আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

সহিহ হাদিসে বর্ণিত সূরা ইখলাসের ফজিলত

প্রশ্নঃ ২৪৮৬৪. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, উস্তাদ, আস্সালামু আলাইকুম৷ সূরা ইখলাস প্রতিদিন ২০০ বার ওযুর সাথে পড়ার ১০ টি উপকার১) আল্লাহ তা'য়ালা তার রাগের ৩০০ দরজা বন্ধ করে দিবেন। ২) রহমতের ৩০০ দরজা খুলে দিবেন।৩) রিজিকের ৩০০ দরজা খুলে দিবেন। ৪) মেহেনত ছাড়া গায়েব থেকে রিযিক পৌঁছে দিবেন।৫) আল্লাহ তা'য়ালা নিজের জ্ঞান থেকে জ্ঞান দিবেন। আপন ধৈর্য্য থেকে ধৈর্য্য দিবেন।আপন বুঝ থেকে বুঝ দিবেন।৬) ৬৬বার কুরআন খতম করার সাওয়াব দিবেন।৭) ৫০ বছরের গুনাহ মাফ করে দিবেন। ৮) জান্নাতের মধ্যে ২০টি মহল দিবেন, যেগুলো ইয়াকুত মার্জান ও জমজমদের তৈরী।প্রত্যেক মহলে ৭০ হজার দরজা থাকবে।৯) ২০০০ রাকাআত নফল নামায পড়ার সাওয়াব দিবেন।১০) যখন তিনি মারা যাবেন ১,১০,০০০ ফেরেশতা তার জানাযায় শরিক হবেন। (সুবহানআল্লাহ)আল্লাহ তা'য়ালা আমাদের সবাইকে জানার বুঝার এবং আমল করার তাওফিক দান করুক। আমিন। [রেফারেন্সঃ রিয়াযুস স্বা-লিহীন হাদিস নম্বরঃ ১০১৭ সহীহুল বুখারীঃ৫০১৫, ৫০১৪, ৫৫৪৩, ৭৩৭৫ নাসায়ীঃ ৯৯৫ আবূ দাউদঃ১৪৬১ আহমাদঃ১০৬৬৯ সহীহ আল জামি আস সগীরঃ ৬৪৭)উস্তাদ, হাদিসটির মানটা জানতে চাচ্ছি?ﺟَﺰَﺍﻙَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺧَﻴﺮً,

১৩ নভেম্বর, ২০২২

West Bengal ৭১১৩১৫

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


সূরা ইখলাসের ফজিলত সম্পর্কে বহু হাদিস রয়েছে। সুতরাং আপনি ২০০ বার কিংবা এর চেয়ে কম-বেশি তেলাওয়াত করতে পারেন। তবে ২০০ বারের জন্য যে ফজিলতের বিষয়ে আপনি যে সকল বর্ণনা উল্লেখ করেছেন; তা নির্ভরযোগ্যসূত্রে প্রমাণিত নয়। নির্ভরযোগ্যসূত্রে প্রমাণিত সূরা ইখলাসের ফজিলতসমূহ নিম্নে পেশ করা হল–
১। কাতাদা ইবনু নুমান রাযি.বলেছেন, রাসূল ﷺ এর সময় এক ব্যক্তি শেষ রাতে সালাতে শুধুমাত্র “কুল হুআল্লাহু আহাদ” ছাড়া আর কোনো সূরাই তিলাওয়াত করেন নি। পরদিন সকালে কোন এক ব্যক্তি রাসূল ﷺ-এর কাছে আসলেন। তখন রাসূল ﷺ বললেন,
وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ إِنَّهَا لَتَعْدِلُ ثُلُثَ الْقُرْآنِ
সে সত্তার কসম, যার হাতে আমার জীবন। এ সূরা হচ্ছে সমগ্র কোরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমান। (বুখারি ৪৬৪৫)
২। আবূ সাঈদ খুদরী রাযি. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল ﷺ তাঁর সাহাবীদেরকে বলেছেন,
أَيَعْجِزُ أَحَدُكُمْ أَنْ يَقْرَأَ ثُلُثَ الْقُرْآنِ فِي لَيْلَةٍ
তোমাদের কেউ কি এক রাতে কোরআনের এ-তৃতীয়াংশ তিলাওয়াত করতে অসাধ্য মনে কর? এ প্রশ্ন তাদের জন্য কঠিন ছিল। এরপর তারা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের মধ্যে কার সাধ্য আছে যে, এমনটি পারবে? তখন তিনি বললেন,
اللَّهُ الْوَاحِدُ الصَّمَدُ ثُلُثُ الْقُرْآنِ
“কুল হুআল্লাহু আহাদ” অর্থাৎ সূরা ইখ্‌লাস কোরআন শরীফের এক-তৃতীয়াংশ। (বুখারি ৪৬৪৬)
৩। আয়েশা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ এক সাহাবিকে একটি মুজাহিদ দলের আমীর করে জিহাদে পাঠালেন। তিনি যখন নামাজে ইমামতি করতেন, তখনই (প্রত্যেক রাকআতে সূরা পড়ার পর) ‘কুল হুআল্লাহু আহাদ’ (সূরা ইখলাস) দিয়ে (কিরাআত) শেষ করতেন। মুজাহিদগণ সেই অভিযান থেকে প্রত্যাবর্তন করে নবি ﷺ এর খিদমতে বিষয়টি আলোচনা করলেন। তিনি বললেন,
سَلُوهُ لأَيِّ شَيْءٍ يَصْنَعُ ذٰلِكَ؟
‘তাকে জিজ্ঞাসা কর, কেন সে এ কাজটি করেছে?’ সুতরাং তারা তাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি উত্তরে বললেন,
لأَنَّهَا صِفَةُ الرَّحْمٰنِ فَأَنَا أُحِبُّ أنْ أقْرَأ بِهَا
‘এই সূরাটিতে পরম করুণাময় (আল্লাহ)র গুণাবলী রয়েছে। এই জন্য সূরাটি তেলাওয়াত করতে আমি ভালবাসি।’ তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন,
أخْبِرُوهُ أنَّ اللهَ تَعَالَى يُحِبُّهُ
‘তাকে জানিয়ে দাও যে, আল্লাহ তাআলাও তাকে ভালবাসেন।’ (বুখারি ৭৩৭৫, মুসলিম ৮১৩, নাসায়ি ৯৯৩)
৪। আবু হুরাইরা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ এক ব্যক্তিকে সূরা ইখলাস পড়তে দেখে বলেন,
وَجَبَتْ
‘অবধারিত হয়ে গিয়েছে’।
সাহাবায়ে কেরাম বললেন, ‘কী অবধারিত হয়ে গিয়েছে?’
রাসূলুল্লাহ ﷺ উত্তর দিলেন,
وَجَبَتْ له الجنة
‘তার জন্য জান্নাত অবধারিত হয়ে গিয়েছে’। (মুসনাদ আহমদ ৭৬৬৯)
৫। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
من قرأ { قل هو الله أحد } عشر مرات بنى الله له بيتا في الجنة
‘যে ব্যক্তি সুরা ইখলাস দশ বার পড়বে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে একটি প্রাসাদ তৈরী করবেন।’ (সহিহ জামে সগীর ৬৪৭২)
৬। আয়েশা রাযি. থেকে বর্ণিত,
أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ كَانَ إِذَا أَوَى إِلَى فِرَاشِهِ كُلَّ لَيْلَةٍ جَمَعَ كَفَّيْهِ ثُمَّ نَفَثَ فِيهِمَا فَقَرَأَ فِيهِمَا قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ وَ قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ وَ قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ ثُمَّ يَمْسَحُ بِهِمَا مَا اسْتَطَاعَ مِنْ جَسَدِهِ يَبْدَأُ بِهِمَا عَلَى رَأْسِهِ وَوَجْهِهِ وَمَا أَقْبَلَ مِنْ جَسَدِهِ يَفْعَلُ ذَلِكَ ثَلاثَ مَرَّاتٍ
নবী ﷺ প্রত্যেক রাতে যখন ঘুমাবার জন্য শয্যা গ্রহণ করতেন তখন দু’ হাতের চেটো একত্রে জমা করতেন এবং তাতে তিন ক্বুল পড়ে ফুঁ দিতেন। তারপর তার দ্বারা দেহের ওপর যতদূর সম্ভব বোলাতেন; মাথা, চেহারা ও দেহের সামনের অংশ থেকে শুরু করতেন। এরূপ তিনি তিনবার করতেন। (বুখারি ৪৪৩৯)
৭। উবাই ইবনু কাব রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
كَانَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ يُوتِرُ بِـ ‏{سَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ الأَعْلَى}‏ وَ ‏{قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ}‏ وَ ‏{قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ‏}
রাসূলুল্লাহ ﷺ বিতরের নামাযে সূরাহ আলা, সূরাহ কাফিরূন ও সূরাহ ইখলাস পড়তেন। (ইবন মাজাহ ১১৭১)

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী
সিনিয়র মুহাদ্দিস, মাদরাসা দারুর রাশাদ, মিরপুর
খতীব, বাইতুল ফালাহ জামে মসজিদ, মিরপুর

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

৫১২৪৩

শুধু আল্লাহ আল্লাহ বলে জিকির করা যাবে?


৯ জানুয়ারী, ২০২৪

হাজী আব্দুল মতিন সড়ক

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

৫০৮৫৫

মিম্বার ছাড়া কি খুতবা দেওয়া জায়েজ হবে?


৫ জানুয়ারী, ২০২৪

Jharka

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

৮৮৫৩৫

মুসলিম বাংলা অ্যাপে আরবি তারিখ কেন দুইটি দেখায়?


১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

১৮২২

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

৬৬৮১৩

নবীজির নাম কতটি?


৮ জুলাই, ২০২৪

চট্টগ্রাম

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী সিরাজুল ইসলাম

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy