প্রশ্নঃ ১২২২৩. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ইসলামে জমি বন্ধক জায়েজ আছে?,
২ জানুয়ারী, ২০২২
বিষ্নুপুর
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
আমাদের সমাজে বহুল প্রচলিত একটি প্রথা হচ্ছে, জমি বন্ধক রাখা ৷ অনেকেই আমাকে প্রশ্ন করে থাকেন জমি বন্ধক রাখা হালাল না হারাম? বন্ধকী জমির মাসআলা, জমি বন্ধক নেওয়ার নিয়ম, জমি বর্গা চাষ করার বিধান। শরীআর দৃষ্টিকোণ থেকে এসবএর বৈধতা ও অবৈধতা নিয়ে আজ কথা বলবো ৷
সূচিপত্র,,,,
১-জমি বন্ধক নিয়ে ভোগ করা হালাল না হারাম?
২-জমি বন্ধক নেওয়া জায়েজ?
৩-বন্ধকী জমির মাসআলা
৪-জমি বর্গাচাষ করা কী?
৫-জমি বর্গার বিধান
৬-জমি বন্ধক রাখার প্রচলিত পদ্ধতি কী জায়েজ?
৭-প্রচলিত জমি বন্ধক পদ্ধতির বৈধ বিকল্প আছে কি?
,,,,,,
জমি বন্ধকী রাখার দুটি পদ্ধতি বৈধঃ
জমি লিজ নেওয়ার নিয়মঃ
জমি বন্ধক নিয়ে ভোগ করা হালাল না হারাম?
জমি বন্ধক রাখার যে পদ্ধতি আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে সেটা হারাম। যেমন বন্ধকদাতা বন্ধক গ্রহীতার নিকট থেকে নির্ধারিত পরিমাণ টাকা গ্রহণ করে আর বন্ধকগ্রহীতা জমি ভোগ করতে থাকে।
যখন টাকা ফিরিয়ে দেয় তখন জমি হস্তান্তর করে। এটাকে কোথাও কোথাও কট রাখাও বলা হয়। এই পদ্ধতিতে সুদ রয়েছে। যেটা পুরোপুরি হারাম। আর এই সুদকে হালাল করার কোনো বৈধতা নেই।
এর কোনো পদ্ধতি নেই। তবে আপনি যার কাছে অর্থের বিনিময়ে জমি বন্ধক রেখেছেন তার সঙ্গে যদি চাষাবাদের আলাদা কোনো চুক্তি করেন তাহলে কেবল মাত্র এই চুক্তিটা বৈধতা পেতে পারে। সুতরাং জমির সঙ্গে অর্থের সম্পর্ক থাকলেই এটা হারাম হয়ে যাবে।
জমি বন্ধক নেওয়া জায়েজ?
আরেকটি পদ্ধতিতে জমি বন্ধক রাখা হয় ৷ এটিও উপরের মতোই। তবে পার্থক্য হল, এক্ষেত্রে যখন টাকা ফিরিয়ে দেয় তখন বছর হিসাব করে বন্ধকগ্রহীতা কিছু টাকা কম নেয়। যেমন-কেউ এক কাঠা জমি বন্ধক নিল দশ হাজার টাকায় এবং সে দু বছর এ জমি ভোগ করে। দু বছর পর টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার সময় পাঁচশ টাকা করে এক হাজার টাকা কম নেয়।
এ পদ্ধতিটি মূলত ঋণ প্রদান করে বন্ধকি জমি ভোগ করার একটি অবৈধ ছুতা। কারণ এক্ষেত্রে আলাদাভাবে ইজারা চুক্তি করা হয় না; বরং জমি ভোগ করার শর্তেই ঋণ দেওয়া হয় এবং ঋণের সুবিধা পাওয়ার কারণেই জমির মালিক নামমাত্র মূল্যে ভাড়া হিসেবে গ্রহণ করে থাকে। সুতরাং প্রশ্নোল্লেখিত দুটি কারবারই নাজায়েয।
বন্ধকী জমির মাসআলা,,,,,
প্রকাশ থাকে যে, উক্ত কারবার বৈধভাবে করতে চাইলে শুরু থেকেই বন্ধকি চুক্তি না করে ভাড়া বা লীজ চুক্তি করবে। যার বিবরণ হল, জমির মালিক জমি ভাড়া দিবে। তার যত টাকা প্রয়োজন সেজন্য যত বছর ভাড়া দিতে হয় একত্রে তত বছরের জন্য ভাড়া দিবে।
যেমন-এক বিঘা জমির বার্ষিক ভাড়া ৫ হাজার টাকা। মালিকের ২০ হাজার টাকা প্রয়োজন। তাহলে সে ৪ বছরের জন্য জমি ভাড়া দিবে। এক্ষেত্রে অগ্রিম ২০ হাজার টাকা নিয়ে নিবে।
এক্ষেত্রে জমির ভাড়া স্থানীয় ভাড়া থেকে সামান্য কম বেশিও হতে পারে। এরপর ভাড়ার মেয়াদ শেষ হলে অর্থ দাতা জমি ফেরত দিবে, কিন্তু প্রদেয় টাকা ফেরত পাবে না।
অবশ্য সময়ের আগে ফেরত দিলে যে কয়দিন ভাড়ায় ছিল সে পরিমাণ ভাড়া কর্তন করে অবশিষ্ট টাকা ভাড়াটিয়া ফেরত পাবে।
-মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৮/২৪৪-২৪৫; শরহু মুখতাসারিত তহাবী ৩/১৪৯; রদ্দুল মুহতার ৬/৪৮২; বাদায়েউস সানায়ে ৫/২১২; শরহুল মাজাল্লা, খালেদ আতাসী ৩/১৯৬-১৯৭; ইলাউস সুনান ১৮/৬৪
জমি বর্গাচাষ করা কী?
বর্গাচাষ : এটা হচ্ছে একজনের জমিতে অপরজন শ্রম দিয়ে চাষ করে উভয়ে পূর্বচুক্তি অনুসারে উৎপাদিত ফসল সমান অর্ধেক করে বা কমবেশি ভাগ করে নেবে। এ ক্ষেত্রে উৎপাদনের প্রাসঙ্গিক অন্যান্য খরচ ও ব্যয়ভারের শরিয়তসম্মত তিনটি পদ্ধতির যেকোনো একটি গ্রহণ করা যেতে পারে।
জমি বর্গার বিধান
১. জমি এবং বীজ একজন বহন করবে আর চাষাবাদের যাবতীয় খরচ দ্বিতীয় জন বহন করবে।
২.শুধু জমি একজনের আর চাষাবাদের জন্য যাবতীয় খরচ দ্বিতীয় জন আঞ্জাম দেবে।
৩. জমি এবং বীজসহ হালের জন্য গরু অথবা মেশিনের খরচ একজন বহন করবে আর দ্বিতীয় জন শুধু কাজ করবে।
এই তিনটি ছাড়া অন্য পদ্ধতি শরিয়তসম্মত নয়। (ফাতহুল কাদির : ৯/৪৭৬)
জমি বন্ধক রাখার প্রচলিত পদ্ধতি কী জায়েজ?
বন্ধক রাখা হয় ঋণ আদায়ের নিশ্চয়তাস্বরূপ। এতে ঋণদাতা নিশ্চিত থাকেন যে ঋণ আদায় না করলেও বন্ধককৃত বস্তু থেকে আদায় করে নেওয়া যাবে। পবিত্র কোরআনেও এর নির্দেশ রয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আর যদি তোমরা সফরে থাকো এবং কোনো লেখক না পাও, তাহলে হস্তান্তরিত বন্ধক রাখবে। আর যদি তোমরা একে অপরকে বিশ্বস্ত মনে করো, তবে যাকে বিশ্বস্ত মনে করা হয়, সে যেন স্বীয় আমানত আদায় করে এবং নিজ রব আল্লাহকে ভয় করে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ২৮৩)
যেহেতু পূর্বের আয়াতে সুদকে কঠোরভাবে হারাম করে দান-সদাকাহ করার প্রতি উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে সেহেতু সমাজে বসবাসকারীদের মাঝে ঋণ গ্রহণ করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিবেই।
কারণ সুদ হারাম, সব মানুষ দান-সদাকাহ করার ক্ষমতা রাখে না। তাছাড়া সবাই দান-সদাকাহ নিতে পছন্দও করে না। সুতরাং প্রয়োজন সাড়ার অন্যতম উপায় ঋণ আদান-প্রাদান করা।
ঋণ দেয়াও বড় ফযীলতের কাজ বলে হাদীসে উল্লেখ রয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: কিয়ামতের দিন একজন লোককে আল্লাহ তা‘আলার সামনে আনা হবে। তাকে আল্লাহ তা‘আলা জিজ্ঞাসা করবেন: বল, তুমি আমার জন্য কী পুণ্য করেছ? সে বলবে: হে আল্লাহ! আমি এমন একটি অণু পরিমাণও পুণ্যের কাজ করতে পারিনি যার প্রতিদান আমি আপনার নিকট চাইতে পারি।
আল্লাহ তা‘আলা তাকে পুনরায় এটাই জিজ্ঞাসা করবেন এবং সে একই উত্তর দেবে। আল্লাহ তা‘আলা আবার জিজ্ঞাসা করবেন তখন সে বলবে: হে আল্লাহ! একটি সামান্য কথা মনে পড়েছে। আপনি দয়া করে আমাকে কিছু সম্পদ দান করেছিলেন। আমি ব্যবসায়ী ছিলাম। লোক আমার নিকট হতে কর্জ নিয়ে যেতো। আমি যখন দেখতাম যে, এ লোকটি দরিদ্র এবং পরিশোধ করতে পারছে না তখন তাকে কিছু সময় অবকাশ দিতাম। ধনীদের ওপরও পীড়াপীড়ি করতাম না। অত্যন্ত দরিদ্র ব্যক্তিদের ক্ষমা করে দিতাম। তখন আল্লাহ তা‘আলা বলেন: তাহলে আমি তোমার পথ সহজ করবো না কেন? আমি তো সর্বাপেক্ষা বেশি সহজকারী। যাও আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম। তুমি জান্নাতে চলে যাও। (সহীহ বুখারী হা: ২০৭৭)
বন্ধককৃত বস্তু বন্ধকগ্রহীতার কাছে আমানতস্বরূপ। বন্ধকি জমি থেকে বন্ধকগ্রহীতার কোনো ফায়দা হাসিল করা নাজায়েজ ও হারাম। এমনকি বন্ধকদাতা এর অনুমতি দিলেও পারবে না। কারণ বন্ধকি জমি থেকে বন্ধকগ্রহীতা কোনো ধরনের ফায়দা উপভোগ করা সুদের অন্তর্ভুক্ত, যা হারাম। (বাদায়েউস সানায়ে : ৬/১৪৬)
কিন্তু বর্তমান সমাজে বন্ধকী জমি থেকে ফায়দা গ্রহণ চলছে দেদারছে ৷ ঋণদাতা বন্ধকী জমি চাষাবাদ করছেন ৷ অথবা কাউকে (অনেক সময় জমির মূল মালিককেও) জমি বর্গা দিয়ে অর্ধেক বা তিনভাগের একভাগ ফসল নিচ্ছেন ৷ যা সম্পূর্ণ সুদ হচ্ছে ৷
সমাজে এমন একটি প্রথাও আছে যা শুনলে পিলে চমকানোর মত অবস্থা ৷ কারো টাকার প্রয়োজন সে এক জমি ৪-৫ জনের কাছে বন্ধক রাখেন ৷ অগ্রীম খাজনা ধরে বছরে ওই টাকার বিনিময়ে প্রত্যেককেই অতিরিক্ত টাকা দিচ্ছেন ৷ যা সম্পূর্ণ অবৈধ ৷
জমি বন্ধকী রাখা সমন্ধে হাদিসঃ
ইবনে সিরিন (রহ.) সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, জনৈক লোক সাহাবি ইবনে মাসউদ (রা.)-এর কাছে জিজ্ঞেস করল, এক ব্যক্তি আমার কাছে একটি ঘোড়া বন্ধক রেখেছে, তা আমি আরোহণের কাজে ব্যবহার করেছি। ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, তুমি আরোহণের মাধ্যমে এর থেকে যে উপকার লাভ করেছ তা সুদ হিসেবে গণ্য হবে। (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস : ১৫০৭১)
বিখ্যাত তাবেয়ি ইমাম কাজি শুরাইহ (রহ.)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, সুদ পান করা কিভাবে হয়ে থাকে? তিনি বলেন, বন্ধকগ্রহীতা বন্ধকি গাভির দুধ পান করা সুদ পানের অন্তর্ভুক্ত। (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস : ১৫০৬৯)
প্রচলিত জমি বন্ধক পদ্ধতির বৈধ বিকল্প আছে কি?
দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা একটা পদ্ধতিকে সরাসরি হারাম বলে দিলে (যদিও হারাম) মানুষজন সহজে তা মানবে না ৷ সুতরাং জমি বন্ধকের এই সিস্টেমের বৈধ কোনো পদ্ধতি তাদের জানালে তারা হারাম পদ্ধতি পরিত্যাগ করতে আগ্রহী হবে ৷ তবে অধিকতর দীনে আগ্রহীদের সম্পূর্ণ বিরত থাকাই ভালো ৷
জমি বন্ধকী রাখার দুটি পদ্ধতি বৈধঃ
১. বন্ধকি জমি থেকে বন্ধকগ্রহীতা উপকৃত হতে চাইলে এ পদ্ধতি গ্রহণ করতে পারে যে বন্ধকি চুক্তি বাতিল করে দীর্ঘমেয়াদি ইজারা (ভাড়া) পদ্ধতি অবলম্বন করবে। অর্থাৎ যত দিন পর্যন্ত ঋণের টাকা শোধ না হয় ঋণদাতা জমিটি ইজারা পদ্ধতিতে তা ভোগ করবে এবং তার ন্যায্য ভাড়াও মালিককে আদায় করবে।
এ ক্ষেত্রে ঋণ ও ইজারাচুক্তি দুটি ভিন্ন হতে হবে, দুটি চুক্তিকে মিলিয়ে একটি অপরটির ওপর শর্তযুক্ত হতে পারবে না। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া ৫/৪৬৫, ইমদাদুল আহকাম ৩/৫১৮)
২. অথবা সে বন্ধকদাতার সঙ্গে ‘বাই বিল ওয়াফা’ চুক্তি করবে। অর্থাৎ বন্ধকগ্রহীতার কাছে ঋণী ব্যক্তি তার জমিটি বিক্রি করে দেবে এই ওয়াদার ওপর যে ঋণ পরিশোধ হওয়ার পর বন্ধকগ্রহীতা আবার জমিটি তার কাছে বিক্রি করে দেবে। এ ক্ষেত্রে বন্ধকগ্রহীতার মালিকানায় যত দিন থাকবে সে তা মালিক হিসেবে ভোগ করতে পারবে। (ইমদাদুল আহকাম : ৩/৫১১)
জমি লিজ নেওয়ার নিয়মঃ
স্বল্প বা দীর্ঘ মেয়াদে জমি ইজারা তথা ভাড়া দেওয়া বৈধ। ভাড়া নিয়ে যেকোনো বা এমন বৈধ কাজে লাগানো জায়েজ হবে যার কারণে জমির উল্লেখযোগ্য ক্ষতি না হয়। জমির মালিক যদি ইজারাদারকে সাধারণভাবে সব ধরনের ফসল চাষ করার অনুমতি দিয়ে দেয়, তাহলে সে যেকোনো শস্য চাষ করতে পারবে। (হেদায়া ৩/২৯৬)। তবে গাছসহ বাগান ইজারা দেওয়া শুদ্ধ নয়। (রদ্দুল মুহতার ৫/৫)
জমি বন্ধক,,,,,,
গাছের ফল বের হওয়ার আগে ফল বিক্রি বৈধ নয়। বরং ফলের মুকুল বের হওয়ার পর বিক্রি বৈধ হবে। অনুরূপ অগ্রিম কয়েক বছরের জন্য বাগানের ফল বিক্রি বৈধ নয়।
তবে এর একটি বৈধ পদ্ধতি এভাবে হতে পারে যে ফলগাছ বিক্রি করে দেবে এবং মালিক বিক্রীত গাছ তার বাগানে রাখার জন্য ক্রেতাকে অনুমতি দিয়ে দেবে।
অথবা গাছ বিক্রির পর ক্রেতা মালিক থেকে বাগান ভাড়া নেবে। পরবর্তীকালে ইচ্ছা করলে ফলের মৌসুম শেষ হলে কিংবা কয়েক বছর পর আবার ওই মূল্যে বা এর চেয়ে কমবেশি দিয়ে গাছগুলো মালিকের কাছে বিক্রি করে দেবে। (রদ্দুল মুহতার ৫/২০, আহসানুল ফাতাওয়া ৭/২৬৭)
والله اعلم بالصواب
মন্তব্য (০)
কোনো মন্তব্য নেই।
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
৪২৮৪৬
কিস্তিতে ক্রয় বিক্রয় এবং ঋণের কিস্তি উভয়টি কি একই?
১২ অক্টোবর, ২০২৩

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
২৮০৮৯
ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে জমির মালিক পুনরায় জমি ভাড়া নেওয়া
২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
শ্রীপুর

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
সাম্প্রতিক প্রশ্নোত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে