আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ১২৬৭২. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, তবলীগ জামাত মসজিদে থাকতে পারবে কি ?এই সম্পর্কে হাদীস ও মাসআলা দিয়ে আমার প্রশ্নের উত্তর দিন ।,

১৬ জানুয়ারী, ২০২২

ওয়েস্ট বেঙ্গল ৭৪৩৩৫১

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم




বিষয়টি বিস্তারিত জানার জন্য নিম্নের লেখাটি পড়তে পারেন.........
মসজিদে কোন তাবলীগ জামাতের সাথি মসজিদে রান্না করেন না। না মসজিদে গোসল করেন। তারা কেবল মসজিদে ঘুমান। বাকি কাজগুলো বাহিরেই করেন।

মসজিদে ঘুমানোর অনেক প্রমাণ হাদীসে বিদ্যমান। তাছাড়া যেহেতু তাবলীগী সাথীরা মসজিদে প্রবেশের সময় ইতিকাফের নিয়ত করে থাকেন,আর যিনি মসজিদে ইতিকাফে থাকবেন,তিনিতো মসজিদেই খাবার দাবার ঘুমাবেন। এটাইতো স্বাভাবিক।

মসজিদে ঘুমানোর কয়েকটি প্রমাণ নিচে উপস্থাপন করা হল।



قَالَتْ: «فَجَاءَتْ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَسْلَمَتْ»، قَالَتْ عَائِشَةُ: «فَكَانَ لَهَا خِبَاءٌ فِي المَسْجِدِ

হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। এক মহিলা ইসলাম গ্রহণ করলো, তারপর মহিলাটি ইসলাম গ্রহণ করলে তাঁর থাকার জন্য মসজিদে একটি তাবু খাটানো হল। {সহীহ বুখারী হা. নং ৪৩৯}



হযরত সাহল ইবনে সা‘দ রা. বলেন,

” جَاءَ رَسُولُ اللَّهِ بَيْتَ فَاطِمَةَ فَلَمْ يَجِدْ عَلِيًّا فِي الْبَيْتِ، فَقَالَ: أَيْنَ ابْنُ عَمِّكِ؟ قَالَتْ: كَانَ بَيْنِي وَبَيْنَهُ شَيْءٌ فَغَاضَبَنِي فَخَرَجَ فَلَمْ يَقِلْ عِنْدِي، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ لِإِنْسَانٍ: انْظُرْ أَيْنَ هُوَ، فَجَاءَ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، هُوَ فِي الْمَسْجِدِ رَاقِدٌ، فَجَاءَ رَسُولُ اللَّهِ وَهُوَ مُضْطَجِعٌ قَدْ سَقَطَ رِدَاؤُهُ عَنْ شِقِّهِ وَأَصَابَهُ تُرَابٌ، فَجَعَلَ رَسُولُ اللَّهِ يَمْسَحُهُ عَنْهُ، وَيَقُولُ: قُمْ أَبَا تُرَابٍ، قُمْ أَبَا تُرَابٍ.

একদিন রাসূলুল্লাহ সা. হযরত ফাতেমার ঘরে এসে আলীকে (রা.) পাননি। জিজ্ঞেস করলেন, আলী কোথায়? ফাতেমা বললেন, আমাদের দু’জনে মধ্যে কিছু রাগারাগি হয়েছে। ফলে তিনি রাগ করে এখানে বাইরে চলে গেছেন। রাসূলুল্লাহ সা. একজনকে বললেন, তাকে একটু খুঁজে দেখ কোথায়। লোকটি এসে জানাল, আলী মসজিদে ঘুমিয়ে আছেন। রাসূলুল্লাহ সা. এসে দেখলেন আলী শুয়ে আছেন। শরীর এক পাশ থেকে চাদর পড়ে গেছে। আর গায়ে ধুলো-বালি লেগে রয়েছে। রাসূলুল্লাহ সা. তাঁর গায়ের বালি ঝেঁড়ে দিচ্ছেন আর বলছেন ‘আবু তোরাব উঠ উঠ। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৪৪১,৪৩০}



عَنْ عَبَّادِ بْنِ تَمِيمٍ، عَنْ عَمِّهِ، أَنَّهُ «رَأَى رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُسْتَلْقِيًا فِي المَسْجِدِ، وَاضِعًا إِحْدَى رِجْلَيْهِ عَلَى الأُخْرَى» وَعَنْ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ المُسَيِّبِ، قَالَ: «كَانَ عُمَرُ، وَعُثْمَانُ يَفْعَلاَنِ ذَلِكَ»

হযরত আব্বাদ বিন তামীম তার চাচা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি দেখেছেন, রাসূলুল্লাহ সা. মসজিদে এক পা অপর পায়ের উপর রেখে চিৎ হয়ে শুয়ে আছেন। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৪৭৫, ৪৬৩}



হযরত আসমা বিনতে ইয়াযীদ বলেন,

أَنَّ أَبَا ذَرٍّ الْغِفَارِيَّ كَانَ يَخْدُمُ النَّبِيَّ صلى الله عليه و سلم فَإِذَا فَرَغَ مِنْ خِدْمَتِهِ، آوَى إِلَى الْمَسْجِدِ، فَكَانَ هُوَ بَيْتُهُ، يَضْطَجِعُ فِيهِ، فَدَخَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه و سلم الْمَسْجِدَ لَيْلَةً، فَوَجَدَ أَبَا ذَرٍّ نَائِمًا مُنْجَدِلًا فِي الْمَسْجِدِ، فَنَكَتَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه و سلم بِرِجْلِهِ حَتَّى اسْتَوَى جَالِسًا، فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه و سلم :” أَلَا أَرَاكَ نَائِمًا؟ “، قَالَ أَبُو ذَرٍّ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، فَأَيْنَ أَنَامُ، هَلْ لِي مِنْ بَيْتٍ غَيْرُهُ؟،. قال فى المجمع: رواه أحمد والطبراني وروى بعضه في الكبير وفيه شهر بن حوشب وفيه كلام وقد وثق

হযরত আবুযর রা. রাসূলুল্লাহ সা. -এর খেদমত করতেন। ফারেগ হলেই মসজিদে চলে যেতেন। মসজিদই ছিল তাঁর ঘর। এখানেই ঘুমাতেন। একদিন রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসে দেখলেন, আবুজর মসজিদে শুয়ে আছেন। তিনি তাকে পা দিয়ে স্পর্শ করলেন। আবুযর রা. উঠে বসলেন। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, তুমি এখানে ঘুমিয়ে কেন? আবুযর বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! কোথায় ঘুমাব আর ?! এ ছাড়াকি আমার আর কোন ঘর আছে? (মুসনাদে আহমদ হা.২৬৯২৮ মাজমাউয যাওয়াইদ হা. ২০২৩)

অন্য বর্ণনায় রয়েছে,

أنه كان يخدم النبي صلى الله عليه و سلم فإذا فرغ من خدمته أتى المسجد فاضطجع فيه.رواه الطبراني في الأوسط وفيه شهر وفيه كلام وقد وثق

তিনি রাসূলুল্লাহ সা. -এর খেদমত করতেন। যখনই অবসর হতেন, মসজিদে এসে শুয়ে আরাম করতেন। (আলমুজামুল আওসাত, তাবারানী। মাজমাউয যাওয়াইদ হা. ২০২৪)

عن الحارث بن عبد الرحمن قال سألت سليمان بن يسار عن النوم في المسجد فقال كيف تسألون عن هذا وقد كان أهل الصفة ينامون فيه ويصلون فيه

হযরত হারেস ইবনে আব্দুর রহমান বলেন, হযরত সুলায়মান ইবনে ইয়াসারকে জিজ্ঞেস করলাম, মসজিদে ঘুমানোর বিধান কী? তিনি উত্তরে বললেন, তোমরা কেন এবিষয়ে প্রশ্ন কর? আহলে ছুফফাতো মসজিদেই থাকতেন, মসজিদেই নামাজ পড়তেন। অর্থাৎ মসজিদে ঘুমানো জায়েয। আহলে ছুফফার মসজিদে ঘুমানোটাই এর দলীল। (মুসান্নাফে ইবনে আবীশাইবা হা. ৪৯১১)

সুতরাং বুঝা গেল, তাবলীগের সাথীদের মসজিদে থাকা ও ঘুমানো এটি কোন দোষনীয় বিষয় নয়। রাসূল সাঃ ও সাহাবায়ে কেরাম থেকে এমন আমল বর্ণিত হয়েছে। তাই এটিকে খারাপ বলার কোন সুযোগ নেই।
আহলে হক মিডিয়া.......

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী মুহাম্মাদ রাশেদুল ইসলাম
উস্তাযুত তাফসির, মারকাযুল বুহুসিল ইসলামিয়া, বাড্ডা।

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

১৯০৮৫

আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নেয়া হালাল না হারাম?

৮ জুন, ২০২২

ফেনী

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

১৮৯৯১

কর্মজীবি নারীর ইদ্দত পালন কিভাবে হবে?


১ নভেম্বর, ২০২৩

খুলনা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী মুহাম্মাদ রাশেদুল ইসলাম

১৬২০৮

সেহরির শেষ সময় ও ফজরের আজান


২৯ নভেম্বর, ২০২২

৫৩২৩+৫৬৭

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy