প্রশ্নঃ ৭২৭৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ১. আমি বেশ কয়েকমাস ধরে শারিরিক বিভিন্ন সমস্যায় ছিলাম। রাতে খুব ভয় হতো। ভয়ংকর স্বপ্ন দেখতাম। ডাক্তার কোন অসুখ পায়নি। তবুও সবসময় অসুস্থ থাকতাম। গত পরশু আমার মা এক হুজুরের কাছে গিয়েছিল। হুজুর বলেছেন আমার সাথে জ্বিন আছে। আমার নিজেরও অনেকবার এটা মনে হতো। হুজুর আমাকে ২ টা তাবিজ দিয়েছেন যা গতকাল থেকে ব্যবহার করছি। আল্লাহর রহমতে আজ আমি অনেকটা সুস্থ বোধ করছি। আমার প্রশ্ন হলো এই তাবিজ ব্যবহারে কি কোন সমস্যা বা শিরকের মধ্যে পড়বে?২. আমি এই এপের সকাল সন্ধ্যার দোয়া, রাতে আয়াতুল কুরসি, তিন কুল, সব অনেক পড়তাম। কিন্তু তারপরও ঠিক হচ্ছিলাম না। তাবিজের বিশ্বাসের চেয়ে আমি এটা ভেবে ব্যবহার করছি যে, আল্লাহ এর উসিলায় যেন আমাকে সুস্থ করে দেন। কিন্তু তারপরও মনে সন্দেহ লাগে শিরক হচ্ছে কি না। তাবিজ ব্যবহার করা কি নিষেধ? যদি তাই হয়, দয়া করে বাংলায় রেফারেন্স সহ জানাবেন।
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
السلام عليكم ورحمة الله وبركاته
একজন ডক্টর হাজার মানুষের চিকিৎসা করেন। কিন্তু যখন তিনি নিজেই অসুস্থ হয়ে যান, তখন অন্য ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হয়। তখন নিজের চিকিৎসা নিজে আর করতে পারেন না।
তদ্রুপ অনেক সময় কেউ ব্লেক মেজিক তথা জাদু করলে অথবা জিনেরা ক্ষতি করে থাকলে সে সময় নিজের তদবীর নিজে করতে পারেনা। করলেও ঐ শয়তান জিনেরা সেগুলো কেটে ফেলে।
এমতাবস্থায় কোন আল্লাহ ওয়ালা মুত্তাকী আলিম এর মাধ্যমে তদবীর করালে আল্লাহ তাআলা উপকার দেন।
বিভিন্ন পাথর, গাছের শেকড়, মৃত প্রাণীর হাড় ইত্যাদিকে উপকার-অপকারে বিশ্বাসী হয়ে ব্যবহার করা শেখ হাদীস শরীফে এটিকে উল্লেখ করা হয়েছে।
কুরআনুল কারীমের আয়াত অথবা হাদীস এসে কোন দোয়া লিখে তাবিজ হিসেবে ব্যবহার করা কিছুতেই শিরিক নয় বরং সাহাবীর আমল দ্বারা এটি প্রমাণিত।
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ عَيَّاشٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا فَزِعَ أَحَدُكُمْ فِي النَّوْمِ فَلْيَقُلْ أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ مِنْ غَضَبِهِ وَعِقَابِهِ وَشَرِّ عِبَادِهِ وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُونِ . فَإِنَّهَا لَنْ تَضُرَّهُ " . قَالَ وَكَانَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَمْرٍو يُلَقِّنُهَا مَنْ بَلَغَ مِنْ وَلَدِهِ وَمَنْ لَمْ يَبْلُغْ مِنْهُمْ كَتَبَهَا فِي صَكٍّ ثُمَّ عَلَّقَهَا فِي عُنُقِهِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
আম্র ইবনু শু’আইব (রাঃ) হতে পর্যায়ক্রমে তাঁর পিতা ও তাঁর দাদা থেকে বর্ণিত:
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: তোমাদের কেউ ঘুমের মধ্যে ভয় পেলে সে যেন বলে : আমি আল্লাহ্ তা’আলার পরিপূর্ণ কালিমার দ্বারা আশ্রয় চাই তাঁর ক্রোধ ও শাস্তি হতে, তাঁর বান্দাদের খারাবী হতে, শাইতানদের কুমন্ত্রণা হতে এবং আমার নিকট যারা হাযির হয় সেগুলো হতে’’। তাহলে সেগুলো তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। ‘আব্দুল্লাহ ইবনু আমর রাযিয়াল্লাহু আনহু তার সন্তানদের মধ্যে প্রাপ্ত বয়স্কদের উক্ত দু’আ শিখিয়ে দিতেন এবং উক্ত দু’আ কাগজের টুকরায় লিখে তার নাবালেগ সন্তানদের গলায় ঝুলিয়ে দিতেন।
—জামে' আত-তিরমিজী, হাদীস নং ৩৫২৮
والله اعلم بالصواب
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন