আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

মাজারে গিয়ে কিছু চাওয়া

প্রশ্নঃ ৯৫১১. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, নবী — রাসূলগনের কাছে কি দোয়া চাওয়া বা তাঁদের মাজারের সামনে গিয়ে কি কিছু চাওয়া যায়?,

১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

ঢাকা

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো কাছে কোনো কিছু প্রার্থনা করা যাবে না। কেননা এটা দোয়া। আর দোয়া ও সাহায্য প্রার্থনা শুধু আল্লাহ তাআলার কাছেই করা যায়। দুআ একটি ইবাদত। আর সমস্ত ইবাদত আল্লাহর জন্য নির্ধারিত। সূরা ফাতিহায় আছে-
اِیَّاكَ نَعْبُدُ وَ اِیَّاكَ نَسْتَعِیْنُ.
আমরা আপনারই ইবাদত করি এবং আপনারই কাছে সাহায্য চাই। [সূরা ফাতেহা (১) : ৪]
অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে-

اَمَرَ اَلَّا تَعْبُدُوْۤا اِلَّاۤ اِیَّاهُ.

আল্লাহ তাআলা আদেশ করেছেন, তোমরা একমাত্র তারই ইবাদত করবে। -সূরা ইউসুফ (১২) : ৪০

সূরা রা‘দে (আয়াত : ১৪) আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-

لَهٗ دَعْوَةُ الْحَقِّ وَ الَّذِیْنَ یَدْعُوْنَ مِنْ دُوْنِهٖ لَا یَسْتَجِیْبُوْنَ لَهُمْ بِشَیْءٍ اِلَّا كَبَاسِطِ كَفَّیْهِ اِلَی الْمَآءِ لِیَبْلُغَ فَاهُ وَ مَا هُوَ بِبَالِغِهٖ وَ مَا دُعَآءُ الْكٰفِرِیْنَ اِلَّا فِیْ ضَلٰلٍ.

এ আয়াতে বলা হয়েছে, সত্য প্রার্থনা সেটিই, যা আল্লাহ তাআলার কাছে চাওয়া হয়। আল্লাহ তাআলা ছাড়া অন্য যে কারো কাছেই প্রার্থনা করা হোক তা বৃথা এবং তা কাফেরদেরই কাজ।

হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

الدُّعَاءُ هُوَ العِبَادَةُ.

দুআই ইবাদত। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই আয়াত পাঠ করেন-

وَ قَالَ رَبُّكُمُ ادْعُوْنِیْۤ اَسْتَجِبْ لَكُمْ اِنَّ الَّذِیْنَ یَسْتَكْبِرُوْنَ عَنْ عِبَادَتِیْ سَیَدْخُلُوْنَ جَهَنَّمَ دٰخِرِیْنَ.

তোমাদের প্রতিপালক বলেছেন, তোমরা আমার কাছে দুআ কর, আমি তোমাদের দুআ কবুল করব। যারা অহংকারবশত আমার ইবাদত হতে বিমুখ হবে তারা অচিরেই লাঞ্ছিত অবস্থায় জাহান্নামে প্রবেশ করবে। [সূরা মু’মিন (৪০) : ৬০] -জামে তিরমিযী, হাদীস ২৯৬৯

কুরআনে অন্যের কাছে কোনো কিছু চাওয়াকে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَلاَ تَدْعُ مِن دُونِ اللّهِ مَا لاَ يَنفَعُكَ وَلاَ يَضُرُّكَ فَإِن فَعَلْتَ فَإِنَّكَ إِذًا مِّنَ الظَّالِمِينَ

আর নির্দেশ হয়েছে আল্লাহ ব্যতীত এমন কাউকে ডাকা যাবে না, যে তোমার ভালো কারতে পারবে না আবার মন্দও করতে পারবে না। বস্তুত তুমিও যদি এমন কাজ কর, তাহলে তখন তুমিও জালেমদের (অত্যাচারীদের) অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।
-(সুরা ইউনুছ : আয়াত ১০৬)

আল্লাহ তাআলা ব্যতীত দুনিয়াতে কোনো মানুষকে কোনো কিছু দেয়ার ক্ষমতা কারো নেই। তিনি তাঁর ক্ষমতা বর্ণনা করতে গিয়ে অন্য আয়াতে বলেন,

يُولِجُ اللَّيْلَ فِي النَّهَارِ وَيُولِجُ النَّهَارَ فِي اللَّيْلِ وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ كُلٌّ يَجْرِي لِأَجَلٍ مُسَمًّى ذَلِكُمُ اللَّهُ رَبُّكُمْ لَهُ الْمُلْكُ وَالَّذِينَ تَدْعُونَ مِنْ دُونِهِ مَا يَمْلِكُونَ مِنْ قِطْمِيرٍ (13)

‘তিনি রাতকে দিনে প্রবিষ্ট করেন এবং দিনকে রাতে রূপান্তরিত করেন। তিনি সূর্য ও চন্দ্রকে কাজে নিয়োজিত করেছেন। প্রত্যেকটি আবর্তন করে এক নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত। তিনিই আল্লাহ; তোমাদের পালনকর্তা, (এ বিশাল) সাম্রাজ্য তাঁরই। তাঁর পরিবর্তে তোমরা যাদের ডাক, তারা তুচ্ছ খেজুর আঁটিরও অধিকারী নয়।
-(সুরা ফাতির : আয়াত ১৩)

মানুষের দুনিয়া ও পরকালের চাহিদা অনুযায়ী সবকিছু দেয়ার একচ্ছত্র মালিকই হচ্ছেন মহান আল্লাহ। তাই আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্যের কাছে চাওয়া মূলত তারই নির্ধারিত অধিকারে অন্যকে অহেতুক অংশীদার বানানোর সমান, যা মারাত্মক অপরাধ।

সুতরাং আল্লাহ ব্যতীত অন্যের কাছে কিছু চাওয়া, এমনকি কোনো নবি-রাসুলের কাছেও অহেতুক কোনো কিছু চাওয়া শিরকের অন্তর্ভুক্ত।

হাদিসে এসেছে, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সময়ে একজন মুনাফিক ছিল। সে মুমিনদেরকে কষ্ট দিত। কেউ কেউ বললেন, চলুন আমরা রাসুলুল্লাহর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এই মুনাফিক হতে মুক্তি পাওয়ার জন্য প্রার্থনা করি।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, এই ধরণের মুক্তি আমার থেকে চাওয়া উচিত নয়, বরং তা আল্লাহর কাছেই চাইতে হবে।’ (আত-তাবারানি)

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

২৭৬৭৭

দোয়া দ্বারা কি হায়াত বাড়ে?


৮ জানুয়ারী, ২০২৩

বসুরহাট ৩৮৫০

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

৩৩৯১০

তাকদীর আগে থেকে নির্ধারিত হলে মানুষ জাহান্নামে যাবে কেন?


২৯ মে, ২০২৩

গেন্ডা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

৩৮৪৮৯

মালাকুল মাউত কি একাই জান কবয করেন ?


২০ আগস্ট, ২০২৩

ওয়েস্ট বেঙ্গল ৭৩১২৪৫

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুসলিম বাংলা ইফতা বিভাগ

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy