আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

আরাফার আমল

প্রশ্নঃ ১০১৩৯৮. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আরাফায় আমল কি কি? বিশেষ কোন দু‘আ বা আমল কি রাসূলুল্লাহ ﷺ থেকে পাওয়া যায়?,

৩০ এপ্রিল, ২০২৫

ঢাকা

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


আরাফার আমলসমূহ নিম্নরূপ-
১. আরাফায় পৌঁছার পর বেশি বেশি তালবিয়া, দু‘আ ও দুরূদ শরীফ করা।
২. সূর্য ঢলার (দ্বিপ্রহর) পূর্বেই পানাহার থেকে ফারেগ হওয়া। সূর্য ঢলার পূর্বে উকূফে আরাফার উদ্দেশ্যে গোসল করা উত্তম, গোসল করতে না পারলে উযূ করে নেয়া যথেষ্ট হবে।
৩. আরাফার মসজিদে নামিরায় যুহরের ওয়াক্তে যুহর ও আসরের নামায একত্রে পড়ে নেওয়া হয়, কতিপয় শর্ত সাপেক্ষে এরূপ করা জায়েয আছে। শর্তগুলো পরিপূর্ণ পাওয়া যাচ্ছে কি না ওলামায়ে কেরাম থেকে জেনে নিয়ে মসজিদে নামিরায় গিয়েও জামাআতে উভয় নামায একত্রে পড়ে নিতে পারেন। তাঁবু ও কাফেলা হারানোর আশঙ্কা হলে তাঁবুতেই নামায পড়ে নিন। এমনিভাবে ভীড় ও রোদের কষ্ট সহ্য করার শক্তি না থাকলে এই ঝুকি না নেওয়া ভাল। তাঁবুতে নামায পড়লে যুহরের ওয়াক্তে যুহর এবং আসরের ওয়াক্তে আসরের নামায পড়বেন। উভয় ওয়াক্তের জন্য ভিন্ন ভিন্ন আজান ইকামত দিয়ে নিবেন।
(হাদীস শরীফে এসেছে, হযরত ইবরাহীম নাখয়ী থেকে বর্ণিত- যখন তুমি আরাফায় তোমার তাঁবুতে নামায পড়বে, তখন প্রত্যেক নামাযকে তার নির্দিষ্ট ওয়াক্তে পড়বে এবং প্রত্যেক নামাযের জন্য ভিন্ন ভিন্ন আজান ইকামত দিবে। মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীছ নং ১৪২৩৫
(কোন কাফেলার আমির যুহর-আসর একত্রে পড়ার ফয়সালা করলে এ নিয়ে ঝগড়া বাধিয়ে হজ্ব নষ্ট করা কাম্য নয়।)
আরাফায় জুমার নামায সহীহ নয়, তাই এদিন শুক্রবার হলেও যুহরের নামায পড়বেন। (রাসূলুল্লাহ ﷺ আরাফায় জুমার দিন যুহর পড়েছেন।)
নারীগণ পুরুষদের থেকে আলাদা হয়ে তাঁবুর মধ্যে যুহরের ওয়াক্তে যুহর এবং আসরের ওয়াক্তে আসরের নামায পড়বেন।
৪. তালবিয়া, সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার, লাইলাহা ইল্লাল্লাহ এবং যেকোনো দুরূদ শরীফ পাঠ করতে থাকা মুস্তাহাব। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এগুলো পাঠ করতে থাকা উত্তম। না পারলে বসে বসে বা শুয়ে শুয়ে এগুলো করলেও চলবে। ঘুম এসে গেলেও অসুবিধে নেই, তবে বিনা ওজরে ঘুমিয়ে পড়া মাকরূহ।
৫. আরাফার ময়দানে মাগফিরাত হয়। দু‘আ কবুল হয়। তাই বেশি বেশি ইস্তিগফার করে কান্নাকাটি করে দু‘আ ও মুনাজাতে মগ্ন থাকা চাই।
৬. এক রেওয়ায়েতে এসেছে- যে ব্যক্তি আরাফার দিন সূর্য ঢলার পর কিবলামুখী হয়ে নিম্নোক্ত দু‘আগুলো পাঠ করবে, আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করে দিবেন, সে নিজের জন্য এমনকি সমস্ত আরাফাবাসীর জন্য সুপারিশ করলেও তার সুপারিশ কবুল করা হবে। তা হলো,
১০০ বার,
لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
অতঃপর ১০০ বার সূরা ইখলাস, অতঃপর ১০০ বার
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَّعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَّجِيدٌ وَعَلَيْنَا مَعَهُمْ-
পাঠ করা।
৭. সূর্যাস্তের পূর্বে কোনোক্রমেই আরাফা ময়দানের সীমানা ত্যাগ করা যাবে না। তাহলে দম দিতে হবে।
৮. সূর্য অস্ত যাওয়ার পর মাগরিবের নামায না পড়ে যথাসম্ভব বিলম্ব না করেই মুজদালিফার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হতে হবে। বিনা ওজরে বিলম্বে রওনা করা মাকরূহ। এই দিনের মাগরিবের নামায মুজদালিফায় গিয়ে ইশার ওয়াক্তে পড়তে হবে। মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বাহ, হাদীস ১৪২৩৫, শোআবুল ঈমান (বায়হাকী) হাদীস ৪০৭৪, মানাসিকে মোল্লা আলী কারী ১৯৬ পৃ., মুআল্লিমুল হুজ্জাজ ১৪৫- ১৫০

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ ইসহাক মাহমুদ
মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া
খতীব, নবোদয় সি ব্লক জামে মসজিদ, মোহাম্মদপুর
ইমাম, বায়তুল ওয়াহহাব জামে মসজিদ, মোহাম্মদপুর

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

২৯৯৭০

বিদায়ী তাওয়াফের হুকুম


২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

শিবচর

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

৭৭৬৭৬

মাসজিদুল হারামে ইমাম সাহেব যেখানে দাঁড়ান তাঁর চেয়ে এগিয়ে দাঁড়ানো যাবে?


২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

ঢাকা ১২০৮

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী নাঈম সিদ্দীকী বিন আব্দুস সাত্তার

৪৮৩০৭

ইহরাম অবস্থায় দাঁড়ি ছিড়ে ফেললে করণীয় কি?


১০ ডিসেম্বর, ২০২৩

Dhaka

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

৩৪২০০

নারীর হজ ফরজ হওয়ার শর্ত


২২ জুন, ২০২৩

আশুগঞ্জ

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy