আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

সঞ্চয় ফান্ড এবং জিপি ফান্ডের মধ্যে পার্থক্য

প্রশ্নঃ ২৯১২. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমাদের দেশে বর্তমানে শুধু পেনশনভোগী অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মচারি-কর্মকর্তাদের জন্য মুনাফাভিত্তিক একটা সুবিধা চালু করা হয়েছে। তা হল, অবসরপ্রাপ্তির সময় জিপি ফাণ্ড ও গ্রাচুয়িটি থেকে প্রাপ্ত টাকা দিয়ে সঞ্চয়পত্র খরিদ করতে হয়। নির্দিষ্ট মেয়াদ (৩ বা ৫ বছর)। এই সঞ্চয়কৃত টাকার বিনিময়ে প্রতি তিন মাস অন্তর নির্ধারিত একটি মুনাফা দেওয়া হয়। মেয়াদকাল শেষ হলে জমা রাখা মূল টাকা সম্পূর্ণ ফেরত দেওয়া হয়। এ সুবিধা শুধু সরকারী কর্মচারী-কর্মকর্তাদের জন্য। জানার বিষয় এই যে, এ মুনাফার সুবিধা গ্রহণ করা শরীয়তের দৃষ্টিতে বৈধ কি না? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব। প্রকাশ থাকে যে, মাসিক মদীনায় তা বৈধ বলা হয়েছে। নিম্নে মাসিক মদীনার এ সম্পর্কিত কয়েকটি উত্তর উল্লেখ করা হল : ১। সরকার কর্তৃক জিপিফাণ্ডে যে মুনাফা দেওয়া হয় সেটাকে কর্মচারীদের কল্যাণের জন্য অনুদান হিসাবে গণ্য করত ফেকাহবিদগণ হালাল সাব্যস্ত করেছেন। ইদানীং প্রবর্তিত পেনশনের সঞ্চয়পত্রকে জিপিফাণ্ডেরই একটি বর্ধিত ছুরত রূপে গণ্য করে এটাকেও হালাল বলে গণ্য করেন ফেকাহবিদগণ। (মাসিক মদীনা, জুন ২০০৭) ২। এ যুগের বিজ্ঞ আলেমগণ এ ব্যাপারে ঐকমত্য পোষণ করেন যে, কর্মচারীগণের জন্য সরকার কর্তৃক প্রদত্ত প্রভিডেন্ট ফাণ্ড, পেনশন, প্রাচুয়িটি এবং সর্বশেষ সুযোগ পেনশনের সঞ্চয়পত্রের মুনাফা ইত্যাদি হালাল। এসবের মুনাফা বাহ্যত সুদ বলে মনে হলেও শরীয়তের বিধান অনুযায়ী সুদের মধ্যে গণ্য হয় না। (মাসিক মদীনা, জুলাই ২০০৭) ৩। যেহেতু এটা শুধুমাত্র সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য সরকার নিয়ন্ত্রিত একটি বিশেষ স্কীম, সে কারণে সরকারী পেনশন ভোগীদের জন্য এই স্কীম থেকে প্রাপ্ত মুনাফা নাজায়েয হবে না। (মাসিক মদীনা, ডিসেম্বর ২০০৪),

১৫ জানুয়ারী, ২০২৫

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


সরকারী কর্মচারী-কর্মকর্তার জন্য যে সরকারী সঞ্চয় ফাণ্ড করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ সুদী। এটি জিপি ফাণ্ডের মতো নয়। জিপি ফাণ্ডের সাথে এর অনেক পার্থক্য রয়েছে। এখানে দুটি মৌলিক পার্থক্য উল্লেখ করা হচ্ছে। ক) জিপি ফান্ড বাধ্যতামূলক, কিন্তু সঞ্চয় ফাণ্ড বাধ্যতামূলক নয়। একজন চাকরিজীবী এই সুবিধা গ্রহণ করতেও পারে আবার নাও করতে পারে। খ) বাধ্যতামূলক জিপি ফাণ্ডের টাকা চাকরিজীবীকে দেওয়া হয় না; বরং তা সরকারী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাধ্যতামূলকভাবে ঐ খাতের জন্য কেটে রাখা হয়। ফলে এই সময় এ টাকার উপর চাকরিজীবীর নিরঙ্কুশ মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয় না। অতএব এ কথা বলা যাবে না যে, অল্প জমা দিয়ে মেয়াদান্তে বেশি নিচ্ছে; বরং মূল ও অতিরিক্ত পুরোটাই সরকারের পক্ষ থেকে শ্রমের বিনিময়ে দেওয়া হচ্ছে। যা চাকরি শেষে একত্রে গ্রাচুয়িটি, জিপি ফাণ্ড ইত্যাদি নামে চাকুরেকে দিয়ে দেওয়া হয়। কেবল তখনই তার মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু সঞ্চয় ফাণ্ডের জমা এমন নয়। এ খাতে জমা টাকার উপর পূর্ব থেকেই জমাকারীর মালিকানা এসে যায়। অর্থাৎ সঞ্চয় ফাণ্ডে জমাকারী নিজ মালিকানাধীন টাকা জমা রেখে মেয়াদান্তে অতিরিক্ত নিচ্ছে, যা সুস্পষ্ট সুদ। মাসিক মদীনার এ সংক্রান্ত জবাবগুলো সহীহ নয়। সরকার কর্তৃক সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা হলেই তা আর সুদী লেনদেন হয় না-একথা ভাবা ঠিক নয়।


والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মাসিক আলকাউসার

প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

২৫৩১২

সরকারি চাকরি কি জায়েয?


১৬ নভেম্বর, ২০২২

ঢাকা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

৫৪৬৩০

সরকারী চাকুরী কি জায়েয?


২ মে, ২০২৪

হাটহাজারী

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

২৬৮০৮

পেশা হিসেবে খেলাকে গ্রহণ করা জায়েয হবে কি?


২২ ডিসেম্বর, ২০২২

বসুরহাট ৩৮৫০

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

৫৩৬২৭

জাতিসংঘের বিভিন্ন প্রজেক্টে চাকুরি করা কি জায়েয?


২ মে, ২০২৪

ঢাকা ১২১৬

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy