আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

রাসূলুল্লাহ (সা.) এর বহুবিবাহ ও কিছু অবান্তর প্রশ্ন

প্রশ্নঃ ১০৩১৭. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসসালামু আলাইকুম,আল্লাহ তায়ালা রাসুল (স:) কে একাধিক বিয়ের অনুমতি দিয়েছেন এবং দাসীর সাথে বিবাহ ছাড়াই শারীরিক সম্পর্কে স্থাপনে কোন বাধা নেই বলেই আমি জেনেছি( আমি ভুলও হতে পারি)। আমার আল্লাহর শরীয়াহ মানতে কোনই সমস্যা নেই আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু আমার খটকা লাগে, বিবাহ ছাড়া কি করে সংগম বৈধ হতে পারে।শুনেছি রাসুল (স) এর এক দাসীর গর্ভে ওনার এক পুত্র সন্তান ও লাভ হয় আল্লাহর হুকুমে। এমন আইন কেন আল্লাহ তায়ালা মানুষের জন্য হালাল করলেন ! এখন এই নিয়ম বলবত করা হয়েছে বলেই জানি। আমার প্রশ্ন হচ্ছে এ কেমন আইন ?আর এই ফতোয়ার দোহাই দিয়ে সৌদিআরব এ বহু লোক কাজের বুয়াদের সাথে ও মিলিত হচ্ছে এবং তারা সন্তান লাভ করছে। সেই সন্তান অস্বীকার করার জন্য এয়ারপোর্ট এ নারী কর্মি রা অমানবিক ভাবে নিজেদের সন্তান ফেলে যাচ্ছেন! আল্লাহর আইন এর দোহাই দিয়ে সৌদি পুরুষ রা এমন টি করছে। এগুলো কি হারাম নয়?আর দাসীদের সাথে সংগম কিভাবে বৈধ হতে পারে সে যুগেও।,

২৪ জুন, ২০২৪

Dhaka, Bangladesh

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


প্রিয়ভাই! আপনার প্রশ্নের সহজ উত্তরের সুবিধার্থে আমরা নাতিদীর্ঘ দুটি প্রবন্ধ তুলে ধরলাম। আশা করছি প্রবন্ধ দুটির মাধ্যমে আপনার সকল খটকা দূর হবে। তাছাড়া ইসলামের দাসী ব্যবাহারের সাথে আপনার কথিত সৌদিনীতির কোনো সাজুয্য আজে কিনা সেটাও অনুধাবন করতে পারবেন।

(এক.)
রাসূলুল্লাহ (সা.) এর বহুবিবাহ ও কিছু অবান্তর প্রশ্ন
-নাসির আহমদ
****************************************************

বহুল প্রমাণিত ও প্রসিদ্ধ কথা হলো, নবী করীম (সা.) তার পঁচিশ বছর বয়সের পূর্বে কোন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হননি । জাহেলী যুগে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার সরঞ্জাম ছিল সহজলভ্য। ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়াকে কোন ধরনের ত্রুটি মনে করা হতো না বরং তা ছিল পুরুষদের নিত্যনৈমিত্তক কাজ। সে সমাজে প্রতিপালিত হয়েও নবী (সা.) ছিলেন পূত-পবিত্র চরিত্রের অধিকারী। যার স্বীকৃতি আরববাসীই প্রদান করেছিল।

নবী (সা.) সর্বপ্রথম যাকে বিবাহ করেন সেই খাদিজা (রা.)ও তার চেয়ে পনের বছরের বড়। অপরদিকে তিনি কুমারী ছিলেন না; ছিলেন কয়েক সন্তানের মা। নবী (সা.) এর আমানতদারিতা, সততা ও চরিত্রের পরিচয় পেয়ে খাদিজা (রা.) তার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। পঁচিশ বছর নির্মল বৈবাহিক জীবন অতিবাহিত করেন । খাদীজার জীবদ্দশায় নবী (সা.) কোন নারীকে বিবাহ করেন নি।

নবী (সা.) এর স্ত্রীদের সংখ্যা নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে । তবে নিম্নবর্ণিত নারীগণ যে তার স্ত্রী এতে কোন বিরোধ নাই । ১. হযরত খাদীজা বিনতে খুওয়াইলিদ ২. হযরত আয়েশা বিনতে আবি বকর ৩. হযরত সাওদা বিনতে যামআ ৪. হাফসা বিনতে ওমর ৫. যয়নব বিনতে খুযাইমা ৬. উম্মে সালমা বিনতে আবি উমাইয়া ৭. যয়নব বিনতে জাহহাশ ৮. জুয়াইরিয়া বিনতে হারিছ ৯. উম্মে হাবিবা বিনতে আবি সুফিয়ান ১০. সাফিয়া বিনতে হুয়াই ১১. মায়মুনা বিনতে হারিছ। আর মারিয়া কিবতিয়া ছিলেন উম্মে ওয়ালাদ। এই এগারজন নারীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি তিনি তাদের সাথে ঘর সংসারও করেছেন । একত্রে নবীর সাথে দাম্পত্য জীবন অতিবাহিতকারীদের সংখ্যা নয়জন।

পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, হযরত খাদীজার জীবদ্দশায় নবী অন্য কোনো নারীকে বিবাহ করেননি । যয়নব বিনতে খুযাইমা ৪র্থ হিজরীতে নবীর জীবদ্দশায় মারা যান। নবী (সা.) এর ইন্তিকালের সময়ে খাদীজা ও যয়নব ব্যতীত অপর নয়জন স্ত্রীই জীবিত ছিলেন । কাজেই প্রশ্নকারী প্রশ্ন করতে পারেন যে, নবী (সা.) একত্রে চারজনের বেশি অর্থাৎ নয়জন নারীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন কেন? উত্তরে বলা যায়, এটি নবীর জন্য খাস । এছাড়া সর্বসম্মতিক্রমে নবীর জন্য এটা জায়েজ। এর পিছনে উলামায়ে কিরাম অনেক হিকমত বা কারণ উল্লেখ করেছেন । নিম্নে উল্লেখযোগ্য কিছু কারণ পেশ করা হলো-

প্রথমত: দ্বীনের প্রচার ও প্রসারের স্বার্থেই তিনি এত অধিক স্ত্রী গ্রহণ করেছেন। উল্লেখ্য যে, কোন ব্যক্তির স্ত্রীই তার অতিশয় নিকটবর্তী থাকেন, স্ত্রীরা স্বামীর অনেক কিছু জানেন যেটা কিনা বাইরের মানুষ জানে না। এখানে প্রজ্ঞা এটিই যে, নবী (সা.) এর স্ত্রীগণের মাধ্যমে শরীয়তের অনেক বিধান সাব্যস্ত হয়েছে। আর এমন কিছু প্রশ্ন উম্মুল মুমীনীনগণ করেছিলেন যে, প্রশ্নগুলো করতে অন্যরা সাহস পেত না বা সমীচীন মন করত না।

দ্বিতীয়ত: সামাজিক কারণেই নবী অধিক সংখ্যক বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। বিভিন্ন গোত্রের সাথে আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার কারণে সামাজিক বন্ধন বৃদ্ধি পায়।

তৃতীয়ত: রাজনৈতিক কারণেও নবী অধিক সংখ্যক নারীদের বিবাহ করেন । কেননা বাস্তবতা হলো নবী যে সকল গোত্রের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন তারা নীতিগতভাবেই তার বিরুদ্ধাচারণ করতে পারবে না । বিশেষ করে ইসলাম প্রচারের ক্ষেত্রে তা অনেক সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। যেমন হযরত জুয়াইরিয়াকে বিবাহ করার কারণে বনী মুসতালিক গোত্রের লোকেরা এক পর্যায়ে ইসলাম গ্রহণ করে। খায়বারের রাজার কন্যা হুয়াই ইবনে আখতাবকে বিবাহ করার কারণও ছিল রাজনৈতিক।

চতুর্থত: তার উন্নত চরিত্রের দাবীই হলো অসহায়, নিঃস্ব, বিশেষ করে শহীদদের স্ত্রীদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন । অনেক বিধবা, নিঃস্ব নারীদেরকে বিবাহ করে তিনি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

পঞ্চমত: রাসূল (সা.) বিবাহের মাধ্যমে সামাজিক সংস্কার করে গেছেন। যেমন- রাসূল (সা.) পালক পুত্রের স্ত্রীকে বিবাহ করার মাধ্যমে বুঝাতে চেয়েছেন পালক পুত্রের তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীকেও বিবাহ করা যায় । কারণ তৎকালীন আরবে এটাকে খারাপ মনে করা হত।



বহুবিবাহের পিছনে কি জৈবিক কারণ ছিল?
কেউ কেউ নবী (সা.) এর বহুবিবাহের পিছনে জৈবিক প্রয়োজনের কথা বলেন । নবী (সা.) যদি শারীরিক প্রয়োজনে বহুবিবাহ করতেন তবে তিনি কুমারীদের বিবাহ করতেন। কিন্তু আমরা দেখি যে, তার স্ত্রীদের মধ্যে হযরত আয়েশাই একমাত্র কুমারী ছিলেন। অন্যরা সন্তানেরা মা অথবা বিধবা ছিলেন। অথচ নবীজী জাবির (রা.) কে বলেছিলেন, কেন তুমি কুমারী বিবাহ করলে না তাহলে সে তোমার সাথে আনন্দ-ফূর্তি করতো আর তুমিও তার সাথে আনন্দ-ফূর্তি করতে?

অন্য হাদীসে বলা হয়েছে, তোমরা কুমারীদের বিবাহ করবে। জৈবিক চাহিদার দাবিই হলো কুমারীদের বিবাহ করা। এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, নবী জৈবিক চাহিদার দাবিতে অধিক বিবাহ করেননি। জৈবিক চাহিদার কারণে করলে তিনি কুমারী মেয়েদেরকে বিবাহ করতেন।

নবী (সা.) ৫০ বছর বয়স পর্যন্ত খাদীজার সাথে সংসার করেন । খাদীজার ইন্তেকালের পর হযরত সাওদা (রা.) এর সাথে বৈবাহিক জীবন যাপন শুরু করেন (তখন পর্যন্ত হযরত আয়েশাকে ঘরে তুলেন নি)। উল্লেখ্য সাওদা (রা.) আরবের একজন বিধবা, অসহায়, অতিশয় বৃদ্ধা ও কুশ্রী ছিলেন। নবীর বয়স চুয়ান্নতে পৌছে যাওয়ার পর তাকে বিবাহ করে সামাজিক আশ্রয় দিয়েছিলেন। তৎকালীন আরবে বিধবাকে বিবাহ করা সামাজিক অশোভন হিসাবে বিবেচিত হত। কাজেই বহুবিবাহের জৈবিক কারণ ছিল না এটি খুবই পরিষ্কার। এরকম কোন কারণ থাকলে তিনি কেন একজন বিধবার সাথে যৌবন অতিবাহিত করেন? প্রথমে খাদিজা তারপর সাওদা (রা)। আধুনিক বিজ্ঞান বলে, মানুষের যত বেশি বয়স বাড়ে, জৈবিক চাহিদা তত কমতে থাকে।

হযরত আয়েশাকে ৬ বছর বয়সে বিবাহ করার কারণ
১. বুখারী শরীফের ৫ম খণ্ডের ২৩৫ নং হাদীস থেকে বুঝা যায় স্বর্গীয় আদেশ পেয়ে রাসূল (সা.) হযরত আয়েশাকে বিবাহ করেন।

২. হযরত আয়েশাকে বিবাহ করার পিছনে রাসূল (সা.) এর জৈবিক কোন কারণ ছিল । কারণ তাকে বিবাহ করার সময় রাসূল (সা.) এর বয়স প্রায় ৫৪ বছর ছিল।

৩. তৎকালীন আরবে অনেক কম বয়সে মেয়েরা বিবাহের উপযুক্ত হয়ে যেত। আজ থেকে ১৪০০ বছর আগের ভৌগোলিক অবস্থা ভিন্ন ছিল। আধুনিক বিজ্ঞান বলে বিবাহের উপযুক্ততা পরিবেশের উপর নির্ভরশীল। তাছাড়া, ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে জানা যায়, আজ থেকে প্রায় একশ বছর আগে মেয়েদের ৯-১৪ বছর বয়সে বিবাহ দেয়া হত।

৪. হযরত আয়েশার সাথে রাসূল (সা.) এর আকদ সম্পূর্ণ হয় ৬ বছর বয়সে, কিন্তু ৯ বছর বয়সে তিনি রাসূলের ঘরে উঠেন। নবী (সা.) এর মাধ্যমে প্রমাণ করতে চেয়েছেন আয়েশা প্রাপ্তবয়স্কা হওয়ার পরে রাসূলের ঘরে যান। তাছাড়া বুখারী শরীফের ৫ম খণ্ডের ২৩৪ নং হাদীস থেকে বুঝা যায়, বিবাহের আগে হযরত আয়েশার শারীরিক পরিবর্তন হয়েছিল।

পরিশেষে বলা যায়, রাসূল (সা.) এর বহুবিবাহের পিছনে কোন জৈবিক কারণ ছিল না, বরং সামাজিক, অর্থনৈতিক ও বৃহৎ উদ্দেশ্যই ছিলো এর মূল কারণ।

তথ্যসুত্র:-
১. আর রাহীকুল মাখতুম- সফিউর রহমান মুবারকপুরী
২. আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া- ইবনে কাছীর

(দুই.)
****
একজন নাস্তিক এর প্রশ্নঃ


আওতাস যুদ্ধে কাফিরদের স্ত্রী রা ক্রীতদাসী হিসেবে উপস্তিত হলে মুসলিম রা তাদের সাথে সংগমের ব্যাপারে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয় কারণ তারা পরস্ত্রী। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সুরা আন নিসা এর ২৪ নং আয়াত নাজিল হয় যেখানে তাদের সাথে সংগম কে বৈধ করা হয়। কিন্তু তারা যদি বিবাহিত হয় তাহলে ব্যাপারটা কত জঘন্য হয়,ধরুন আপনি
যুদ্ধে আপনার স্ত্রীকে নিয়ে গেলেন এবং আপনাকে হত্যা আপনার স্ত্রী কে দাসী বানিয়ে নিয়ে যায় এবং রাত কাটায় তাহলে ব্যাপারটা কত জঘন্য হয়ে যায়। ততকালীন সময়ে নারীরা যুদ্ধের সময় সেজেগুজে থাকত যাতে যুদ্ধে হারলে তাদের কপালে ভালো মুনিব জুটে। অনেকে বলে থাকেন এটা সেসব নারীদের যৌন আকাঙ্ক্ষা পূরণ করার জন্য কিন্তু সেটা তো ছেলেদের ও আছে। সুতরাং এখানে যুদ্ধ বন্দীনী দের সাথে ধর্ষণ করা হলো না?



উত্তর:-
মুফতি ওয়ালিউল্লাহ

দাসপ্রথা ইসলাম প্রবর্তিত কোন ব্যবস্থা নয়। আজ হতে প্রায় পৌনে ৪০০০ বছর আগের ব্যবলনিয় Code of Hammurabi-তেও দাসপ্রথার অস্তিত্ব পাওয়া যায়। কিন্তু কেন যেন ইসলামের সমালোচনায় দাসপ্রথা একটি বেশ মুখরোচক বিষয়বস্তুতে পরিণয় হয়, আর আলোচনার ভঙ্গিটাও এমন থাকে যাতে পাঠকের কাছে মনে হতে থাকবে দাসপ্রথার মত ঘৃণ্য একটি ব্যবস্থাকে ইসলাম জন্ম দিয়েছে বা উন্নীত করেছে। অথচ আজ থেকে প্রায় দেড় হাজার বছর আগে ইসলাম দাসপ্রথার মতো একটি বর্বর প্রথার বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা নিয়েছিল, ক্রীতদাসকে ভাতৃত্বের যে মর্যাদা দিয়েছিল, নেতৃত্বের যে সুযোগ দিয়েছিল, যে কোন নিরপেক্ষ বিশ্লেষক তার প্রশংসা না করে পারবে না।

মুহতারাম সাদাত দাঃবাঃ লিখেছেন যে,
যুদ্ধবন্দীদের ক্রীতদাস বানানো সেই সময় একটি স্বাভাবিক রীতি ছিল। কোন মুসলিম যদি যুদ্ধে অমুসলিমদের হাতে বন্দী হতো তাকেও এই পরিণতি বরণ করতে হতো। ইসলামে যুদ্ধবন্দীদের ক্রীতদাস বানানো কোন জরুরী বিষয় নয়। ইসলামী রাষ্ট্রপ্রধান যুদ্ধবন্দীদের মুক্তিপণ নিয়ে মুক্ত করতে পারে, বিনা মুক্তিপণেও মুক্ত করতে পারে, যুদ্ধবন্দি বিনিময় করতে পারে বা প্রয়োজনবোধে অন্যান্য রাষ্ট্রসমূহের রীতি অনুসারে দাস-দাসীও বানাতে পারে। তবে কোন রাষ্ট্রের সাথে মুসলিমদের যদি এমন কোন চুক্তি থাকে যে তারা তাদের যুদ্ধবন্দীদের দাস বানাতে পারবে না, তবে সেই চুক্তি রক্ষা করা মুসলিমদের জন্য জরুরি।

ইসলাম একটি বাস্তব ধর্ম। ইসলাম এমন কোন ধর্ম না যে কেউ এক গালে চড় মারলে আরেকটা গাল পেতে দিতে বলবে। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে নিজ অনুসারিদের বিপদ বা অস্তিত্ব সংকটের মুখে ফেলে দেবার ধর্ম ইসলাম নয়। যেখানে মুসলিমরা অমুসলিমদের হাতে যুদ্ধবন্দী হলে তাদেরকেও দাসত্ব বরণ করতে হতো, সেখানে ইসলাম যদি একই সুযোগ না রাখতো তবে তা হতো শত্রুর হাতে এক বিরাট মারণাস্ত্র তুলে দেওয়ার নামান্তর। কাজেই যতদিন মুসলিমদের জন্য এই নিশ্চয়তা না আসে যে তাদের যুদ্ধবন্দীদের দাসদাসী বানানো হবে না, ততদিন পর্যন্ত মুসলিমদের জন্যও এই সুযোগ রহিত করার কোন যুক্তি থাকতে পারে না।

যুদ্ধবন্দীদেরকে দাসে পরিণত করার বিধান কেবল বৈধতা পর্যন্ত সীমিত।অর্থাৎ ইসলামী র্রাষ্ট যদি উপযুক্ত বিবেচনা করে,তবে তাদেরকে দাসে পরিণত করতে পারে।এরূপ করা মোস্তাহাব বা ওয়াজিব নয়।বরং কোরআন ও হাদীসের সমষ্টিগত বাণী থেকে মুক্ত করাই উত্তম বোঝা যায়।দাসে পরিণত করার অনুমতিও ততক্ষণ যতক্ষণ শত্রুপক্ষের সাথে এর বিপরীত কোন চুক্তি না থাকে।যদি শত্রুপক্ষের সাথে চুক্তি হয়ে যায় যে,তারা আমাদের বন্দীদেরকে দাসে পরিণত করবে না এবং আমরাও তাদের বন্দীদেরকে দাসে পরিণত করব না,তবে এই চুক্তি মেনে চলা অপরিহার্য হবে।বর্তমান যুগে বিশ্বের অনেক দেশ এরূপ চুক্তিতে আবদ্ধ আছে।কাজেই যেসব মুসলিম দেশ এই চুক্তিতে সাক্ষর করেছে তাদের জন্য চুক্তি বিদ্যমান থাকা পর্যন্ত কোন বন্দীকে দাসে পরিণত করা বৈধ হবে না।তাফসীর মা'রেফুল কোরআন -পৃষ্টা১২৫৪(বাংলা বার্সন-মুহাউদ্দিন খান অনূদিত - সউদী সরকার কর্তৃক প্রকাশিত)


দাসদের অনেক অধিকার ইসলাম দিয়েছেঃ
★এক সাহাবী এসে বললেন ইয়া রাসুলুল্লাহ আমি আমার গোলামকে প্রতিদিন কয়বার মাফ করবো?
উত্তরে আসল প্রতিদিন ৭০ টি ভুল মাফ করবে।
(বুখারী ২৩৮৪)

★ তাদেরকে আমার দাস হিসেবে সম্বোধন করা নিষেধ।
ডাকার সময় এভাবে ডাকবে আমার বালক, আমার খাদিম।
(তিরমিজি ১৯৪৯)

★★ পান থেকে চুন খসলেই ইসলামে দাসমুক্তির বিধান দেওয়া হয়েছেঃঃ

★ যদি দাসকে মারো,তো প্রায়শ্চিত্ত হিসেবে তাকে মুক্ত কর।
(মুসলিম শরীফ ৪১৫২)

★ কাউকে অনিচ্ছাকৃত মেরে ফেলেছ,তো এর কাফফারা স্বরুপ দাস মুক্তি কর।
(কুরআন সুরা নিসা /৯২)

★ প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করেছ,দাস মুক্তি কর।
(কুরআন সুরা মায়েদাহ/৮৯)

★ রমজান মাসে রোযা রেখে (দিনের বেলা) স্ত্রী সহবাস করেছ,দাস মুক্তি কর।
(আবু দাউদ ২২০৭)

★ ঝগড়ার সময় স্ত্রীকে বলেছ তোমার পিঠ,, আমার মায়ের মতো,তো গোলাম আযাদ কর।
(আবু দাউদ ২২০৮)

★যাকাতের ৮ টি খাতের ১ টি খাতই আছে,যাকাতের টাকা দিয়ে গোলাম ক্রয় করে তাকে আযাদ করে দেওয়া।
(কুরআন সুরা তওবাহ/৬০)

সূর্য গ্রহনের সময় দাস মুক্ত কর।
(বুখারী শরীফ ৯৯৬)

★ পরকালের সওয়াবের আশায় দাস মুক্ত কর।
(বুখারী শরীফ ৫২৪৬)


★দাসিকে বিবাহে উৎসাহ প্রদান
আবু মুসা(রা.) হতে বর্ণিত:
রাসূলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
যার একটি ক্রীসদাসি আছে আর সে তাকে শিক্ষাদীক্ষা দান করে, তার সাথে সদয় ব্যবহার করে, অত:পর তাকে মুক্ত করে বিবাহ করে সে দ্বিগুণ সওয়াব পাবে। [সহিহ বুখারি, হাদিস নম্বর ২৫৮৪; ইংরেজি অনুবাদ: ভলি. ৩, বুক ৪৬, নম্বর ৭২০;

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আরো জানতে মুহতারাম ডাঃ শামছুল আরেফিন শক্তি দাঃবাঃ এর লিখিত ""ডাবল স্ট্যান্ডার্ড"" পড়ুন।

মুহতারাম মুহাম্মাদ সাইফুর রহমান লিখেছেনঃ
ইসলাম পূর্বে, দাসীর বিয়ের পরেও দাসী মালিকের চাহিদা মেটাতে বাধ্য ছিলো। তাদের সম্পর্কের কারনে জন্ম নেওয়া বাচ্চার পিতৃত্ব ও তারা স্বীকার করত না।
দাসীর সন্তান ও দাস হিসেবেই বিবেচিত হত। আর মালিক পিতৃত্ব স্বীকার করত না আর তার পক্ষেই দেশের প্রশাসন থাকত।

ইহুদী সমাজে দাসীদেরকে পরিবারের ভিতরেই অথবা বাহিরে পতিতা হিসেবে ব্যবহার করা পূর্বে সাধারন ব্যাপার বলে গন্য করা হত।

রোমান সমাজে বড় বড় ব্যবসায়ীদের দাসীদেরকে জোর করে পতিতা বানিয়ে রাখা হত অন্য পুরুষের খায়েশ পুরনের জন্যে।

★ইসলামে দাসীর সাথে শারীরিক সম্পর্কের যৌক্তিকতা ও লুকায়িত সৌন্দর্য ও হিকমাহ গুলো নিচে উল্লেখ করা হলোঃ

(১) পূর্বে দাসীদেরকে যে কেউই ব্যবহার করতে পারত এমনকি একই পরিবারের অনেক সদস্য তাদেরকে ভোগ করতে পারত। তবে ইসলাম শুধুমাত্র মালিকের জন্যই বৈধ করেছে। এতে প্রাচীনকালে যেমন যুদ্ধ শেষে নারীদেরকে ধর্ষন করা হত, বা তাদেরকে বিভিন্ন অনৈতিক কাজে বাধ্য করা হত। ইসলাম সেই সুযোগকে মিটিয়ে দিয়েছে। ইসলামে বৈধভাবে মালিকানাপ্রাপ্ত মালিকের সাথে দাসীর শারীরিক সম্পর্কের সুযোগ রেখে নারীকে বেইজ্জতি থেকে বাচিয়েছে, তাদেরকে সম্মানিত করেছে, তাদেরকে নতুন একটি পরিবার দিয়েছে, তাদেরকে অন্ন-বস্ত্র,বাসস্থানের নিশ্চয়তা দিয়েছে।

(২) মালিক ও দাসীর সম্পর্ক অবশ্যই ঘোষনা করতে হবে। যাতে লোকমনে তাদের দুইজনের ব্যাপারে কোন প্রকার সন্দেহ ও সংশয় না থাকে। এতে করে নারীটি পায় যথার্থ সম্মান ও মর্যাদা।

(৩) এর ফলে দাসীটির শারীরিক চাহিদা পূরনের একটি সুষ্ঠু ব্যবস্থা হয়, এতে একদিকে দাসীটির স্বাভাবিক চাহিদা পূরন হয় অন্যদিকে দাসীটি চাহিদা পূরন না করতে পেরে অবৈধ কোনো পন্থা বেছে নিবেনা এতে রাষ্ট্রে চারিত্রিক পবিত্রতা ও শৃংখলা বজায় থাকব।

(৪) মালিকের জন্য দাসীকে বিয়ে করা জায়েজ।
সূরা নিসা ৪ঃ২৫।

যেমন হাদীছে এসেছে, যে ব্যক্তি দাসীকে উত্তম রুপে লালন-পালন, প্রতিপালন করে, তার প্রতি ইহসান করে, তাকে মুক্ত করে বিবাহ করে তার জন্যে আছে দ্বিগুন সওয়াব;
সহীহ বুখারী, ইফা, হা-২৩৭৬, ২৩৭৯।

(৫) দাসীকে কোনোমতেই সহবাসে জোর করা যাবেনা যেমনটা রোমান সমাজে প্রচলন ছিলো।

(৬) দাসীকে অন্ন-বস্ত্রের নিশ্চয়তা দিতে হবে, সাথে উত্তম আচরন করতে হবে।

(৭) দাসী যদি উম্মুল ওয়ালাদ অর্থ ওই মালিকের সন্তানের জননী হয় তবে ওই দাসী বিক্রি হারাম হয়ে যাবে। হাদীছে এসেছে, তোমরা উম্মুল ওয়ালাদ বিক্রি করোনা।
সিলসিলাহ সহীহাহ, ৫/৫৪০, হা-২৪১৭

আর ওই দাসী মালিকের মৃত্যুর পরে মুক্ত হয়ে যাবে।

এতে যেমন দাসীর মুক্ত হওয়ার সুযোগ আছে, তেমনি সন্তানের পিতৃপরিচয়ের নিশ্চয়তা আছে। আর সন্তান ও মুক্ত বলে বিবেচিত হবে।

(৮) দাসীর জন্য এ সুযোগ ও রয়েছে সে মালিকের কাছে দাসত্ব থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারে এবং দাসত্ব থেকে মুক্তি পেতে পারে।

(৯) সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এতে দাসী খুব কাছ থেকে ইসলাম সম্পর্কে জানতে, বুঝতে, উপলব্ধি করতে পারে। এতে হয়ত সে ইসলাম গ্রহন করে নিতে পারে, যা তার জন্যে চিরস্থায়ী জাহান্নাম থেকে মুক্তি আর চিরশান্তির জান্নাতের নিশ্চয়তা দিতে পারে।

নিজ স্ত্রীর সাথে যেমন, ঠিক তেমনি যুদ্ধবন্দি দাসীদের সাথে সহবাস করা ইসলামে বৈধ। তবে সেক্ষেত্রেও প্রচুর নিয়ম বিধি রয়েছে।
মহানবির মৃত্যুর ১০০ বৎসরের মধ্যে ইবনে ইসহাকের লেখা সীরাতগ্রন্থ, হাদীসগ্রন্থ এবং পরবর্তী কোন গ্রন্থেও এমন এটি কথাও নেই যে, যুদ্ধ বন্দিদের ধর্ষন করা হয়েছে। হ্যা এটা ঠিক যে যুদ্ধবন্দিদের দাসীতে পরিণত করা হতো। কেননা তৎকালে কোন কারাগার ছিল না। নারী যুদ্ধবন্দিদের দাসীতে পরিণত করে তাদের সাথে সেক্স করা বৈধ ছিল। বিয়ের প্রয়োজন হতো না, কেননা দাসীর সাথে সেটা করা একটা অলিখিত কন্ট্রাক্টই বলা যায়। আজকের যুগে যেমনটা কল্পনা করা হয়, সে যুগটা আদপেই সেরকম ছিল না। তৎকালে নারীরাও যোদ্ধা ছিল। তারা এটাও জানতো যুদ্ধে হারলে বা বন্দি হলে দাসীতে পরিণত হতে হবে।

ইতিহাসবিদ স্যামুয়েল বার্ডার লেখেন- প্রাচীনকালে যেসব নারীরা তাদের পিতা কিংবা স্বামীর সাথে যুদ্ধক্ষেত্রে যেতো, তারা খুব সুন্দর জামা আর অলঙ্কার পড়তো। যাতে বন্দী হলে তারা বিজিতের দৃষ্টি খুব সহজেই কাড়তে পারে।[Oriental Customs Or, an Illustration of the Sacred Scripture, Williams and Smith, London, 1807 vol.2 p.79, no. 753]

১) দাসির সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে বিবাহ শর্ত নয়ঃ
ইসলামের বিধান অনুযায়ী ক্রয়কৃত দাসি কিংবা বন্টনকৃত যুদ্ধ বন্দিনীদের সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করা মুসলিমদের জন্য আল্লাহ তায়ালা হালাল ঘোষণা করেছেন। এ ক্ষেত্রে দাসীকে বিয়ে করা শর্ত হিসাবে গণ্য করা হয় নি। বিয়ে ছাড়াই দাসীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করা বৈধ। তবে কেউ যদি তার দাসীকে ইসলাম শিক্ষা দেয়, অতঃপর তাকে মুক্ত করে দিয়ে তাকে বিয়ে করে তাহলে উক্ত মুনিবের জন্য রয়েছে দ্বিগুণ সওয়াব।

২) বণ্টন হবার আগে কোন যুদ্ধ বন্দিনীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন নিষিদ্ধঃ
যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর বন্টন হবার আগে কোন যুদ্ধ বন্দিনীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কেউ যদি এ ধরণের কোন কার্যে লিপ্ত হয় তাহলে তা ব্যভিচার হিসেবে গণ্য হবে এবং উক্ত ব্যক্তির ওপর ব্যভিচারের শাস্তি প্রয়োগ করা হবে।

৩) যুদ্ধক্ষেত্রে স্বামী সহ ধৃত যুদ্ধ বন্দিনীদের সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন নিষিদ্ধঃ
বন্দি হবার পর সাধারণভাবে বিবাহিত যুদ্ধ বন্দিনীর পূর্বেকার বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হিসেবে গণ্য করা হয়। ফলে তাদের সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করা বৈধ বিবেচিত হয়। কিন্তু যদি যুদ্ধক্ষেত্রে স্বামী ও স্ত্রী উভয়েই একসাথে অথবা একজনকে যুদ্ধক্ষেত্রের পরিধির বাইরে নিয়ে যাবার আগেই অন্যজন যুদ্ধবন্দি/বন্দিনী হিসেবে ধৃত হয়, সেক্ষেত্রে তাদের বিবাহ বন্ধন অক্ষুন্ন থাকবে। ফলে উক্ত যুদ্ধ বন্দিনীর সাথে স্বামী ভিন্ন অন্য কারো দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন অবৈধ হবে। যদি শুধুমাত্র একজন যুদ্ধক্ষেত্রে ধৃত হয়ে ইসলামী সীমানায় পৌঁছে যায়, সে ক্ষেত্রে তাদের বিবাহ বন্ধন বিচ্ছিন্ন হিসেবে গণ্য হবে।

৪) ইদ্দতকাল অতিবাহিত হওয়ার আগে দাসীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন নিষিদ্ধঃ
ক্রীতদাসি ক্রয় করলেই বা বন্টনকৃত যুদ্ধ বন্দিনী লাভ করার সাথে সাথেই একজন মুসলিমদের জন্য তার সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন বৈধ হয়ে যায় না, বরং এক ইদ্দতকাল (তথা একটি মাসিক চক্র) অতিবাহিত হবার আগে তাদের সাথে মিলিত হওয়া নিষিদ্ধ। এই নিয়ম সে সকল ক্রীতদাসি বা যুদ্ধ বন্দিনীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যারা গর্ভবতী নন।

৫) গর্ভবতী দাসীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপনে নিষেধাজ্ঞাঃ
ক্রয়কৃত দাসী বা বন্টনকৃত যুদ্ধ বন্দিনী যদি গর্ভবতী হয় তাহলে সন্তান প্রসবের আগে তার সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করা নিষিদ্ধ। সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর তার সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করা জায়েজ।

৬) বিবাহিত দাসির সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপনে নিষেধাজ্ঞাঃ
যদি মুনিবের অনুমতিক্রমে কোন দাসি অন্য কোন পুরুষের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়, সে ক্ষেত্রে মুনিবের জন্য উক্ত দাসির সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করা হারাম। এমনকি দাসির যৌনাঙ্গের দিকে দৃষ্টিপাত করাও নিষিদ্ধ।

৭) যে দাসির সাথে মুনিবের দৈহিক সম্পর্ক রয়েছে তার বোনের সাথে সম্পর্ক স্থাপনে নিষেধাজ্ঞাঃ
যদি সহোদর দুই বোন কোন ব্যক্তির দাসি হিসেবে থাকে তাহলে মুনিব কোন একজনের সাথে দৈহিক সম্পর্কে জড়িত থাকা অবস্থায় অন্য জনের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবে না। তবে যার সাথে দৈহিক সম্পর্ক রয়েছে তাকে যদি মুনিব মুক্ত করে দেয় কিংবা অন্য কোন পুরুষের সাথে বিয়ে দিয়ে দেয়, সে ক্ষেত্রে তার বোনের সাথে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করা জায়েজ হবে।

৮) নিজ মালিকাধীন নয় এমন ক্রীতদাসির সাথে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক নিষিদ্ধঃ
নিজের মালিকাধীন দাসি ছাড়া অন্য কারো দাসির সাথে বিবাহ বহির্ভূত দৈহিক সম্পর্ক নিষিদ্ধ। এমনকি নিজের স্ত্রীর অধিকারভুক্ত দাসির সাথেও দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করা জায়েজ নয়।

৯) মুনিবের সন্তান গর্ভে ধারণ করার বিধানঃ
কোন দাসি যদি তার মুনিবের সন্তান গর্ভে ধারণ করে তাহলে মুনিবের জন্য উক্ত দাসিকে বিক্রয় করা নিষিদ্ধ হয়ে যায়। ফলে উক্ত দাসি মুনিবের পরিবারের স্থায়ী সদস্যে পরিণত হয়। প্রসবকৃত উক্ত সন্তানকে মুনিবের স্বাধীন বৈধ সন্তান হিসাবে গণ্য করা হয় এবং তার সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হয়। আর মুনিব মারা যাবার সাথে সাথে উক্ত দাসি স্বাধীন হয়ে যায়।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
দাসীদের সাথে সহবাসের ক্ষেত্রে ইসলাম অন্য কিছু ধর্মের ন্যায় জোড় করার অনুমতি দেয়না।
এক্ষেত্রে ইসলামের বিধান হলো দাসীদের সাথে সহবাস কেবল তাদের সন্তুষ্টি চিত্তেই হবে।
জোড়পূর্বক নয়। যেটা পূর্বেই আলোচনা হয়েছে

★আর ছেলে (দাস) যদি তাদের যৌন খায়েশ মিটাতে চায়,তাহলে মালিকের অনুমতি স্বাপেক্ষে ইসলাম তাদেরও বিবাহের অনুমতি প্রদান করেছে।
যাতে তাদেরও হক পরিপূর্ণ আদায় হয়।

(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)
------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

৫৮০৯১

বিবাহও কি তাকদিরে লেখা আছে?


১৬ মে, ২০২৪

কুমিল্লা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী

৩৩৯৯২

ফেসবুকে বোরকা পরা ছবি ছাড়া যাবে?


৩০ মে, ২০২৩

রাঙামাটি

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

২৫০০১

ইসলামী পোশাক কেমন হওয়া উচিত


২৪ নভেম্বর, ২০২২

চট্টগ্রাম

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

২৮৬৬০

টেস্টটিউব বেবি নেয়া বৈধ কিনা?


৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

কাপাসিয়া

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy