মাহফিলের মাইক প্রসঙ্গ
প্রশ্নঃ ১১৮৩৬. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমাদের দেশে প্রচলিত যেই মাহফিল হয় তারমধ্যে মাহফিলের পেন্ডেলের বাহিরে বেশ কিছু মাইক লাগানো হয় এতে করে অসুস্থ মানুষের বিশ্রামের সমস্যা হয়, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সমস্যা হয়, বিধর্মীদের ঘুমের সমস্যা হয় এবং সাধারণ মানুষ ও ছোট বাচ্চাদের বিশ্রাম ও ঘুমের সমস্যা হয়। এতে করে মাহফিল গুলোর প্রতি মানুষের আগ্রহ কমে গেছে। আমার প্রশ্ন হলো এভাবে মানুষের বিশ্রাম/ঘুমের ব্যাঘাত ঘটিয়ে ইসলাম প্রচার করা কতটুকু শরিয়ত সম্মত? উত্তর দিয়ে উপকৃত করবেন।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
মাহফিলের প্যান্ডেলের বাইরে যে মাইকগুলো লাগানো হয় সেগুলো মূলত এই উদ্দেশ্যেই লাগানো হয় যে - যে মহিলা , বৃৃৃৃদ্ধ বা বাচ্চারা মাহফিলে আসতে পারিনি তারাও যেন বাড়িতে অবস্থান করে মাহফিলের ওয়াজ শুনতে পারে, এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই মাহফিলের প্যান্ডেলের বাইরে মাইক লাগানো হয়, উদ্দেশ্যের বিচারের বিষয়টি খুবই ভালো ও প্রশংসনীয়, তবে হা, ওই এলাকায় যদি অসুস্থ কোন ব্যক্তি থাকে তাহলে অবশ্যই এটা তার জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়াবে (তবে সাধারণত মানুষের সুস্থতার থাকাটাই হল আসল) তাই মাহফিল কর্তৃপক্ষ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই বিষয়টি জানেনা বিধায় পূর্বোল্লিখিত উদ্দেশ্যকে সামনে নিয়ে মাহফিলের প্যান্ডেলের বাইরে মাইক লাগিয়ে থাকে) তাই একান্ত কোথাও যদি এরকম অসুস্থ মানুষ থাকে তাহলে মাহফিল কর্তৃপক্ষকে অবগত করে বাহিরের মাইগুলোর সাউন্ড কমিয়ে দেয়া উচিত, যাতে করে অসুস্থ ব্যক্তিদের কষ্ট না হয়, বাকি রইল কথা ঘুমন্ত ব্যক্তিদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটানো, আমাদের দেশে হকপন্থী ওলামায়ে কেরামের মাহফিল গুলো সাধারণতঃ রাতের দশটা থেকে এগারটার ভিতরেই শেষ হয়ে যায় আর আমাদের দেশের মানুষ গুলো সাধারণত 10 টা থেকে 11 টার আগে ঘুমায় না, তাই এক্ষেত্রে ঘুমের ব্যাঘাত এর কোন প্রশ্নই আসে না! তবে কেউ যদি রাতের দশটা থেকে এগারটার পরেও এভাবেই বিকট আওয়াজে মাইক চালিয়ে সাধারণ মুসলমানদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায় তাহলে তা অবশ্যই পরিত্যাজ্য কাজ বলে বিবেচিত হবে! অমুসলিমদের বিষয়টা হল হতে পারে' মাহফিলের বক্তার কোন এক কথা ওই ব্যক্তির জন্য হেদায়েতের উসিলা হতে পারে, যা ঐ ব্যক্তির জন্য দুনিয়া আখেরাতের সফলতা মাধ্যম হতে পারে, সর্বোপরি বাহিরে উচ্চ আওয়াজে মাইক লাগানোর ক্ষেত্রে প্রশ্ন লিখিত সাময়িক কিছু সমস্যার সাথে সাথে বিশাল একটা ফায়দার সম্ভাবনা রয়েছে, এজন্যই সাধারণত মাহফিল কর্তৃপক্ষ প্যান্ডেলের বাইরে মাইক দিয়ে থাকে, এরপরও কোন এলাকায় যদি এমন হয় যে সবাই মাহফিলে চলে আসবে এবং মাহফিল কর্তৃপক্ষকে বলে শিশু এবং অসুস্থদের সুবিধার্থে বাহিরের মাইক এর আওয়াজ একেবারে কমিয়ে দিবে অথবা বাহিরে মাইক লাগাবেই না (এবং এটাই সবচেয়ে উত্তম)! তবে বিষয়টি যেহেতু সামাজিক প্রচলনের উপর ভিত্তি শীল তাই সকলকেই এ বিষয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে চেষ্টা করতে হবে, যাতে করে একজনের কারণে আরেকজনের কষ্ট না হয়! আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সহিহ বুঝ দান করুন! ( আমিন)
والله اعلم بالصواب
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন