আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ৩২৬২. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, অনেক লোক আছে, যারা নামায পড়ে, নিজেদেরকে মুসলমান বলে দাবি করে এবং তাওহীদে বিশ্বাসী, তথাপি তারা মনে করে, বিপদ-আপদ, দুঃখ-কষ্ট দূর করা ও কল্যাণ সাধনের ক্ষেত্রে পীর-বুযুর্গদের অনেক ক্ষমতা আছে। তাই তারা সরাসরি মৃত ও জীবিত পীরের নিকট প্রার্থনা করে, সাহায্য চায় এবং তাদের কাছে মুক্তি চায়। অথচ আমরা জানি, এ ধরনের ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কারো নেই। সঠিক বিষয়টি জানিয়ে বাধিত করবেন। ,

২৯ অক্টোবর, ২০২০

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


কল্যাণ-অকল্যাণ, ভালো-মন্দ, উপকার-অপকার, দুঃখ-কষ্ট ইত্যাদির সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী একমাত্র আল্লাহ রাববুল আলামীন। তিনি ব্যতীত অন্য কারো এ ধরনের কোনো ক্ষমতা নেই। এর উপর ঈমান ও বিশ্বাস রাখা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য অপরিহার্য। তাই বিপদ-আপদ বা দুঃখ-কষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়া বা কল্যাণ-অকল্যাণে সাহায্য চাওয়ার ক্ষেত্রে মুমিনের কর্তব্য হল, একমাত্র আল্লাহ রাববুল আলামীনের শরণাপন্ন হওয়া এবং তাঁর কাছেই সাহায্য চাওয়া। এগুলো আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো কাছে চাওয়া শিরক। কোনো পীর-বুযুর্গের নিকট বিপদ-আপদ থেকে মুক্তি লাভের জন্য এ মর্মে প্রার্থনা করা যে, আপনি আমাকে অমুক বিপদ থেকে উদ্ধার করেন বা অমুক বিষয়ে সাহায্য করেন-এটা সম্পূর্ণ শিরকি ও কুফরী কাজ।

উপায়-উপকরণের উর্ধ্বের কোনো বিষয়ে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছে সাহায্য চাওয়া শিরক ফিল ইসতিআনা, যা  اياك  نستعين এর অঙ্গীকার পরিপন্থী। আল্লাহ তাআলা আমাদের হেফাযত করুন।

তবে যদি জীবিত কোনো হক্কানী পীর-বুযুর্গ বা আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের নিকট এ মর্মে দুআ চাওয়া হয় যে, আপনি আল্লাহর কাছে দুআ করেন যেন আল্লাহ তাআলা আমাকে বিপদ-আপদ থেকে উদ্ধার করে দেন এবং এক্ষেত্রে দুআপ্রার্থীর এ বিশ্বাস থাকে যে, তিনি আল্লাহর মাহবুব ও নৈকট্যভাজন বান্দা হিসেবে আশা করা যায় যে, আল্লাহ তাআলা তাঁর  দুআ কবুল করবেন। তাহলে এতে কোনো সমস্যা নেই। বরং এটি হাদীস ও সাহাবীগণের আমল দ্বারা প্রমাণিত।-ফাতাওয়া উলামাইল বালাদিল হারাম ৬০-৬২

কুরআন মজীদে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-তোমাদের প্রতিপালক বলেছেন, আমাকে ডাক, আমি তোমাদের দুআ কবুল করব।-সূরা মুমিন : ৬০

অন্যত্র ইরশাদ করেছেন, বলে দাও, আমি (মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)  তোমাদের কোনো ক্ষতি করার এখতিয়ার রাখি না এবং কোনো উপকার করারও না।-সূরা জিন : ২১

অপর এক আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ যদি তোমাকে কোনো কষ্ট দেন তবে এমন কেউ নেই তিনি ছাড়া, যে তা দূর করবে আর তিনি যদি তোমার কোনো মঙ্গলের ইচ্ছা করেন তবে এমন কেউ নেই, যে তার অনুগ্রহ রদ করবে। তিনি নিজ বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা অনুগ্রহ করেন। তিনি অতিক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।-সূরা ইউনুস : ১০৭

আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে সম্বোধন করে বলেছেন, হে বৎস! তুমি যদি ( কোনো কিছু) চাও তবে আল্লাহর নিকট চাও। আর যদি সাহায্য প্রার্থনা কর তবে আল্লাহর কাছেই সাহায্য প্রার্থনা কর। জেনে রেখো, যদি সকল মানুষ সংঘবদ্ধভাবে তোমার উপকার করতে চায় তবে তারা ততটুকু উপকারই করতে পারবে যতটুকু আল্লাহ তোমার জন্য লিখে রেখেছেন। আর যদি তারা তোমার ক্ষতি সাধন করতে চায় তবে ততটুকুই ক্ষতি করতে পারবে যতটুকু আল্লাহ নির্ধারণ করে রেখেছেন।


والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মাসিক আলকাউসার

প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

৫৯৭০৬

আকিদা


২৬ মে, ২০২৪

বরিশাল

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি মোহাম্মদ আমীর হোসাইন

৩৪৬৭৯

বিদআতি ইমাম কুরবানীর পশু জবাই করতে পারবে?


২৮ জুন, ২০২৩

শ্রীপুর

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

২৫৪৮৫

কবরের চারিপাশে কি ফুলগাছ লাগানো যাবে?


২০ নভেম্বর, ২০২২

বেড়া

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

৯২২০০

খতমে তারাবীহ কি বিদআত?


৩ মার্চ, ২০২৫

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy