আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ১০৮৯৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, জমি বন্দক নেওয়া হারাম নাকি হালাল,এর থেকে আয় করা টাকা দিয়ে মসজিদ বা মাদরাসায় দান করা যাবে নাকি এবং কোন গরিব ছাত্র কে সহায়তা করা যাবে নাকি?

২৭ নভেম্বর, ২০২১
রাণীশংকৈল

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم





হারাম সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় দান করা যায় না।
তবে সাধার ভাবে কোথাও ব্যয় করতে চাইলে সওয়াবের নিয়ত করা ছাড়া ব্যয় করতে হবে ।


জমি বন্ধক রাখার যে পদ্ধতি আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে সেটা হারাম। যেমন বন্ধকদাতা বন্ধক গ্রহীতার নিকট থেকে নির্ধারিত পরিমাণ টাকা গ্রহণ করে আর বন্ধকগ্রহীতা জমি ভোগ করতে থাকে।

যখন টাকা ফিরিয়ে দেয় তখন জমি হস্তান্তর করে। এটাকে কোথাও কোথাও কট রাখাও বলা হয়। এই পদ্ধতিতে সুদ রয়েছে। যেটা পুরোপুরি হারাম। আর এই সুদকে হালাল করার কোনো বৈধতা নেই।

এর কোনো পদ্ধতি নেই। তবে আপনি যার কাছে অর্থের বিনিময়ে জমি বন্ধক রেখেছেন তার সঙ্গে যদি চাষাবাদের আলাদা কোনো চুক্তি করেন তাহলে কেবল মাত্র এই চুক্তিটা বৈধতা পেতে পারে। সুতরাং জমির সঙ্গে অর্থের সম্পর্ক থাকলেই এটা হারাম হয়ে যাবে।

আরেকটি পদ্ধতিতে জমি বন্ধক রাখা হয় ৷ এটিও উপরের মতোই। তবে পার্থক্য হল, এক্ষেত্রে যখন টাকা ফিরিয়ে দেয় তখন বছর হিসাব করে বন্ধকগ্রহীতা কিছু টাকা কম নেয়। যেমন-কেউ এক কাঠা জমি বন্ধক নিল দশ হাজার টাকায় এবং সে দু বছর এ জমি ভোগ করে। দু বছর পর টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার সময় পাঁচশ টাকা করে এক হাজার টাকা কম নেয়।

এ পদ্ধতিটি মূলত ঋণ প্রদান করে বন্ধকি জমি ভোগ করার একটি অবৈধ ছুতা। কারণ এক্ষেত্রে আলাদাভাবে ইজারা চুক্তি করা হয় না; বরং জমি ভোগ করার শর্তেই ঋণ দেওয়া হয় এবং ঋণের সুবিধা পাওয়ার কারণেই জমির মালিক নামমাত্র মূল্যে ভাড়া হিসেবে গ্রহণ করে থাকে। সুতরাং প্রশ্নোল্লেখিত দুটি কারবারই নাজায়েয।

বন্ধকী জমির মাসআলা
প্রকাশ থাকে যে, উক্ত কারবার বৈধভাবে করতে চাইলে শুরু থেকেই বন্ধকি চুক্তি না করে ভাড়া বা লীজ চুক্তি করবে। যার বিবরণ হল, জমির মালিক জমি ভাড়া দিবে। তার যত টাকা প্রয়োজন সেজন্য যত বছর ভাড়া দিতে হয় একত্রে তত বছরের জন্য ভাড়া দিবে।

যেমন-এক বিঘা জমির বার্ষিক ভাড়া ৫ হাজার টাকা। মালিকের ২০ হাজার টাকা প্রয়োজন। তাহলে সে ৪ বছরের জন্য জমি ভাড়া দিবে। এক্ষেত্রে অগ্রিম ২০ হাজার টাকা নিয়ে নিবে।

জমি বন্ধক
এক্ষেত্রে জমির ভাড়া স্থানীয় ভাড়া থেকে সামান্য কম বেশিও হতে পারে। এরপর ভাড়ার মেয়াদ শেষ হলে অর্থ দাতা জমি ফেরত দিবে, কিন্তু প্রদেয় টাকা ফেরত পাবে না।

অবশ্য সময়ের আগে ফেরত দিলে যে কয়দিন ভাড়ায় ছিল সে পরিমাণ ভাড়া কর্তন করে অবশিষ্ট টাকা ভাড়াটিয়া ফেরত পাবে।

والله اعلم بالصواب

মুসলিম বাংলা ফাতওয়া বিভাগ

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন