আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ৮১৯৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, তিনি যদি রাসূল হয়ে থাকেন ,তাহলে এমন কাজ কিভাবে করেন।তিনি পর্বতের চূড়া থেকে নিচে পড়ে যাবার জন্য একাধিকবার দ্রুত সেখানে চলে গেছেন। যখনই নিজেকে ফেলে দেয়ার জন্য পর্বতের চূড়ায় পৌঁছতেন, তখনই জিবরীল (আঃ) তাঁর সামনে আত্মপ্রকাশ করে বলতেন, হে মুহাম্মাদ! নিঃসন্দেহে আপনি আল্লাহর রাসূল। এতে তাঁর অস্থিরতা দূর হত এবং নিজ মনে শান্তিবোধ করতেন। তাই সেখান থেকে ফিরে আসতেন। ওয়াহী বন্ধ অবস্থা যখন তাঁর উপর দীর্ঘ হত তখনই তিনি ঐরূপ উদ্দেশে দ্রুত চলে যেতেন। যখনই তিনি পর্বতের চূড়ায় পৌঁছতেন, তখনই জিবরীল (আঃ) তাঁর সামনে আত্মপ্রকাশ করে আগের মত বলতেন। [৩]ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, فَالِقُ الإِصْبَاحِ অর্থ দিনের বেলায় সূর্যের আলো ও রাতের বেলায় চাঁদের আলো।সহীহ বুখারী (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪৯৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫১১),

২৫ আগস্ট, ২০২১

ঢাকা ১২০৯

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


السلام عليكم ورحمة الله وبركاته



আমাদের প্রিয় রাসুল মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মতের প্রতি অত্যাধিক দয়ালু ছিলেন। যার বর্ণনা কুরআনুল কারীম এভাবে দিয়েছে-

لَقَدۡ جَآءَکُمۡ رَسُوۡلٌ مِّنۡ اَنۡفُسِکُمۡ عَزِیۡزٌ عَلَیۡہِ مَا عَنِتُّمۡ حَرِیۡصٌ عَلَیۡکُمۡ بِالۡمُؤۡمِنِیۡنَ رَءُوۡفٌ رَّحِیۡمٌ

অবশ্যই তোমাদের মধ্য হতেই তোমাদের নিকট এক রাসূল এসেছে। তোমাদেরকে যা বিপন্ন করে তা তার জন্যে কষ্টদায়ক। সে তোমাদের মঙ্গলকামী, মু’মিনদের প্রতি সে দয়ার্দ্র ও পরম দয়ালু।
—আত তাওবাহ্ - ১২৮

এমন দয়ালু নবীর উম্মত জাহান্নামী হয়ে যাবে কস্মিনকালেও নবী তা সহ্য করার কথা নয়। তিনি তার সাধ্যমত আল্লাহর রিসালাত উম্মতের কাছে পৌঁছিয়েছেন। সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন। উম্মতের একাংশ তা গ্রহণ করছে না দেখে তিনি ব্যথিত হয়েছেন। ভারাক্রান্ত হয়েছেন। তিনি এত বেশি পেরেশান হয়েছেন, যার ফলে আল্লাহ তাআলার দয়া অনুগ্রহের উদ্রেক করে দিত। আল্লাহ তায়ালা তাঁর প্রিয় নবীকে সান্তনা দিয়ে আয়াত নাযিল করেছেন-

فَلَعَلَّکَ بَاخِعٌ نَّفۡسَکَ عَلٰۤی اٰثَارِہِمۡ اِنۡ لَّمۡ یُؤۡمِنُوۡا بِہٰذَا الۡحَدِیۡثِ اَسَفًا

( হে নবী! অবস্থা দৃষ্টে মনে হয় ) তারা। ( কুরআনের ) এ বাণীর প্রতি ঈমান না আনলে যেন তুমি আক্ষেপ করে করে তাদের পেছনে নিজের প্রাণনাশ করে বসবে।
—আল কাহাফ - ৬

لَعَلَّکَ بَاخِعٌ نَّفۡسَکَ اَلَّا یَکُوۡنُوۡا مُؤۡمِنِیۡنَ

(হে রাসূল! ) তারা ঈমান (কেন) আনছে না, এই দুঃখে হয়ত তুমি আত্মবিনাশী হয়ে যাবে!
—আশ শুআরা - ৩

উম্মতের পিছনে নবীর কঠোর পরিশ্রম এবং হৃদয় দিয়ে রিসালাতের এই দায়িত্ব পালন যথোপযুক্ত ছিল। বরং কিছু বেশিই ছিল। যার ফলে আল্লাহ তায়ালা দায়িত্ব হালকা করার জন্য এবং সান্ত্বনা দেয়ার জন্য এইসব আয়াত নাযিল করেন। বিষয়টি এভাবেই ছিল।

আপনার উল্লেখিত বক্তব্যটি অভিব্যক্তির ক্ষেত্রে কিছুটা ভিন্ন। যা বাস্তব অবস্থাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে দিয়েছে। ফলে আপনার মনে প্রশ্ন জেগেছে যে, নবী হলে তিনি কেন এমন করবেন?
তিনি (আমাদের প্রিয় নবী) কখনই আত্মহত্যা করতে যাননি। নবীরা কেউ আত্মহত্যা করেননি। আত্মহত্যা করা নবীজির শান এর সাথে যায় না।

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সকল বিভ্রান্তি থেকে হেফাজত করেন। আমীন

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ ইসহাক মাহমুদ
মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy