আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

পরীক্ষায় নকল করা সহযোগিতা করা

প্রশ্নঃ ৮৫১৩. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, পরীক্ষার হলে কারো খাতা দেখে লেখা বা অন্য জন কে নিজের লেখা দেখানোর বেপারে ইসলামিক শরিয়া কি বলে?

২৯ জানুয়ারী, ২০২৫
VVJ৫+৫২৬

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


পরীক্ষার হলে পরীক্ষা চলাকালীন অন্যকে উত্তর দেখানো বা নিজে অন্যের থেকে দেখা কোনটাই শরিয়তসম্মত নয়। এটা সুস্পষ্ট আমানতের খেয়ানত এবং নাজায়েয কাজ।

কারণ পরীক্ষা হল মেধা যাচাইয়ের স্থান। আর মেধা নির্ণিত হবে প্রত্যেক ব্যক্তির আলাদা আলাদাভাবে। সুতরাং যার যে মেধা সেটি সত্যিকার যাচাই হবে যদি তার নিজস্ব মুখস্ত ও যোগ্যতা থেকে উত্তর প্রদান করে। কিন্তু কারো কাছ থেকে দেখে লিখলে বা বলে লিখলে সেক্ষেত্রে ধোঁকার আশ্রয় নেয়া হচ্ছে। কারণ সে যা জানে না। তাও সে জানে বলে প্রকাশ করছে। ফলে পরীক্ষক খাতা দেখে ভাববে উক্ত ছাত্রটি আসলে মেধাবী। কিন্তু আসলেতো মেধাবী নয়। এ ধোঁকাবাজীর কারণে উক্ত পদ্ধতিটি জায়েজ নয়।

তাছাড়া পরীক্ষার্থীকে এ শর্তে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করানো হয় যে, সে কারো কাছ থেকে দেখে বা বলে লিখবে না। এবং সে কাউকে কোন কিছু দেখাবে না এবং বলেও দিবে না। এ শর্ত সাপেক্ষে পরীক্ষার হলে পরীক্ষার্থীকে প্রবেশ করানো হয়ে থাকে। এ জায়েজ শর্ত পালন করা উক্ত পরীক্ষার্থীর উপর আবশ্যক। কিন্তু খাতা দেখানো, বা নিজে দেখে লেখা, কিংবা বলে দেয়া বা বলে নেয়ার মাধ্যমে উক্ত শর্তটি লঙ্ঘিত করা হয়। যা জায়েজ হবে না।

আর অন্যায় কাজ নিজে করা যেমন বৈধ নয়, তেমনি সহযোগিতা করাও বৈধ নয়। তাই নিজে দেখে লেখা যেমন অপরাধ হবে। তেমনি অন্যকে দেখে লিখতে সুযোগ করে দিলেও গোনাহগার হবে।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا»

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ধোঁকা দেয়, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৩১৪৭, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬৪, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৫৮৩, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২২২৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৯০৫}

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}

وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ [٥:٢]

সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। {সূরা মায়িদা-২}

والله اعلم بالصواب

মুসলিম বাংলা ইফতা বিভাগ

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

#৯৮৭৪
আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসসালামু আলাইকুম,
হুজুর আমি জেনারেল লাইনের শিক্ষার্থী। আল্লাহ চাইলে সামনে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারি। তবে আমার দুঃখ যে আমি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করতে পারিনি। এই বিষয়ে অভিযোগ করতে চেয়েও পারনি, কেননা মা-বাবা যদি আমার কথায় কষ্ট পান! কিছুদিন আগে আমি অনলাইনে Islamic Online Madrasah - IOM সম্পর্কে শুনি। সেখানে তিন বছর মেয়াদের আলিম কোর্সসহ আরো সিঙ্গেল কোর্সও করানো হয়। এটা দেখে আমার আবারও মাদ্রাসা পড়ার ইচ্ছেটা জেগে উঠেছে। হুজুর আল্লাহর রহমতে আমি হানাফি মত অনুযায়ী ইসলামি শরীয়ত অনুসরণ করার চেষ্টা করি, অর্থাৎ হানাফি মাজহাব। এখন আমি আপনার কাছে বিনীতভাবে জানতে চাচ্ছি যে-

১) IOM এ আলিম কোর্সে অনেকগুলো বিষয়ের মধ্যে আকিদা এবং ফিকহ বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত। যেহেতু আমি হানাফি মাজহাবের সেহেতু এই দুইটা বিষয় কি ঐখান থেকে শেখা উচিত হবে?
২) হুজুর আমি শুনেছি কোনো কাজের আগে পরামর্শ করলে ভালো। যেহেতু আপনারা অনলাইনেও ইসলামের খেদমতে মাশা - আল্লাহ নিয়োজিত আছেন, সেহেতু পরামর্শ করার জন্যে আল্লাহর নাম নিয়ে আপনাদেরকে ভরসা করা যায়। হুজুর তাঁদের ফেসবুক পেজ - Islamic Online Madrasah - IOM. আমার কি IOM এর কোনো কোর্সে ভর্তি হওয়া উচিত হবে? হুজুর আমার উপরের কথাগুলো বিবোচনা করে দয়া করে বলুন।
৩) আর যদি এটা না হয়, তাহলে আমার জন্যে অনলাইনে এমন কোনো কোর্স কি আছে?
[হুজুর আমি আপনার কাছে বিনীতভাবে অনুরোধ করছি, দয়া করে আমাকে বলুন।]
question and answer iconউত্তর দিয়েছেন: মোহাম্মদ আমীর হোসাইন, মুফতি ও মুহাদ্দীস,
৩০ অক্টোবর, ২০২১
Dhaka