و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

দাম্পত্য জীবনে মান অভিমান, পাওয়া না পাওয়া ইত্যাদী থাকেই। তাই বলে তালাকই দাম্পত্য সমস্যার একমাত্র সমাধান নয়। একান্ত প্রয়োজনে শরীয়ত যদিও তালাকের অবকাশ রেখেছে তবে তার আগেও শরীয়তের দৃষ্টিতে কিছু ধাপ আছে। সেই ধাপগুলোতে ব্যার্থ হলেই শরীয়ত কেবল তালাকের পরামর্শ দিয়ে থাকে। কাজেই পারিবারিকভাবে আলোচনার মাধ্যমে এখনও সমাধানের কোনা রাস্তা খুঁজে পাওয়া যায় কি না আরেকটু চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে উভয় পক্ষের মান্যবর লোকদের মাধ্যমেও চেষ্টা করুন। তালাকের আগের ধাপগুলো জানতে নিচের লিংকে প্রবেশ করুন। https://muslimbangla.com/masail/29628/ । প্রয়োজনে তালাক দিয়ে গুনাহ হবে না।

দেনমোহর একমাত্র স্ত্রীর হক। সে তার অমূল্য সম্পদ-সতীত্ব দান স্বামীকে দেওয়ার মাধ্যমে এর মালিকানা লাভ করেছে। কাজেই আকদের সময় যেই মোহর উল্লেখ করা হয় তা পরিশোধ করা ওয়াজিব। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন,

وَآتُوا النِّسَاءَ صَدُقَاتِهِنَّ نِحْلَةً ۚ فَإِن طِبْنَ لَكُمْ عَن شَيْءٍ مِّنْهُ نَفْسًا فَكُلُوهُ هَنِيئًا مَّرِيئًا
“আর তোমরা স্ত্রীদেরকে তাদের মোহর দিয়ে দাও খুশীমনে। তারা যদি খুশী হয়ে তা থেকে কোনো অংশ ছেড়ে দেয়, তবে তা তোমরা স্বাচ্ছন্দ্যে ভোগ কর।” (সূরা নিসা: ৪)


বিবাহের আকদের সময় মহরের যে পরিমান নির্ধারিত হয় নির্জনবাসের পর সেই পরিমান মহর আদায় করা স্বামীর জন্য ওয়াজিব। সেখানে হ্রাস করার কোনো সুযোগ নেই। আমাদের সমাজে অনেকেই মনে করেন, দেনমোহরের টাকা শুধু নামমাত্র উল্লেখ করতে হয়। এটা কেবলই এটা নিয়ম মাত্র! তাদের এই ধারণা সম্পূর্ণই শরীয়া পরিপন্থি।

তবে স্ত্রী যদি স্বেচ্ছায়, স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে, সন্তুষ্টচিত্তে, কোনোপ্রকার শারীরিক-মানসিক চাপ ব্যতীত নিজের মহরের কিছু অংশ বা সম্পূর্ণ মহর মাফ করে দেয় তাহলেই কেবল সেখানে হ্রাস করার সুযোগ আছে। এমনকি বিবাহের সময় যদি মোহরের পরিমাণ উল্লেখ করা নাও হয় তাহলেও মোহরে মিছিল প্রদান করা আবশ্যক। মহরে মিছিল হলো, আপন বোন বা পিতৃবংশের মেয়েদের (চাচাতো বোন বা ফুফু) মহরের সমপরিমাণ মহর।

আপনার ছেলে ৭ বছর বয়স পর্যন্ত মায়ের কাছে থাকবে। এর মধ্যে যদি তার মায়ের অন্যত্র বিবাহ হয়ে যায় তাহলে সে তার মেয়াদকাল (সাত বছর) পূর্ণ করা পর্যন্ত তার নানির কাছে থাকবে। যদি নানি না থাকে তাহলে সে তার দাদীর জিম্মায় চলে আসবে। এবং ওই সময়ে ছেলের লালনপালন, পড়াশোনা ইত্যাদী যাবতীয় খরচ আপনাকেই বহন করতে হবে। সাত বছর বয়সের পরে যদি সন্তান আপনার কাছে থাকতে রাজী থাকে আপনি তাকে নিজের কাছে স্থায়ীভাবে নিয়ে আসতে পারবেন। হাদিস শরীফে আছে-

حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ خَالِدٍ السُّلَمِيُّ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ، عَنْ أَبِي عَمْرٍو، - يَعْنِي الأَوْزَاعِيَّ - حَدَّثَنِي عَمْرُو بْنُ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، أَنَّ امْرَأَةً، قَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ ابْنِي هَذَا كَانَ بَطْنِي لَهُ وِعَاءً وَثَدْيِي لَهُ سِقَاءً وَحِجْرِي لَهُ حِوَاءً وَإِنَّ أَبَاهُ طَلَّقَنِي وَأَرَادَ أَنْ يَنْتَزِعَهُ مِنِّي فَقَالَ لَهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَنْتِ أَحَقُّ بِهِ مَا لَمْ تَنْكِحِي " . .

মাহমূদ ইবনে খালিদ আস সালমী ..... আমর ইবনে শু‘আয়ব তাঁর পিতা হতে, তিনি তার দাদা আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর (রাযিঃ) হতে বর্ণনা করেছেন যে, একদা জনৈক স্ত্রীলোক বলে, হে আল্লাহর রাসুল! এ সন্তানটি আমার গর্ভজাত আর সে আমার স্তনের দুগ্ধ পান করছে এবং আমার কোল-ই তার আশ্রয়স্থল। আর তার পিতা আমাকে তালাক দিয়েছে এবং সে একে আমার নিকট হতে ছিনিয়ে নিতে চাচ্ছে। তখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তাকে বলেন, তুমি যতদিন না পুনরায় বিবাহ করবে, ততদিন তুমি তার অধিক হকদার। (সুনানে আবু দাউদ , হাদিস নং: ২২৭০ আন্তর্জাতিক নং: ২২৭৬) হাদিসের লিংকঃ https://muslimbangla.com/hadith/34378

عن سعيد بن المسيب أنَّ عمر بن الخطاب رضي الله عنه طلق أم عاصم رضي الله عنها، ثم أتى عليها، وفي حجرها عاصم، فأراد أن يأخذه منها، فتجاذباه بينهما حتى بكى الغلام، فانطلقا إلى أبي بكر رضي الله عنه فقال له أبو بكر رضي الله عنه: "يا عمر، مَسْحها وحِجْرها وريحها خير له منك حتى يشب الصبي فيختار" . المصنف: لابن أبي شيبة (/ 238)
হজরত সাইদ ইবনুল মুসাইয়্যাব রহ. বলেন, উমর রা. উম্মে আসেম রা. কে তালাক দিয়েছেন। তারপর তিনি যখন উম্মে আসেমের কাছে এলেন তখন তাঁর কোলে ছিলেন আসেম। উমর রা. তাকে নিতে চাইলেন এবং তারা উভয়ে ছেলেকে নিয়ে টানাহেঁচড়া শুরু করলেন। ফলে ছেলেটি কেঁদে উঠলো।অতপর তারা উভয়ে (মিমাংসার জন্য) আবু বকর রা. এর কাছে গেলেন।আবু বকর রা. তাঁকে লক্ষ করে বললেন, উমর! তার জন্য তার মায়ের (আসেমের জন্য আসেমের মায়ের) ছোঁয়া, কোল এবং ঘ্রাণ তোমার থেকেও উত্তম। অতপর যখন সে বড় হবে তখন তাকে অবকাশ দেওয়া হবে।
অর্থাৎ, সন্তান বড় হলে বিষয়টি তার ইচ্ছাধীন। সে চাইলে— মায়ের সঙ্গে থাকতে পারবে। আর মায়ের সঙ্গে থাকার ইচ্ছে না হলে, বাবার সঙ্গে থাকতে পারবে। মোট কথা, পুরোপুরি তার এখতিয়ার।

والله اعلم بالصواب