প্রবন্ধ

বায়তুল মোকাররমের মিম্বর থেকে (২৫ অক্টোবর ২০২৪ এ প্রদত্ত বয়ান)

লেখক:শাঈখুল ইসলাম হযরত আব্দুল মালেক
১০ নভেম্বর, ২০২৪
১১২৫৯ বার দেখা হয়েছে
মন্তব্য

হযরত মাওলানা মুহাম্মাদ আবদুল মালেক ছাহেব দামাত বারাকাতুহুমকে গত ২১-১০-২০২৪ তারিখে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের নতুন খতীব হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়।

এরপর গত ২১ রবিউল আখির ১৪৪৬ হিজরী মোতাবেক ২৫ অক্টোবর ২০২৪ ঈসায়ীজুমাবার তিনি প্রথম খুতবা প্রদান করেন। সেদিনের জুমাপূর্ব বাংলা আলোচনার সারসংক্ষেপ তাঁর নজরেসানীর পর মাসিক আলকাউসারের পাঠকদের খেদমতে পেশ করা হল। -সম্পাদক]

মোবাইলে ছবি-ভিডিও ধারণ প্রসঙ্গ

মিম্বরে ওঠার পর কিছু ভাই ছবি তুলতে চাইলে তাদের উদ্দেশে বলেনডিজিটাল ক্যামেরায় ছবি তোলা কি ফরযওয়াজিবসুন্নত কিংবা মুস্তাহাবউত্তরে সবাই বললেননা।

এরপর তিনি বললেনঅধিকাংশ মুফতী ও ফকীহগণের মতে অ্যানালগ ক্যামেরায় ছবি তোলার মতো ডিজিটাল ক্যামেরার ছবিও নিষিদ্ধ।

(পরবর্তীতে আলোচনা চলাকালে আবারও কেউ ছবি তুলতে চাইলে তিনি বলেন) মসজিদে এসে ক্যামেরার পেছনে পড়ে থাকামানুষের নামাযের ভিডিও করামসজিদ-মজলিসের ভিডিও করা কোনো সওয়াবের কাজ নয়। বরং অধিকাংশ মুফতী ও ফকীহের মতে এটি নাজায়েয। যারা দাওয়াতী জরুরতে শর্তসাপেক্ষে এ বিষয়ে একটু ছাড় দেনতারাও মসজিদে ছবি তোলার অনুমতি দেন না। মসজিদ তো ইবাদতের স্থান। এখানে মানুষ ইবাদতের জন্য আসে। জুমার জন্য আসে। 

হযরত মাওলানা মুফতী মুহাম্মাদ তাকী উসমানী দামাত বারাকাতুহুম মসজিদে হারামমসজিদে নববী এবং যে কোনো মসজিদ এমনকি কোনো দ্বীনী মজলিস-মাহফিলে ডিজিটাল ক্যামেরার ব্যবহার নিষেধ করেন।

আমরা মোবাইল ব্যবহারে সংযত হওয়ার চেষ্টা করব। সম্ভব হলে মসজিদে স্মার্ট ফোন আনব না। একজন মসজিদে এসেছেন। আর আপনি তার ছবিভিডিও ধারণ করে অনলাইনে ছেড়ে দিলেন। এটা অন্যায়। কারো অনুমতি ছাড়া কিংবা তার অগোচরে ছবি তোলাভিডিও করা এরপর তা অনলাইনে দিয়ে দেওয়া কেউ জায়েয বলেন না। এমনকি যারা শর্তসাপেক্ষে ছবি তোলার অনুমতি দেন তাদের কাছেও এটি জায়েয নয়। কারণ প্রত্যেকের ব্যক্তিগত রুচি-চাহিদা আছে। এর প্রতি গুরুত্ব দেওয়া শরীয়তের বিধান। প্রত্যেকের ইজ্জত-সম্মানমন-মানস এটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়যা জেনারেল শিক্ষিত ভাইয়েরাও বোঝেন। আমি একবার মদীনা মুনাওয়ারায় দেখেছি। এক বড় মজলিসে শায়েখ মুহাম্মাদ আওয়ামা -হাফিযাহুল্লাহু তাআলা ও রাআহু- আছেন। তো এক ভাই শায়েখের ছবি তুলতে চাইলে শায়েখ ক্ষমা চেয়ে নিলেন। ফলে সে বিরত থাকল।

সকলের কাছে আমার অনুরোধআমরা ছবি তুলব নাভিডিও করব না। আল্লাহর ওয়াস্তে আমরা মসজিদে স্মার্ট ফোন আনব না।

মাসনূন হামদ ও সালাতের পর...

শুরুতেই তিনি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের শোকর আদায় করেন যেআল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে জুমার নামায আদায়ের জন্য মসজিদে সমবেত হওয়ার তাওফীক দিয়েছেন।

এসময় মসজিদের সাউন্ড সিস্টেমে সমস্যা দেখা দিলে মুসল্লিদের মাঝে শোরগোল সৃষ্টি হয়। তখন তিনি সবাইকে নীরব থাকা ও সবর করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেনসাহাবায়ে কেরাম থেকে বর্ণনা আছেমজলিসে যারা আওয়াজ শোনেন তারা যেমন সওয়াব লাভ করেনযাদের পর্যন্ত আওয়াজ পৌঁছে নাকিন্তু চুপ থাকেনতারাও সমান সওয়াব লাভ করেন। (হযরত ওসমান রা. থেকে বর্ণিততিনি বলেন-

إِذَا قَامَ الْإِمَامُ يَخْطُبُ يَوْمَ الْجُمُعَةِ فَاسْمَعُوا وَأَنْصِتُوافَإِنَّ لِلْمُنْصِتِ الَّذِي لاَ يَسْمَعُ مِنَ الْحَظِّ، مِثْلَ مَا لِلْمُنْصِتِ السَّامِعِ.

-মুআত্তা ইমাম মালেকহাদীস ৩৪৫)

এরপর তিনি বলেনলাউড স্পিকার বা সাউন্ড সিস্টেম আবিষ্কারের বয়স কত আর হবেবড় জোর ১০০ বছর। কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পর পরবর্তী ১৩০০ বছর পর্যন্ত তো এই সাউন্ড সিস্টেম ছিল না। তখন কি বড় মজমাবড় মজলিস হত নাঅবশ্যই হয়েছে। তখন মজলিসগুলোতে সবাই চুপ থাকতেন। যারা শুনতে পারতেন তারা শুনে সওয়াব পেতেন। যাদের কাছে আওয়াজ পৌঁছত নাতারা চুপ থাকতেন এবং মসজিদ ও মজলিসের আদব রক্ষা করতেনফলে তারাও সওয়াব লাভ করতেন। তাই এসব পরিস্থিতিতে আমাদের সবর করা উচিত।

এরপর তিনি আবারও আল্লাহ তাআলার শোকর আদায় করেন। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে জুমার দিনের মতো এত বড় নিআমত দান করেছেন। মসজিদ আল্লাহর একটি বড় নিআমত। জুমার দিনও একটি বড় নিআমত। আজকে মসজিদের পরিবেশে এবং জুমার দিনে আমাদের প্রথম মোলাকাত হচ্ছে।

জুমার দিনের ফযীলত

জুমার দিনের অনেক ফযীলত। এটি সর্বশেষ নবীসর্বশ্রেষ্ঠ নবী ও বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উম্মতের বিশেষ বৈশিষ্ট্য। এই ফযীলতের দিন আগের উম্মতকেও দেওয়া হয়েছিলকিন্তু তারা তা রক্ষা করতে পারেনিহারিয়ে ফেলেছে। পরবর্তীতে আল্লাহ তাআলা হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওসীলায় আমাদেরকে এই নিআমত দান করেছেন। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

نَحْنُ الآخِرُونَ السّابِقُونَ.

আমরা (আগমনের দিক থেকে) সর্বশেষ এবং (সওয়াব ও মর্যাদার বিচারে) সকলের অগ্রগামী উম্মত। -সহীহ বুখারীহাদীস ৭০৩৬সহীহ মুসলিমহাদীস ৮৫৫

এই উম্মতের একটি বৈশিষ্ট্য হল জুমার দিন। জুমার দিনের অনেক ফযীলত। জুমার দিন হল সর্বোত্তম দিন। হাদীসে এ দিনটিকে خَيْرُ يَوْمٍ طَلَعَتْ عَلَيْهِ الشَّمْسُ)সর্বোত্তম দিন বলা হয়েছে। (দ্রষ্টব্য : সহীহ মুসলিমহাদীস ৮৫৪)

জুমার দিনের অনেক ফযীলত ও আমল আছে। আল্লাহর রহমতে আমরা অনেকেই তা জানি এবং আমলও করে থাকি।

দ্বীনী আলোচনার উদ্দেশ্য ও ফায়েদা

দ্বীনী আলোচনা কেবল নতুন বিষয় জানার জন্য নয়। কারো জন্য কোনো কথা নতুন হতে পারে। কোনো নতুন কথা জানা ছাড়াও দ্বীনী আলোচনার আরো ফায়েদা আছে। যেমন-

ক) কোনো অস্পষ্ট বিষয় আরো স্পষ্টভাবে জানা।

খ) কোনো বিষয়ে ভুল বা অসম্পূর্ণ জানলে তার সঠিক ও পূর্ণ জ্ঞান লাভ করা।

গ) আমলের আগ্রহ সৃষ্টি হওয়া।

ঘ) সবচেয়ে বড় ফায়েদা হল ঈমান তাজা হওয়া।

দ্বীনী মজলিস যে কোনো সময় ও যে কোনো স্থানে হতে পারে। তবে শর্ত হলকথাগুলো সঠিক ও শুদ্ধ হওয়া।

জুমাপূর্ব বয়ান প্রসঙ্গ

জুমার আগে স্থানীয় ভাষায় যে আলোচনা হয় এটি জুমার নামাযের অংশ নয় এবং জুমার দিনেরও বিশেষ কোনো আমল নয়। এটি অন্য দিনেও হতে পারে। জুমার পরেও হতে পারেএমনকি একেবারে না হলেও কোনো অসুবিধা নেই। যেহেতু জুমার দিন আগে আগে মসজিদে আসা হয়। একটা বড় মজমা হয়তাই এই সুযোগে কিছু দ্বীনী আলোচনা হয়। তবে জুমার দিন নামাযের আগে যে দুটি খুতবা হয় তা নামাযের অংশ। এটি আরবী ভাষায় হওয়া এবং নামাযের আগে হওয়াই নির্ধারিত।

জুমার দিনের আমল

জুমার দিনের অনেক আমল রয়েছে। আজকে শুধু একটি আমল নিয়ে আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ।

জুমার দিনের একটি বিশেষ আমল হলবেশি বেশি দরূদ শরীফ পাঠ করা। জুমার রাত ও জুমার দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সূর্যাস্তের পর থেকে জুমাবার সূর্যাস্ত পর্যন্ত বেশি বেশি দরূদ শরীফ পড়া। দরূদ শরীফের শব্দমালা বড় হোক বা ছোট। বিশেষ করে হাদীস শরীফে বর্ণিত দরূদ শরীফ পড়লে সবচেয়ে ভালো। আবুল কাসিম আসফাহানী রাহ. (মৃত্যু : ৫৩৫ হিজরী)-এর 'আততারগীব ওয়াত তারহীব'-এ বর্ণিত আছেআবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. তাঁর শাগরিদকে বলেছেনজুমার দিন তুমি এক হাজার বার দরূদ শরীফ পড়। তিনি জিজ্ঞেস করলেনকী দরূদ পড়বতখন তিনি শিখিয়ে দিয়েছেন-

اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدِنِ النَّبِيِّ الأُمِّيِّ.

(দ্র. আততারগীব ওয়াত তারহীবআবুল কাসিম আসফাহানীহাদীস ১৬৮১)

আরো সহজ দরূদ হতে পারে-

اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ.

এভাবেও হতে পারে-

اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدِنِ النَّبِيِّ الأُمِّيِّ وَاٰلِه وَسَلِّمْ.

সংক্ষিপ্ত কোনো দরূদ শরীফ পড়তে পারি। নামাযে আমরা যে দরূদ শরীফ পড়িসেটাও পড়তে পারি।

মোটকথাজুমার দিন বেশি বেশি দরূদ শরীফ পড়ব। জুমার দিনজুমার রাতেজুমার নামাযের আগেনামাযের পরেআসরের পরে দরূদ পড়ব।

জুমার দিনের একটি বৈশিষ্ট্য আমরা অনেকেই জানি। এ দিনে এমন একটি মুহূর্ত আছেযে মুহূর্তের সকল দুআই আল্লাহ তাআলা কবুল করেন। তবে সে মুহূর্তটা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়নি। এটা হতে পারে জুমার আযান থেকে নামাযের শেষ পর্যন্ত সময়। আবার আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত সময় হওয়ারও খুব সম্ভাবনা আছে। অথবা আগে বা পরের কোনো সময়ও হতে পারে। এটা একেবারে নিশ্চিতভাবে নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। এর একটি ফায়েদা হলযেন আমরা এ মুহূর্তটির তলবে থাকি। বেশি বেশি গুরুত্ব দেই। বেশি বেশি তিলাওয়াত করি। সূরা কাহ্ফ তিলাওয়াত করি। অন্যান্য সূরা তিলাওয়াত করি। জুমার দিনে একটু বেশি তিলাওয়াত করব। অন্যদিনও তিলাওয়াত করব ও দরূদ শরীফ পড়ব। জুমার দিনের বিষয়ে তো বলা হয়েছে-

فأكثروا.

বেশি বেশি দরূদ পড়ো। তোমাদের দরূদ আমার সামনে পেশ করা হয়। একবার দরূদ পাঠ করলে দশটি রহমত নাযিল হয়দশটি গুনাহ মাফ হয় এবং দশটি দরজা তথা মর্যাদা বুলন্দ হয়।

মসজিদের আদব ও সম্মান রক্ষা করা

আমরা মসজিদে এসেছি। মসজিদ আল্লাহর ঘর। মসজিদের সম্মান রক্ষা করা ফরয। মসজিদের কিছু কিছু আদব তো একেবারে ফরয পর্যায়ের।

মসজিদে কীভাবে প্রবেশ করবমসজিদ থেকে কীভাবে বের হব- এ ধরনের আরো বেশ কিছু আদব রয়েছে। এগুলো ছোট ছোট আমলকিন্তু এগুলোর অনেক সওয়াব। এগুলোর অনেক ফায়েদা ও অনেক ফযীলত আছে।

আল্লাহর রহমতে আমরা সবাই জানিমসজিদে ডান পা দিয়ে প্রবেশ করা সুন্নত। জুতা খোলার সময় বাম পা থেকে আগে জুতা খুলতে হয়এরপর ডান পা থেকে। তাহলে মসজিদে প্রবেশের সময় প্রথমে বাম পা থেকে জুতা খুলে জুতার ওপর বাম পা রাখবএরপর ডান পা থেকে জুতা খুলে মসজিদের ভেতর প্রথমে ডান পা রাখবএরপর বাম পা। বিসমিল্লাহ পড়ব। দরূদ শরীফ পড়ব। দুআ পড়ব। এভাবে বলব-

بِسْمِ اللهِ، وَالصَّلاَةُ وَالسَّلاَمُ عَلٰى رَسُوْلِ اللهِ، اَللّٰهُمَّ افْتَحْ لِيْ أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ.

এটি একটি দুআ। এছাড়াও আরো দুআ আছে। সেগুলো মুখস্থ থাকলে পড়ব।

মসজিদে এসে আমরা আল্লাহ তাআলার কাছে রহমতের দুআ করেছি। হে আল্লাহআপনি আমার জন্য রহমতের সকল দরজা খুলে দিন। আপনার রহমতের যত দরজা আছে সব দরজা আমার জন্য খুলে দিন।

সব মুসল্লি যদি এভাবে দুআ করেরহমতের প্রার্থনা করে মসজিদে আসেতাহলে আল্লাহ তাআলা তাঁর রহমতের সকল দরজা আমাদের জন্য খুলে দেবেন।

أَعُوْذُ بِاللهِ الْعَظِيْمِ، وَبِوَجْهِهِ الْكَرِيْمِ، وَسُلْطَانِهِ الْقَدِيْمِ، مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْمِ

(সুনানে আবু দাউদহাদীস ৪৬৬)

এটাও একটি দুআ। মুখস্থ থাকলে এটাও পড়তে পারি।

আমরা মসজিদে এসেছি ইবাদতের জন্য। আল্লাহকে রাজি করার জন্য। মসজিদে এসে এমন কাজ যেন আমার দ্বারা না হয়যা দ্বারা মসজিদের আদব নষ্ট নয়। সম্মান ক্ষুণ্ন হয়। এসেছি আল্লাহকে রাজি করানোর জন্য। এসে আমার দ্বারা যেন কোনো গুনাহ না হয়ে যায়। প্রবেশের সময় আমি বলে এসেছিআল্লাহ আমার জন্য রহমতের সকল দরজা খুলে দিন এবং শয়তান থেকে আমাকে রক্ষা করুন। শয়তানের যত কাজ এবং শয়তান যেসব কাজ পছন্দ করে এমন সব কাজ থেকে বিরত থাকা তো মসজিদের বাইরেই আমার জন্য জরুরি ছিল। আর মসজিদের ভেতর তো তা অবশ্যই জরুরি।

ইতিপূর্বে আমরা সবর সম্পর্কে আলোচনা করেছি। সবর এটি ঈমানের এক গুরুত্বপূর্ণ সিফাত। মুমিন সবরহারা হতে পারে না। মুমিনের কাজই হল সবর ও শোকর। সবরের অনেক ক্ষেত্র আছে। যেমনআজকের আলোচনার শুরুতে যখন সাউন্ড সিস্টেমে সমস্যা হয়েছিল তখন আমরা অনেকে ধৈর্যহারা হয়ে পড়েছিলাম। এ ধরনের অবস্থায় ধৈর্যহারা হওয়া ঠিক নয়। নিয়ম হলকোনো এক ভাই জানিয়ে দেবেনঅমুক জায়গায় স্পিকারে সমস্যা হচ্ছে। আপনি জানিয়ে দিলেন। এরপর কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিতে পারলে নিলেন আর ব্যবস্থা নিতে না পারলে যদি শোনা না যায়তাহলে এতেও কোনো অসুবিধা নেই। ইতিপূর্বে আমি সাহাবায়ে কেরামের উদ্ধৃতিতে বলেছিযারা শুনতে পারছেন তারা চুপ করে শুনে যে সওয়াব পাবেনযারা শুনতে পারছেন নাকিন্তু চুপ আছেন এবং মসজিদের আদব ও মজলিসের আদব রক্ষা করছেনতারাও সমান সওয়াব পেয়ে যাবেন।

আমার তো দরকার সওয়াব। আমার তো দরকার ফায়েদা। কেউ শুনে সওয়াব পাবে আর কেউ না শুনলেও আল্লাহ তাকে সওয়াব দেবেন। যে শুনতে পারছেসে শোকর করবে। আর যে শুনতে পারছে নাসে সবর করবে। এটা যেকোনো মজলিস এবং যেকোনো বড় মজমার জন্য প্রযোজ্য। যেখানে আওয়াজ পৌঁছে নাসেখানে সবার দায়িত্ব সবর করা। আর বিশেষ করে মসজিদের মধ্যে তো আমাদের সবর করতেই হবে। এখানে তো সবরের শিক্ষা নেওয়ার জন্য এসেছি। আল্লাহকে রাজি করার জন্য মসজিদে এসেছি। এখানে আমরা সবরহারা হব না ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তাআলা সকলকে তাওফীক দান করুন- আমীন।

মসজিদে ডান পা দিয়ে প্রবেশ করব আর বের হওয়ার সময় বাম পা দিয়ে বের হব। মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় নিয়ত করব- আবার মসজিদে আসব। জুমার পরে বের হচ্ছিনিয়ত থাকবে- আসরের সময় আমি মসজিদে এসে নামায পড়ব ইনশাআল্লাহ।

আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে আমল করার তাওফীক দান করুন।

আরবী খুতবায় ইসলামের সার্বজনীনতা ও শরীয়তে ইসলামীর পূর্ণাঙ্গতা বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা পেশ করেন।

শ্রুতিলিখন : মাওলানা আবদুল্লাহ ফাহাদ

মন্তব্য (...)

এ সম্পর্কিত আরও প্রবন্ধ

أهمية حسن الخلق

الخطبة الأولى: إنَّ الحمدَ للهِ نَحمدُهُ ونستعينهُ ونستغفرهُ ونعوذُ باللهِ -تعالى- من شُرورِ أنفُسِن...

ড. মুহাম্মদ ইবনে আবদুর রহমান আরিফী
৮ নভেম্বর, ২০২৪
১৪৯৪ বার দেখা হয়েছে

حدائق الموت

...

ড. মুহাম্মদ ইবনে আবদুর রহমান আরিফী
১০ নভেম্বর, ২০২৪
৪৮৩২ বার দেখা হয়েছে

جمعہ - فضائل، مسائل اور احکام

...

ডঃ নজীব কাসেমী
৯ নভেম্বর, ২০২৪
৯৯০ বার দেখা হয়েছে

লেখকবৃন্দ

সকল লেখক →

মুফতী আতীকুল্লাহ

মাওলানা আইনুল হক ক্বাসেমি

মাওলানা মাসরূর বিন মনযূর

হযরত মাওলানা ইদরীস কান্ধলবী রাহ.

শাইখুল হাদীস যাকারিয়া কান্ধলভী রহ.

আল্লামা ইউসুফ বানুরী রহঃ

মাওলানা মীযান হারুন

আল্লামা আনওয়ার জুনদী রহঃ

মাওঃ আসজাদ কাসেমী

আল্লামা সায়্যিদ সুলাইমান নদবী রহ.

ডঃ নজীব কাসেমী

আল্লামা আতাউল্লাহ শাহ বুখারী রহঃ

মুহাদ্দিছুল আসর আল্লামা হাবীবুর রহমান আ'যমী রহঃ

মাওলানা মুহাম্মাদ আনওয়ার হুসাইন

মাওলানা মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম

আল্লামা সাঈদ আহমাদ পালনপুরী রহঃ

শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী রহঃ

মুফতী শুআইবুল্লাহ খান দাঃ

আল্লামা আব্দুর রাযযাক ইস্কান্দার রহঃ

আল্লামা ডঃ মুহাম্মাদ হামীদুল্লাহ্‌ রহঃ