আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

একটি দরুদ শরীফের তাহকীক

প্রশ্নঃ ৪৪৭৮৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, اللهم صل وسلم على النبي الامي وعلى اٰله والصحابه ভাই এই দুরুদ এর দলিল টা যদি বলে দিতে খুবই উপকৃত হতাম দয়া করে জানাবেন প্লিজ,

৬ নভেম্বর, ২০২৩

FFJH+M৯৪

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


মুহতারাম, প্রশ্নোক্ত দুরুদটি হুবহু এভাবে এই শব্দে হাদীসের কিতাবাদিতে বর্ণিত হয়নি।
তবে এই দুরুদের প্রতিটি শব্দ বাক্য আলাদাভাবে বিভিন্ন হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।
যেমন দেখুন,
اَللّٰهُمَّ صَلِّ وَسَلِّمْ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى‏ آلِ مُحَمَّدٍ
ইয়া আল্লাহ! আপনি রহমত ও প্রশান্তি অবতীর্ণ করুন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর এবং তাঁর পরিবারবর্গের উপর। -আলআযকার নাববী, পৃ. ১৭৭; আলকাউলুল বাদী‘, পৃ. ৪০০ (সালিহ লিলআমাল।
এখানে উম্মি নবী ও সাহাবায়ে কেরামের উল্লেখ আসেনি, কিন্তু সেগুলো আবার আন্যান্য সহীহ হাদীসে এসেছে।
তাই এই দরুদ পড়াতে কোনো অসুবিধা নেই, জায়েয আছে। তবে উত্তম হলো সরাসরি হাদীস শরীফে বর্ণিত মাসনুন দুরুদ সমূহ পড়া এবং তা মুখস্থ করা।

আপনার জ্ঞাতার্থে এখানে বেশকিছু মাসনুন দরুদ সম্বলিত এই প্রবন্ধটি পেশ করা হচ্ছে। আপনি তা থেকে দুরুদ সমূহ পড়ুন এবং উপকৃত হোন।

দরূদ ও সালাম : গুরুত্ব, ফযীলত ও আমল এবং দরূদের কিছু মাছূর শব্দ-বাক্য
মাওলানা সাঈদ আহমদ বিন গিয়াসুদ্দীন

আল্লাহ তাআলা আপন কালামে পাকে তাঁর সর্বাধিক প্রিয় বান্দা ও সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল হুযুরে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কিছু মহান গুণাবলি এভাবে বর্ণনা করেছেন-

لَقَدْ جَآءَكُمْ رَسُوْلٌ مِّنْ اَنْفُسِكُمْ عَزِیْزٌ عَلَیْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِیْصٌ عَلَیْكُمْ بِالْمُؤْمِنِیْنَ رَءُوْفٌ رَّحِیْمٌ.

নিশ্চয় তোমাদের নিকট তোমাদেরই মধ্য থেকে একজন রাসূল আগমন করেছেন। যাঁর কাছে তোমাদের কষ্ট অসহনীয়, যিনি তোমাদের (কল্যাণের) জন্য ব্যাকুল। এবং তিনি মুমিনদের প্রতি অত্যন্ত দয়াপরবশ ও পরম মেহেরবান। -সূরা তাওবা (৯) : ১২৮

যে দয়ালু রাসূল-এর ব্যাপারে স্বয়ং আল্লাহ তাআলা আপন মহামর্যাদাবান কালামে উক্ত সাক্ষ্য দিচ্ছেন, তিনি যে (গোটা উম্মতের প্রতি সাধারণভাবে এবং) মুমিনদের প্রতি বিশেষভাবে কতটা দয়াপরবশ- তা তো বলাই বাহুল্য। যাঁকে স্বয়ং ‘রাহমান-রাহীম’ প্রভু অভিষিক্ত করেছেন رَحِیْمٌ তথা পরম দয়ালু বলে, তাঁর দয়া-মায়ার কি কোনো সীমা-পরিসীমা আছে? অক্ষম শব্দ-বাক্যে কি তাঁর মায়া-মমতার পূর্ণ বর্ণনা দেয়া সম্ভব?! সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।

ব্যস্ সংক্ষিপ্ত কথা এই যে, মহান আল্লাহ তাআলার পরে আমাদের প্রতি যাঁর ইহসান ও অনুগ্রহ এবং মায়া ও মমতা সবচেয়ে বেশি, তিনি হলেন আমাদের পরম প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! বিষয়টা যতটা না বর্ণনা করার, তার চেয়ে বেশি অনুভব করার বিষয়। আল্লাহ তাআলা আমাদের দান করুন সেই অনুভব-অনুভূতিপূর্ণ মুমিনের দিল।

আমরা এ দুনিয়ায় যা কিছু প্রকৃত খায়ের ও কল্যাণ লাভ করেছি, তা প্রিয় নবীজীর মাধ্যমেই পেয়েছি। আর পরকালীন জীবনেও যদি কোনো কল্যাণ ও সফলতা অর্জিত হয়, নিশ্চয় তা তাঁর বরকতেই লাভ হবে। অতএব সংক্ষেপে শুধু বলি- ‘সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’!

حَرِیْصٌ عَلَیْكُمْ-‘তিনি তোমাদের (কল্যাণের) জন্য অতি ব্যাকুল’। আহ! গোটা উম্মতের জন্য এবং উম্মত যেন সকল কল্যাণ লাভ করে নেয় আর যাবতীয় অকল্যাণ থেকে মুক্তি পেয়ে যায়- এর জন্য ব্যাকুলতাই ছিল প্রিয় নবীজীর অন্যতম প্রধান পরিচয় ও নিদর্শন। শুধু মনের ব্যাকুলতাই নয়। এর জন্য তিনি নিজের সর্বস্ব অকাতরে বিলিয়ে গেছেন মৃত্যুর পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত! অতঃপর উম্মতের জন্য এই ব্যাকুলতা নিয়েই এবং মানবজাতির জন্য প্রকৃত কল্যাণ ও মহামুক্তির ‘মিরাস’ বণ্টন করতে করতেই এই দুনিয়া থেকে বিদায় গ্রহণ করেছেন- ‘সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’!

যখন আমাদের প্রতি নবীজীর ইহসান ও অনুগ্রহ (মহান আল্লাহর পরে) সর্বাপেক্ষা বেশি, সুতরাং আমাদের উপর তাঁর হকও সর্বাধিক। আল্লাহ তাআলা নবীজীর হকসমূহ আদায় করার তাওফীক আমাদের দান করুন। তাঁর প্রতি যথাযথভাবে ঈমান আনা, পরিপূর্ণ ভক্তি-ভালবাসা পোষণ করা, তাঁর সুন্নাহ ও উত্তম আদর্শের পূর্ণ অনুসরণ করা, তাঁর জীবনী ও সীরাতের সঠিক চর্চা করা, তাঁর সুন্নাতের প্রতিষ্ঠা ও প্রচার-প্রসারে সাধ্যানুযায়ী অংশগ্রহণ করা- এসব তাঁর বড় বড় হক। এ ছাড়াও আমাদের উপর তাঁর গুরুত্বপূর্ণ একটি হক হল- তাঁর প্রতি অধিক পরিমাণে সালাত ও সালাম প্রেরণ করা, দরূদ শরীফ পাঠ করা।

দরূদ শরীফের স্বরূপ, গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য

এ বিষয়ে সংক্ষেপে চমৎকার আলোচনা করেছেন বিখ্যাত মনীষী, প্রসিদ্ধ বুযুর্গ ও আলিমে রব্বানী হযরত মাওলানা মুহাম্মাদ মনযূর নুমানী রাহ.। হযরতের ভাষায়-

‘সালাত ও সালাম’ তথা দরূদ শরীফ হচ্ছে আল্লাহ তাআলার দরবারে এক মহিমান্বিত ও বরকতময় দুআ-প্রার্থনা, যার দ্বারা আল্লাহর বান্দা আল্লাহর শ্রেষ্ঠ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি স্বীয় মহব্বত-ভালবাসার নযরানা পেশ করে এবং পেশ করে নবীজীর প্রতি স্বীয় বিশ^স্ততা ও ওয়াফাদারির প্রমাণ। আর এর আদেশ করেছেন স্বয়ং আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারীমে এবং আদেশও করেছেন বড় শান্দার ও হৃদয়গ্রাহী ভঙ্গিতে!

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

اِنَّ اللهَ وَمَلٰٓىِٕكَتَهٗ یُصَلُّوْنَ عَلَی النَّبِیِّ یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا صَلُّوْا عَلَیْهِ وَسَلِّمُوْا تَسْلِیْمًا.

আয়াতে মুমিনদের আদেশ করা হয়েছে নবীজীর প্রতি সালাত ও সালাম প্রেরণ করতে। এটিই আয়াতের মূল প্রতিপাদ্য বিষয়। কিন্তু এর সর্বোচ্চ গুরুত্ব বোঝানোর জন্য আল্লাহ তাআলা কথাটি এভাবে বলেছেন- স্বয়ং আল্লাহ তাআলা ও তাঁর ফিরিশতাগণ নবীর প্রতি ‘সালাত’ প্রেরণ করে থাকেন। অতএব ওহে মুমিনরা! তোমরাও এই মোবারক ও মহিমান্বিত আমলে শরীক হও এবং নবীর প্রতি সালাত প্রেরণ কর এবং প্রেরণ কর অধিক পরিমাণে সালাম!

আর কোনো ক্ষেত্রেই এমন বলা হয়নি যে, আল্লাহ নিজে অমুক আমলটি করেন, অতএব তোমরাও তা কর। একমাত্র সালাত ও সালামের আদেশ প্রদানের ক্ষেত্রে এই অসাধারণ ভঙ্গিমা অবলম্বন করা হয়েছে। (যদিও আল্লাহর সালাত প্রেরণ, ফিরিশতাগণের সালাত প্রেরণ আর আমাদের সালাত প্রেরণ- এসবের প্রত্যেকটির রয়েছে স্বতন্ত্র অর্থ-মর্ম-স্বরূপ এবং ভিন্ন বৈশিষ্ট্য। তাফসীরের কিতাবাদিতে আয়াতটির তাফসীর দ্রষ্টব্য)।

যাহোক, কুরআনুল কারীমের এই আয়াত থেকেই স্পষ্ট, নবীজীর প্রতি সালাত-সালাম প্রেরণ করা ও দরূদ শরীফ পাঠ করা মহান রাব্বুল আলামীনের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, মর্যাদাপূর্ণ ও পছন্দনীয় আমল!

প্রত্যেক ইবাদত এবং যিকির ও দুআর আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং আছে বিশেষ ফায়দা ও উপকারিতা, খায়ের ও বরকত। দরূদ শরীফের বৈশিষ্ট্য এবং এর বিশেষ উপকারিতা এই যে, দিলের গভীর থেকে অধিক পরিমাণে দরূদ পড়ার দ্বারা একইসাথে লাভ হয় আল্লাহ তাআলার খাস রহমত, বিশেষ করুণা-দৃষ্টি ও মেহেরবানী এবং নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রূহানী নৈকট্য, গভীর সম্পর্ক ও তাঁর অত্যধিক মায়া-মমতা! দরূদ শরীফ পাঠ করে অধম বান্দা হয়ে যায় মহামহিম আল্লাহ তাআলা ও তাঁর মহামর্যাদাবান আখেরি নবী- উভয়ের মাহবূব ও প্রিয়! দুনিয়া-আখেরাতে বান্দার এর চেয়ে বেশি আর কী চাই?!

পূর্বে বলা হয়েছে, সালাত ও সালাম হচ্ছে এক মহিমান্বিত দুআ। বিভিন্ন হাদীস থেকে পরিষ্কার জানা যায়, এ ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সদা-সর্বদা অবহিত করা হতে থাকে অর্থাৎ একদল ফিরিশতার মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন, অমুক অমুক ব্যক্তি তাঁর জন্য এত এত দরূদ শরীফ পাঠ করেছে!

এখন একটু ভাবুন, আপনি যদি কারো ব্যাপারে জানতে পারে, সে আপনার জন্য এবং আপনার পরিবারবর্গের জন্য খুব দুআ করে। সে নিজের জন্য আল্লাহর কাছে যতটা দুআ করে, তার চেয়ে অধিক দুআ করে আপনার কল্যাণের জন্য এবং এটাই তার পছন্দনীয় আমল! আপনি যদি কারো ব্যাপারে এমনটি জানতে পারেন, তাহলে তার প্রতি আপনি কতটাই না আনন্দিত ও খুশি হবেন! তার প্রতি আপনার দিলে কেমন মহব্বতই না পয়দা হবে! তাকে আপনি কতটাই না ভালবেসে ফেলবেন! অতঃপর কখনো যদি তার সাথে আপনার সরাসরি সাক্ষাৎ ঘটে, তবে তার সাথে আপনার আচরণ কেমন হৃদ্যতাপূর্ণ হবে! আপনি তার প্রতি কত কত ভালবাসা ও সহানুভূতি প্রকাশ করবেন। এখান থেকেই বুঝে নিন, যে ব্যক্তি নবীজীর জন্য বেশি বেশি দুআ করে অর্থাৎ তাঁর প্রতি সালাত ও সালাম প্রেরণ করে এবং দরূদ শরীফ পাঠ করে- সে তাঁর কেমন মহব্বত লাভ করবে এবং কিয়ামত ও আখেরাতে নবীজীর কতটা মায়া-মমতা, দয়া-করুণা ও নৈকট্য লাভে সে ধন্য হবে! আল্লাহ মেহেরবান আমাদের তাওফীক দান করুন- আমীন! (মাআরিফুল হাদীস, খ. ৫, পৃ. ৩৫৩-৩৫৭ [উর্দূ] থেকে গৃহীত)

সালাত ও সালামের ফযীলত, গুরুত্ব ইত্যাদি সম্পর্কে কিছু হাদীস

হাদীসের কিতাবসমূহে এ সম্পর্কে রয়েছে হাদীসের এক বিশাল ভাণ্ডার। স্বয়ং নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বহু বহু হাদীস শরীফে দরূদের ফযীলত, মাহাত্ম্য ইত্যাদি বর্ণনা করেছেন। যাতে আমরা এই বরকতময় আমলের দ্বারা নিজেদের নেকী ও সৌভাগ্যের পাল্লা ভারী করতে পারি। যুগে-যুগে আলেম ও মুহাদ্দিসগণ এসব হাদীস সংকলন করেছেন। কেউ কেউ তো স্বীয় হাদীস-সংকলনের একটি অধ্যায় বা পরিচ্ছেদে এ সংক্রান্ত হাদীসসমূহ সন্নিবেশিত করেছেন। অনেক ইমাম ও মুহাদ্দিস এর জন্য ছোট বা বড় কলেবরের স্বতন্ত্র কিতাব রচনা করেছেন। সেই দ্বিতীয়-তৃতীয় শতাব্দী (হিজরী) থেকে শুরু করে পরবর্তী সকল যুগে এই ধারা অব্যাহত থেকেছে এবং এখন পর্যন্ত জারি আছে দরূদ শরীফ সংক্রান্ত হাদীস-আছার সংকলনের মোবারক ধারা।

উপরের আলোচনা থেকে কিছুটা অনুমান করা যেতে পারে যে, হাদীসের ভাণ্ডারে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কত বিপুল পরিমাণ হাদীস রয়েছে। বস্তুত এখানে ওইসকল হাদীসের ক্ষুদ্র অংশও বর্ণনা করা সম্ভব নয়। আমরা এখানে শুধু তিনটি বিষয়ে কয়েকটি হাদীস (বা হাদীসের সারাৎসার) উল্লেখ করার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ-

১. দরূদ শরীফের ফযীলত, গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য।

২. দরূদ পড়ার বিশেষ কিছু ক্ষেত্র।

৩. দরূদ শরীফের কিছু মাছূর শব্দ-বাক্য।

এক.

‘সালাত ও সালাম’ তথা দরূদ শরীফের ফযীলত ও গুরুত্ব

১. হযরত আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

যে ব্যক্তি আমার প্রতি এক বার ‘সালাত’ প্রেরণ করবে (দরূদ পড়বে), আল্লাহ তার উপর দশ বার ‘সালাত’ প্রেরণ করবেন (বিশেষ রহমত বর্ষণ করবেন)। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৪০৮; জামে তিরমিযী, হাদীস ৪৮৫; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৯০৬

২. আনাস রা. থেকে বর্ণিত হাদীসে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

যে আমার প্রতি একবার ‘সালাত’ প্রেরণ করে, আল্লাহ তাআলা তার উপর দশটি রহমত অবতীর্ণ করেন। এছাড়াও তার দশটি গুনাহ মাফ করে দেয়া হয় এবং তার মর্তবা দশবার উন্নীত করা হয়। -সুনানে নাসায়ী, হাদীস ১২৯৭; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৯০৪; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদীস ৮৭৯৫

সুবহানাল্লাহ! বান্দা একবার দরূদ পড়লে আল্লাহ কেবল দশটি ‘রহমত’ই অবতীর্ণ করেন না; বরং এরইসাথে গোনাহও মাফ করা হয় এবং মর্তবাও উন্নীত করা হয়! এর পরও কি কেউ দরূদ শরীফ বেশি বেশি না পড়ে থাকতে পারে?

৩. আবু বুরদাহ বিন নিয়ার রা.-এর হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো অধিক সুসংবাদ দান করেছেন। তিনি ইরশাদ করেন-

আমার উম্মতের মধ্যে যে ব্যক্তি দিলের ইখলাসের সাথে আমার প্রতি একটি সালাত প্রেরণ করবে, আল্লাহ এর বিনিময়ে তার উপর দশটি রহমত প্রেরণ করবেন। তার মর্তবা দশবার উন্নীত করবেন। তার জন্য দশটি নেকি লিখে দেবেন এবং তার দশটি গোনাহ ক্ষমা করে দেবেন! -সুনানে কুবরা, নাসায়ী, হাদীস ৯৮১০; মুজামে কাবীর তবারানী, হাদীস ৫১৩; দাআওয়াতে কাবীর, বাইহাকী, হাদীস ১৭৬; মাজমাউয যাওয়ায়েদ, হাদীস ১৭২৪৫ (সহীহ)

আল্লাহু আকবার! মাত্র একবার দরূদ শরীফ পাঠ করলে এত এত পুরস্কার! এত খায়ের ও বরকত! তাহলে কেউ দশবার দরূদ পাঠ করলে আরো কত বেশি লাভ করবে! আর যদি কোনো বান্দা খুব বেশি নয়, ১০০ বার দরূদ পাঠ করে, তাহলে আল্লাহ মেহেরবান তাকে কী পরিমাণ দান করবেন? তার প্রতি বর্ষণ করা হবে এক হাজার ‘সালাত’ (বিশেষ রহমত)! মাফ করে দেওয়া হবে এক হাজার গোনাহ! তার আমলনামায় লেখা হবে এক হাজার নেকি! আর তার মর্তবা উন্নীত করা হবে এক হাজার বার!

দেখুন, কেউ শুধু পড়ল-

اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ.

অথবা পড়ল-

صَلَّى اللهُ عَلٰى سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ وَّسَلَّمَ.

তাহলেই দরূদ পড়া হয়ে গেল। এখন কেউ যদি এমন সংক্ষিপ্ত দরূদ ১০০ বার পড়ে (যাতে সর্বোচ্চ ১৫-২০ মিনিট সময় ব্যয় হবে), তাহলে সে উপরোক্ত সওয়াব, আজর ও মহা পুরস্কার লাভ করে ফেলবে! এর চেয়ে বড় সৌভাগ্য আর কী হতে পারে? আল্লাহ আমাদের তাওফীক দানে ধন্য করুন- আমীন!

তবে এই হাদীস থেকে এ কথাও জানা যায়, দরূদ শরীফের উক্ত ফযীলত পেতে চাইলে তা পড়তে হবে দিলের ইখলাসের সাথে।

৪. আবু তালহা আনসারী রা. বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে তাশরীফ আনলেন। তখন তাঁর চেহারা মুবারক খুশি ও আনন্দে উজ্জ্বল ছিল। (এর কারণ বর্ণনা করতঃ) তিনি (নবীজী) ইরশাদ করলেন-

আমার কাছে জিবরাঈল এসেছেন এবং (আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে) বলেছেন, হে মুহাম্মাদ! আপনার খুশি ও সন্তুষ্টির জন্য এ কি যথেষ্ট নয় যে, আপনার উম্মতের যে কেউ আপনার প্রতি সালাত প্রেরণ করবে, আল্লাহ তার উপর দশবার রহমত বর্ষণ করবেন। আর আপনার উম্মতের যে কেউ আপনার প্রতি সালাম প্রেরণ করবে, আল্লাহ তার উপর দশবার শান্তি বর্ষণ করবেন! -সুনানে নাসায়ী, হাদীস ১২৯৫; সুনানে দারেমী, হাদীস ২৭৭৬; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৯১৫

আল্লাহর দরবারে প্রিয় নবীজীর কী মহামর্যাদা! আল্লাহর কাছে তাঁর খুশি ও সন্তুষ্টির কত মূল্য! তাই তো আল্লাহ তাআলা নবীজীর মর্যাদা প্রকাশের এবং তাঁর সন্তুষ্টির বহু আয়োজন করেছেন। সেসবেরই একটি এই যে, তাঁর প্রতি সালাত ও সালাম প্রেরণের জন্য রেখেছেন মহাপুরস্কার। এবং আপন মর্যাদাবান ফিরিশতা জিবরাঈল আলাইহিস সালাম-এর মাধ্যমে সেই পুরস্কারের কথা নবীজীকে জানিয়েও দিয়েছেন।

বর্তমান হাদীস দ্বারা এও জানা গেল, সালাত ও সালাম এই দুটির প্রত্যেকটির জন্য রয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে ভিন্ন ভিন্ন ও স্বতন্ত্র পুরস্কার। অর্থাৎ সালাত প্রেরণ করলে দশটি রহমত আর সালাম প্রেরণে দশ সালাম লাভ করবে! এজন্যই উলামায়ে কেরাম বলেছেন, উত্তম হল সালাত ও সালাম উভয়টি পাঠ করা। যেমন, শুধু صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ না বলে এমন বলা-

صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.

৫. আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কিয়ামতের দিন সকল মানুষের মধ্যে আমার অধিক নৈকট্য লাভ করবে ওই ব্যক্তি, যে আমার প্রতি সবচেয়ে বেশি সালাত প্রেরণ করবে। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৪৮৪; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদীস ৩২৪৪৭; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৯১১

কিয়ামতের মতো কঠিনতম দিনে নবীজীর সাথে বিশেষ সম্পর্ক ও তাঁর নৈকট্য লাভ- এর চেয়ে বড় নিআমত ও সৌভাগ্য আর কিছুই হতে পারে না নিঃসন্দেহে। এটি লাভ করার সহজ ও বড় মাধ্যম হল ইখলাসের সাথে অধিক পরিমাণে দরূদ শরীফ পাঠ করা।

ওইদিন যে ব্যক্তি নবীজীর অধিক নৈকট্যপ্রাপ্ত হবে, তাকে কি তিনি শাফাআত দ্বারা ধন্য করবেন না? সে কি আখেরী নবীর মহান শাফাআত দ্বারা সৌভাগ্যমণ্ডিত হবে না? অবশ্যই ইনশাআল্লাহ। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। সামনের হাদীসটিতে এই সুসংবাদই প্রদান করা হয়েছে!

৬. রুওয়াইফে ইবনে ছাবিত আনসারী রা. বর্ণিত হাদীসে আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার প্রতি সালাত প্রেরণ করবে এবং সাথে এই দুআও পড়বে-

اَللّهُمَّ أَنْزِلْهُ الْمَقْعَدَ الْمُقَرَّبَ عِنْدَكَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ.

(অর্থ : হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কিয়ামতের দিন আপনার নিকটবর্তী মাকামে অধিষ্ঠিত করুন)- তার জন্য আমার শাফাআত অবধারিত হয়ে যাবে। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৬৯৯১; মুজামে কাবীর, তবারানী, হাদীস ৪৪৮০; আততারগীব ওয়াততারহীব, হাদীস ২৬০৪; মাজমাউয যাওয়ায়েদ, হাদীস ১৭২৫৯ (সালিহ লিলআমাল)

এমনিভাবে আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত এক হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি এই দরূদ পড়বে-

اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ، وَّ عَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ وَآلِ إِبْرَاهِيْمَ، وَبَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ، وَّعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ وَآلِ إِبْرَاهِيْمَ، وَتَرَحَّمْ عَلٰى مُحَمَّدٍ، وَّعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا تَرَحَّمْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ وَآلِ إِبْرَاهِيْمَ.

আমি কিয়ামতের দিন তার পক্ষে সাক্ষ্য প্রদান করব এবং তার জন্য শাফাআত করব। -আলআদাবুল মুফরাদ, বুখারী, হাদীস ৬৪১; আলকাউলুল বাদী, সাখাবী, পৃ. ১১২ (সহীহ)

আবুদ দারদা রা. থেকে বর্ণিত এক হাদীসে নবীজীর এই ইরশাদ বর্ণিত হয়েছে- ‘যে ব্যক্তি সকালে আমার প্রতি দশবার ‘সালাত’ প্রেরণ করবে এবং সন্ধ্যায়ও দশবার, কিয়ামতের দিন তার ভাগ্যে আমার শাফাআত জুটবেই! -আস্সালাতুন নববিয়্যাহ, ইবনু আবি আসিম, হাদীস ৬১; আলকাউলুল বাদী, পৃ. ২৬১ (সালিহ লিলআমাল)

এছাড়া আরো একাধিক হাদীসে দরূদ শরীফ পড়ার বিনিময়ে কিয়ামতে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শাফাআত লাভের সুসংবাদ প্রদান করা হয়েছে।

দুনিয়া-আখেরাতের সবচেয়ে কঠিন ও ভয়াবহ দিনে নবীজীর শাফাআত লাভের কথা জানার পরও কেউ কি অধিক পরিমাণে দরূদ শরীফ পড়ায় উৎসাহিত না হয়ে পারে? এ ব্যাপারে তার মধ্যে অবহেলা থাকতে পারে? কিছুতেই না ইনশাআল্লাহ!

৭. উবাই বিন কা‘ব রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে আরজ করলাম- ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি অত্যধিক পরিমাণে আপনার প্রতি সালাত প্রেরণ করে থাকি। তো, আমি আমার দুআর কতটুকু সময় আপনার (প্রতি দরূদের) জন্য নির্ধারণ করব? (অর্থাৎ আমি নিজের জন্য দুআতে যে সময় ব্যয় করি, তার কতটুকু দরূদ শরীফের জন্য নির্দিষ্ট করে নেব?)

নবীজী কোনো সময় বেঁধে না দিয়ে বললেন, তুমিই যতটুকু চাও, তার জন্য নির্ধারণ করে নাও!

উবাই রা. বলেন, আমি বললাম, দুআর এক চতুর্থাংশ সময় নির্দিষ্ট করি?

নবীজী ইরশাদ করলেন, যেমন তুমি চাও! তবে যদি (দরূদের জন্য) আরো বেশি সময় ব্যয় কর, তবে তোমারই জন্য উত্তম হবে।

আমি বললাম, তাহলে দুআর অর্ধেক সময় (তার জন্য) নির্ধারণ করি?

নবীজী বললেন, যেমন তুমি চাও। তবে আরো অধিক নির্ধারণ করলে তোমারই জন্য ভালো হবে।

আমি বললাম, তবে দুআর দুই তৃতীয়াংশই নির্দিষ্ট করে নিই?

নবীজী বললেন, যেমন তুমি চাও। আর যদি আরো অধিক সময় তার জন্য ব্যয় কর, তবে তোমারই অধিকতর কল্যাণ হবে!

আমি আরজ করলাম, তাহলে তো আমি আমার দুআর পুরো সময় আপনার প্রতি সালাত প্রেরণের জন্য নির্ধারিত করে নিচ্ছি! তখন নবীজী বললেন, এমন করতে পারলে গায়েব থেকে তোমার সকল চিন্তা-পেরেশানী দূর করে দেওয়া হবে। অধিকন্তু তোমার গোনাহগুলোও ক্ষমা করে দেওয়া হবে! -জামে তিরমিযী, হাদীস ২৪৫৭; মুসনাদে আবদ বিন হুমাইদ, হাদীস ১৭০; মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস ৩৬২০ (সহীহ)

প্রায় একই ধরনের হাদীস আরো সাহাবায়ে কেরাম থেকেও বর্ণিত আছে। যেমন আবু হুরাইরা রা., হাব্বান বিন মুনকিয্ রা., আইয়ূব বিন বাশীর রা. প্রমুখ। (দ্র. আলকাউলুল বাদী, পৃ. ২৫৬-২৫৮)

আল্লাহর যে বান্দা দুআর পুরোটা সময় জুড়ে নিজের জন্য ও নিজের পরিবারবর্গের জন্য দুআ না করে শুধু প্রিয় নবীজীর জন্য দুআ করে অর্থাৎ দরূদ শরীফ পাঠ করে- সে নবীজীকে কতটা যে ভালবাসে, তার হৃদয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য কত যে মহব্বত, তা তো বলাই বাহুল্য! অতএব আল্লাহর মাহবুবে আযম, তাঁর মহামর্যাদাবান নবীর প্রতি এমন মহব্বত-ভালবাসা এবং অত্যধিক পরিমাণে দরূদ পাঠের বদৌলতেই ওই ব্যক্তির চিন্তা-পেরেশানী দূর করে দেওয়া হবে এবং গোনাহসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। সুতরাং কী বরকতময় আমল! আর কত উত্তম প্রতিদান!

৮. আবু হুরাইরা রা. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, তিনি ইরশাদ করেছেন-

তোমরা নিজেদের ঘরগুলোকে কবরসদৃশ (অর্থাৎ যিকির ও ইবাদতশূন্য) করো না। আর আমার কবরকে উৎসব ও মেলার স্থান বানিয়ো না। তবে হাঁ! তোমরা (যেখানেই থাক) আমার প্রতি সালাত প্রেরণ করো। কেননা তোমাদের সালাত আমার নিকট পৌঁছানো হয়! -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ২০৪২ (সহীহ)

যখন আল্লাহর কোনো বান্দার ‘সালাত ও সালাম’ নবীজীর দরবারে পৌঁছানো হয় এবং তাঁর কাছে পেশ করা হয়, তখন তিনি তার প্রতি কত খুশীই না হন! সে প্রিয় নবীর কতই না সন্তুষ্টি অর্জন করে নেয়! তো দরূদ শরীফ পড়ার কারণে একদিকে আল্লাহর খাস রহমত ও মেহেরবানী, অপরদিকে আল্লাহর হাবীবের খুশি ও সন্তুষ্টি- উভয়টি হাসিল হয়। আহ! এর চেয়ে আনন্দ ও সৌভাগ্যের বিষয় আর কী হতে পারে যে, পেয়ারা নবীজী দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন শত শত বছর পূর্বে, কিন্তু সদা-সর্বদা তাঁকে খুশি করার ও তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের বরকতময় ওসীলা (সালাত ও সালাম) আমাদের জন্য অবশিষ্ট রাখা হয়েছে। অতএব আছে কি কেউ এ থেকে উপকৃত হওয়ার; অধিক থেকে অধিক পরিমাণে?!

একটি হাদীসে এ কথাও এসেছে যে, ফিরিশতাদের এক দল আছেন, যাঁদের কর্তব্যই হল উম্মতের সালাত ও সালাম নবীজীর দরবারে পৌঁছানো। তাঁরা এই যমীনের বুকে ঘুরে বেড়ান এবং যে যেখানে দরূদ শরীফ পড়ে, তার দরূদ নবীজীর খেদমতে পৌঁছে দেন। (দ্র. সুনানে নাসায়ী, হাদীস ১২৮২) (সহীহ)

আল্লাহ তাআলার কাছে দরূদ শরীফের কী মর্যাদা ও গুরুত্ব! এজন্যই তো উম্মতের এই আমল নবীজীর দরবারে পৌঁছানোর এমন ইহতেমাম ও মহা ব্যবস্থাপনা করা হয়।

৯. আলী রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

(প্রকৃত ও বড়) বখিল হচ্ছে ওই ব্যক্তি, যার সামনে আমার আলোচনা হল, তা সত্ত্বেও সে আমার প্রতি সালাত প্রেরণ করল না। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৫৪৬; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৯০৯

পূর্বে দরূদ শরীফের যে অস্বাভাবিক ফযীলত-মর্যাদা ও গুরুত্ব-মাহাত্ম্য উল্লেখ করা হয়েছে, তা থেকেই স্পষ্ট যে, এ ব্যাপারে অবহেলার শিকার হওয়া বড় মাহরূমী এবং নিজেকে বহু কল্যাণ থেকে বঞ্চিত করা। বিশেষত এর চেয়ে বড় অবহেলা আর হতে পারে না যে, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আলোচনা শুনেও তাঁর প্রতি দরূদ পড়ল না। অথচ তিনি উম্মতের জন্য যা যা করেছেন এবং উম্মত তাঁর বদৌলতে যা-কিছু লাভ করেছে, সেসবের বিনিময়ে তাঁর জন্য প্রাণ উৎসর্গ করে দিলেও তাঁর হক আদায় হবে না। এজন্যই উক্ত ব্যক্তিকে বড় বখিল আখ্যায়িত করা হয়েছে।

শুধু এতটুকুই নয়। এমন ব্যক্তির জন্য কঠিন ওয়ীদ (সতর্কবাণী) বর্ণিত হয়েছে। নি¤েœর হাদীসটি গভীর মনোযোগ সহকারে পড়–ন-

১০. কাআব বিন উজ্রা রা. ও অন্যান্য সাহাবী থেকে বর্ণিত-

একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বরে আরোহণ করলেন। তিনি যখন মিম্বরের প্রথম সিঁড়িতে উঠলেন তখন বললেন ‘আমীন’। দ্বিতীয় সিঁড়িতে উঠেও ‘আমীন’ বললেন এবং তৃতীয় সিঁড়িতে উঠেও বললেন, ‘আমীন’! আমরা কারণ জিজ্ঞাসা করলে নবীজী উত্তরে ইরশাদ করলেন-

মিম্বরে আরোহণের সময় আমার কাছে জিবরাঈল আলাইহিস সালাম এলেন (এবং তিনটি বদদুআ করলেন, আর আমি তাঁর প্রত্যেক বদদুআর উপর ‘আমীন’ বললাম) :

আমি যখন প্রথম সিঁড়িতে পা রাখলাম, তিনি বললেন- ওই ব্যক্তি কল্যাণপ্রাপ্ত না হোক, যে রমযান মাস পেল। তারপরও তার গোনাহ ক্ষমা করা হল না। আমি বললাম, ‘আমীন’!

যখন দ্বিতীয় সিঁড়িতে পা রাখলাম, তিনি বললেন- ওই ব্যক্তি কল্যাণপ্রাপ্ত না হোক, যার নিকট আপনার নাম উল্লেখ করা হল। তা সত্ত্বেও সে আপনার প্রতি দরূদ পড়ল না। আমি বললাম, ‘আমীন’!

তৃতীয় সিঁড়িতে উঠলে তিনি বললেন- ওই ব্যক্তিরও কল্যাণ না হোক, যে পিতা-মাতার উভয়কে বা তাদের একজনকে বার্ধক্যে উপনীত পেল। কিন্তু তারা তার জন্য জান্নাতে প্রবেশের কারণ হল না (অর্থাৎ সে তাদের খেদমত করে জান্নাত কামাই করতে পারল না)। আমি বললাম, ‘আমীন’! -মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস ৭২৫৬; আলআদাবুল মুফরাদ, বুখারী, হাদীস ৬৪৪; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৪০৯; আলকাওলুল বাদী, পৃ. ২৯২)

আমরা শুরুতেই উল্লেখ করেছি, সালাত ও সালামের (দরূদ শরীফের) ফযীলত, গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য সম্পর্কে যে বিপুল পরিমাণ হাদীস রয়েছে, তার কিয়দংশও এখানে উল্লেখ করা সম্ভব নয়। উপরে যে অল্প কয়টি হাদীস উল্লেখিত হল, তার সারকথা এই যে, দরূদ শরীফের বরকতে-

বান্দার উপর আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমত ও শান্তি বর্ষিত হয়।
আমলনামায় নেকী লেখা হয়।
মর্যাদা বুলন্দ করা হয়।
গোনাহ মাফ করা হয়।
কিয়ামতের কঠিন দিনে নবীজীর নৈকট্য লাভ হবে।
তাঁর শাফাআত লাভ হবে।
চিন্তা-পেরেশানী দূর করে দেওয়া হয়।
অতএব দরূদ শরীফের ব্যাপারে অবহেলার শিকার হওয়ার অর্থ- নিজেকে বিপুল আজর ও সওয়াব থেকে মাহরূম করা ছাড়া আর কিছু নয়। বিশেষত পেয়ারা নবীজীর নাম শুনেও তাঁর প্রতি দরূদ না পড়া বড়ই দুর্ভাগ্যের বিষয়। এ এমনই মন্দকর্ম, যার উপর হযরত জিবরাঈল আ. বদ দুআ পর্যন্ত করেছেন (আল্লাহর পানাহ)!

দরূদ শরীফের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তাৎপর্য

আমার পরম শ্রদ্ধেয় উস্তায হযরত মাওলানা আবদুল মালেক ছাহেব দা. বা. একটি প্রবন্ধে অত্যন্ত গভীরভাবে দরূদ শরীফের মাহাত্ম্যের কথা তুলে ধরেছেন। বর্তমান আলোচনার সমাপ্তিতে হযরাতুল উস্তাযের দুটি কথা উল্লেখ করা মুনাসিব মনে হচ্ছে।

হযরাতুল উস্তায দা. বা. লিখেছেন-

আল্লাহ ও নবীর নাম একত্রে উচ্চারণের একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হল সালাত ও সালাম (দরূদ শরীফ)। প্রত্যেক সালাত ও সালামে আল্লাহর নবীর জন্য দুআ করা হচ্ছে। এ কারণে সালাত ও সালাম যেমন রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হক আদায়ের একটি সেরা আমল, তেমনি সেটি দুআ ও প্রার্থনার সর্বোত্তম পদ্ধতি হিসেবে অনেক বড় ইবাদত।

সালাত ও সালাম বা দরূদ শরীফের সৌন্দর্য ও তাৎপর্যের মধ্যে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, এতে একইসঙ্গে আল্লাহর ইবাদত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হক আদায়, উভয়ের প্রতি ভালবাসায় দৃঢ়তা, ইত্তেবায়ে সুন্নতের তাওফীক, আল্লাহ ও রাসূলের শোকরগোযারি, উভয়ের সন্তুষ্টি অর্জন, হাশরের ময়দানে নবীয়ে করীমের সুপারিশ লাভ ও নিজের মর্তবা বৃদ্ধি- সবকিছুই নিহিত রয়েছে।

দুঃখের বিষয়, সালাত ও সালামের এতসব ফায়েদা এবং শরীয়তে এর প্রতি এই পরিমাণ তাকিদ থাকা সত্ত্বেও আমরা এক্ষেত্রে চরম শিথিলতা করছি। একে আমরা কেবল একটি রসমি আমল ও প্রথাসর্বস্ব ব্যাপার বানিয়ে ফেলেছি এবং আনুষ্ঠানিকতা ও প্রাতিষ্ঠানিকতায় পর্যবসিত করেছি। অথচ এটি একটি স্বতন্ত্র ইবাদত, দিন-রাত ও সকাল-সন্ধ্যায় পালনীয় সকল যিকির-আযকারের মধ্যে যা হওয়া উচিত শীর্ষস্থানে। (দ্র. মাসিক আলকাউসার, ফেব্রুয়ারি ২০১১ ঈ.)
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

দুই.

দরূদ শরীফ পড়ার বিশেষ কিছু ক্ষেত্র

দরূদ শরীফ অতীব বরকতময়, তবে খুবই সহজ ও সাধারণ একটি আমল, যা সর্বদা ও সর্বাবস্থায় করা যায়। এর জন্য নির্দিষ্ট সময় বা স্থানের কোনো শর্ত নেই। মসজিদে, ঘরে, কর্মস্থলে, চলাফেরায় এমনকি যানবাহনে; সকাল-বিকাল, দিন-রাত, প্রভাত-সন্ধ্যা- সবসময় ও সবখানে আমলটি করা যায়। সালাত ও সালাম যত বেশি পড়া হবে, ততই বরকত ও কল্যাণ লাভ হবে। আমলনামায় যোগ হবে প্রভূত আজর ও পুরস্কার।

তবে বিভিন্ন হাদীসে বিশেষ কিছু ক্ষেত্রের উল্লেখ রয়েছে এবং তাতে দরূদ শরীফ পড়ার বিশেষ ফযীলত বর্ণিত হয়েছে, তা পড়তে উদ্ধুদ্ধ করা হয়েছে। তাই ব্যাপকভাবে এবং বেশি পরিমাণে দরূদ শরীফ তো পড়বেই, সেইসাথে এসব ক্ষেত্রে দরূদ পড়ার প্রতি অধিক যত্নশীল হওয়াই একজন মুমিনের কর্তব্য।

নিম্নে এ ধরনের কিছু ক্ষেত্র উল্লেখ করা হচ্ছে। জুমহুর উলামায়ে কেরামের মতে ফাযায়েলের ক্ষেত্রে সাধারণ স্তরের যয়ীফ হাদীসও গ্রহণযোগ্য। এজন্যই আমরা এখানে এমন কিছু ক্ষেত্রেরও বর্ণনা এনেছি, যার সাথে সংশ্লিষ্ট হাদীসগুলো যয়ীফ, তবে অনেক বেশি দুর্বল নয়।

১. দুআর শুরুতে (আল্লাহর হামদের পরে) দরূদ শরীফ পড়া। এক হাদীসে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ যখন দুআ করবে, তখন প্রথমে আল্লাহর হাম্দ ও ছানা তথা আল্লাহর প্রশংসা ও গুণকীর্তন করবে, অতঃপর আমার প্রতি দরূদ পড়বে। তারপর ইচ্ছানুযায়ী দুআ করবে। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৪৭৮; সুনানে নাসায়ী, হাদীস ১২৮৪ (সহীহ)

ইবনে মাসউদ রা. বলেন, এভাবে দুআ করলে তা কবুল হওয়ার অধিক আশা করা যায়। -মুসান্নাফে আবদুর রায্যাক, হাদীস ১৯৬৪২; মুজামে কাবীর, তবারানী, হাদীস ৮৭৮০ (সহীহ)

২. জুমার দিন অধিক পরিমাণে দরূদ শরীফ পড়া। একাধিক হাদীসে নবীজীর ইরশাদ বর্ণিত হয়েছে যে, জুমাবার হচ্ছে সপ্তাহের শ্রেষ্ঠতম দিন। সুতরাং এই দিনে অধিক পরিমাণে দরূদ পড়ো। (দ্র. মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৬১৬২; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১০৪৭; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৯১০)

৩. আযানের পর প্রথমে দরূদ শরীফ পড়বে, অতঃপর আযানের প্রসিদ্ধ দুআটি পড়বে। (দ্র. সহীহ মুসলিম, হাদীস ৩৮৪; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৫২৩)

৪. সকালে দশবার ও সন্ধ্যায় দশবার দরূদ শরীফ পড়া। একটি হাদীসে এই আমল করলে নবীজীর শাফাআত লাভের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে। [দ্র. আস্সালাতুন নববিয়্যাহ, হাদীস ৬১; জিলাউল আফহাম, পৃ. ১২৩, ৪৯৫ (সহীহ)]

৫. মসজিদে প্রবেশের সময় এবং মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় দরূদ পড়া। [দ্র. মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২৬৪১৬; জামে তিরমিযী, হাদীস ৩১৪; জিলাউল আফহাম, পৃ. ৪৪৯ (সহীহ)]

৬. যে ব্যক্তি চিন্তা-পেরেশানীর সময় অধিক পরিমাণে দরূদ শরীফ পড়বে, এর বরকতে আল্লাহ তাআলা সকল পেরেশানী দূর করে দেবেন। [দ্র. জামে তিরমিযী, হাদীস ২৪৫৭; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ৩৬২০) (সহীহ)]

৭. কোথাও নবীজীর নাম লিখলে তাঁর নামের সাথে দরূদ শরীফ লিখবে ও পড়বে। কোনো কোনো হাদীসে এর বড় ফযীলত বর্ণিত হয়েছে। [দ্র. আখবারে আসফাহান, ২/৭৫; জিলাউল আফহাম, পৃ. ৪৮৫; আলকাওলুল বাদী‘, পৃ. ৩৪২, ৪৫৯-৪৬২ (সালিহ লিল আমাল)]

তাছাড়া নবীজীর নামের উল্লেখ হলে দরূদ পড়ার যে ফযীলত তা তো বলাই বাহুল্য। আর তাঁর নাম লেখাও নিঃসন্দেহে এর অন্তর্ভুক্ত। এ কারণেই আহলে ইলমগণ এক্ষেত্রে দরূদ লেখার ও পড়ার ব্যাপারে অত্যন্ত গুরুত্বারোপ করেছেন।

৮. ওযুর পর দরূদ শরীফ পড়ার কথাও কোনো কোনো বর্ণনায় এসেছে। অর্থাৎ প্রথমে প্রসিদ্ধ দুআটি পড়বে, তারপর দরূদ পড়বে। [দ্র. জিলাউল আফহাম, পৃ. ৫০৩; আলকাউলুল বাদী‘, পৃ. ৩৪২ (সালিহ লিলআমাল)]

৯. কোনো কিছুর কথা ভুলে গেলে বা কোনো বিষয় বিস্মৃত হলে দরূদ শরীফ পড়তে থাকবে। এর বরকতে তা স্মরণ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। [দ্র. জিলাউল আফহাম, পৃ. ৫০৬; আলকাউলুল বাদী‘, পৃ. ৪২৭ (সালিহ লিলআমাল)]

১০. কোনো গোনাহ হয়ে গেলে তাওবা-ইস্তেগফার করবে। এর সাথে সাথে দরূদ শরীফও পড়বে। কারণ, হাদীস দ্বারা প্রমাণিত, দরূদ শরীফের বদৌলতে গোনাহও মাফ করা হয়। [দ্র. সুনানে নাসায়ী, হাদীস ১২৯৭; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৯০৪; আলকাওলুল বাদী‘, পৃ. ৪২৯)]

তিন.

সালাত ও সালামের কিছু মাছূর শব্দ-বাক্য

প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত ও সালামের (দরূদ শরীফের) ফযীলতই শুধু বর্ণনা করেননি, বরং তিনি (সাহাবীগণের প্রশ্নের উত্তরে) দরূদ শরীফ কীভাবে পড়তে হবে তাও বাতলে দিয়েছেন এবং সালাত-সালামের বিভিন্ন শব্দ-বাক্য উম্মতকে শিখিয়েছেন। তাছাড়া বিভিন্ন হাদীসে কারো পক্ষ থেকে কোনো প্রশ্ন ছাড়াও (দরূদ শরীফের) অনেক শব্দ-বাক্য বর্ণিত হয়েছে।

মোটকথা, হাদীস শরীফে একদিকে দরূদ শরীফের অসাধারণ ফযীলত ও গুরুত্ব বর্ণিত হয়েছে; অপরদিকে বহু হাদীসে দরূদের অনেক শব্দ-বাক্যও উল্লেখিত হয়েছে। উম্মতের আলেম ও মুহাদ্দিসগণ সংশ্লিষ্ট কিতাবসমূহে উভয় প্রকারের হাদীস সংকলন করেছেন। এভাবে আমরা কুরআন-হাদীসের মাধ্যমে দরূদ শরীফের ফযীলত ও মর্যাদা, গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য সম্পর্কে যেমন জেনেছি, তেমনি খোদ হাদীস-ভাণ্ডারেই আমরা সালাত-সালামের অনেক অনেক বরকতময় শব্দ-বাক্য লাভে ধন্য হয়েছি। নিশ্চয় এ আমাদের উপর আল্লাহর বড় অনুগ্রহ।

এখানে বিভিন্ন হাদীস থেকে সালাত-সালামের কিছু শব্দ-বাক্য উল্লেখ করা হচ্ছে; যাতে পূর্বোক্ত হাদীসসমূহে দরূদ শরীফের যেসব মহান ফযীলত বর্ণিত হয়েছে, তা আমরা দরূদের মাছূর শব্দ-বাক্য দ্বারা অর্জন করতে পারি।

উল্লেখ্য, অন্যান্য দুআর মতোই দরূদের মাছূর শব্দমালার বিশেষ মর্যাদা ও গুরুত্ব রয়েছে। এসব শব্দ-বাক্যে যে ‘নূর ও বরকত’ আশা করা যায়, তা অন্য শব্দাবলিতে আশা করা যায় না। তাই হাদীসসমূহে উল্লেখিত সালাত ও সালামের শব্দ-বাক্যের প্রতি যত্নশীল হওয়া জরুরি।

হযরাতুল উস্তায দামাত বারাকাতুহুম ‘তাসাওউফ : তত্ত্ব ও বিশ্লেষণ’ কিতাবে লেখেন- ‘যিকির ও দুআর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর সালাত ও সালাম পাঠানো; যাকে আমরা ‘দরূদ পাঠ’ করা বলে থাকি। এ দরূদের গুরুত্ব ও ফযীলত কারো অজানা নয়। কুরআন-হাদীসের আলোকে দরূদের উপর যেসব গ্রন্থাবলি রচিত হয়েছে, সেগুলোর শুধু নাম-তালিকার জন্যেও প্রয়োজন স্বতন্ত্র গ্রন্থের। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দয়া-অনুগ্রহ যে, তিনি সাহাবীদের আবেদন-নিবেদনে অথবা আবেদন-নিবেদন ছাড়াই আমাদেরকে দরূদ শরীফের শব্দ-বাক্য শিখিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু আফসোস! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ভাষা এবং তাঁর শেখানো শব্দ ছেড়ে আমরা দরূদে তাজ, দরূদে মাহী, দরূদে তুনাজ্জিনা, দরূদে ফতূহাত, দরূদে শিফা, দরূদে খাইর, দরূদে তাযিয়াত, আরো নাম না জানা কত দরূদই না বানিয়েছি (!) এসব দরূদের কোনো কোনোটির কিছু শব্দ এমন, যা শরীয়তের দৃষ্টিতে পরিহারযোগ্য। আবার কোনোটি বর্জন করা ওয়াজিব। অথচ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শেখানো দরূদ শরীফসমূহ বিভিন্ন হাদীসের কিতাবে সংরক্ষিত আছে। তাছাড়া ভিন্ন কিতাব আকারেও তা বিদ্যমান আছে ।’ -তাসাওউফ : তত্ত্ব ও বিশ্লেষণ, পৃ. ১১৩-১১৪

উল্লেখ্য, এক্ষেত্রেও আমরা শুধু সহীহ ও হাসান হাদীসের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকিনি; বরং সনদের দিক থেকে সাধারণ যয়ীফ, তবে শাস্ত্রীয় বিচারে আমলযোগ্য- এমন কিছু হাদীসের শব্দাবলিও উল্লেখ করেছি। এই শব্দমালা ওইসব শব্দ-বাক্য থেকে অধিক মর্যাদার দাবিদার, যা আমলযোগ্য কোনো হাদীসেই বর্ণিত হয়নি। আর এখানে সাহাবা-তাবেয়ীন থেকে বর্ণিত কয়েকটি শব্দ-বাক্যও উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এর পরিমাণ খুব কম। সংখ্যাগরিষ্ঠ শব্দমালা মারফূ হাদীস থেকেই নেওয়া হয়েছে। সাহাবা-তাবেয়ীন থেকে বর্ণিত দরূদের শব্দগুলো আলাদাভাবে চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ্ই তাওফীকদাতা।

দরূদ শরীফের মাছূর শব্দ-বাক্য

১. اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ، وَعَلٰى آلِ إِبْرَاهِيْمَ، إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ، اَللّٰهُمَّ بَارِكْ

عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلٰى آلِ إِبْرَاهِيْمَ، إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ.

ইয়া আল্লাহ! মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর পরিবারবর্গের প্রতি রহমত নাযিল করুন যেমন আপনি রহমত নাযিল করেছেন ইবরাহীম আলাইহিস সালাম ও তাঁর পরিবারবর্গের প্রতি। নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসিত ও মর্যাদাবান।

ইয়া আল্লাহ! হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর পরিবারবর্গের প্রতি বরকত নাযিল করুন, যেমন আপনি বরকত নাযিল করেছেন ইবরাহীম আলাইহিস সালাম ও তাঁর পরিবারবর্গের প্রতি। নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসিত ও মর্যাদাবান। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৩৩৭০; সহীহ মুসলিম, হাদীস ৪০৬; জিলাউল আফহাম, পৃ. ১২ (২); আলকাউলুল বাদী‘, পৃ. ১০৩

২. اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ،وَّأَنْزِلْهُ الْمَقْعَدَ الْمُقَرَّبَ عِنْدَكَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ

ইয়া আল্লাহ! মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি রহমত বর্ষণ করুন এবং কিয়ামত দিবসে তাঁকে সমাসীন করুন আপনার নৈকট্যপ্রাপ্ত আসনে। -আলমুজামুল কাবীর, তবারানী, হাদীস ৪৪৮০; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৬৯৯১; ফাদলুস সালাত, হাদীস ৫৫; মুসনাদে বায্যার, হাদীস ২৩১৫; জিলাউল আফ্হাম, পৃ. ১০০ (১০৭); মাজমাউয যাওয়ায়েদ, হাদীস ১৭২৫৯ (সহীহ)

৩. اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ عَبْدِكَ وَرَسُولِكَ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ، وَبَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ، وَّآلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى

إِبْرَاهِيْمَ وَآلِ إِبْرَاهِيْمَ.

ইয়া আল্লাহ! রহমত বর্ষণ করুন আপনার বান্দা ও রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর, যেমন রহমত বর্ষণ করেছেন ইবরাহীম আ.-এর উপর। এবং বরকত নাযিল করুন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর ও তাঁর পরিবাবর্গের উপর, যেমনিভাবে বরকত নাযিল করেছেন ইবরাহীম আ. ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৩৫৮; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ৯০৩; জিলাউল আফহাম, পৃ. ১৭

৪. اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ عَبْدِكَ وَرَسُوْلِكَ، وَصَلِّ عَلٰى الْمُؤْمِنِيْنَ وَالْمُؤْمِنَاتِ،وَالْمُسْلِمِيْنَ وَالْمُسْلِمَاتِ

ইয়া আল্লাহ! রহমত বর্ষণ করুন আপনার বান্দা ও রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি এবং সকল মুমিন ও মুসলিম নর-নারীর প্রতি। -সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৯০৩; আলআদাবুল মুফরাদ, হাদীস ৬৪০; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ৭৩৫২

৫. اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى آلِ إِبْرَاهِيْمَ، وَبَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى

آلِ إِبْرَاهِيْمَ فِي الْعَالَمِيْنَ، إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ.

ইয়া আল্লাহ! আপনি রহমত বর্ষণ করুন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর এবং তাঁর বংশধরদের উপর, যেমন রহমত বর্ষণ করেছেন ইবরাহীম আ.-এর বংশধরদের উপর। আর বরকত নাযিল করুন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর বংশধরদের উপর, যেমনিভাবে বরকত নাযিল করেছেন সমগ্র জগতে ইবরাহীম আ.-এর বংশধরদের উপর। নিঃসন্দেহে আপনিই প্রশংসিত, মহিমান্বিত। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৪০৫; জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৪৯৯; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ১৯৫৯; জিলাউল আফহাম, পৃ. ৪ (১)

৬.اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدِنِ النَّبِيِّ، وَأَزْوَاجِهٖ أُمَّهَاتِ الْمُؤْمِنِيْنَ، وَذُرِّيَّتِهٖٖ وَأَهْلِ بَيْتِهٖ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ

مَّجِيْدٌ.

ইয়া আল্লাহ! নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি রহমত বর্ষণ করুন এবং তাঁর স্ত্রীগণ-উম্মাহাতুল মুমিনীনের উপর, তাঁর সন্তান-সন্ততি ও নিকটাত্মীয়দের প্রতিও; যেমন রহমত বর্ষণ করেছেন ইবরাহীম আ.-এর পরিজনদের প্রতি। আপনি নিশ্চয়ই অতি প্রশংসনীয়, মহা মহীয়ান। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৯৮২; সুনানে কুবরা, বাইহাকী ২/১৫১; আলকাউলুল বাদী‘, পৃ. ১১৭ (সালিহ লিলআমাল)

৭.اَللّٰهُمَّ رَبَّ هٰذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ، وَالصَّلَاةِ النَّافِعَةِ، صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ، وَارْضَ عَنْهُ رِضًا لَا سَخَطَ بَعْدَهُ

হে আল্লাহ! হে এই পরিপূর্ণ আহ্বান ও কল্যাণকর সালাতের পরওয়ারদেগার। আপনি রহমত বর্ষণ করুন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি এবং সন্তুষ্ট হয়ে যান তাঁর প্রতি এমনভাবে, যার পর হতে পারে না কোনো অসন্তোষ। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৪৬১৯; আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লাইলাহ, ইবনুস সুন্নী, হাদীস ৯৬; আলমুজামুল আওসাত, তবারানী, হাদীস ১৯৬; জিলাউল আফহাম, পৃ. ৪৪৪ (৩৯১) (সালিহ লিলআমাল)

৮. اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ، وَّعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ وَآلِ إِبْرَاهِيْمَ، وَبَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ، وَّعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ،

كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ وَآلِ إِبْرَاهِيْمَ، وَتَرَحَّمْ عَلٰى مُحَمَّدٍ، وَّعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا تَرَحَّمْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ وَآلِ إِبْرَاهِيْمَ.

ইয়া আল্লাহ! রহমত বর্ষণ করুন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর, যেমনটি বর্ষণ করেছেন ইবরাহীম আলাইহিস সালাম ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর। বরকত নাযিল করুন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর, যেমনটি নাযিল করেছেন ইবরাহীম আলাইহিস সালাম ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর। অনুগ্রহ নাযিল করুন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর, যেমনটি করেছেন ইবরাহীম আলাইহিস সালাম ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর। -আলআদাবুল মুফরাদ, হাদীস ৬৪১; আলকাউলুল বাদী‘, পৃ. ১১২ (সহীহ)

৯. اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّأَزْوَاجِهٖ وَذُرِّيَّتِهٖ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى آلِ إِبْرَاهِيْمَ، وَبَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّأَزْوَاجِهٖ وَذُرِّيَّتِهٖ، كَمَا بَارَكْتَ

عَلٰى آلِ إِبْرَاهِيْمَ، إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ.

ইয়া আল্লাহ! মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের প্রতি রহমত বর্ষণ করুন, যেমনটি করেছেন ইবরাহীম আ.-এর পরিবারবর্গের প্রতি। আর বরকত নাযিল করুন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের প্রতি, যেমনটি নাযিল করেছেন ইবরাহীম আ.-এর পরিবারবর্গের প্রতি। আপনি প্রশংসিত, অতি মহীয়ান। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৩৬০; সহীহ মুসলিম, হাদীস ৪০৭; জিলাউল আফহাম, পৃ. ১ ৫ (৪)

১০.اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدِنِ النَّبِيِّ الْأُمِّيِّ وَعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلٰى آلِ إِبْرَاهِيْمَ، وَبَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدِنِ

النَّبِيِّ الْأُمِّيِّ وَعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلٰى آلِ إِبْرَاهِيْمَ، إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ.

ইয়া আল্লাহ! উম্মী নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের প্রতি রহমত বর্ষণ করুন, যেমনটি করেছেন ইবরাহীম আলাইহিস সালামের পরিবারবর্গের প্রতি। আর বরকত নাযিল করুন উম্মী নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের প্রতি, যেমনটি নাযিল করেছেন ইবরাহীম আ.-এর পরিবারবর্গের প্রতি। আপনি প্রশংসিত, অতি মহীয়ান। -সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস ৭১১; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৯৮১; জিলাউল আফহাম, পৃ. ৭ (১)

১১. اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ وَآلِ إِبْرَاهِيْمَ، إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ، وَبَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ

وَّعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ وَآلِ إِبْرَاهِيْمَ، إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ.

ইয়া আল্লাহ! মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর পরিবারবর্গের প্রতি রহমত বর্ষণ করুন, যেমনটি করেছেন ইবরাহীম আলাইহিস সালাম ও তাঁর পরিবারবর্গের প্রতি। নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসনীয়, মহীয়ান। আর মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর পরিবারবর্গের প্রতি বরকত নাযিল করুন, যেমনটি করেছেন ইবরাহীম আলাইহিস সালাম ও তাঁর পরিবারবর্গের প্রতি। নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসিত, মহিমান্বিত। -সুনানে নাসায়ী, ৩/৪৮; সুনানে কুবরা (নাসায়ী), হাদীস ১২১৪; মুসনাদে বায্যার, হাদীস ৯৪২; জিলাউল আফ্হাম, পৃ. ১৯ (৯) (সহীহ)

১২.اَللّٰهُمَّ اجْعَلْ صَلَوَاتِكَ وَرَحْمَتَكَ عَلٰى مُحَمَّدٍ، وَّأَزْوَاجِهٖ وَذُرِّيَّتِهٖ، وَأُمَّهَاتِ الْمُؤْمِنِيْنَ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى آلِ إِبْرَاهِيْمَ،

إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ.

ইয়া আল্লাহ! আপনার দয়া ও রহমতের বারিধারা বর্ষণ করুন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি, তাঁর স্ত্রীগণ-উম্মাহাতুল মুমিনীন ও সন্তানদের প্রতি, যেমন রহমত নাযিল করেছেন ইবরাহীম আলাইহিস সালামের পরিবারবর্গের প্রতি। নিঃসন্দেহে আপনি প্রশংসিত, মহীয়ান। -আলকামিল, ইবনে আদী ৩/৩৪৪; জিলাউল আফ্হাম, পৃ. ২৫ (১৪) (সালিহ লিলআমাল)

১৩. اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ، وَّبَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ وَبَارَكْتَ عَلٰى إبْرَاهِيْمَ وَآلِ إبْرَاهِيْمَ، إنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ

ইয়া আল্লাহ! রহমত বর্ষণ করুন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর এবং বরকত নাযিল করুন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর, যেমন রহমত ও বরকত নাযিল করেছেন ইবরাহীম আলাইহিস সালাম ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর। নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসিত, মহীয়ান। -আলমুদাওওয়ানাতুল কুবরা, সুহনূন, ১/১৫৯; জিলাউল আফ্হাম, পৃ. ৪৩৪ (৩৭৬) (টীকা) (সালিহ লিলআমাল)

১৪. اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّسَلِّمْ

হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর রহমত ও শান্তি বর্ষণ করুন। -মুসান্নাফে আব্দুর রায্যাক, হাদীস ১৬৬৪; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২৬৪১৬; জামে তিরমিযী, হাদীস ৩১৪; জিলাউল আফ্হাম, পৃ. ৪৪৯ (৪০২); নাতাইজুল আফকার ১/২৮৩ (সালিহ লিলআমাল)

১৫. اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ

হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর রহমত বর্ষণ করুন। -সুনানে নাসায়ী ৩/৪৯; সুনানে কুবরা (নাসায়ী), হাদীস ১২১৬ (সহীহ)

১৬. اَللّٰهُمَّ اجْعَلْ صَلَوَاتِكَ وَبَرَكَاتِكَ عَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا جَعَلْتَهَا عَلٰى آلِ إِبْرَاهِيْمَ، إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ

হে আল্লাহ! আপনার রহমত ও বরকত দান করুন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পরিবারবর্গকে, যেরকম দান করেছেন ইবরাহীম আলাইহিস সালামের পরিবারবর্গকে। আপনি নিঃসন্দেহে অতি প্রশংসিত, মহীয়ান। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস ৮৭২৬; ফাদলুস সালাত, হাদীস ৬৫; জিলাউল আফ্হাম, পৃ. ১৩১ (১৬৩); আলকাউলুল বাদী‘, পৃ. ১০৪ (সহীহ)

১৭. اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى‏ مُحَمَّدٍ عَبْدِكَ وَرَسُوْلِكَ وَأَهْلِ بَيْتِهٖ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى‏ آلِ إِبْرَاهِيْمَ، إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ

হে আল্লাহ! রহমত বর্ষণ করুন আপনার বান্দা ও রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর পরিবারবর্গের প্রতি, যেমন রহমত বর্ষণ করেছেন ইবরাহীম আলাইহিস সালাম ও তাঁর পরিবারবর্গের প্রতি। নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসিত, মহিমান্বিত। -ফাদলুস সালাত, হাদীস ৬৪; জিলাউল আফ্হাম, পৃ. ১৩১ (১৬২); আলকাউলুল বাদী‘, পৃ. ১০৪ (সহীহ)

১৮. اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى أَهْلِ بَيْتِهٖ، وَعَلٰى أَزْوَاجِهٖ وَذُرِّيَّتِهٖ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى إبْرَاهِيْمَ وَعَلٰى آلِ إبْرَاهِيْمَ، إِنَّكَ حَمِيْدٌ

مَّجِيْدٌ، وَبَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى أَهْلِ بَيْتِهٖ،وَأَزْوَاجِهٖ وَذُرِّيَّتِهٖ، كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى إبْرَاهِيْمَ وَعَلٰى آلِ إبْرَاهِيْمَ، إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ.

হে আল্লাহ! আপনি রহমত বর্ষণ করুন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর ও আহলে বাইতের উপর এবং তাঁর স্ত্রী ও সন্তানাদির উপর, যেমন রহমত বর্ষণ করেছেন ইবরাহীম আলাইহিস সালামের উপর এবং ইবরাহীম আলাইহিস সালামের পরিবারবর্গের উপর। নিঃসন্দেহে আপনি প্রশংসিত ও মহিমান্বিত।

এবং আপনি বরকত নাযিল করুন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর ও তাঁর আহলে বাইতের উপর এবং তাঁর পত্নীবর্গ ও বংশধরের উপর, যেমন আপনি বরকত নাযিল করেছেন ইবরাহীম আলাইহিস সালামের উপর এবং তাঁর পরিবারের উপর। নিঃসন্দেহে আপনি চিরপ্রশংসিত মহাগৌরবান্বিত। -মুসান্নাফে আবদুর রায্যাক, হাদীস ৩১০৩; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২৩১৭৩; আলকাউলুল বাদী‘, পৃ. ১১৪ (সহীহ)

১৯. اَلسَّلاَمُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهٗ

আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক হে নবী! এবং বর্ষিত হোক আল্লাহর রহমত ও বরকত। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৮৩১

২০. اَلسَّلاَمُ عَلٰى النَّبِيِّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهٗ

শান্তি বর্ষিত হোক নবীজীর উপর এবং বর্ষিত হোক আল্লাহর রহমত ও তাঁর বরকত। -মুয়াত্তা মালেক, তাশাহ্হুদ অধ্যায়

২১. اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ عَبْدِكَ وَرَسُوْلِكَ النَّبِيِّ الْأُمِّيِّ، وَعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ وَّأَزْوَاجِهٖ وَذُرِّيَّتِهٖ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى إبْرَاهِيْمَ وَعَلٰى

آلِ إبْرَاهِيْمَ، وَبَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ وَّأَزْوَاجِهٖ وَذُرِّيَّتِهٖ، كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى إبْرَاهِيْمَ وَعَلٰى آلِ إبْرَاهِيْمَ فِي الْعَالَمِيْنَ، إنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ.

ইয়া আল্লাহ! রহমত বর্ষণ করুন আপনার বান্দা, আপনার রাসূল, উম্মী নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর পরিবারবর্গ, স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততির উপর, যেমন রহমত বর্ষণ করেছেন ইবরাহীম আলাইহিস সালাম ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর।

এবং আপনি বরকত নাযিল করুন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর এবং তাঁর পরিবারবর্গ, স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততির উপর, যেমন আপনি গোটা জগতে বরকত নাযিল করেছেন ইবরাহীম আলাইহিস সালামের উপর ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর। নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসিত গৌরবান্বিত। -আলমাজমু‘, নববী ৪/৫৪০; আলকাউলুল বাদী‘, পৃ. ১৪৯

বি. দ্র. উক্ত পাঠটি কয়েকটি হাদীস থেকে রচিত : সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৩৫৮ ও ৬৩৬০; সহীহ মুসলিম, হাদীস ৪০৫; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস ৭১১

২২. اَللّٰهُمَّ صَلِّ وَسَلِّمْ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى‏ آلِ مُحَمَّدٍ

ইয়া আল্লাহ! আপনি রহমত ও প্রশান্তি অবতীর্ণ করুন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর এবং তাঁর পরিবারবর্গের উপর। -আলআযকার নাববী, পৃ. ১৭৭; আলকাউলুল বাদী‘, পৃ. ৪০০ (সালিহ লিলআমাল)

২৩.صَلّى اللهُ عَلٰى‏ النَّبِيِّ وَسَلَّمَ

রহমত ও শান্তি অবতীর্ণ হোক নবীজীর উপর। -নাতাইজুল আফকার, ইবনে হাজার ১/২৮৩ (সহীহ)

২৪. اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ، وَّبَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ وَبَارَكْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ وَآلِ

إِبْرَاهِيْمَ، إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ.

হে আল্লাহ! আপনি রহমত নাযিল করুন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর পরিবারের উপর। এবং বরকত নাযিল করুন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর। যেমন আপনি সালাত ও বরকত নাযিল করেছেন ইবরাহীম আলাইহিস সালাম ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর। নিঃসন্দেহে আপনি প্রশংসিত গৌরবান্বিত। -শরহু মুশকিলিল আসার, হাদীস ২২৪০; জিলাউল আফ্হাম, পৃ. ২৭ (১৭) (সহীহ)

২৫.اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى آلِ إِبْرَاهِيْمَ، اَللّٰهُمَّ بَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى آلِ إِبْرَاهِيْمَ

হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর রহমত নাযিল করুন, যেমন রহমত নাযিল করেছেন ইবরাহীম আলাইহিস সালামের পরিবারবর্গের উপর।

হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর বরকত নাযিল করুন যেমন বরকত নাযিল করেছেন ইবরাহীম আলাইহিস সালামের পরিবারবর্গের উপর। -সুনানে কুবরা, নাসায়ী, হাদীস ৯৭৯৬; জিলাউল আফ্হাম, পৃ. ১০২ (১১১) (সহীহ)

২৬. اَلسَّلاَمُ عَلٰى رَسُوْلِ اللهِ، اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ، وَاغْفِرْ لَنَا وَسَهِّلْ لَنَا أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ

শান্তি বর্ষিত হোক রাসূলুল্লাহ্র প্রতি। হে আল্লাহ! আপনি রহমত বর্ষণ করুন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি এবং তাঁর পরিবার-পরিজনের প্রতি। আপনি আমাদের ক্ষমা করে দিন এবং আমাদের জন্য আপনার রহমতের দরজাসমূহ সহজ করে দিন। -ফাদলুস সালাত, হাদীস ৮২ (সালিহ লিল আমাল)

২৭. صَلَّى اللهُ عَلَى النَّبِيِّ مُحَمَّدٍ

আল্লাহ রহমত বর্ষণ করুন নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি। -সুনানে নাসায়ী, হাদীস ১৭৪৬ (সহীহ)

২৮. হযরত আবু বকর রা.-এর দরূদ-

اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلى مُحَمَّدٍ عَبْدِكَ وَرَسُوْلِكَ وَنَبِيِّكَ وَحَبِيْبِكَ وَأَمِيْنِكَ وَخَيْرَتِكَ وَصَفْوَتِكَ بِأَفْضَلِ مَا صَلَّيْتَ بِه عَلى أَحَدٍ مَّنْ خَلْقِكَ اَللّهُمَّ وَاجْعَلْ صَلَوَاتِكَ وَمُعَافَاتِكَ وَرَحْمَتِكَ عَلى سَيِّدِ الْمُرْسَلِيْنَ وَخَاتَمِ النَّبِيِّيْنَ وَإِمَامِ الْمُتَّقِيْنَ مُحَمَّدٍ قَائِدِ الْخَيْرِ وَإِمَامِ الْخَيْرِ وَرَسُوْلِ الرَّحْمَةِ.

হে আল্লাহ! রহমত বর্ষণ করুন আপনার নবী ও রাসূল, প্রিয়তম ও বিশ্বস্ত, নির্বাচিত ও মনোনীত বান্দা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি। এমন রহমত, যা আপনার মাখলুকের মধ্যে যে কারও উপর নাযিলকৃত রহমতের চেয়ে উত্তম। হে আল্লাহ! আপনার অবারিত রহমত, অসীম ক্ষমা, অনুগ্রহ ও বরকত দান করুন সকল রাসূলের সর্দার, সর্বশেষ নবী, মুত্তাকীদের ইমাম মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে, যিনি কল্যাণ সঞ্চালক, মঙ্গলের পথিকৃৎ ও রহমতের অগ্রদূত। -ইহইয়াউ উলূমুদ্দীন ৯/৪০০; ইতহাফু সাদাতিল মুত্তাকীন ১০/৩০২

২৯. (আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.-এর দরূদ-১)

اَللّٰهُمَّ اجْعَلْ صَلَوَاتِكَ، وَرَحْمَتَكَ، وَبَرَكَاتِكَ عَلٰى سَيِّدِ الْمُرْسَلِيْنَ، وَإِمَامِ الْمُتَّقِيْنَ، وَخَاتَمِ النَّبِيِّيْنَ، مُحَمَّدٍ عَبْدِكَ وَرَسُوْلِكَ، إِمَامِ الْخَيْرِ، وَقَائِدِ الْخَيْرِ، وَرَسُوْلِ الرَّحْمَةِ، اَللّٰهُمَّ ابْعَثْهُ مَقَامًا مَّحْمُوْدًا، يَغْبِطُهٗ بِهِ الْأَوَّلُوْنَ وَالْآخِرُوْنَ، اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ، وَّعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ، وَعَلٰى آلِ إِبْرَاهِيْمَ، إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ، اَللّٰهُمَّ بَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ، وَعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ، وَعَلٰى آلِ إِبْرَاهِيْمَ، إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ.

ইয়া আল্লাহ! আপনার দয়া, রহমত ও বরকতের বারিধারা বর্ষণ করুন সকল রাসূলদের সর্দার, মুত্তাকীদের ইমাম, সর্বশেষ নবী, আপনার বান্দা ও রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি, যিনি ছিলেন কল্যাণের পথিকৃৎ, মঙ্গল সঞ্চালক ও রহমতের অগ্রদূত।

ইয়া আল্লাহ! তাঁকে দান করুন এমন প্রশংসিত মাকাম, যা দেখে ঈর্ষা করবে আগে-পরের সকলেই।

হে আল্লাহ! আপনি রহমত বর্ষণ করুন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর পরিবারবর্গের প্রতি, যেমনটি বর্ষণ করেছেন ইবরাহীম আলাইহিস সালাম ও তাঁর পরিবারবর্গের প্রতি। নিশ্চয়ই আপনি সুপ্রশংসিত মহীয়ান।

হে আল্লাহ! আপনি বরকত নাযিল করুন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর পরিবারবর্গের প্রতি, যেমনটি নাযিল করেছেন ইবরাহীম আলাইহিস সালাম ও তাঁর পরিবারবর্গের প্রতি। নিঃসন্দেহে আপনি প্রশংসনীয়, মহিমান্বিত। -সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ৯০৬; আলমুজামুল কাবীর, তবারানী, হাদীস ৮৫৯৪; মুসনাদে আবু ইয়ালা, হাদীস ৫২৪৫; জিলাউল আফ্হাম, পৃ. ৫৪ (৪২); আলকাউলুল বাদী‘, পৃ. ১২৬ (সহীহ)

৩০. (আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.-এর দরূদ-২)

اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى‏ مُحَمَّدٍ النَّبِيِّ الأُمِّيِّ.

ইয়া আল্লাহ, আপনি উম্মী নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর রহমত বর্ষণ করুন। -আত্তারগীব ওয়াত্ তারহীব, কিওয়ামুস্ সুন্নাহ, হাদীস ১৬৫৪; জিলাউল আফ্হাম, পৃ. ৮৮ (৮২); আলকাউলুল বাদী‘, পৃ. ৩৭৯ (সহীহ)

৩১. (আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা.-এর দরূদ)

اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ عَبْدِكَ وَرَسُوْلِكَ؛ أًفْضَلَ مَا صَلَّيْتَ عَلٰى أَحَدٍ مِّنْ خَلْقِكَ أجْمَعِيْنَ.

হে আল্লাহ! আপনি আপনার বান্দা ও রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর রহমত বর্ষণ করুন- এমন রহমত, যা আপনার সমস্ত মাখলুকের প্রতি আপনার নাযিলকৃত রহমতসমূহের মধ্যে সর্বোত্তম। -আলই‘লাম, নুমাইরী, বর্ণনা ১৯৩ (সনদ সালিহ)

৩২. (হাসান বসরী রাহ.-এর দরূদ-১)

اَللّٰهُمَّ اجْعَلْ صَلَوَاتِكَ وَبَرَكَاتِكَ عَلٰى‏ آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا جَعَلْتَهَا عَلٰى‏ آلِ إِبْرَاهِيْمَ، إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ، اَلسَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهٗ، وَمَغْفِرَةُ اللهِ وَرِضْوَانُهٗ، اَللّٰهُمَّ اجْعَلْ مُحَمَّدًا مِّنْ أَكْرَمِ عِبَادِكَ عَلَيْكَ، وَمِنْ أَرْفَعِهِمْ عِنْدَكَ دَرَجَةً، وَأَعْظَمِهِمْ خَطَرًا، وَأَمْكَنِهِمْ عِنْدَكَ شَفَاعَةً، اَللّٰهُمَّ أَتْبِعْهُ مِنْ أُمَّتِهٖ وَذُرِّيَّتِهٖ مَا تَقِرُّ بِهٖ عَيْنُهٗ، وَاجْزِهٖ عَنَّا خَيْرَ مَا جَزَيْتَ نَبِيًّا عَنْ أُمَّتِهٖ، وَاجْزِ الأَنْبِيَاءَ كُلَّهُمْ خَيْراً، وَسَلَامٌ عَلٰى‏ المُرْسَلِيْنَ وَالْحَمْدُ لِلهِ رَبِّ العَالَمِيْنَ.

হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পরিবারের উপর রহমত ও বরকত অবতীর্ণ করুন, যেমন তা অবতীর্ণ করেছেন ইবরাহীম আলাইহিস সালামের পরিবারের উপর। নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসিত, গৌরবান্বিত।

হে নবী! আপনার উপর শান্তি, আল্লাহর রহমত-বরকত, আল্লাহর ক্ষমা ও সন্তুষ্টি অবতীর্ণ হোক।

হে আল্লাহ, আপনি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আপনার কাছে সবচে সম্মানিত বান্দা ও সর্বোচ্চ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত এবং সর্বাধিক মাহাত্ম্যের অধিকারী এবং আপনার কাছে সুপারিশে সবচে বেশি অগ্রগামীদের অন্তর্ভুক্ত করুন। আল্লাহ, তাঁর পরে তাঁর উম্মত ও পরিবার-পরিজনের মধ্যে দান করুন এমন বিষয়, যা দ্বারা তাঁর চক্ষু শীতল হবে। এবং আমাদের পক্ষ থেকে তাঁকে দান করুন সর্বোত্তম প্রতিদান, উম্মতের পক্ষ থেকে নবীকে আপনি যে প্রতিদান দিয়ে থাকেন।

নবীদের সকলকে আপনি দান করুন উত্তম প্রতিদান। রাসূলদের উপর বর্ষিত হোক সালাম। সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি জগৎসমূহের প্রতিপালক। -আলই‘লাম, নুমাইরী, হাদীস ৯৮; আলকাউলুল বাদী‘, পৃ. ১২২ (সহীহ)

৩৩. (হাসান বসরী রাহ.-এর দরূদ-২)

اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى‏ مُحَمَّدٍ، وَّعَلٰى‏ آلِهٖ وَأَصْحَابِهٖ، وَأَوْلَادِهٖ، وَأَهْلِ بَيْتِهٖ، وَذُرِّيَّتِهٖ، وَمُحِبِّيْهٖ، وَأَتْبَاعِهٖ، وَأَشْيَاعِهٖ، وَعَلَيْنَا مَعَهُمْ أَجْمَعِيْنَ، يَا أَرْحَمَ الرَّاحِمِيْنَ.

হে আল্লাহ! আপনি রহমত বর্ষণ করুন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর এবং তাঁর পরিবার, সাথীবর্গ, সন্তানাদি, আহলে বাইত এবং তাঁর বংশধর, তাঁকে মহব্বতকারী, তাঁর অনুসরণকারী এবং তাঁর দলভুক্ত সকলের উপর। তাঁদের সাথে আমাদের সকলের উপরও- হে সকল দয়াময়ের দয়াময়! -আলই‘লাম, নুমাইরী, হাদীস ৯৯; আলকাউলুল বাদী‘, পৃ. ১২২ (সনদ সালিহ)

৩৪. (তালহা ইবনে মুসাররিফ রাহ.-এর দরূদ-১)

سَلاَمٌ عَلٰى مُحَمَّدٍ رَّسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، سَلاَمٌ عَلٰى الْمُرْسَلِيْنَ، وَالْحَمْدُ لِلهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ.

শান্তি বর্ষিত হোক মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি। শান্তি বর্ষিত হোক রাসূলগণের প্রতি এবং সকল প্রসংশা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের জন্য। -আলই‘লাম, নুমাইরী, বর্ণনা ৩৩০ (সহীহ)

৩৫. (তালহা ইবনে মুসাররিফ রাহ.-এর দরূদ-২)

أَدْعُوْ اللهَ وَأَدْعُوْ الرَّحْمٰنَ، وَأَدْعُوْكَ بِأَسْمَائِكَ الْحُسْنىٰ كُلِّهَا، لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ: أَنْ تُصَلِّيَ عَلٰى‏ مُحَمَّدٍ وَّعَلٰىآلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى‏ آلِ إِبْرَاهِيْمَ،إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ، وَالسَّلَامُ عَلَيْهِ وَرَحْمَةُ اللهِ.

আমি আল্লাহর কাছে দুআ করছি, রহমানের কাছে দুআ করছি, আপনার কাছে আপনার সকল সুন্দর নামের মাধ্যমে দুআ করছি। আপনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই; আপনি পবিত্র। রহমত বর্ষণ করুন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর এবং তাঁর পরিবারবর্গের উপর, যেমন রহমত বর্ষণ করেছেন ইবরাহীম আলাইহিস সালামের পরিবারবর্গের উপর। নিঃসন্দেহে আপনি প্রশংসিত, গৌরবান্বিত। তাঁর উপর নাযিল হোক সালাম ও আল্লাহর রহমত। -আলই‘লাম, নুমাইরী, হাদীস ১৪১; আলকাউলুল বাদী‘, পৃ. ৩৫৫ (সহীহ)

৩৬. (আলকামা রাহ.-এর দরূদ)

اَلسَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ، وَصَلَّى اللهُ وَمَلَائِكَتُهٗ عَلٰى مُحَمَّدٍ.

আপনার প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক হে নবী! এবং বর্ষিত হোক আল্লাহর রহমত ও বরকত। আর আল্লাহ তাআলা রহমত বর্ষণ করুন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি এবং তাঁর ফিরিশতাগণ রহমত বর্ষণের দুআ করুন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি। -মুসান্নাফে আবদুর রায্যাক, হাদীস ১৬৬৯; জিলাউল আফ্হাম, পৃ. ১৩৬ (১৭৩) (সহীহ)

৩৭. (আবু জাফর বাকির রাহ.-এর দরূদ)

اَللّٰهُمَّ رَبَّ الْحِلِّ وَالْحَرَمِ، وَرَبَّ الْبَلَدِ الْحَرَامِ، وَرَبَّ الرُّكْنِ وَالْمَقَامِ، وَرَبَّ الْمَشْعَرِ الْحَرَامِ، بِحَقِّ كُلِّ آيَةٍ أَنْزَلْتَهَا فِيْ شَهْرِ رَمَضَانَ، بَلِّغْ رُوْحَ مُحَمَّدٍ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنِّيْ تَحِيَّةً وَّسَلَامًا.

হে আল্লাহ, হে হিল ও হারামের প্রতিপালক, সম্মানিত শহরের প্রতিপালক, রুকন ও মাকামে ইবরাহীমের প্রতিপালক, মাশআরে হারামের প্রতিপালক- রমযান মাসে আপনি যতগুলো নিদর্শন অবতীর্ণ করেছেন সবগুলোর ওসীলায় মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রূহে আপনি আমার পক্ষ থেকে শুভাশিস ও শান্তি পৌঁছে দিন। -জিলাউল আফ্হাম, পৃ. ৫১৬-৫১৭ (সহীহ)

৩৮. (জাফর সাদিক রাহ.-এর দরূদ)

اَللّٰهُمَّ وَأَسْأَلُكَ بِكُلِّ اسْمٍ هُوَ لَكَ، سَمَّيْتَهٗ فِيْ كِتَابِكَ، أَوْ عَلَّمْتَهٗ أَحَدًا مِّنْ خَلْقِكَ أَوِ اسْتَأْثَرْتَ بِهٖ فِيْ عِلْمِ الْغَيْبِ عِنْدَكَ، وَأَسْأَلُكَ بِالِاسْمِ الْأَعْظَمِ الْأَعْظَمِ الْأَعْظَمِ، الَّذِيْ إِذَا سُئِلْتَ بِهٖ كَانَ حَقًّا عَلَيْكَ أَنْ تُجِيْبَ، أَنْ تُصَلِّيَ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ.

আল্লাহ! আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করছি- আপনার যাবতীয় নামের ওসীলা দিয়ে, যা আপনিং আপনার কিতাবে বলেছেন বা আপনার সৃষ্টির কাউকে শিখিয়েছেন অথবা আপনার কাছে অদৃশ্যের জ্ঞানে তা গুপ্ত রেখেছেন এবং আপনার কাছে প্রার্থনা করছি সুমহান সুমহান সুমহান নামের ওসীলায়, যার ওসীলায় আপনার কাছে চাওয়া হলে সাড়া দেওয়া আপনি আবশ্যক করে নিয়েছেন- আপনি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর এবং তাঁর পরিবারের উপর শান্তি বর্ষণ করুন। -আদ্দুআ, তবারানী, হাদীস ১০৩৯; আলকাউলুল বাদী‘, পৃ. ৪১৫

(সনদ সালিহ)

৩৯. (আইয়ুব ইবনে বাশীর রাহ.-এর দরূদ)

اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ عَبْدِكَ وَرَسُوْلِكَ، وَالسَّلَامُ عَلَيْهِ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهٗ.

ইয়া আল্লাহ! আপনি রহমত বর্ষণ করুন আপনার বান্দা, আপনার রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর। তাঁর উপর বর্ষিত হোক সালাম, আল্লাহর রহমত ও বারাকাত। -আলকাউলুল বাদী‘, পৃ. ৩৫৯ (সহীহ)

৪০. (সুফিয়ান সাওরী রাহ.-এর দরূদ)

صَلّى اللهُ وَمَلَائِكَتُهٗ عَلٰى‏ مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى أَنْبِيَاءِ اللهِ وَمَلَائِكَتِهٖ.

আল্লাহ তাআলা রহমত বর্ষণ করুন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আল্লাহর সকল নবী ও ফিরিশতাকুলের উপর এবং তাঁর ফিরিশতাগণ তাঁদের উপর রহমত বর্ষণের দুআ করুন। -জিলাউল আফ্হাম, পৃ. ৪৮৩ (৪৩৬) (সহীহ)

– প্রবন্ধ মাসিক আল কাউসার থেকে সংগৃহীত –

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মুসলিম বাংলা ইফতা বিভাগ

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

৪৫৬১৫

সকল নব আবিষ্কৃত বিষয়ই কি বিদয়াত?


১৩ নভেম্বর, ২০২৩

ঢাকা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

৩৯৯৪৫

বদনজর থেকে বাঁচতে সোনা রুপার পানির ব্যবহার


৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

ঢাকা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

৩৬২৫৭

সিদ্দিকিন কারা?


২৭ জুলাই, ২০২৩

ঢাকা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

৪৯৪৩০

সফর ও মুসাফিরের নামাজ


২২ ডিসেম্বর, ২০২৩

ঢাকা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy