প্রবন্ধ

“রোহিঙ্গা” এটা কি উপহাস করার শব্দ? আপনার মনুষত্ব কোথায়??

লেখক:বিবিধ
১১ জানুয়ারী, ২০২২
৯২৫ বার দেখা হয়েছে
মন্তব্য


“রোহিঙ্গা” এটা কি উপহাস করার শব্দ? আপনার মনুষত্ব কোথায়??


রাস্তাঘাটে চলতে এখন মানুষের মুখে মুখে উপহাসচ্ছলে শুনতে পাই “ঐ রোহিঙ্গা! তুই কি রোহিঙ্গা নাকি?, এই বেটা রোহিঙ্গা! ওতো একটা রোহিঙ্গা” ইত্যাদি শব্দের ব্যঙ্গাত্মক উক্তি ও সম্বোধন।

কিছুদিন আগে নরসিংদীর চর থেকে ফিরছিলাম নৌকায়। এক যুবক আরেক যুবককে ঠাট্টাচ্ছলে ডাকছে “এই রোহিঙ্গা”। যুবকের দিকে তাকিয়ে বললামঃ ভাই রোহিঙ্গা শব্দ কি ঠাট্টা করার জিনিস? এই রোহিঙ্গাদের মত উদ্বাস্তু আপনিও হতে পারেন। একাত্তর সালে ভারতে আমাদের পূর্বসূরীরাও রোহিঙ্গাদের মত শরণার্থী হয়েছিল। তাই এভাবে বিপদগ্রস্তকে নিয়ে ঠাট্টা করার আগে ভাবুন কী বলছেন?

আজ গাজীপৃরের এক স্থানীয় বাজারে এক দোকানে ঢুকতেই শুনলাম দোকানের মালিক কর্মচারীকে বলছে “এই বেটা রোহিঙ্গা”। রাগে শরীরটা জ্বলে উঠল। বললামঃ “এভাবে রোহিঙ্গা বলে ঠাট্টা করেন কেন? রোহিঙ্গা কি কোন গালির শব্দ? ঠাট্টা করার শব্দ? এমন রোহিঙ্গা আপনি হবেন না এর কোন নিশ্চয়তা দিতে পারেন?

দাঁত কেলিয়ে দোকানী বললঃ মজা করে বলছি।

হায় আফসোস! একদল বনী আদম জুলুমের স্বীকার হয়ে ভিটেমাটি থেকে হয়েছে উচ্ছেদ। কারো বদনে গুলির আঘাত। স্বজনের লাশ মাড়িয়ে, কারো মা বাবা, কারো বা সন্তান, কারো বা স্ত্রী স্বামীর লাশ কাঁধে আশ্রয় নিয়েছে এক পাহাড়ী উপত্যকায়। খোলা আকাশের নিচে। শোকে কাতর, পর্যুদস্ত, অসহায়, নিরপরাধ মজলুম মানুষগুলোর অসহায়ত্বকে ঠাট্টা করা, বিদ্রুপ করা আরেকটি বনী আদমের পক্ষে শোভা পায়? এ হতে পারে? নিকৃষ্ট পশু ছাড়া এমন নির্মম উপহাস আর কে করতে পারে?

আমি আপনিও হতে পারি এমন জুলুমের শিকার। আল্লাহ না করুন। আল্লাহ হিফাযত করুন।

তাই জবান সামলাই। অপরের দুঃখ দেখে হাসা মনুষত্বহীন কাজ হবার সাথে সাথে মারাত্মক গোনাহের কাজও বটে!

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেনঃ


يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا يَسْخَرْ قَوْمٌ مِّن قَوْمٍ عَسَىٰ أَن يَكُونُوا خَيْرًا مِّنْهُمْ وَلَا نِسَاءٌ مِّن نِّسَاءٍ عَسَىٰ أَن يَكُنَّ خَيْرًا مِّنْهُنَّ ۖ وَلَا تَلْمِزُوا أَنفُسَكُمْ وَلَا تَنَابَزُوا بِالْأَلْقَابِ ۖ بِئْسَ الِاسْمُ الْفُسُوقُ بَعْدَ الْإِيمَانِ ۚ وَمَن لَّمْ يَتُبْ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ [٤٩:١١]


মুমিনগণ,কেউ যেন অপর কাউকে উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোন নারী অপর নারীকেও যেন উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারিণী অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। কেউ বিশ্বাস স্থাপন করলে তাদের মন্দ নামে ডাকা গোনাহ। যারা এহেন কাজ থেকে তওবা না করে তারাই যালেম। (সূরা হুজরাত, আয়াত-১১)


সবাই আশেপাশের সবাইকে সতর্ক করুন।যেন এসব কথা পরিহার করে সবাই


আল্লাহ রোহিঙ্গা মজলুমদের উপর এবং বিশ্বের সকল মুসলমানদের উপর সহায় হোন।বিশ্বের সকল অমুসলিম‌দেরকেও হেদায়েত দান করুন।আমিন।

মন্তব্য (...)

এ সম্পর্কিত আরও প্রবন্ধ

কাশফ-কারামতের হাকীকত ও প্রামাণিকতা

...

মুফতী লুৎফুর রহমান ফরায়েজী হাফি.
১০ নভেম্বর, ২০২৪
৫৮৫৬ বার দেখা হয়েছে

প্রসঙ্গ ইলমে দ্বীন; দ্বীনী প্রতিষ্ঠান কেন টিকিয়ে রাখা জরুরী?

...

মুফতী লুৎফুর রহমান ফরায়েজী হাফি.
১০ নভেম্বর, ২০২৪
৪৮০৩ বার দেখা হয়েছে

হাদীসের হাফেজগণও ফকীহগণের মুখাপেক্ষী ছিলেন

...

আল্লামা আব্দুল মতীন
১০ নভেম্বর, ২০২৪
১৩৯৮ বার দেখা হয়েছে

লেখকবৃন্দ

সকল লেখক →

মুফতী আবুল হাসান শামসাবাদী

শাইখুল ইসলাম আল্লামা যাহেদ কাউছারী রহঃ

মুফতী আব্দুল হান্নান হাবীব

মুফতী সালমান মানসুরপুরী

শাইখুল হাদীস আল্লামা আব্দুল কুদ্দুস দাঃ

আল্লামা আহমাদ মায়মূন

মাওলানা আতাউল্লাহ আব্দুল জলীল

আল্লামা রফী উসমানী রহঃ

মুফতী রশীদ আহমদ লুধিয়ানভী রহ.

মাওলানা নূর আলম খলীল আমিনী

হযরত মাওলানা আবদুল হাই পাহাড়পুরী রহঃ

হযরতজী মাওলানা ইউসুফ কান্ধলভি রহঃ

মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুর রহমান

মাওলানা মুহাম্মাদ ইমরান হুসাইন

মাওলানা শাহাদাত সাকিব

আল্লামা ইসহাক ওবায়দী রহঃ

মাওলানা ওমর পালনপুরী

মুফতী আবুল কাসেম নোমানী

হাকীমুল উম্মত হযরত আশরাফ আলী থানভী (রহ)

আল্লামা মানাযির আহসান গিলানী রহঃ