আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

দুইকোটি আটাশি লক্ষ বছরের হাদিস কি সহিহ?

প্রশ্নঃ ৭২১২. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমি শুনেছি এমন কি ফাজায়েলে আমল কিতাব এ আছে এমন একটি হাদিস যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বর্ননা করেছেন যে, নামাজ কাজা করলে ৮০ মুরতবা অর্থাৎ ২ কোটি ৮৮ লক্ষ বছর জাহান্নাম এ জলতে হবে। এই কথাটি বা এই হাদিসটি আসলেই কি সত্যি নাকি? এমন কথা বা হাদিস কি সহিহ??,

২৭ অক্টোবর, ২০২৩

কেরানীগঞ্জ

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


মাজালিসুল আবরার নামক কেতাবে বর্ণিত আছে, হযরত রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ফরমাইয়াছেন, যেই লোক সময়মত নামায পড়িল না, নামাযের ওয়াক্ত শেষ হইবার পরে কাযা পড়িল, সেই লোকও জাহান্নামে ৮০ হুকবা শাস্তি ভোগ করিবে। ৮০ বছরে এক হুকবা আর ৩৬০ দিনে এক বৎসর। ৩৬০ * ৮০ = ২৮,৮০০ দিন। অতএব তাকে ২৮,৮০০ দিন এক ওয়াক্ত নামায না পড়িবার জন্য দোজখের আগুনে জ্বলিতে হইবে। আর আখেরাতের দিন হইবে দুনিয়ার এক সহস্র বৎসরের তুল্য। এই হিসাবে এক ওয়াক্ত নামায তরককারীকে দুই কোটি অষ্টাশি লক্ষ বৎসর জাহান্নামের আগুনে শাস্তি ভোগ করিতে হইবে।’’

শাইখুল হাদীস আল্লামা যাকারিয়া কান্ধালভী (রাহ) এ হাদীসটিকে তার ‘ফাযায়েলে নামায’ গ্রন্থে নিম্নরূপে উদ্ধৃত করেছেন:

مَنْ تَرَكَ الصَّلاَةَ حَتَّى مًضًى وًقْتُهَا ثُمَّ قَضَى عُذِّبَ فِيْ النَّارِ حُقْباً، وَالْحُقْبُ ثَمَانُوْنَ سَنَةً، وَالسَّنَةُ ثَلاَثُمِائَةٍ وَسِتُّوْنَ يَوْماً، كُلُّ يَوْمٍ مِقْدَارُهُ أَلْفُ سَنَةٍ.
‘‘যে ব্যক্তি ওয়াক্ত শেষ হওয়া পর্যন্ত সালাত আদায় করল না, এবং এরপর সে কাযা করল, তাকে জাহান্নামে এক হুক্বা শাস্তি প্রদান করা হবে। এক হুকবা ৮০ বছর এবং এক বৎসর ৩৬০ দিন এবং প্রত্যেক দিনের পরিমাণ এক হাজার বৎসরের সমান।’’

হাদীসটি উদ্ধৃত করে তিনি বলেন:

كذا في مجالس الأبرار. قلت: لم أجده فيما عندي من كتب الحديث

‘‘মাজালিসুল আবরার নামক গ্রন্থে এভাবে লিখা হয়েছে। আমার বক্তব্য হলো, আমার নিকটে যত হাদীসের পুস্তক রয়েছে সেগুলোর কোনো পুস্তকেই আমি এ হাদীসটি দেখতে পাই নি।...’’

আর তাঁর মত একজন মুহাদ্দিস যে হাদীস কোনো হাদীসের গ্রন্থে খুঁজে পান নি সে হাদীসের অবস্থা সহজেই অনুমেয়।
মুহাদ্দিসীনে কেরামের বিশাল জামাত হাদীসটিকে জাল হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন। আর শায়েখ জাকারিয়া রহঃ নিজেও হাদীসটি সহীহ হওয়ার বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তাই এ হাদীসের নিসবত শায়েখ আব্দুল আজীজ রহঃ এর তাহকীক ও প্রশসংসিত কিতাবের উদ্ধৃতি দিয়ে উল্লেখ করেছেন। সুতরাং এটি কোন দোষনীয় কাজ হয়নি।

কোন কিতাবে দু’ একটি দুর্বল ও বাতিল বর্ণনা আসা মানেই উক্ত কিতাবটি বাতিল ও পরিত্যাজ্য বলে সাব্যস্ত হয় না। যদি তাই হয়, তাহলে কুতুবে সিত্তা সহ কোন হাদীসের কিতাবই আর গ্রহণযোগ্য থাকবে না। কারণ প্রতিটি হাদীসের কিতাবের ব্যাপারেই কম বেশি দুর্বল ও জাল হাদীস আছে মর্মে মন্তব্য করেছেন মুহাদ্দিসীনে কেরাম।

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মুসলিম বাংলা ইফতা বিভাগ

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

২০৭৮৯

আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, অতীতের প্রায় ৩ -৪ বছরের নামাজের ব্যাপারে কি করতে হবে

২৫ জুলাই, ২০২২

নাটোর

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

৫০৬৬৪

আসরের পর কাজা নামাজ পড়ার বিধান


৩ জানুয়ারী, ২০২৪

কালিয়াকৈর

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

২৬৬০৬

ফজরের সময় উঠতে না পারলে করণীয়


২৪ ডিসেম্বর, ২০২২

নবিনগর - চন্দ্রা সড়ক

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী সিরাজুল ইসলাম

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy