প্রশ্নঃ ১১৭৮৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমার আম্মার অসুস্থতাজনিত কারণে হ্যালুসিনেশন হয়। তাঁর কাছে মনে হয় বাসার মানুষজন কেউ কান্না করছে বা ঝগড়া করছে। তাঁকে যতই বলা হোক যে সবাই ভালো আছে, তিনি অসুস্থ শরীর নিয়ে নিজে উঠে এসে না দেখা পর্যন্ত বা আমরা সামনে না যাওয়া পর্যন্ত উনি আমাদের কথা বিশ্বাস করেন না।মাঝরাতে এরকম হলে আমি বলি যে সবাই ভালো আছে, আপনি ঘুমিয়ে পড়েন। তখন তিনি মনে কষ্ট পান আর বলেন যে বুড়ো হয়ে গেছি দেখে আমার কথা দাম দাও না।অনেক সময় বাসার মানুষ বা কাজের লোকদের সাথে একটু কড়া ব্যবহার করে ফেলেন। আমি বুঝাতে গেলেও কষ্ট পান, বলেন যে আমি কাউকে কিছু বলি নাই।আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করছি মায়ের খেদমতের। তারপরও তাঁর মনে কষ্ট দিয়ে ফেলছি।আমি কি করবো মুহতারাম? আমার দ্বারা কি বড় গুনাহ হয়ে যাচ্ছে? খুব মনোকষ্টে আছি ব্যপার গুলো নিয়ে
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
জনাব! মানুষের শিশুকাল, যৌবন কাল ও বৃদ্ধকাল ! এই তিন কালের মধ্যে শিশুকাল ও বৃদ্ধ কাল প্রায় কাছাকাছি, এজন্য আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন আমাদেরকে পিতা মাতার বৃদ্ধকালে তাদের প্রতি সদয় হওয়ার এবং তাদের সাথে ভালো ব্যবহার করার আদেশ দিয়েছেন ! বিষয়টি আসলে এখানেই যে- শিশু বয়সে মানুষের যেমন জ্ঞান-বুদ্ধি তেমন একটা থাকেনা, তাই যা ইচ্ছে তাই করে, ঠিক তেমনি ভাবে বৃদ্ধ অবস্থায় অবস্থায়ও এমন কিছু কাজ-কর্ম করে যা অন্যদের জন্য বিরক্তিকর, আর এই অবস্থায় সন্তানদেরকে আদেশ দেয়া হয়েছে ধৈর্যধারণের এবং পিতা-মাতার খেদমত ও তাদের প্রতি সদাচরণ করার জন্য, আর অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে - অনেক সন্তান পিতা-মাতার খেদমত ঠিকমত করার পরও বার্ধক্যজনিত কারণে পিতা-মাতা তাদের উপর তোহমত দিয়ে থাকে যে সন্তানেরা তাদর খেদমত করে না বা তাদের দেখাশোনা করে না, যাতে করে সন্তানেরও অনেক সময় মনে কষ্ট হয় এবং নিজেদের কাছে বিরক্তি লাগে এবং মনে হয় যে এত খেদমত করার পরও যেহেতু হিতে বিপরীত হয় তাই খেদমত ছেড়ে দেই বা পিতা-মাতার প্রতি বিরক্তি সৃষ্টি হয়, আর এটাই হলো পরীক্ষা! সুতরাং এই পরীক্ষায় পাশ করতে হলে অবশ্যই পিতা-মাতার বিরক্তিকর কাজ গুলো ও বিভিন্ন ধরনের অপবাদ দেওয়ার পরও তাদের খেদমত ঠিকভাবে করতে হবে, তাদের খেদমত ঠিকভাবে করার পরও যদি তারা মনে কষ্ট পায় বা এমন কোন কথা উচ্চারণ করে যা ছেলেদের প্রতি অভিশাপের মতো মনে হয়, তাহলে আল্লাহ তাআলা প্রত্যেকেরই অবস্থা দেখতেছেন, আশা করা যায় যে, সন্তান তার সাধ্য অনুযায়ী পিতা মাতার খেদমতের চেষ্টা করার কারণে আল্লাহ তায়ালা তাকে মাফ করে দিতে পারেন! সুতরাং আপনি আপনার সাধ্য অনুযায়ী আপনার মায়ের খেদমত এবং তাকে বোঝানোর চেষ্টা করতে থাকুন! বাকিটা আল্লাহ তাআলা দেখতেছেন!
والله اعلم بالصواب
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন