و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

১. একজন নারী অপর নারীর সম্মুখে নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত অবশ্যই ঢেকে রাখা ফরয।
তদ্রূপ একজন পুরুষ অপর পুরুষের সম্মুখে নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত ঢেকে রাখা ফরয।
একজন নারী নিজের মাহরাম পুরুষের সম্মুখে নাভি থেকে হাঁটু এবং পেটপিঠ ঢেকে রাখা ফরয।
একজন নারী বিশেষ প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হলে পর পুরুষের সম্মুখে মাথার তালু থেকে পায়ের তালু পর্যন্ত আপাদমস্তক ঢেকে রাখা ফরয।
নারী ঘরে থাকা অবস্থায় নিকটাত্মীয়দের অনেক গায়রে মাহরাম পুরুষ ঘরে আনাগোনা করতে বাধ্য হয়। এদের সম্মুখে ঘরে থাকা অবস্থায় একজন নারীর পক্ষে বোরকা গায়ে দিয়ে চলাচল অসম্ভব। এমতাবস্থায় ফুলহাতা ঢিলেঢালা জামা পরে বড় ওড়না দিয়ে মাথা ও শরীর ঢেকে নেবে। মুখের উপর ঘোমটা একটু লম্বা করে টেনে দেবে। উভয়ে নিজের দৃষ্টি অবনত রাখে যার যার পথে চলে যাবে। কিছুতেই গায়রে মাহরামের সঙ্গে এক রুমে একত্র হবে না।

২. ছেলে-মেয়ের মধ্যে যখন সাবালক হওয়ার নিদর্শন দেখা দিবে তখন থেকেই পর্দা করা ফরয।
ছেলেদের সাবালক হওয়ার নিদর্শন: স্বপ্নদোষ হওয়া, দাড়ি গোঁফ গজানো, ছোটবেলা থেকেই বিবাহিত হলে তার স্ত্রী গর্ভবতী হয়ে যাওয়া।

নারী সাবালিকা হওয়ার নিদর্শন: স্বপ্নদোষ হওয়া, মাসিক আরম্ভ হওয়া, স্তন বড় হওয়া।
উভয়ের ক্ষেত্রে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার নিদর্শন দেখা না দিলে চান্দ্রবর্ষের হিসেবে ১৫ বছর পূর্ণ হলে অবশ্যই ছেলে-মেয়ে সাবালক-সাবালিকা হয়ে যায়।
উল্লেখ্য, আমাদের দেশে ছেলে-মেয়েরা সাধারণত ১৫ বছরের আগেই প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে যায়।
এই বয়সে উপনীত হলে তাদের পর্দা করা ফরয।

৩. মাহরামের তালিকা

মহিলাদের জন্য ১৪ জন মাহরাম পুরুষ ব্যতিত অন্য পুরুষদের দেখা দেয়া হারাম।

মাহরাম পুরুষ ১৪ জন হলেন:

বাবার মত পাঁচ জন:

(১) নিজের বাবা
(২) দুধ বাবা
(৩) চাচা
(৪) মামা
(৫) শশুর

ভাইয়ের মত পাঁচ জন:

(১) আপন ভাই
(২) দুধ ভাই
(৩) দাদা ভাই
(৪) নানা ভাই
(৫) নাতী

ছেলের মত চার জন:

(১) নিজের ছেলে
(২) ভাইয়ের ছেলে
(৩)বোনের ছেলে
(৪) মেয়ের জামাতা

পুরুষদের জন্যেও ১৪ জন মাহরাম নারী রয়েছে, যাদেরকে বিয়ে করা পুরুষদের জন্য আজীবন হারাম।

মায়ের মত পাঁচ জন:

(১) নিজের মা
(২) দুধ মা
(৩) খালা
(৪) ফুফু
(৫) শাশুড়ী

বোনের মত পাঁচ জন:

(১) আপন বোন
(২) দুধ বোন
(৩) দাদী
(৪) নানী
(৫) নাতনী

মেয়ের মত চার জন:

(১) নিজের মেয়ে
(২) ভাইয়ের মেয়ে
(৩)বোনের মেয়ে
(৪) পুত্রবধু

৪. খালাতো-মামাতো ভাইদের বয়স আট-নয় বছরের কম হলে আপাতত এদের সঙ্গে পর্দা করতে হবে না।

৫. বাসায় পর-পুরুষ থাকলে নিজের ইজ্জত আব্রু হেফাজত করার নিমিত্তে অবশ্যই কামরার দরজা চাপিয়ে রাখবেন। হুট করে কেউ ঢুকলে অবশ্যই তাকে সতর্ক করবেন এবং মুহুর্তের মধ্যে নিজেকে ওড়না দিয়ে সম্পূর্ণ আবৃত করে নেবেন।

বিয়ের পর স্বামীর ভাই ও পুরুষ আত্মীয়দের সম্মুখে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। ঘরের ভেতর চলাচলের পথে তাদের মুখোমুখি হয়ে গেলে দৃষ্টি অবনত করতে হবে। নিজ ঘরে সামির ভাই ও আত্মীয়-স্বজন (গায়রে মাহরাম) থাকা অবস্থায় একজন নারী সারাক্ষণ বোরকা গায়ে দিয়ে থাকা অসম্ভব বিধায় ফুলহাতা ঢিলেঢালা জামা পরিধান করে বড় ওড়না দিয়ে মাথা ও শরীর ঢেকে নিয়ে মুখের উপর একটু লম্বা করে ঘোমটা টেনে চলাচল করবে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন:
الحمو الموت
স্বামী পক্ষের পুরুষ আত্মীয়-স্বজন মৃত্যুর মতই ভয়ানক!
অতএব কিছুতেই একই কামরায় দেবর-ভাবি একত্র হওয়া জায়েয হবে না।

والله اعلم بالصواب