আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

সালাতুত তাসবিহ: প্রমাণ ও পদ্ধতি

প্রশ্নঃ ১৩১৭৪. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, সালাতুল তাসবির নামাজ সম্পর্কে যে সকল হাদিস আছে সে সবের তাহকিক জানা থাকলে জানাবেন, মুহাদ্দিসিনের মতামত সহ। সালাতুল তাসবির নামায পড়া যাবেকিনা।প্রশ্ন ২. সাহাবায়ে কেরাম গনের নাম বলার পড়ে রাদিআল্লাহু তালাআনহু বলতে হবে কিনা। আহলে হাদিস ঘরোনার একজন আমাকে বলে শুধু জান্নাতের শুশংবাদ প্রাপ্ত ১০জন সাহাবাদের নামের শেষে রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু বলা যায়। তার যুক্তি হলো এই ১০জন এর উপরে আল্লাহর সন্তুষ্টির ঘোষণা আছে।অন্য সকল সাহাবিদের নামের শেষে রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলতে হবে, না বল্লেও সমস্যা নাই।,

২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪

হরিরামপুর

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


সালাতুত তাসবিহ নামাজ পড়া যাবে। বিভিন্ন হাদিস দ্বারা বিষয়টি প্রমাণিত। মুহাদ্দিস ওলামায়ে কেরামের মতামতসহ জানতে নিচের সংযুক্ততিটি পড়ুন।

عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ لِلْعَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ: يَا عَبَّاسُ، يَا عَمَّاهُ، ” أَلَا أُعْطِيكَ، أَلَا أَمْنَحُكَ، أَلَا أَحْبُوكَ، أَلَا أَفْعَلُ لَكَ عَشْرَ خِصَالٍ إِذَا أَنْتَ فَعَلْتَ ذَلِكَ، غَفَرَ اللَّهُ لَكَ ذَنْبَكَ أَوَّلَهُ وَآخِرَهُ، وَقَدِيمَهُ وَحَدِيثَهُ، وَخَطَأَهُ وَعَمْدَهُ، وَصَغِيرَهُ وَكَبِيرَهُ، وَسِرَّهُ وَعَلَانِيَتَهُ، عَشْرُ خِصَالٍ: أَنْ تُصَلِّيَ أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ، تَقْرَأُ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ وَسُورَةٍ، فَإِذَا فَرَغْتَ مِنَ الْقِرَاءَةِ فِي أَوَّلِ رَكْعَةٍ، قُلْتَ وَأَنْتَ قَائِمٌ: سُبْحَانَ اللَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَلَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ خَمْسَ عَشْرَةَ مَرَّةً، ثُمَّ تَرْكَعُ فَتَقُولُ وَأَنْتَ رَاكِعٌ عَشْرًا، ثُمَّ تَرْفَعُ رَأْسَكَ مِنَ الرُّكُوعِ فَتَقُولُهَا عَشْرًا، ثُمَّ تَهْوِي سَاجِدًا فَتَقُولُهَا وَأَنْتَ سَاجِدٌ عَشْرًا، ثُمَّ تَرْفَعُ رَأْسَكَ مِنَ السُّجُودِ فَتَقُولُهَا عَشْرًا، ثُمَّ تَسْجُدُ فَتَقُولُهَا عَشْرًا، ثُمَّ تَرْفَعُ رَأْسَكَ مِنَ السُّجُودِ فَتَقُولُهَا عَشْرًا، فَذَلِكَ خَمْسَةٌ وَسَبْعُونَ فِي كُلِّ رَكْعَةٍ، تَفْعَلُ فِي أَرْبَعِ رَكَعَاتٍ، إِنِ اسْتَطَعْتَ أَنْ تُصَلِّيَهَا فِي كُلِّ يَوْمٍ مَرَّةً فَافْعَلْ، فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ فَفِي كُلِّ جُمُعَةٍ مَرَّةً، فَإِنْ لَمْ تَفْعَلْ فَفِي كُلِّ شَهْرٍ مَرَّةً، فَإِنْ لَمْ تَفْعَلْ فَفِي عُمُرِكَ مَرَّةً“

ইবনে আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আব্বাস ইবনে আব্দিল মুত্তালিবকে বলেছেন, হে চাচা! আমি কি আপনাকে দেব না? আমি কি আপনাকে প্রদান করব না? আমি কি আপনার নিকটে আসব না? আমি কি আপনার জন্য দশটি সৎ গুনের বর্ণনা করব না যা করলে আল্লাহ তাআলা আপনার আগের ও পিছনের, নতুন ও পুরাতন, ইচ্ছায় ও ভুলবশত কৃত, ছোট ও বড়, গোপন ও প্রকাশ্য সকল গুনাহ মাফ করে দেবেন? আর সে দশটি সৎ গুন হলো: আপনি চার রাকাত নামাজ পড়বেন। প্রতি রাকাআতে সূরা ফাতিহা ও অন্য একটি সূরা পড়বেন। প্রথম রাকাতে যখন কিরাআত পড়া শেষ করবেন তখন দাঁড়ানো অবস্থায় ১৫ বার বলবেন:

سُبْحَانَ اللَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَلَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ

{উচ্চারণঃ সুবহানাল্লাহি ওয়ালহামদু লিল্লাহহি ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার}

এরপর রুকুতে যাবেন এবঃ রুকু অবস্থায় (উক্ত দুআটি) ১০ বার পড়বেন। এরপর রুকু থেকে মাথা ওঠাবেন এবং ১০ বার পড়বেন। এরপর সিজদায় যাবেন। সিজদারত অবস্থায় ১০ বার পড়বেন। এরপর সিজদা থেকে মাথা উঠাবেন অতঃপর ১০ বার পড়বেন। এরপর আবার সিজদায় যাবেন এবং সিজদারত অবস্থায় ১০ বার পড়বেন। এরপর সিজদা থেকে মাথা ওঠাবেন এবং ১০ বার পড়বেন। এ হলো প্রতি রাকাতে ৭৫ বার। আপনি চার রাকাতেই অনুরূপ করবেন। যদি আপনি প্রতিদিন আমল করতে পারেন, তবে তা করুন। আর যদি না পারেন,তবে প্রতি জুমাআয় একবার। যদি প্রতি জুমআয় না করেন তবে প্রদি মাসে একবার। আর যদি তাও না করেন তবে জীবনে একবার।
{সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-১২৯৭,
সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৩৮৭,
সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদীস নং-১২১৬,
সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-৪৬৯৫}
হাদীসটি সহীহ।

উক্ত হাদীসকে যারা সহীহ বলেছেন!

১. ইমাম আবু দাউদ, হাদীস নং-১২৯৭, [ইমাম আবু দাউদ হাদীস বললে, চুপ থাকলে সেটি তার কাছে সহীহ।

২. ইবনে হাজার আসকালানী রহঃ বলেন, এর সনদটি হাসান। [আলখিছাল-১/৪১]

৩. আল্লামা ওয়াদেয়ী বলেন, হাসান। [সহীহুল মুসনাদ, হাদীস নং-৫৮২]

৪. ইবনুল মুলাক্কিন বলেন, এর সনদ উত্তম। [আবদরুল মুনীর-৪/২৩৫]

৫. ইবনে হাজার আসকালানী রহঃ বলেন, হাসান। [তাখরীজুল মিশকাতুল মাসাবীহ-২/৭৮]

৬. শায়েখ নাসীরুদ্দীন আলবানী বলেছেন, হাদীসটি সহীহ। [সহীহুল জামে, হাদীস নং-৭৯৩৭]

এতগুলো মুহাদ্দিস হাদিসটি সহীহ ও হাসানের মর্যাদা দেবার পরও একে বাতিল বলা ধৃষ্ঠতা ছাড়া আর কিছুই হতে পারে না।

দ্বিতীয় রাকাতে তাশাহ্হুদ পড়ার জন্য বসবে তখন আগে উক্ত তাসবীহ ১০ বার পড়বে তারপর তাশাহ্হুদ পড়বে। তারপর আল্লাহু আকবার বলে তৃতীয় রাকাতের জন্য উঠবে। অতঃপর তৃতীয় রাকাত ও চতুর্থ রাকাতেও উক্ত নিয়মে উক্ত তাসবীহ পাঠ করবে। তাসবীর বাংলা উচ্চারণ হলো-“সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহি ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার”

কোন এক স্থানে উক্ত তাসবীহ পড়তে সম্পূর্ণ ভুলে গেলে বা ভুলে নির্দিষ্ট সংখ্যার চেয়ে কম পড়লে পরবর্তী যে রুকনেই স্মরণ আসুক সেখানে তথাকার সংখ্যার সাথে এই ভুলে যাওয়া সংখ্যাগুলোও আদায় করে নিবে। আর এই নামাযে কোন কারণে সাজদায়ে সাহু ওয়াজিব হলে সেই সাজদা এবং তার মধ্যকার বৈঠকে উক্ত তাসবীহ পাঠ করতে হবে না। তাসবীহের সংখ্যা স্মরণ রাখার জন্য আঙ্গুলের কর গণনা করা যাবে না, তবে আঙ্গুল চেপে স্মরণ রাখা যেতে পারে।

বিঃ দ্রঃ সালাতুত তাসবীহ পড়ার আরো একটি নিয়ম রয়েছে। তবে উপরোল্লিখিত নিয়মটি উত্তম।

উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

১২৫৭২

আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, সর্বশেষ সাহাবী কত সালে মারা যায়..?

১১ জানুয়ারী, ২০২২

নারায়নগঞ্জ

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

৬৭৮৬

সাহাবাদের ঈমান শিখতে নয় থেকে তের বৎসর সময় লেগেছিল কাথাটা কি ঠিক ?


২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

Kolkata

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুসলিম বাংলা ইফতা বিভাগ

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy