আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

কৌশলে বন্ধকি সুদ

প্রশ্নঃ ১০৪১২. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, মুহতারাম মুফতি সাহেবের নিকট আমার জানার বিষয় হল, যদি কেউ এক বছর মেয়াদি 50000 টাকার ঋণ গ্রহণ করে এবং ঋণদাতার নিকট ঋণগ্রহীতার একটি জমি বন্ধক রাখে। আর ঋণদাতা এক বছর সেই জমি চাষাবাদ করে, এক বছর পর ঋণগ্রহীতা সম্পূর্ণ টাকা ফেরত দিয়ে তার জমি ফেরত নেয়, তাহলে এটা কি জায়েজ হবে? যদি যায়েজ না হয় তাহলে কোন পদ্ধতিতে জায়েজ হতে পারে?এই মাসআলার কোন জায়েজ পদ্ধতি থাকলে আশা করি জানাবেন। কারণ কখনো কখনো ঋণগ্রহীতা ঋণ নিয়ে টালবাহানা করে তাই বাধ্য হয়ে বর্তমান সমাজে ঋণদাতাও তার জমি বন্ধক রেখে উপভোগ করে থাকে।

১ জুন, ২০২৫
Shibchar

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


আপনার প্রশ্নে ‍উত্তর জানতে নিজের প্রশ্নোত্তরটি পড়ূন।

প্রশ্ন: মুহতারাম! আমাদের দেশে জমি বন্ধক দেয়ার যে পদ্ধতি প্রচলিত তা কি জায়েয? পদ্ধতিটি হল, কোনো ব্যক্তি একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার বিনিময়ে কারো কাছ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ জমি বন্ধক নিয়ে থাকে। সাধরণত কত বছরের জন্য বন্ধক নেয়া হল তা উল্লেখ থাকে না। টাকাদাতা জমি ভোগ করতে থাকে। এভাবে দু-চার বছর চলে যায়। এরপর জমির মালিক টাকাদাতার মূল টাকা ফিরিয়ে দিয়ে নিজের জমি ফিরিয়ে নেয়। এ পদ্ধতি জায়েয কি না? যদি টাকাদাতা এরূপ শর্ত করে নেয় যে, বছরে বছরে তার টাকা থেকে ৫০০/১০০০ টাকা বা ৫% কিংবা ১০% টাকা কাটা যাবে তাহলে কি জায়েয হবে? বিষয়টা জটিল মনে হচ্ছে। একটু বিস্তারিত খুলে বললে শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে তার বিধান কী? যামানত? রাহান-বন্ধক? না কি? একটু খুলে বললে উপকার হয়।

উত্তর
ঋণ দিয়ে জমি বন্ধক রাখার প্রশ্নোক্ত পদ্ধতিটি জায়েয নয়। কেননা ঋণ দিয়ে বিনিময়ে বন্ধকী বস্তু থেকে উপকৃত হওয়া সম্পূর্ণ নাজায়েয। মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক-এর এক বর্ণনায় এসেছে, ইবনে সীরীন রাহ. বলেন, এক ব্যক্তি আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.-এর নিকট এসে বললেন, এক লোক আমার নিকট একটি ঘোড়া বন্ধক রেখেছে, অতঃপর আমি তাতে আরোহণ করেছি। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বললেন-

مَا أَصَبْتَ مِنْ ظَهْرِهَا فَهُوَ رِبًا.

তুমি উক্ত ঘোড়ার উপর যে পরিমাণ আরোহণ করেছ তা সুদ হয়েছে। (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ১৫০৭১)

আর ঋণের অর্থ থেকে বছর প্রতি ৫০০/১০০০ টাকা কর্তন করার শর্ত করলেও তা জায়েয হবে না। কারণ বন্ধকী বস্তু থেকে উপকৃত হওয়ার জন্য নামমাত্র ভাড়া দিয়ে তার ভোগ-দখল একটি হিলা বা ছুতা মাত্র। সকলেই জানে যে, জমি মালিককে ঋণ না দেয়া হলে এত কম মূল্যে ভাড়া দিত না।

আর উক্ত লেনদেনে যে টাকা দেয়া হয় তা করয তথা ঋণ। আমানত নয়। আর সেই করয হাসিলের জন্যই বন্ধক নেয়া-দেয়া হয়ে থাকে।

-বাদায়েউস সানায়ে ৫/২১২; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ৪/২৩৬; রদ্দুল মুহতার ৬/৪৮২

সৌজন্যে: মাসিক আলকাউসার
সফর ১৪৪২ || অক্টোবর ২০২০

والله اعلم بالصواب

মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর
প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

#১৯৫৮০
আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ,
শায়খ আমাদের কিছু ঋন আছে। আমাদের ইনকাম অনুযায়ী এই ঋণ পরিষদ করতে অনেক সময় লাগবে। সাংসারিক খরচ বাদে যে কয়েকটাকা থাকে সে টাকা মানুষ কে দিলে নিবে না সবাই একসাথে টাকা চায় কিন্তু একসাথে টাকা দেওয়া অসম্ভব। এখন কি ব্যাংক থেকে ঋন নিয়ে মানুষের পাওনা টাকা গুলো পরিষদ করতে পারবো।কারণ কিস্তি গুলো আস্তে আস্তে দিতে হয়।পাওনাদারা কখনোই মাসে ৫/৬ হাজার করে টাকা নিবে তারা একবারে টাকা চায়।এক্ষেত্রে আমাদের করনীয় কি কিভাবে পাওনাদারের টাকা গুলো পরিষদ করবো। ব্যাংক ঋণের সাথে সুদ জড়িত থাকে এটাও জানি। এখন কি করব শায়খ ব্যাংক ঋণ ছাড়া এতোগুলো টাকা কিভাবে মানুষ কে দিবো?
question and answer iconউত্তর দিয়েছেন: মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
২২ জুন, ২০২২
৬৯QW+২R৩