আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ৮৫৭৮. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসসালামু আলাইকুম,ওযুর পর দুই রাকাত নামাজ আদায় করা সুন্নাত।একে তাহিয়্যাতুল ওযুর নামায বলে।এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে যদি আমি দিনে দশবার ওযু করি, তাহলে দশবারই কি তাহিয়্যাতুল ওযুর নামায পড়তে হবে।আমি যদি শুধু পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের আগে তাহিয়্যাতুল ওযুর নামায পরি, তাহলে কি হবে?,

২ সেপ্টেম্বর, ২০২১

গাজীপুর

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم






অজু করার পর অজুর অঙ্গগুলো শুকানোর পূর্বেই দুই রাকাত নামাজ পড়া মোস্তাহাব। ইসলামী পরিভাষায় এই নামাজকে “তাহিয়্যাতুল অজু” বলে।

নামাজের নিষিদ্ধ ও মাকরুহ সময় ছাড়া যে কোনো সময় অজু করার পর এ নামাজ পড়া যায়। (তিরমিযী শরীফ, ২য় খ-, ৩৪১ পৃষ্ঠা)

অতএব, আপনি সাধ্যমতো তাহিয়্যাতুল ওযুর নামায পড়ুন, যত বেশী তাহিয়্যাতুল ওযুর নামায পড়া হবে ততই বেশী নেকী হতে থাকবে।
আর যেহেতু এটা নফল নামায তাই এতে কোনরূপ বাধ্যবাধকতা নেই যে, প্রতিবার ওযুর পরে পড়তেই হবে।

তাহিয়্যাতুল ওযুর নামাযের ব্যপারে হাদিস শরিফে এসেছে,

عَن عقبَة بن عَامر الْجُهَنِيّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْه، أَن رَسُول الله صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم َ قَالَ: “مَا من أحد يتَوَضَّأ فَيحسن الْوضُوء، وَيُصلي رَكْعَتَيْنِ يقبل بِقَلْبِه وَوَجهه عَلَيْهِمَا؛ إِلَّا وَجَبت لَهُ الْجنَّة “. أخرجه أَبُو دَاوُد.(304) رواه مسلم (234) .

উকবা ইবনু আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, “যে মুসলমান সুন্দর রুপে অজু করে তারপর দাঁড়িয়ে দেহ ও মনকে পুরোপুরি তার প্রতি নিবদ্ধ রেখে দুই রাকআত নামাজ আদায় করে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়। ” (সহিহ মসলিম, হাদিস নং 234, আবু দাউদ, হাদিস নং 304)

عن عُثْمَانَ بْن عَفَّانَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ : (مَنْ تَوَضَّأَ نَحْوَ وُضُوئِي هَذَا ثُمَّ قَامَ فَرَكَعَ رَكْعَتَيْنِ لَا يُحَدِّثُ فِيهِمَا نَفْسَهُ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ.(

হজরত ওসমান ইবনে আফফান রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার অজুর মতো অজু করে (একাগ্রতার সহিত) দুই রাকাআত নামাজ পড়বে এবং এ সময় অন্তরে অন্য কোনো ধারনা উদয় হবে না বা কোনো কথা বলবে না। তাহলে তার পূর্বেকার গোনাহসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। (বুখারি, মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ, আবু দাউদ, নাসাঈ, বাইহাকি, ইবনে হিব্বান)

হাফেজ ইবনে হাজার রহ. তাহিয়্যাতুল অজু সংক্রান্ত এই দুটি হাদিস উল্লেখ্য করার পর বলেন,

“فيه استحباب صلاة ركعتين عقب الوضوء ” انتهى .

এই হাদিসদুটিতে দলিল রয়েছে অজুর পর দুই রাকাত নামাজ মুস্তাহাব হওয়ার ব্যাপারে।

يستحب ركعتان عقب الوضوء للأحاديث الصحيحة فيها ” انتهى) .المجموع شرح المهذب (3 /545)

ইমাম নববী রহ. বলেন, বিশুদ্ধ হাদিসের দলিল থাকার কারণে বুঝা গেল, অজুর পর দুই রাকাত নামাজ পড়া মুস্তাহাব।

এ বিষয়ে আরও একটি হাদিস রয়েছে বুখারি ও মুসলিম শরিফে।

أَنَّ حُمْرَانَ مَوْلَى عُثْمَانَ أَخْبَرَهُ أَنَّ عُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ – رضى الله عنه – دَعَا بِوَضُوءٍ فَتَوَضَّأَ فَغَسَلَ كَفَّيْهِ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ ثُمَّ مَضْمَضَ وَاسْتَنْثَرَ ثُمَّ غَسَلَ وَجْهَهُ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ ثُمَّ غَسَلَ يَدَهُ الْيُمْنَى إِلَى الْمِرْفَقِ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ ثُمَّ غَسَلَ يَدَهُ الْيُسْرَى مِثْلَ ذَلِكَ ثُمَّ مَسَحَ رَأْسَهُثُمَّ غَسَلَ رِجْلَهُ الْيُمْنَى إِلَى الْكَعْبَيْنِ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ ثُمَّ غَسَلَ الْيُسْرَى مِثْلَ ذَلِكَ ثُمَّ قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم تَوَضَّأَ نَحْوَ وُضُوئِي هَذَا ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ مَنْ تَوَضَّأَ نَحْوَ وُضُوئِي هَذَا ثُمَّ قَامَ فَرَكَعَ رَكْعَتَيْنِ لاَ يُحَدِّثُ فِيهِمَا نَفْسَهُ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ‏”‏ ‏.‏ وروى البخاري (160) ومسلم (226)

হারামালা ইবনু ইয়াহইয়া তূজীবী (রহঃ) … উসমান ইবনু আফফান (রাঃ) এর আযাদকৃত গোলাম হুমরান থেকে বর্ণিত যে, উসমান (রাঃ) অজুর পানি চাইলেন। এরপর তিনি অজু করতে আরম্ভ করলেন। (বর্ণনাকারী বলেন), তিনি [উসমান (রাঃ)] তিনবার তাঁর হাতের কব্জি পর্যন্ত ধুইলেন এরপর কুলি করলেন এবং নাক ঝাড়লেন। এরপর তিনবার তার মুখমন্ডল ধুইলেন। এবং ডান হাত কনুই পর্যন্ত তিনবার ধুইলেন। অতঃপর বাম হাত অনুরুপভাবে ধুইলেন। অতঃপর তিনি মাথা মাসেহ করলেন। এরপর তার ডান পা টাখনু পর্যন্ত ধুইলেন এরপর বাম পা অনুরুপভাবে ধুইলেন।

এরপর তিনি বললেন যে, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমার এ অজু করার ন্যায় অজু করতে দেখেছি। এবং অজুর শেষে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যাক্তি আমার এ অজুর ন্যায় অজু করবে এবং দাঁড়িয়ে এরুপে দু-রাকআত নামাজ আদায় করবে যে, সে সময়ে মনে মনে অন্য কোন কিছু কল্পনা করেনি, সে ব্যাক্তির পুর্বের সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস নং ১৬০, সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ২২৬)

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মুসলিম বাংলা ইফতা বিভাগ

প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

৩১২১৮

তাহাজ্জুদের নামাজ জামাতের সাথে পড়া প্রসঙ্গে।


২১ মার্চ, ২০২৩

ঢাকা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী মাহমুদুল হাসান

২৭১০০

সালাতুল হাজত পড়ার নিয়ম


২৮ ডিসেম্বর, ২০২২

ঢাকা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

৩৭৫৭১

নবীজির রওজায় আমলের সাওয়াব পাঠানো কি জায়েজ?


২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

Gabtali - Adur Bazar Rd

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুসলিম বাংলা ইফতা বিভাগ

৯৮৪১৯

ফিলিস্তিনিদের জন্য আলাদা কোন নামাজ পড়া যাবে কিনা?


৮ এপ্রিল, ২০২৫

সিলেট

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy