আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

যমযম পানের ব্যাপারে ভুল ধারণা

প্রশ্নঃ ১০১৬২৬. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, যমযমের পানি দাঁড়িয়ে পান করবে? নাকি বসে? কেউ কেউ বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ ভীড়ের কারণে যমযমের পানি দাঁড়িয়ে পান করেছেন। তাই ভীড় থাকলে যমযমের পানি দাঁড়িয়ে পান করা জায়েজ। অন্যথায় জায়েয নেই!! তাঁর কথা কতটুকু সত্য?

১ মে, ২০২৫
ঢাকা ১২০৭

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


প্রশ্নে উল্লেখিত ‘‘ভীড় না থাকলে দাঁড়িয়ে পান করা জায়েজ নেই’’ কথাটি সঠিক নয়। যমযমের পানি যেকোন অবস্থায় দাঁড়িয়ে-বসে দুভাবেই পান করা যায়। সুতরাং ভীড় ছাড়াও যমযমের পানি দাঁড়িয়ে পান করা যে জায়েজ আছে এ সম্পর্কে ফিকহ-ফতোয়ার কিতাবে এবং হাদীসের ব্যখ্যাগ্রন্থসমূহে উল্লেখ আছে। আলমুহীতুল বুরহানী ১/১৭৯; খুলাসাতুল ফতোয়া ১/২৫; শরহুল মুনইয়াহ ৩৬; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৪৪; উমদাতুল কারী ৯/২৭৮; মিরকাতুল মাফাতীহ ৮/১৬৫-১৬৬
উপরন্তু রাসূলুল্লাহ ﷺ যমযমের পানি দাঁড়িয়ে পান করেছেন-এ হাদীসের ভিত্তিতে বহু ফকীহ ও মুহাদ্দিস যমযমের পানি দাঁড়িয়ে পান করাকে উত্তম ও আদব বলেছেন। আলমুহীতুল বুরহানী ১/১৭৯), ইবরাহীম হালাবী রাহ. (শরহুল মুনইয়াহ ৩৬), মোল্লা আলী কারী রাহ. (শরহুশ শামায়েল ১/২৫০),
আর রাসূলুল্লাহ ﷺ মূলত ভীড়ের কারণেই যমযমের পানি দাঁড়িয়ে পান করেছেন এটি কোনো সুনিশ্চিত ও চূড়ান্ত কথা নয় এবং তা হাদীস ও আছার দ্বারাও প্রমাণিত নয়; বরং ফিকহ ও হাদীসবিশারদগণ রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর দাঁড়িয়ে যমযমের পানি পান করার সম্ভাব্য কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছেন। তন্মধ্যে একটি ভীড়ের কারণকেও উল্লেখ করেছেন। তারা আরো যে সমস্ত কারণ উল্লেখ করে থাকেন তা হল-
১. যমযমের পানি দাঁড়িয়ে পান করাও যে জায়েজ তা বুঝানোর জন্য।
২. বসার যথাযথ ব্যবস্থা না থাকা অর্থাৎ পান করার স্থানটি ভেজা বা স্যাঁতস্যাঁত হওয়ার কারণে তিনি দাঁড়িয়ে পান করেছেন।
৩- যমযমের পানি দাড়িয়ে পান করার দ্বারা শরীরে প্রতিটি অঙ্গে যমযমের নেক প্রভাব দ্রুত পৌছে যায়।
সুতরাং এ সব কারণের মধ্যে শুধু একটিকে গ্রহণ করে বাকিগুলোকে এড়িয়ে যাওয়া আদৌ ঠিক নয়। সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫৬১৭, আলমুহীতুল বুরহানী ১/৪৯ (দারুল কুতুবুল ইলমিয়্যাহ), মিরকাতুল মাফাতিহ শরহে মিশকাতুল মাসাবীহ ৭/২৭৪৭।

والله اعلم بالصواب

ইসহাক মাহমুদ মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া খতীব, নবোদয় সি ব্লক জামে মসজিদ, মোহাম্মদপুর ইমাম, বায়তুল ওয়াহহাব জামে মসজিদ, মোহাম্মদপুর

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন