প্রশ্নঃ ১০৬৭৬. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমি নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান ।এবং নিম্নবিত্ত পরিবারেই আমার বিবাহ হয়েছে।এমতাবস্থায় আমি সমাজে প্রচলিত নিয়মানুযায়ী স্বামীর সংসারে কোন যৌতুক বা উপহার দিতে পারিনি এবং উক্ত কারনে আমার শাশুড়ী ও ননদ আমাকে খুব অপমান করে।অথচ আমার স্বামীও আমাকে মোহরানা দেননি।আরো উল্লেখ্য যে আমি সবসময় বিভিন্ন ভাবে তাদেরকে আর্থিক সাহায্য করেছি।তবুও তাদের মন পাইনি।প্রায় তিন বছর আগে আমার একটি ছেলে সন্তান হয়ে মারা গেছে। পরবর্তীতে আমি ঢাকায় এসে আমার স্বামীর সাথে জব করছি।এখন আমার ভরনপোষণ আমি নিজেই বহন করি।এবং বাকি টাকা আমার স্বামী তার নিজের পরিবারে খরচ করে।আমি উনার পরিবারের পাশাপাশি আমার বাবা মাকে সামান্য সাহায্য করলে রাগ করে।সে চাই আমার উপার্জনের পুরোটাই যেন আমি তাদের দিয়ে দেই।এবং এখন আমি উপার্জনক্ষম হওয়ায় তিনি আমাকে সন্তান নিতে দিচ্ছেন না।তিনি চান সম্পূর্ণ স্বচ্ছল না হওয়া পর্যন্ত আমি যেন তাদের আর্থিক সাহায্য করি।অথচ একটা সন্তানের জন্য আমার বুকটা হাহাকার করে।আমি আমার স্বামীকে খুব ভালোবাসি।কিন্তু নিজের উপর এতো জুলুম আর সহ্য করতে পারছিনা।এমতাবস্থায় আমার করণীয় কি জানাবেন প্লিজ।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
প্রিয় বোন!
আল্লাহ তায়ালা আপনাকে কবুল করুন।
স্বামী কিংবা তার পরিবারের ভরনপোষণের দায়িত্ব আপনার ওপর নয়। এমনকি স্বামী কর্মক্ষম হলে স্ত্রীর নিজের ভরনপোষণও তার ওপর নয়। বরং সেটাও স্বামীর ওপর ওয়াজিব। আপনার স্বামী আপনার ওপর যা চাপিয়ে দিয়েছেন বা দাবী করছেন সেটা সম্পূর্ণ অন্যায় ও জুলুম। আল্লাহ তায়ালা তাকে সহিহ বুঝ দান করুন।
বিষয়গুলোর সুষ্ঠ সমাধানের জন্য প্রথমেই আপনি আল্লাহ তায়ালার দরবারে কায়মনোবাক্যে দোয়া করুন। আপনার হৃদয়ের ব্যাথাগুলো অশ্রুসিক্ত নয়নে স্বামীকে শুনিয়ে শুনিয়ে আল্লাহ তায়ালার দরবারে পেশ করুন। যথাসম্ভব দীনের ওপর চলার চেষ্টা করুন। গুনাহ বর্জন করুন। কর্মক্ষেত্রে পর্দা রক্ষা করে চলার সর্বাত্মক চেষ্টা করুন।
দ্বিতীয়ত: যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়িয়ে হৃদ্যতা, মুহাব্বত ও ভালোবাসা দিয়ে বিষয়গুলো নিয়ে আপনার স্বামীর সাথে আলোচনা করুন। তাকে এটা বুঝান যে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতাই প্রকৃত শান্তি নয়। বরং দীনের ছায়াতলে অল্পে তুষ্ট থেকে আল্লাহ তায়ালার হুকুম পালনেই প্রকৃত শান্তি। সন্তান ছাড়া দাম্পত্য জীবন অর্থহীন। কাজেই এই বিষয়টিকেও তাকে বুঝানোর চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে হক্কানি কোনো আলেমের কাছে নিয়ে তাকে বুঝাতে পারেন। তবে সাবধান! কথিত দরবেশ-ফকির বাবা, কবিরাজ সাধক ইত্যাদী চক্রের কাছে গিয়ে প্রতারিত হবেন না।
আল্লাহ তায়ালা আপনাদের সুখী সুন্দর ও সমৃদ্ধ জীবন দান করুন।
والله اعلم بالصواب
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন