আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

পেশাব ঝরার ব্যপারে সন্দেহ হলে কী করণীয়?

প্রশ্নঃ ২৬৬৭০. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমি একজন কওমী মাদ্রাসার ছাত্র। আমার ইস্তেঞ্জার পর প্রস্রাবের স্থান থেকে ফোঁটা ফোঁটা প্রসাব বের হয়। তারপর আমি তা ধুয়ে ফেলি। কিন্তু সমস্যা হল এই যে, তা বারবার পড়তে থাকে। কিছুক্ষণ পর আমার মনে হয় যে, তা এখনো পড়ছে, কিন্তু যখন দেখি তখন দেখি যে, না, আর পড়ছে না। এই অবস্থায় আমার কী করা উচিত? আমার কি কাপড় বারবার পাল্টাতে হবে? এই অবস্থায় অর্থাৎ ইস্তেন্জার পর যদি আমি নামাজে দাড়াই তাহলে কী করবো? মুহতারাম, আমার মাদ্রাসা এই মঙ্গলবার খোলা, তো একটু তাড়াতাড়ি আমার এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া কামনা করছি।,

৩০ ডিসেম্বর, ২০২২

ঢাকা ১২১৬

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


প্রিয় প্রশ্নকারী ভাই, পাক-নাপাকের ব্যাপারে মূলনীতি হল, যতক্ষণ পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে নাপাক হওয়ার বিষয়টি জানা না যাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত শুধু সন্দেহের বশবর্তী হয়ে কোনো জিনিসকে নাপাক বলা যায় না। (হিন্দিয়া: ১/৪৫)
সুতরাং আপনার করণীয় হল–
১. পেশাব করার সময় তাড়াহুড়ো করবেন না, বরং পেশাব বন্ধ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন, অতঃপর পানি দ্বারা পেশাবের স্থান ধৌত করবেন। হাদীস শরিফে এসেছে,
عَنْ عِيسَى بْنِ يَزْدَادَ الْيَمَانِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ إِذَا بَالَ أَحَدُكُمْ فَلْيَنْتُرْ ذَكَرَهُ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ
ঈসা ইবন ইয়াযদাদ আলইয়ামানী তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন। রাসূল ﷺ ইরশাদ করেছেন, যখন তোমাদের কেউ পেশাব করে, তখন সে যেন তার লজ্জাস্থানকে তিনবার ঝেড়ে নেয় বা পবিত্র করে নেয়। (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩২৬)
২. এরপরও যদি কোন কিছুর আশঙ্কা থাকে, তাহলে লজ্জাস্থানের আশপাশে লুঙ্গি বা পায়জামায় পানি ছিটিয়ে দিবেন। কারণ রাসূল ﷺ থেকে বর্ণিত, بَالَ ثم نَضحَ فَرْجَه তিনি পেশাব করেছেন, তারপর লজ্জাস্থানে পানি ছিটিয়ে দিয়েছেন। (আবু দাউদ: ১৬৭ )
৩. এরপর যতই সন্দেহ হোক সেদিকে মোটেই ভ্রুক্ষেপ করবেন না। আপনি নিশ্চয়তার উপর নির্ভর করবেন। যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি পেশাবের ব্যপারে নিশ্চিত হবেন না ততক্ষণ পর্যন্ত কেবল সন্দেহের বশে পেশাব বের হয়েছে বলা যাবে না। হাদীস শরিফে এসেছে,
রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে প্রশ্ন করা হয়েছিল, হে আল্লাহর রাসূল, যদি কোন ব্যক্তি সন্দেহ করে যে, তার নামাযে কিছু বের হয়েছে। উত্তরে তিনি বলেন,
لَا يَنْصَرِفْ حَتَّى يَسْمَعَ صَوْتًا أَوْ يَجِدَ رِيحًا
নামায ছেড়ে দিবে না, যতক্ষণ না সে আওয়াজ শোনে, অথবা গন্ধ পায়। (বুখারী: ১৩৭)
এ হাদিস থেকে আমাদের বক্তব্যের পক্ষে প্রমাণ পেশ করার প্রক্রিয়া হচ্ছে–এখানে রাসূলুল্লাহ ﷺ নিশ্চয়তার উপর নির্ভর করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং সন্দেহের প্রতি ভ্রুক্ষেপ করে নামায ত্যাগ করা থেকে নিষেধ করেছেন। অনুরূপভাবে পবিত্রতার ক্ষেত্রেও অযু করার পর কোনো কিছু অনুভূত হলে, সে দিকে ভ্রুক্ষেপ করবেন না। বরং ততক্ষণ পর্যন্ত নিজেকে পবিত্রই মনে করবেন, যতক্ষণ পর্যন্ত স্বচোখে কোনো কিছু দেখবেন না অথবা পেশাবের ব্যপারে নিশ্চিত হবেন না। কারণ, কিছু বের না হওয়াটাই মূল।
মনে রাখবেন, এই সন্দেহ নিশ্চয়ই শয়তানের পক্ষ থেকে ওয়াসওয়াসা। কিছুদিন এভাবে করলে ওয়াসওয়াসা দূর হয়ে যাবে- ইনশাআল্লাহ।

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী
সিনিয়র মুহাদ্দিস, মাদরাসা দারুর রাশাদ, মিরপুর
খতীব, বাইতুল ফালাহ জামে মসজিদ, মিরপুর

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

৮৯১৫৬

পিরিয়ড চলাকালীন অজু অবস্থায় থাকার লাভ


১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

চট্টগ্রাম ৪২১৭

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

৩১০৯৫

উপায়হীন অবস্থায় অপবিত্র কাপড়ে নামাজ পড়া


১ এপ্রিল, ২০২৩

Dhaka

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

৩৪১৩৫

শরীরের ঘামে নাপাক বিছানা বিছানা ভিজে গেলে শরীর নাপাক হবে কিনা?


১৬ জুন, ২০২৩

ঢাকা ১২১৯

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী আবু সাঈদ

৩০৬৬১

অজু গোসলে নাক-কানের ছিদ্রে পানি প্রবেশ করানোর বিধান


২৮ মার্চ, ২০২৩

ঢাকা ১২১৬

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy