আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
৫৩- বিবাহ-শাদী সম্পর্কিত অধ্যায়
আনাস (রাযিঃ) বলেছেন, وَالْمُحْصَنَاتُ مِنَ النِّسَاءِ -এ কথা দ্বারা সধবা স্বাধীনা মহিলাদেরকে শাদী করা হারাম বোঝানো হয়েছে; কিন্তু ক্রীতদাসীকে ব্যবহার করা হারাম নয়। যদি কোন ব্যক্তি বাঁদীকে তার স্বামী থেকে তালাক নিয়ে পরে ব্যবহার করে, তাহলে দোষ নেই। এ প্রসঙ্গে আল্লাহর বাণীঃ ‘‘কোন মুশরিক মহিলাকে শাদী বন্ধনে আবদ্ধ করো না, যতক্ষণ না তারা পূর্ণ ঈমান আনে।’’
ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলেন, চারজনের বেশী শাদী করা ঐরূপ হারাম বা অবৈধ যেরূপ তার গর্ভধারিণী মা, কন্যা, এবং ভগিনীকে শাদী করা হারাম।
রাবী বলেন, আহমাদ ইবনে হাম্বল (রাহঃ) ..... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রক্তের সম্পর্কের সাতজন ও বৈবাহিক সম্পর্কের সাতজন নারীকে শাদী করা হারাম। এরপর তিনি এই আয়াত পাঠ করলেন, ‘‘তোমাদের জন্যে তোমাদের মায়েদের শাদী করা হারাম করা হয়েছে।’’
আব্দুল্লাহ্ ইবনে জা’ফর (রাহঃ) একসাথে হযরত আলী (রাযিঃ)-এর স্ত্রী[১] ও কন্যাকে শাদী বন্ধনে আবদ্ধ করেন (তারা উভয়েই সৎমা ও সৎকন্যা ছিল)
ইবনে সীরীন বলেন, এতে দোষের কিছুই নেই। কিন্তু হাসান বসরী (রাহঃ) প্রথমত এই মত পছন্দ করেননি; কিন্তু পরে বলেন, এতে দোষের কিছুই নেই। কিন্তু হাসান ইবনে হাসান ইবনে আলী একই রাতে দুই চাচাত বোনকে একই সাথে শাদী করেন। জাবির ইবনে যায়দ সম্পর্কচ্ছেদের আশঙ্কায় এটা মাকরূহ মনে করেছেন; কিন্তু এটা হারাম নয়। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন, এসব ছাড়া আর যত স্ত্রী লোক রয়েছে তা তোমাদের জন্য হালাল করে দেয়া হয়েছে।
ইকরিমা (রাহঃ) ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন, যদি কেউ তার শালীর সঙ্গে অবৈধ যৌন মিলন করে তবে তার স্ত্রী তার জন্য হারাম হয়ে যায় না।
ইয়াহয়া কিন্দি (রাহঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি শা’বী (রাহঃ) এবং আবু জা’ফর (রাহঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তারা উভয় বলেন, যদি কেউ কোন বালকের সঙ্গে সমকামে লিপ্ত হয়, তবে তার মা তার জন্য শাদী করা হারাম হয়ে যাবে। আর ইয়াহয়া প্রসিদ্ধ নয়, তাই তার কথার অনুসরণ করা হবে না।
ইকরিমা ..... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কেউ যদি শাশুড়ির সঙ্গে যৌন মিলনে লিপ্ত হয়, তবে তার স্ত্রী হারাম হয় না। আবু নসর ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, হারাম হয়ে যাবে। ইমরান ইবনে হুসাইন (রাযিঃ) হাবির ইবনে যায়দ (রাযিঃ) আল হাসান (রাহঃ) এবং কতিপয় ইরাকবাসী থেকে বর্ণনা করেন যে, তার স্ত্রীর সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক হারাম হয়ে যাবে। উপরোক্ত ব্যাপারে আবু হুরায়রা (রাযিঃ) বলেছেন যে, স্ত্রীর সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক ততক্ষণ হারাম হয় না, যতক্ষণ না কেউ তার শাশুড়ির সাথে অবৈধ যৌন মিলনে লিপ্ত হয়।
ইবনে মুসাইয়্যব, উরওয়া (রাহঃ) এবং যুহরী এমতাবস্থায় স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক রাখা বৈধ বলেছেন।
যুহরী বলেন, আলী (রাযিঃ) বলেছেন, হারাম হয় না। ঐখানে যুহরীর কথা মুরসাল অর্থাৎ এই কথা যুহরী আলী (রাযিঃ) থেকে শোনেননি।
৪৭৩৮। হুমায়দী (রাহঃ) ......... উম্মে হাবীবা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি কি আবু সুফিয়ানের কন্যার ব্যাপারে আগ্রহী? মহানবী (ﷺ) উত্তর দিলেন, তাকে দিয়ে আমার কি হবে? আমি বললাম, তাকে আপনি শাদী করবেন। তিনি প্রশ্ন করলেন, তুমি কি তা পছন্দ করবে? আমি বললাম, হ্যাঁ। এখন তো আমি একাই আপনার স্ত্রী নই। সুতরাং আমি চাই, আমার বোনও আমার সাথে কল্যাণে অংশীদার হোক। তিনি বললেন, তাকে শাদী করা আমার জন্য হালাল নয়। আমি বললাম, আমরা শুনেছি যে, আপনি আবু সালামার কন্যা-দুররাকে শাদী করার জন্য পয়গাম পাঠিয়েছেন। তিনি প্রশ্ন করলেন, উম্মে সালামার কন্যা? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, সে যদি আমার প্রতিপালিতা সৎ কন্যা নাও হতো তবুও তাকে শাদী করা আমার জন্য হালাল হতো না। কেননা সুওয়াইবা আমাকে ও তার পিতাকে দুধ পান করিয়েছিল। সুতরাং তোমাদের কন্যা বা বোনদের শাদীর পয়গাম আমার কাছে পেশ করো না।
লাইছ বলেন, হিশাম দুররা বিনতে আবী সালামার নাম বলেছেন।

তাহকীক:
তাহকীক নিষ্প্রয়োজন