প্রশ্নঃ ৮৬০৬. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ ٱللَّٰهِ وَبَرَكَاتُهُআমাদের অনেক ভাই নিম্নোক্ত হাদীসের অংশ বিশেষ উল্লেখ করে বলেন যে আগে ইমান শিখতে হবে তারপর কুরআন শিখতে হবে। ইহাই নাকি সাহাবিদের তরতিব। এই কথা কি সঠিক? দয়া করে হাদীসের সঠিক ব্যাখ্যা জানিয়ে বাধিত করবেন। হাদীস-জুনদুব ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে ছিলাম। আমরা ছিলাম শক্তিশালী এবং সক্ষম যুবক। আমরা কুরআন শেখার পূর্বে ঈমান শিখেছি, অতঃপর কুরআন শিখেছি এবং তার দ্বারা আমাদের ঈমান বেড়ে যায়। (ইবনে মাজাহ-৬১)
৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১
ঢাকা
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
ওয়ালাইকুম সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ,
শিক্ষা দু'ধরনের- ১.ইজমালি(সামষ্টিক) ২. তাফসিলি(বিস্তারিত),
একথা সর্বজন স্বীকৃত যে, ঈমান ব্যতীত কুরআন শিক্ষা দুনিয়ার জন্য ফায়দাকর হলেও আখেরাতের চূড়ান্ত সফলতার জন্য তা যথেষ্ট নয়, এজন্যই রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবায়ে কেরামকে প্রথমত আল্লাহ তা'আলার একত্ববাদ ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রেসালতের (ইজমালী) সংক্ষিপ্ত দাওয়াত দিয়েছেন, এবং সাহাবায়ে কেরামও এই দাওয়াত গ্রহণ করে প্রথমত আল্লাহর একত্ববাদ ও রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রেসালাতের উপর (ইজমালী) সামষ্টিকভাবে ঈমান শিক্ষা করেছেন। অর্থাৎ প্রথমত (এজমালি) সামষ্টিকভাবে ঈমান আনয়ন করেছেন, অতঃপর কোরআন শিখেছেন। আর হাদিসের যে অংশে বলা হয়েছে- ‘এর কারণে আমাদের ঈমান বৃদ্ধি হয়েছে’, এ বিষয়টি হলো, প্রথমত যেহেতু ইজমালীভাবে ঈমান এনেছিলেন, তাই পরবর্তিতে কোরআন শিক্ষার মাধ্যমে ঈমানের শাখা-প্রশাখা বিস্তারিতভাবে জেনেছিলেন, যাতে করে তাদের ঈমান বিষয়ক জ্ঞানের পরিধি আরো বৃদ্ধি পেয়েছিল, এই কারণে তারা বলেছেন আমাদের ঈমান আরো শক্তিশালী বা বেড়ে গিয়েছিল, এটাকেই আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন বলেছেন-
انَّمَاالۡمُؤۡمِنُوۡنَ الَّذِیۡنَ اِذَا ذُکِرَ اللّٰہُ وَجِلَتۡ قُلُوۡبُہُمۡ وَاِذَا تُلِیَتۡ عَلَیۡہِمۡ اٰیٰتُہٗ زَادَتۡہُمۡ اِیۡمَانًا وَّعَلٰی رَبِّہِمۡ یَتَوَکَّلُوۡنَ ۚۖ
অর্থ- মুমিন তো তারাই, (তাদের সামনে) যখন আল্লাহর নাম নেয়া হয় তখন ভীত হয়ে পড়ে তাদের অন্তর। আর যখন তাদের সামনে পাঠ করা হয় কালাম, তখন তাদের ঈমান বেড়ে যায় এবং তারা স্বীয় পরওয়ার দিগারের প্রতি ভরসা পোষণ করে। (সূরা আনফাল, আয়াত-২)
সুতরাং এখানে বিষয়টি সুস্পষ্ট সাহাবায়ে কেরাম সর্বপ্রথম কালিমায়ে শাহাদাত পাঠ করার মাধ্যমে ঈমানের স্বীকৃতি দিয়েছেন, অতঃপর রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম থেকে ঈমানের শর্ত ও রুকনগুলো শিক্ষা করে নিয়েছেন, যাতে করে তারা পূর্ণ মুমিন হয়ে গেছে। অতঃপর কোরআন শিক্ষার মাধ্যমে তারা ঈমানের শাখা প্রশাখাগুলো আরো বিস্তারিতভাবে জেনেছে এবং এর কারণে তাদের ঈমান আরো মজবুত ও বৃদ্ধি পেয়েছে। (আল্লাহ তাআলা সবচেয়ে বেশি জানে)
والله اعلم بالصواب
মোহাম্মদ আমীর হোসাইন, মুফতি ও মুহাদ্দীস, শাইখ আবু সাঈদ ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার,মোহাম্মাদপুর!
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
আল কুরআনুল কারীম
৪
হাদীস ও সুন্নাহ
৬
তাসাউফ-আত্মশুদ্ধি । ইসলাহী পরামর্শ
৩
শরীআত সম্পর্কিত
১৪
ফিতনাসমুহ; বিবরণ - করণীয়
২
আখিরাত - মৃত্যুর পরে
৩
ঈমান বিধ্বংসী কথা ও কাজ
৬
ফিরাকে বাতিলা - ভ্রান্ত দল ও মত
২
পবিত্রতা অর্জন
৮
নামাযের অধ্যায়
১৯
যাকাত - সদাকাহ
৫
রোযার অধ্যায়
৬
হজ্ব - ওমরাহ
২
কাফন দাফন - জানাযা
৫
কসম - মান্নত
১
কুরবানী - যবেহ - আকীকা
৪
বিবাহ শাদী
৮
মীরাছ-উত্তরাধিকার
২
লেনদেন - ব্যবসা - চাকুরী
৯
আধুনিক মাসায়েল
৬
দন্ড বিধি
২
দাওয়াত ও জিহাদ
৩
ইতিহাস ও ঐতিহ্য
৬
সীরাতুন নবী সাঃ । নবীজীর জীবনচরিত
৩
সাহাবা ও তাবেঈন
৩
ফাযায়েল ও মানাকেব
৩
কিতাব - পত্রিকা ও লেখক
৩
পরিবার - সামাজিকতা
৭
মহিলা অঙ্গন
২
আখলাক-চরিত্র
২
আদব- শিষ্টাচার
১২
রোগ-ব্যধি। চিকিৎসা
২
দোয়া - জিকির
২
নাম। শব্দ জ্ঞান
৩
নির্বাচিত
২
সাম্প্রতিক
১
বিবিধ মাসআলা
১