাহ বলেন, ‘সে দিন লোকেরা ভিন্ন ভিন্ন অবস্থায় ফিরে আসবে; যাতে তাদের কৃতকর্ম তাদেরকে দেখানো হবে। অতঃপর যে অল্প পরিমাণ ভালো কাজ করবে সে তা দেখতে পাবে। আর যে অল্প পরিমাণ খারাপ কাজ করবে সেও তা দেখতে পাবে। (সুরা যিলযাল : আয়াত ৬-৮)

যেহেতু কুরআনে পাকে ভাল এবং মন্দ কাজের আলোচনা হয়েছে। এতে বুঝা যায় যে, ভাল এবং মন্দ এ দুটি নিয়েই মানুষের জীবন পরিচালিত। মানুষ ভুল করবে আবার তা থেকে তাওবার মাধ্যমে ক্ষমা লাভ করবে এটা মহান আল্লাহ পাকের ঘোষণা।

মানুষ পাপ করবে; আবার অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলে আল্লাহ তাআলা ওই বান্দাকে ক্ষমা করে দিবেন। সে ব্যক্তি আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয়বান্দায় পরিণত হবেন। এটাও আল্লাহর ঘোষণা। কেননা অপরাধী বান্দা যখন আল্লাহ তাআলার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে তখন তিনি অত্যন্ত খুশী হন।

আবার মানুষ যদি পাপ করা ছেড়ে দিত তবে মহান আল্লাহ এ জাতি ও জনপদকে ধ্বংস করে দিয়ে অন্য জাতি সৃষ্টি করতেন মর্মে হাদিসে পাকে প্রিয়নবি সুস্পষ্ট বক্তব্য দিয়েছেন। সুতরাং মানুষ ভুল করবে, অন্যায়-অপরাধ করবে আবার তা থেকে তাওবা করে আল্লাহর পথে ফিরে আসবে।


প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘সেই সত্ত্বার শপথ! যার হাতে আমার প্রাণ; তোমরা যদি গোনাহ না করতে; তবে আল্লাহ তাআলা তোমাদের পরিবর্তে এমন এবটা জাতির নিয়ে আসতেন; যারা গোনাহ করতো আর ক্ষমা চাইতো। আর তিনি তাদের ক্ষমা করে দিতেন। (মুসলিম)

আল্লাহর কাছে ওই ব্যক্তি প্রিয়; যে ব্যক্তি গোনাহ করার পর অনুতপ্ত হৃদয়ে তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে। আর আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করে দেন। এ কারণে কোনো গোনাহগারকে অভিশাপ দেয়া বা মন্দ বলা যাবে না। যদি তার থেকে প্রকাশ্য কোনো ত্রুটি পাওয়া না যায়।

কেননা প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক দণ্ড প্রাপ্ত সাহাবির ব্যাপারে অন্য সাহাবির অভিশাপকে কেন্দ্র করে বলেন, ‘তোমরা তাঁকে অভিশাপ দিও না কারণ সে আল্লাহ এবং তাঁর রাসুলকে ভালবাসে।

গোনাহ বা পাপের বিষয়ে আল্লাহ তাআলা কুরআনের বিভিন্ন জায়গায় যে সব হুশিয়ারি প্রদান করেছেন; তাতে বান্দা সতর্ক হয়ে যায়। আবার আল্লাহ বান্দাকে তাঁর রহমত থেকে নিরাশ হতে নিষেধ করেছেন।

কেননা আল্লাহ তাআলা বান্দার জন্য কেয়ামত পর্যন্ত ক্ষমার দরজা উন্মুক্ত রেখেছেন। সুতরাং হতাশ না হয়ে আল্লাহর ক্ষমার দিকে ফিরে যাওয়াই হবে বান্দার মুক্তির একমাত্র উাপয়। সুতরাং গোনাহ করে হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই; আল্লাহর কাছে কাছে খাঁটি তাওবায় রয়েছে মুক্তি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সব সময় গোনাহমুক্ত জীবন-যাপনের তাওফিক দান করুন। গোনাহ হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে তাওবা করে পুতঃপবিত্র জীবন লাভেরও তাওফিক দান করুন। আমিন।

والله اعلم بالصواب

মুসলিম বাংলা ফাতওয়া বিভাগ

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন