আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ৩৯৪১. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমার প্রশ্ন টি হল মূর্তি আর ভাস্কর্য কি এক? যদি ভিন্ন ভিন্ন হয় তাহলে দুটি কি? আর যদি এক হয় তাহলে দুটি কি?

১২ ডিসেম্বর, ২০২০
দুর্গাপুর

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


জল আর পানি দুটি কী?
আন্ডা আর ডিম দুটি কী?
লাউ আর কদু দুটি কী?

কোন বস্তুর প্রতিকৃতি তৈরি করাকে ভাস্কর্য বলে। সেটি যদি প্রাণীর প্রতিকৃতি হয়ে থাকে তবে সেটাই হলো মূর্তি। চাই সেটাকে পুজো করা হোক অথবা পুজো না করা হোক।

আর যদি ঐ প্রতিকৃতি প্রাণীর না হয়ে থাকে। বরং কোন জড় বস্তু বা উদ্ভিদের প্রতিকৃতি হয়, তবে সেটি সৌন্দর্যের প্রতীক ভাস্কর্য। এটির বৈধতা সম্পর্কে কারো কোন দ্বিমত নেই।


وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، جَمِيعًا عَنِ ابْنِ عُيَيْنَةَ، - وَاللَّفْظُ لِزُهَيْرٍ - حَدَّثَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْقَاسِمِ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ سَمِعَ عَائِشَةَ، تَقُولُ دَخَلَ عَلَىَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَقَدْ سَتَرْتُ سَهْوَةً لِي بِقِرَامٍ فِيهِ تَمَاثِيلُ فَلَمَّا رَآهُ هَتَكَهُ وَتَلَوَّنَ وَجْهُهُ وَقَالَ ‏ "‏ يَا عَائِشَةُ أَشَدُّ النَّاسِ عَذَابًا عِنْدَ اللَّهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ الَّذِينَ يُضَاهُونَ بِخَلْقِ اللَّهِ ‏"‏ ‏.‏ قَالَتْ عَائِشَةُ فَقَطَعْنَاهُ فَجَعَلْنَا مِنْهُ وِسَادَةً أَوْ وِسَادَتَيْنِ ‏.‏

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার নিকট আসলেন, সে সময় আমি আমার একটি তাক পর্দা দিয়ে ঢেকে রেখেছিলাম, যার মধ্যে ছবি ছিল। তিনি সেটি দেখতে পেয়ে ছিঁড়ে ফেললেন এবং তাঁর চেহারা বিমর্ষ হয়ে গেল। তিনি বললেন, হে ‘আয়িশাহ্! কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলার নিকট ঐ সমস্ত ব্যক্তি ভয়ঙ্কর শাস্তি আস্বাদন করবে, যারা আল্লাহ্‌র সৃষ্টির অনুরূপ সৃষ্টি করে।
‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমরা সে সময় সেটি কেটে ফেললাম এবং সেটা দ্বারা একটা বা দু’টো বালিশ তৈরি করলাম।
সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৫৪২১

حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَمْرِو بْنِ أَبِي الْحَجَّاجِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم لَمَّا قَدِمَ مَكَّةَ أَبَى أَنْ يَدْخُلَ الْبَيْتَ وَفِيهِ الآلِهَةُ فَأَمَرَ بِهَا فَأُخْرِجَتْ قَالَ فَأَخْرَجَ صُورَةَ إِبْرَاهِيمَ وَإِسْمَاعِيلَ وَفِي أَيْدِيهِمَا الأَزْلاَمُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ قَاتَلَهُمُ اللَّهُ وَاللَّهِ لَقَدْ عَلِمُوا مَا اسْتَقْسَمَا بِهَا قَطُّ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ ثُمَّ دَخَلَ الْبَيْتَ فَكَبَّرَ فِي نَوَاحِيهِ وَفِي زَوَايَاهُ ثُمَّ خَرَجَ وَلَمْ يُصَلِّ فِيهِ ‏.‏

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কায় আগমন করে কা‘বা ঘরে প্রবেশ করতে অস্বীকার করেন। কেননা এ ঘরে তখন বহু দেবদেবী রাখা ছিল। অতঃপর তাঁর নির্দেশ মোতাবেক সেগুলা অপসারণ করা হয়। বর্ণনাকারী বলেন, ইবরাহীম ও ইসমাইল (আ:)-এর মূর্তিও অপসারণ করা হয়। তাদের মূর্তির হাতে ছিল ভাগ্য পরীক্ষার তীর। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করুন। আল্লাহর শপথ! তারা নিশ্চিত জানতো যে, তাঁরা কখনো এ তীরের সাহায্যে ভাগ্য পরীক্ষা করেননি। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর তিনি কা‘বা ঘরে প্রবেশ করলেন এবং এর কোণে তাকবীর ধ্বনি দিলেন, অতঃপর বাইরে আসলেন। কিন্তু তিনি সেখানে নামায আদায় করেননি।
সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ২০২৭
হাদিসের মান: সহিহ

— শেষোক্ত আবু দাউদ শরীফের এই হাদিসটি লক্ষণীয়,
হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম ও হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম এর ভাস্কর্যকে পুজো করা হতো না। তদুপরি নবীজি এগুলোকে অপসারণ করলেন ও ভেঙে ফেললেন। এত স্পষ্ট প্রমাণ থাকা পরেও এ কথা বলার সুযোগ নেই যে, মূর্তি ও ভাস্কর্য ভিন্ন জিনিস।

والله اعلم بالصواب

ইসহাক মাহমুদ, মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন