আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ১০৩৯৮. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, অজু করার পর নামাজে জায়গা ঝাড়ু দিয়ে পরিস্কার করা জায়েজ আছে ? আমি নামাজের পর প্রায়ই নামাজের জায়গা পরিস্কার করতে ভুলে যায়, অজু করে যখন নামাজ পড়তে আসি তখন মনে পড়ে। তখন আমি অজু অবস্থায় ঝাড়ু দিয়। এতে আমার অজু ভংজ্ঞ হবে কিনা জানতে চাই?

৯ নভেম্বর, ২০২১
চট্টগ্রাম

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم





কোনো স্থান বা বস্তু ঝাড়ু দেওয়া বা তা অন্য কোনভাবে পরিষ্কার করা এগুলো অজু ভাঙ্গার কারনের অন্তর্ভুক্ত নয়।
অতএব আপনি চাইলে অজু অবস্থায়ও এই কাজগুলো করতে পারেন।
এতে ওযুর কোন সমস্যা হবে না।

নিম্নে
ওযু ভঙ্গের কারণ গুলো উল্লেখ করা হলো।
অজু ভঙ্গের মৌলিক ও প্রধান কারণ ৭টি। যথা-



(১) পায়খানা ও পেশাবের রাস্তা দিয়ে কোনো কিছু বের হওয়া

পায়খানা ও পেশাবের রাস্তা দিয়ে কোনো কিছু বের হওয়া। যেমন বায়ু, পেশাব-পায়খানা, পোকা ইত্যাদি। [হেদায়া-১/৭]

পবিত্র কোআনে ইরশাদ হয়েছে, ‌তোমাদের কেউ প্রসাব-পায়খানা সেরে আসলে (নামাজ পড়তে পবিত্রতা অর্জন করে নাও) (সুরা মায়িদা-৬)

হযরত আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। নিশ্চয় রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, শরীর থেকে যা কিছু বের হয়, তার কারণে অজু ভেঙে যায়...।` (সুনানে কুবরা লিলবায়হাকি, হাদিস নং-৫৬৮)

(২) রক্ত, পূঁজ, বা পানি বের হয়ে গড়িয়ে পড়া। [হেদায়া-১/১০]

হযরত আব্দুল্লাহ বিন উমর (রা.)-এর যখন নাক দিয়ে রক্ত ঝড়তো, তখন তিনি ফিরে গিয়ে অজু করে নিতেন। [মুয়াত্তা মালিক-১১০]

(৩) মুখ ভরে বমি করা।

হযরত আয়শা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তির বমি হয়, অথবা নাক দিয়ে রক্ত ঝরে, বা মজি (সহবারের আগে বের হওয়া সাদা পানি) বের হয়, তাহলে ফিরে গিয়ে অজু করে নিবে। [সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং-১২২১]

(৪) থুথুর সঙ্গে রক্তের ভাগ সমান বা বেশি হওয়া।

হাসান বসরি (রহ.) বলেন, যে ব্যক্তি তার থুথুতে রক্ত দেখে তাহলে থুথুতে রক্ত প্রবল না হলে তার ওপর অজু করা আবশ্যক হয় না। [মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা, হাদিস নং-১৩৩০]

(৫) চিৎ বা কাত হয়ে হেলান দিয়ে ঘুম যাওয়া।

হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, সিজদা অবস্থায় ঘুমালে অজু ভঙ্গ হয় না, তবে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়লে ভেঙ্গে যাবে, কেননা চিৎ বা কাৎ হয়ে শুয়ে পড়লে শরীর ঢিলে হয়ে যায়। [ফলে বাতকর্ম হয়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে] (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং-২৩১৫, সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং-২০২)

(৬) পাগল, মাতাল বা অচেতন হলে।

হযরত হাম্মাদ (রহ.) বলেন, যখন পাগল ব্যক্তি সুস্থ্ হয়, তখন নামাজের জন্য তার অজু করতে হবে। [মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস নং-৪৯৩]

(৭) নামাজে উচ্চস্বরে হাসি দিলে।

হযরত ইমরান বিন হুসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি নামাজে উচ্চস্বরে হাসে, সে ব্যক্তি অজু ও নামাজ পুনরায় আদায় করবে। হযরত হাসান বিন কুতাইবা (রহ.) বলেন, যখন কোনো ব্যক্তি উচ্চস্বরে হাসি দেয়, সে ব্যক্তি অজু ও নামাজ পুনরায় আদায় করবে। [সুনানে দারা কুতনি, হাদিস নং-৬১২]

এই হল অজু ভঙ্গের প্রধান ও মৌলিক কারণসমূহ।

والله اعلم بالصواب

মুসলিম বাংলা ফাতওয়া বিভাগ
প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন