মা বাবার ভরণপোষণের দায়িত্ব
প্রশ্নঃ ২৪৭১৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, হুজুর আমার স্বপ্ন একবার হজ্জ নাহলে উমরাহ করব।যে চাকরি তা খুব ঊল্প বেতন। কিছু জমা রাখতে চাইলেও পারতেছি না। আমার বাবা নিজের মত করে খরচ করে চলার সামর্থও আছে। উনাকে বলেছিলাম উনি বলল এখন না পরে।উনাকে যত টাকাই দিনা কেন একট ১ থেকে ২ হলে রেগে যায়। যার কারনে আমি কথায় বলিনা জরুরত ছাড়া।উনার অবহেলার কারনে নিম্নমানের চাকরি পেয়েছি উনি বলেছে আমার নতুন চাকরির ভিসার জন্য তিনি টাকা দিবেন। সেই কথা বলে আর আমার সব ইনকামের টাকা উনাকে দিতে হবে না হলে রাগ করে। হুজুর আমিও পুরুষ আমার ভবিষ্যতের জন্য ও উমারহর জন্য আমি কি করতে পারি। আমার কি সব টাকাই দিয়ে দিতে হবে??,
১৩ নভেম্বর, ২০২২
ঢাকা
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
মা-বাবা ও ঊর্ধ্বতন আত্মীয়ের ব্যয়ভারের শর্ত
মা-বাবা, দাদা-দাদি, নানা-নানি—এ ধরনের ঊর্ধ্বতন আত্মীয়রা ভরণ-পোষণের অধিকারী হওয়ার জন্য শর্ত হলো দুটি—এক. তাঁরা এমন দরিদ্র হতে হবে যে তাঁরা নিজের মালিকানার সম্পদে চলতে অক্ষম। এখন কথা হলো, যদি তাঁরা উপার্জনের শক্তি রাখে, তাহলেও তাঁদের সন্তানদের ভরণ-পোষণ দিতে হবে কি না? এ ক্ষেত্রে বিধান হলো, তাঁদের উপার্জনের শক্তি থাকলেও যদি তাঁদের কাছে চলার মতো নগদ টাকাকড়ি না থাকে, তাঁদের সন্তানদের ভরণ-পোষণ দিতে হবে। তাদের সন্তানরা এ কথা বলতে পারবে না যে আপনি তো উপার্জনে সক্ষম, আপনি নিজে উপার্জন করে চলুন। তবে যদি তাঁরা ধনী হন, তথা তাঁদের মালিকানায় নগদ এমন সম্পত্তি থাকে, যা দ্বারা তাঁরা শান্তিতে কালাতিপাত করতে পারেন, তাহলে সন্তানদের ওপর তাঁদের ভরণ-পোষণ দেওয়া ওয়াজিব নয়।
দুই. সন্তান-সন্ততি সামর্থ্যবান ও উপার্জনে সক্ষম হতে হবে। তাদের সামর্থ্যবান হওয়ার পরিমাণ হলো, তাদের মালিকানার সম্পত্তি বা উপার্জনকৃত আয়ের দ্বারা নিজের ও নিজের স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততির স্বাভাবিক ভরণ-পোষণের পর অতিরিক্ত সম্পদ থাকতে হবে। অন্যথায় তাদের উপার্জনকৃত আয়ের মধ্য থেকে যদি তার নিজের ও স্ত্রী বা সন্তান-সন্ততির ভরণ-পোষণের অতিরিক্ত সম্পদ না থাকে, তাহলে মা-বাবা ও ঊর্ধ্বতন আত্মীয়ের ভরণ-পোষণ দেওয়া ওয়াজিব নয়। যদিও এ ক্ষেত্রে উত্তম হলো, কষ্ট হলেও যথাসাধ্য মা-বাবারও ভরণ-পোষণের খরচ চালিয়ে যাবে। (তাবঈনুল হাকায়েক : ৩/৬৪, রদ্দুল মুহতার : ২/৬৭৮)
এ ব্যাপারে হাদিস শরিফে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘খরচের ব্যাপারে তুমি আগে নিজের প্রয়োজনীয় খরচের দায়িত্বশীল, তারপর তোমার স্ত্রীর, তারপর সামর্থ্য হলে তোমার নিকটাত্মীয়ের খরচ তোমার ওপর বর্তাবে। ’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস ৯৯৭)
দরিদ্র ও উপার্জনে সক্ষম ছেলে অসমর্থ মা-বাবাকে নিয়ে একসঙ্গে খাবে
সন্তান তার উপার্জনকৃত আয় থেকে নিজের, স্ত্রীর ও সন্তান-সন্ততির ভরণ-পোষণের পর অতিরিক্ত সম্পদ না থাকলে যদিও মা-বাবাকে ভিন্নভাবে ভরণ-পোষণ দেওয়া ওয়াজিব নয়, কিন্তু অভাবগ্রস্ত ও উপার্জনে অক্ষম মা-বাবাকে ছেলে নিজের দারিদ্র্য সত্ত্বেও নিজের সংসারের সঙ্গে মিলিয়ে নিতে হবে এবং কষ্ট হলেও যথাসাধ্য মা-বাবারও ভরণ-পোষণ চালিয়ে যাবে। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া : ১/৪৬৫)
সমর্থ থাকা সত্ত্বেও অভাবগ্রস্ত মা-বাবার খরচ না দিলে গুনাহগার হবে
সমর্থ থাকা সত্ত্বেও সন্তানরা অভাবগ্রস্ত মা-বাবার খরচ না দিলে গুনাহগার হবে। এ ক্ষেত্রে সন্তানরা স্বেচ্ছায় না দিলে অভাবগ্রস্ত মাতা-পিতা ছেলে-মেয়ের সম্পদ থেকে প্রয়োজন পরিমাণ তাদের অনুমতি ছাড়াও নিতে পারবেন। তবে মা-বাবা বিত্তবান হলে অনুমতি ছাড়া ছেলে-মেয়ের সম্পদ থেকে নেওয়া বৈধ হবে না। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া : ১/৫৬৪)
পিতার একাধিক স্ত্রী থাকলে করণীয়
পিতার একাধিক স্ত্রী থাকলে ছেলের ওপর তার বাবা ও বাবার এক স্ত্রীর খরচ দেওয়া তার ওপর ওয়াজিব হবে, অতঃপর বাবা ওই খরচ তার উভয় স্ত্রীকে ভাগ করে দেবেন। দ্বিতীয় স্ত্রীর খরচ দেওয়া ছেলের দায়িত্বে নয়। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া : ১/৪৬৫)
মা-বাবার ভরণ-পোষণের দায়িত্ব কার কার ওপর?
মা-বাবার ভরণ-পোষণের দায়িত্ব উপরোক্ত দুই শর্তে সব ছেলে-মেয়ের ওপর ওয়াজিব। এ দায়িত্ব সব সাবালক সামর্থ্যবান ছেলে-মেয়ের ওপর সমভাবে বর্তাবে। এ ক্ষেত্রে ছেলে-মেয়ের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই, তাই কোনো মেয়ে যদি সামর্থ্যবান ও বিত্তবান হয়, তাহলে ছেলেদের মতো সমভাবে তার ওপরও মা-বাবার খরচের দায়িত্ব বর্তাবে। কেননা মা-বাবার জীবিত অবস্থায় সন্তানের জন্য খরচ ও উপহারে মেয়েরাও তাদের ভাইদের মতো সমঅধিকারী, তাই মা-বাবার খরচ বহনে তারাও সামর্থ্যের শর্তে তাদের ভাইদের সমদায়িত্বশীল হবে। ছেলে-মেয়ে না থাকলে তারপর সিরিয়াল আসবে নাতি-নাতনিদের। অতএব, তাদের ওপর সমভাবে এ দায়িত্ব বর্তাবে। (ফাতহুল কাদির : ৪/৪১৭)
والله اعلم بالصواب
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, মদিনা মুনাওয়ারা ৷
মন্তব্য (০)
কোনো মন্তব্য নেই।
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
৫৯৮৫২
আশহুরে হজে উমরায় গেলে কি হজ ফরজ হয়ে যায়?
৩০ এপ্রিল, ২০২৪
ঢাকা ১২১৫

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
সাম্প্রতিক প্রশ্নোত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে