প্রবন্ধ

যেসব কাজের শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়তে হয়

লেখক:মুফতি জাওয়াদ তাহের
১০ জুলাই, ২০২৩
২৩৭০ বার দেখা হয়েছে
মন্তব্য

যেকোনো ভালো কাজের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা এবং শেষে আল্লাহর প্রশংসা করা এটি প্রকৃত মুমিনের বৈশিষ্ট্য। প্রিয় নবী (সা.) প্রতিটি ভালো কাজের সূচনা বিসমিল্লাহ দ্বারা করতেন। নিম্নে আমরা জানব যে রাসুল (সা.) কোন কোন কাজ বিসমিল্লাহ বলে শুরু করতেন।


১. খাবারের শুরুতে : খাবারের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলে আরম্ভ করলে আল্লাহ তাআলা সেই খাবারে বরকত দান করেন।

আলী (রা.) বলেন, খাবারের হক হলো, খাবারের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ১৩১৩)


২. ঘরে প্রবেশের সময় : জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি নবী (সা.)-কে বলতে শুনেছেন, কোনো লোক তার ঘরে প্রবেশকালে এবং তার আহার গ্রহণকালে মহামহিম আল্লাহকে স্মরণ করলে, শয়তান (তার সাঙ্গপাঙ্গকে) বলে, তোমরা রাত যাপনের স্থান ও রাতের আহার থেকে বঞ্চিত হলে।...(আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ১১০৬)


৩. ঘর থেকে বের হওয়ার সময় : যে ব্যক্তি ঘর হতে বের হওয়ার সময় বিসমিল্লাহ বলে বের হবে আল্লাহ তাআলা তাকে অনিষ্টতা থেকে হিফাজত করবেন। আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেন, রাসুলুুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ঘর থেকে কেউ বাইরে রওনা হওয়াকালে যদি বলে, উচ্চারণ : বিসমিল্লাহ তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহ, অলা হাওলা অলা কুউওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।

অর্থ : আল্লাহ তাআলার নামে, আল্লাহ তাআলার ওপরই আমি নির্ভর করলাম, আল্লাহ তাআলার সাহায্য ব্যতীত বিরত থাকা ও মঙ্গল লাভ করার শক্তি কারো নেই, তবে তাকে বলা হয় (আল্লাহ তাআলাই) তোমার জন্য যথেষ্ট, (অনিষ্ট হতে) তুমি হিফাজত অবলম্বন করেছ। আর তার হতে শয়তান দূরে সরে যায়। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৪২৬)


৪. গাড়িতে আরোহণের সময় : জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, আমরা এক সফরে নবী (সা.)-এর সঙ্গে ছিলাম। ... তারপর তিনি বলেন, আল্লাহর নামে আরোহণ করো।

(মুসলিম, হাদিস : ৩৯৯৪)


৫. স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হওয়ার সময় : রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে কোনো লোক যখন তার স্ত্রীর সঙ্গে মিলন করে, আর তখন (মিলনের পূর্বে) বলে, উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শাইতানা ওয়া জান্নিবিশ শাইতানা মা রাজাকতানা।

অর্থ : আল্লাহর নামে আরম্ভ করছি। আল্লাহ, তুমি আমাদের শয়তান থেকে দূরে রাখো এবং যা আমাদের দান করবে তাকেও শয়তান থেকে দূরে রাখো।

এই দোয়া পড়ার লাভ : তাদেরকে যদি আল্লাহ তাআলা তাদের এই মিলনে সন্তান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, তবে এ সন্তানের কোনো রকম ক্ষতিই শয়তান করতে পারবে না। (তিরমিজি, হাদিস : ১০৯২)


৬. টয়লেটে প্রবেশের সময় : টয়লেট বা বাথরুমে অনিষ্ট শয়তান থাকে।

এ জন্য এদের অনিষ্ট থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর নামে পানাহ চাইতে হয়। আলী (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, জিন ও মানুষের গোপন অঙ্গের মাঝখানের পর্দা হলো পায়খানায় প্রবেশকালে, বিসমিল্লাহ বলা। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৯৭)


৭. ঘরের দরজা বন্ধ করার সময় : জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, সূর্যাস্তের পরপরই যখন রাত শুরু হয় অথবা বলেছেন, যখন রাতের অন্ধকার নেমে আসে তখন তোমরা তোমাদের শিশুদের ঘরে আটকে রাখবে। কারণ এ সময় শয়তানরা ছড়িয়ে পড়ে। অতঃপর যখন রাতের কিছু অংশ অতিবাহিত হবে তখন তাদের ছেড়ে দিতে পার আর তুমি তোমার ঘরের দরজা বন্ধ করে দাও এবং আল্লাহর নাম স্মরণ করো। তোমার ঘরের বাতি নিভিয়ে দাও এবং আল্লাহর নাম স্মরণ করো। তোমার পানি রাখার পাত্রের মুখ ঢেকে রাখো এবং আল্লাহর নাম স্মরণ করো। তোমার বাসনপত্র ঢেকে রাখো এবং আল্লাহর নাম স্মরণ করো। সামান্য কিছু হলেও তার ওপর দিয়ে রেখে দাও। (বুখারি, হাদিস : ৩২৮০)


৮. মৃত ব্যক্তিকে কবরে রাখার সময় : ইবনে ওমার (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) কবরে লাশ রাখার সময় বলতেন, উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি ওয়া বিল্লাহি ওয়া আলা মিল্লাতি রাসুলিল্লাহ। অর্থ : আল্লাহর নামে এবং রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর তরিকার ওপর রাখা হলো। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩২১৩)

মন্তব্য (...)

এ সম্পর্কিত আরও প্রবন্ধ

লেখকবৃন্দ

সকল লেখক →

মুফতী আতীকুল্লাহ

মাওলানা আইনুল হক ক্বাসেমি

মাওলানা মাসরূর বিন মনযূর

হযরত মাওলানা ইদরীস কান্ধলবী রাহ.

শাইখুল হাদীস যাকারিয়া কান্ধলভী রহ.

আল্লামা ইউসুফ বানুরী রহঃ

মাওলানা মীযান হারুন

আল্লামা আনওয়ার জুনদী রহঃ

মাওঃ আসজাদ কাসেমী

আল্লামা সায়্যিদ সুলাইমান নদবী রহ.

ডঃ নজীব কাসেমী

আল্লামা আতাউল্লাহ শাহ বুখারী রহঃ

মুহাদ্দিছুল আসর আল্লামা হাবীবুর রহমান আ'যমী রহঃ

মাওলানা মুহাম্মাদ আনওয়ার হুসাইন

মাওলানা মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম

আল্লামা সাঈদ আহমাদ পালনপুরী রহঃ

শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী রহঃ

মুফতী শুআইবুল্লাহ খান দাঃ

আল্লামা আব্দুর রাযযাক ইস্কান্দার রহঃ

আল্লামা ডঃ মুহাম্মাদ হামীদুল্লাহ্‌ রহঃ